কী যে কষ্ট

কষ্ট (জুন ২০১১)

এস. এম. কাইয়ুম
  • ১৪
  • 0
গোধূলি সময়ের একটু আগে । সূর্য সাগরে প্রায় ডুববে ডুববে অবস্থা। যদিও মাজবির আয়ান এই শত শত আবাসিক বিল্ডিং দণ্ডায়মান থাকার কারণে সূর্য ডুবা দেখতে পারছে না। তবে সময় আর স্পষ্ট ধারনা যে সূর্য ডুবার সময় এখন। আকাশ এবং পরিবেশের অবস্থা- কিছু সন্ধ্যার আলো আছে আর প্রায় অন্ধকার নেমে আসছে। আবার আকাশের অবস্থায় আরও প্রতীয়মান হয় যে, মেঘগুলি হালকা ভাবে দৌড়াচ্ছে। যেন একটা মেঘের চাক্কা আরেকটা মেঘকে ধরলেই নিমিষেই গলাঁধ করন করবে, তাতে বিন্দু মাত্র কোন সন্দেহ নেই । বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি অবস্থা। নতুন বছরের নতুন কয়েকটা দিন অতিক্রম করেছে মাত্র। কিন্তু মনকে এখনো ফুলের পূর্ণতা দিয়ে সাজাতে পারেনি আদৌ। মাজবির আয়ান (অনার্স ২য় বর্ষ) স্থানীয় এলাকার একটা ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরের সামনে রাস্তার উত্তর পার্শে ধীর ধীর গতিতে একপা- দুপা দিয়ে হাঁটছে আর মনে মনে ভাবছে কত কী! বেশীরভাগ অর্থে কোন বিষয় ছাড়াই যা মনে উদয় হচ্ছে তারই ভাবনাগুলো একা একাই ভাবছে। রাস্তা দিয়ে কত ধরনের মানুষ আসছে-যাচ্ছে শুধু সামনে চোখের নজর পড়লেই চোখের দেখা হচ্ছে। কী নারী-কী পুরুষ- এ তাই রাম-জাম, আলু-কুমড়া ইত্যাদি।
হঠাৎ করেই ধীর গতিতে পা চলা বন্ধ। এ কী? ঐ যে আসছে! বড় বড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে, হাঁটার গতিটা অপেৰাকৃত একটু দ্রুত, ডান কাঁধে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে আসছে মাজবিরের দিকে। মাজবিরও এক নজর দেখতেই মন-প্রাণের সমম্ত চিন্তা-ভাবনা গুলো জন্মনিল তাকে নিয়ে। রাঙা জামা, গোলাপি জুতা আর হলুদ-গোলাপি রঙের ব্যাগ নিয়ে আসছে। অপরাজিতা স্নিগ্ধা (মনে হয় কলেজে পড়ে) প্রায় ৫-৭ সেকেন্ড মাজবিরের চোখের পানে তাকিয়ে ছিল। তারপর, সোজা রাস্তার বামপাশে দিয়েই সামনে যাচ্ছে। যাচ্ছে তো যাচ্ছেই পেছন ফিরে তাকায় না। প্রায় ২০০ গজ সামনে গিয়ে একবার পিছন ফিরে তাকালো। দেখলো যে, মাজবির প্রায় বিশ গজ পিছনে আসছে। মাজবির মনে মনে ধারণা করে-স্নিগ্ধা কি আমাকে খানিকটা চিনতে পারছে নাকি আমার মনের ভ্রান্ত ধারণা মাত্র। এরকমই কয়েকদিন অন্তর অন্তর রাস্তায় আসা-যাওয়ার মাঝে স্নিগ্ধার সাথে মাজবিরের দেখা হয়েছিল এবং চোখে চোখ পড়েছিল প্রায় তিন থেকে চারবার। এমতাবস্থায়, স্নিগ্ধা যদি একবার ফিরে তাকায় তাইলেই বুঝে যে, সে মাজবিরকে হালকা হলেও চিনতে পারছে। তো হল-তা সত্যিই হলো আরও প্রায় ২৫০ গজ সামনে গিয়ে আবার ফিরে তাকালো পিছনে- এবারও দেখলো মাজবির আসছে পিছন পিছন। এদিকে মাজবির তো মনে মনে বিশাল খুশি, মনে হচ্ছে অপরাজিতা তাকে চিনতে পারছে। তখন মনে মনে গান ধরলো- "আমি ধন্য হয়েছি ওগো ধন্য, শুধু তোমারি জন্য..
সামনে আরও কিছু দূর হাঁটছে কিন্তু এখন আর স্নিগ্ধা ফিরে তাকায় না। মনে মনে আবার জন্ম নিলো অপরিচিত হাজারও চিন্তা। এগুলোর মধ্যে উল্লেখ করা যেতে পারে যে-
যদি আর একবার তাকায় তাইলেই কথা বলবো চোখের সাথে-
যদি আর একবার তাকায় তাইলেই কথা বলবো মনের সাথে-
যদি আর একবার তাকায় তাইলেই কথা বলার সুযোগ পাবো-
যদি আর একবার তাকায় তাইলেই তাহার সামনে দাঁড়াবো-
যদি একবার হাসে আমার সাথে তাইলেই উড়ে বেঁড়াবো আকাশ পথে-
যদি একবার ভাবে আমায় তাইলেই বলবো আমি ভালবাসি তোমাকে-

