অন্তরালে থাকা কষ্ট

কষ্ট (জুন ২০১১)

ফরিদুল ইসলাম নির্জন
  • ৩৫
  • 0
সেদিন এজলাসে দাঁড়িয়ে যখন আমার ফাঁসির কথাটি বিচারকের কাছ থেকে শুনতে পেলাম তখন আমার হৃদয়ে শেষভাগে ৩২ ফিট সিডর বয়ে গেল।এজলাসে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম মাই লর্ড আমি রূপাকে খুন করে ভুল করিনি।আমি রূপাকে খুন করে কোন পাপ কাজ করিনি।ওর মত পাপী মেয়েকে ভালবেসে আমার জীবনটা হয়েছিল কচুর পাতার উপর থাকা পানির মত।মাইলড আপনি আমাকে এ শাস্তি দিবেন না।তাহলে পৃথিবীটা চলতে পারবে না।পৃথিবীকে কেউ ভাল চোখে দেখবে না।পৃথিবীকে সবাই ঘৃণার চোখে দেখবে।পৃথিবীকে কেউ বিশ্বাস করবে না।আজ আমার পাশে থাকা সকল জনগণকে আমার ভালবাসার কষ্টের ইতিহাস শুনতে হবে।অন্তরালে লুকিয়ে থাকা আমার অনেক কষ্টের কথা আছে যা আমি বলতে পারিনি।কিন্তু আমার ফাঁসির রায় শোনার পর আমি নিঃশ্চুপ থাকতে পাড়লাম না।সুমনের একথা শোনার পর কাঠগড়ার পাশে বসে থাকা লোকজন সুমনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।সুমনের নয়ন দিয়ে অশ্রুবিন্দু ঝড়ে পড়ছে।বিচারক উঠে চলে গেলেন সুমনকে গুটিকয়েক পুলিশ এসে হাতকড়া পড়ে নিয়ে চলে গেলেন।আসলে দোষটা সুমনের বেশী ছিল না।ভালবাসার মানুষটির পাপকাজ সহ্য করতে না পেরে খুন করে ছিল সে।তখন সুমনের বয়স ছিল দু কুড়ি দু বছর।অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র ছিল।রাত ১২ টা ৬ মিনিটের দিকে মোবাইলটি বেজে উঠে।রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সুরেলা কণ্ঠে ভেসে আসা একটি মেয়ের কণ্ঠ।
মেয়েটি বলল,এটা কি রাসুর নাম্বার?
সুমন কর্কশ গলায় বলল,না এটা আমার নাম্বার।
মেয়টি সরি রং নাম্বার বলে লাইনটা কেটে দিল।সুমন মোবাইলটা রেখে দিল।ভোর সারে সাতটার দিকে আবার একই নম্বর থেকে একই প্রশ্ন।সুমন ও একই উত্তর দিল তবে তার সাথে কিছু কথা যোগ করল তাহলো আপনি গতরাতে মোবাইল করে একই কথা আবার এখনো একই কথা বলছেন।আসলে আপনি কে বলছেন,বলুন তো?।
ওপাশ থেকে বলল আমি রূপা রায়।আর রাতে আপনাকে ডিস্টার্ব করার জন্য সরি।
আর এখন ডিস্টার্ব করার জন্য কি বলবেন,সুমন বলল।
আর এখন ডিস্টার্ব করার জন্য ক্ষমা চাইছি।
কিন্তু আমিতো আপনাকে ক্ষমা করবো না।
তাহলে আর কি করা।আমাকে বোধহয় নরকে যেতে হবে।