যদি একবার ... .. .. .. কী কষ্ট বুকের ভেতর, কী কষ্ট মনে, কী যে কষ্ট জন্ম নিলো এখন থেকে..
কষ্ট বুকে কষ্ট, কষ্ট মনে কষ্ট
বুকের ভেতর জ্বলে আগুন
রাঙা প্রভাতে জ্বলে দ্বিগুণ
পানি নাই-আগুন নিবাতে
পানি নাই-মনের আঙিনায়
পানি নাই-কী যে কষ্ট!

অবশেষে, অপরাজিতা স্নিগ্ধা আর না তাকিয়ে, আর না ভেবেই ঢুকলো একটি আবাসিক বাড়িতে প্রাইভেট পড়ার জন্য। আমরা হয়তো জানিনা পরবর্তীতে আর কোন দিন মাজবিরের সাথে দেখা হবে কি না, আমরা হয়তো জানবো না তারা দুজনের মধ্যে কিছু হবে কি না! তবে এটা বলতে পারি যে, মাজবির যদি পৃথিবীতে বেঁচে থাকে আরও একদিন তাইলেই অন্তত একটু মহুর্তের জন্যেও অপেৰা করবে অপরাজিতা স্নিগ্ধার জন্য। আর যদি দুজনের দেখা হয় তাইলেই দুজনেই চোখ রাখবেই দুজনের দিকে, অন্তিম তৃষায়, কাঙ্খিত নয়নে, অপরূপ ভাবনায়, ভালবাসার চিত্তে, মন-প্রাণ আর হৃদয় দিয়ে। হয়তো হবে! হয়তো বা কী যে কষ্ট!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এস. এম. কাইয়ুম অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান কমেন্টের জন্য
শিশির সিক্ত পল্লব পৃথিবীটা যখন গোল.....দেখা তো হবেই....অনেক ভাল লাগলো ভাই....আপনার লেখা আগেই পড়তে চেয়েছিলাম.....ভেবেছিলাম পড়া হয়ে গেছে....কিন্তু পরে দেখি পড়ি নাই.....এখন পড়লাম....চমৎকার...মনে হয় নিজের জীবন থেকে নিয়েছেন....যাহোক ৫ পেলেন...আসলে আপনাকে আমার ভাল লাগে.....আমার লেখা গুলোয় সব সময় আপনাকে পাই এ কারনেই......ভাল থাকবেন ভাই......
মোঃ আক্তারুজ্জামান ওদের যেন আর কোনো দিন দেখা না হয়.......২০ বছর পর কোনো এক বৃষ্টি স্নাত বিকেলে এই দিনটির কথা ওদের মনে পড়বে|
এস. এম. কাইয়ুম আমি আশা করি একবার না পারলে আবার পারব - ধন্যবাদ আপনাকে
sakil ভালো তবে koster পরিমান এত তীব্র ভাবে পাঠককে tante pare নি . তারপর ও আপনার গল্পটি ভালো হয়েছে , কেননা আমি জানি একটি গল্প লিখতে অনেক শ্রম ঝরাতে হয় . শুভকামনা রইলো ভাই .
এস. এম. কাইয়ুম ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান কমেন্টের জন্য
ওবাইদুল হক আতি সুন্দর একটা গল্প অথচ মুখ দেখে সবাই অন্যদের কমেট করে । কেন ভাই তুমি বলতে পার । আমি মনে করি এটা সমাজের জন্য খুব প্রয়োজন । যা সভ্যতার বিকাশ করবে । ৫=৪ দিলাম আর পারলে আমার প্রতিদানের কষ্টকে দেখে আসিও । ধন্যবাদ ।

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