তাদের এভাবে পরিচয়ের সূত্র ঘটে।অতঃপর নিয়মিত চলতে থাকে তাদের যোগাযোগ ও চলতে থাকে মনের অগোচরের কথাগুলো।রূপার বাসা তাদের একই জেলায়।নম্বরটি সে বানিয়ে তার সিরিয়ালের একটু আধটু পরিবর্তন করে মোবাইল করে।দু মাসের মধ্যে ওদের মধ্যে একটা গভীর সম্পর্কের আভরণ ঘটে।যার ফলাফল হয় চার অৰরের মধুর নাম ভালবাসা।তারপর তারা একে অপরকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে।ভালবাসার মানুষকে দেখার জন্য হৃদয়টা উতলা উঠে ।ভাতের মার উতলে পরার মত হৃদয় উতলে উঠে একে অপরকে দেখা করার জন্য।অতঃপর তারা দেখা করার দিন তারিখ ঠিক করে দেখা করে।রূপাকে দেখার পর সুমনের চোখের পাতা যেনো নামছে না।ওর মুখ,গ্রীবা,স্তন যেনো সবকিছু স্রষ্টার নিজের কারুকার্য।দুজন দুজনকে খুবই আপন করে নিলো।অতঃপর রিক্সায় ঘোরাঘুরি,এক চিলিতে বসে পার্কে বাদাম খাওয়া কতইনা আনন্দ।সমস্যা শুধু একটাই ওরা দুজন দু ধর্মের।কিন্তু এতে কারো আপত্তি নেই।ভালবাসার কাছে কোন ধর্ম মানে না,মানে না কোন জাত বিজাত।ভালবাসা শুধু ভালবাসা।এরপর থেকে দিন যত যায় তাদের ভালবাসা তত গাঢ় হতে লাগল।সম্পর্কের ভিতটা আরো মজবুত হয়।একপর্যায়ে তাদের দু পরিবার জেনে যায় কিন্তু না সূচক উত্তর আসে।রূপার পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েকে অন্য যায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে।রূপার একথা শোনার পর যেন দু নয়ন দিয়ে গড়িয়ে পড়তে থাকে অশ্রু আর অশ্রু।আর এ দিকে সুমনের বাবার কড়া কথা কোন ভাবেই সে হিন্দু মেয়েকে ঘরের বউ করে তুলবে না।সুমনের বাবা বলে,দুবার হজ করেছি সেই সৌদি আরবে গিয়ে।কেঁদেছি আল্লাহুর কাবা শরীফ ধরে।আর আমার ছেলে ঐ বিজাতি মেয়ের সাথে কখনো না।কিন্তু তারপর ও থেমে থাকেনি সুমন আর রূপার ভালবাসা।কচ্ছপের মত ধীর গতিতে তাদের ভালবাসা চললেও তাদেও হৃদয়ের টান ছিল বিদ্যুতের গতির মত।এক পর্যায়ে তারা কঠোর সিদ্ধান্তে উপনীত হয় তাহর পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করা।হ্যাঁ তারা তাই করল।তাদের বাবা মায়েদের সব কড়া কথা উপেৰা করে ছুটে চলল তাদের ভালবাসার গতিতে।কিন্তু তাদের এই ভালবাসার গতিটা থেমে যায় কিছু দিন অতিবাহিত হবার পর।সুমন একা বেসরকারি কোম্পনীতে চাকরিতে ঢুকল।সংসারটা প্রথম প্রথম ভালোই চলতে লাগল।সারা দিন অফিসে থাকার পর রাত আটটায় বাসায় ফিরে বৌয়ের মুখ আর আগের মত ভাল লাগে না।প্রতিনিয়ত তাদের সংসারে এখন কেমন যেনো ছোট খাট বিষয় নিয়ে একটু আধটু ঝগড়া হয়।সুমন কিছুই বুঝতে পারে না এমন হচ্ছে কেন।বিয়ের আগের ভালবাসা আর এখনকার ভালবাসা রাত দিন তফাৎ।এভাবে কেটে গেল তাদের এক বছরের মত।একদিন সুমন অফিসে গিয়ে ভাল না লাগাতে বাসায় ফিরে আসে।এসে দেখে রূপা খোলা।রুমে ঢোকার পর দৃশ্যপট দেখে যেনো তার হৃদয়ের গহীনে হিরোশিমার কেমিক্যাল ছিটানো পরের মানুষের মত বিদগ্ধ হল।তার সেই ভালোবাসার মানুষটি শরীরের স্বাদ পেতে অন্য কাঁচা মাংসের স্বাদ নিচ্ছে।নগ্ন অবস্থায় শুয়ে আছে অন্য অচেনা এক পুরুষের সাথে।কাঁচা মাংসের স্বাদে ভুলে গিয়েছে তারা দরজা লাগাতে।সুমন জোরে একটা হুংকার দিয়ে মাছ কাটা বটি এনে সরাসরি রূপাকে ভেদ করে কোপ মারে।অচেনা মানুষটি কোন ভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে পালায়।কিন্তু রূপা রক্ষা পায়নি।রূপা জোরে একটা চিৎকার দেয়।পাশের বাসার লোকজন ছুটে আসে কিন্তু তার আগেই পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে চলে যায় রূপা। চলে যায় না ফেরার পথে।
যার অপরাধে সুমনের আজ ফাঁসির রায় হল।সে তার মুখ গহ্বর দিয়ে একটি কথা বের করছে মাই লর্ড আমি ভুল করিনি আমি ওকে মেরে ঠিক কাজই করেছি।এটা ওর প্রাপ্তি ছিল।আমার কষ্ট গুলো আপ নারা না বুঝলে কে বুঝবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খোরশেদুল আলম পরকিয়ার মতো মধুর প্রেম খুব কমই আছে জানিনা কেন এ প্রেম এত মধুর হয়, ভালো, আরো ভালো ভালো লেখা পড়ার আশায় রইলাম।
উপকুল দেহলভি হিন্দী সিরিয়ালের চরিত্রের মত লাগলো; বর্তমানের আধুনিক গল্প, ভালো লাগলো; আমার এদিকে ঘুরে যাবার আমন্ত্রণ রইলো. এগিয়ে যান সুন্দর আগামীর পথে. শুভ কামনা.
মোঃ ইকরামুজ্জামান (বাতেন) পরকিয়া . সুমনের উচিত ছিল বিয়ের আগে যাচাই করা. প্রেম রূপ আর দেহ দেখে করা উচিত নয়. আর পরকিয়ার জন্য প্রেমিক বা স্বামীর ব্যর্থতাও থাকে. পরকিয়া তখন হয় যখন স্বামীর চেয়ে অন্যে ভালো হয়. সে জন্য স্ত্রীকে বুঝা আর যথাযথ সময় দেয়া প্রয়োজন. আর এখন তাকে বুঝানো দরকার.ধন্যবাদ ।
মোঃ আক্তারুজ্জামান সুন্দর লিখেছ| শুভ কামনা রইলো|
জুয়েল দেব উত্তেজনার বশে খুন করলে শাস্তিটা একটু কমে..যাবজ্জীবন হতে পারে..এলএল.বি. পাশ করেছি তো, তাই একটু বিদ্যে ঝেড়ে দিলাম ! ভালো লিখেছেন ...ভালো লাগলো..
খন্দকার নাহিদ হোসেন ভালোই লাগলো। তবে লেখকের নাম আর ছবি না থাকলেও বোঝা যেত গল্পটা একজন পুরুষের লেখা। গল্পকার বিষয়টা নিয়ে ভাববে এই আশা রাখি।
ফরিদুল ইসলাম নির্জন 48 patar surid bondhon ar 5m sonkhay lakha pathabar thekana sompadok surid bondhon ,samakal bogra buru ,hotal park building (3rd flor)borogola,bogra
ফরিদুল ইসলাম নির্জন bogra samakal surid thaka prokasito masik surid bondhon ar 5 m sonkha apni o likhta paran abarar bisoy BESTRI O BONDU.48 patar ai sonkhay thakcha choto golpo kobita probondo soho r.......
নিভৃতে স্বপ্নচারী (পিটল) Duniar premik ak hoo.......dunear premik ak hooo.....vai fataie desen......4.......amar kobita ta aktu porben..jodi somoi pan....

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী