শুভ রাত্রি

প্রিয়ার চাহনি (মে ২০১২)

মিলন বনিক
  • ২৬
আজ শুভ রাত্রি।
তিথি বসে আছে বাসর ঘরে। বুকটা কাঁপছে। এখনি হয়তো এসে পরবে নয়ন। এই একটা দিনের জন্য কত স্বপ্নকে কতদিন ধরে লালন করে আসছে। সেই ছোট বেলা থেকে। নিশার বিয়ে হয়েছে গত বছর। তিথিকে বলেছে-খবরদার বাসর রাতে জামাইকে শরীর স্পর্শ করতে দিবি না। বিশ্রী অবস্থা করে ছাড়বে। কিন্তু এটাতে দ্বিমত পোষণ করেছিল তিথি নিজে। আরে বাসর ঘরে যদি শরীরের স্পর্শই না পাওয়া যায় তবে আর বাসর রাত কেন। কথাটা মনে পরতেই নিজের অজান্তে মুচকি হাসে তিথি। লজ্জায় সারা মুখটা লাল হয়ে আছে।
তিথির সমস্ত সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে এই একটা মাত্র হাসিতে। হাসতে গেলেই দু'গালে টোল পরে আর দু'টি ঠোটে ফুটে উঠে এক অপরূপ সৌন্দর্য। সেই সাথে চোখ দু'টো এক মায়াময় স্বপ্ন জাল তৈরি করে। ডাগর ডাগর হরিণী আঁখি কিনা জানি না। কখনও দেখিনি। তবে এটা নিশ্চিত যে তিথির ঐ চোখ দু'টোতে যা আছে তা সচরাচর দেখা যায় না। ঐ চোখে যে কারো একবার চোখ পরলে চোখ ফেরানো দায় হবে। ঐ চোখের বিশালত্ব আর গভীরতা অনুমান করতে গিয়ে আধা জল খেতে হয়েছিল নয়নকে। প্রথম যেদিন তিথিকে দেখতে গিয়েছিল তিথির চোখে চোখ রাখতেই নয়ন শুধু অপার বিস্ময়ে তাকিয়েছিল। কিছুই বলতে পারেনি। কিছুই জিজ্ঞাসা করতে পারেনি। এমনকি নামটাও না। শুধু মনে হয়েছিল একজনের হ্রদয় জয় করতে এসে সারা ব্রহ্মাণ্ড ঘুরে এসে অনেক অপূর্ণতা নিয়েও কত না বলা কথা বলা হয়নি।
গায়ের রংটাও আহামরি কিছু না। শ্যামলা বরন। দীঘল কালো চুল। তেমন সাজগোছের বালাই নেই। একেবারে হালকা ঘরোয়া প্রসাধন। একটু স্নো পাউডার। যা না হলে একবারে নয়। বৌদি বলেছিল বিউটি পার্লারে যেতে। বাধ সাধল তিথি নিজে। বাংলায় অনার্স করা তিথি। আছে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস। তিথির ধারনা আলগা রং মেখে সং সাজতে গেলে নিজের প্রকৃত সৌন্দর্যটাকেই আড়াল করে রাখা হয়। নয়নের পিসিমা বলেছিল কুচকুচে কালো। আমার নানুর পছন্দ হবে বলে মনে হয় না। পাত্র পক্ষের দিদিমা একটা জিনিষ বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল। বিশেষ করে হাত পা গুলো। নানান কথার পাশাপাশি একটু হাঁটাটাও দেখে নিলো। খোঁড়া না তো। না সবই ঠিক আছে। লক্ষ্মীর পায়ের মতো দু'টো পা। শুধু বাম হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত কিছুটা অংশ গায়ের স্বাভাবিক রংয়ের চেয়ে কালো। খানিকটা কুঁচকানো। তিথি বার বার বাম হাতটা শাড়ীর আঁচলে লুকানোর চেষ্টা করছিল। এসব কিছুই দিদিমার চোখ এড়াতে পারেনি। তিনি অভিজ্ঞ মহিলা। সখ করে নাতবৌ আনবে। তা একটু দেখে শুনে নিতেই হয়। এক ফাঁকে দিদিমা বলেই ফেলল-তা দিদি ভাই তোমার হাতে কি হয়েছে। তিথির দিদিমাও কম যান না। কথাটা পারার সাথে সাথে ছোঁ মেরে নিজেই উত্তর দিলেন-ও কিছু না, ঠাকুর ঘরে পুজো দিতে গিয়ে কাপড়ে আগুন লেগেছিল।
তিথির ভেতরটা একবার কেঁপে উঠল। ভেবে পাচ্ছিল না এই মুহূর্তে তার কি করা উচিত। ডান হাত দিয়ে দিদিমার হাতটা জোড়ে চেপে ধরেছে। ঠোঁটে চেপে ধরেছে ঠোঁট। দু'গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল দু'ফোটা জল। নয়ন তাকিয়ে আছে। ডান হাতে রূমালে চোখ মুছল তিথি। চোখ তুলে তাকায় নয়নের দিকে। কিছু বলতে চায় তিথি। বিব্রত বোধ করে নয়ন। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনও হয়নি। এমবিএ করা ব্যাংক কর্মকর্তা ভাবছে হয়তো দিদিমা এমন কিছু বলেছে যা তিথির পছন্দ হয়নি। কালো বলে হয়তো রাগে অভিমানে চোখের জল ফেলছে। নয়ন বেশীক্ষণ তাকাতে পারেনি। অপরাধীর মত চোখ নামিয়ে জিজ্ঞাসা করল-আমাকে তোমার পছন্দ হয়েছে। তিথি চুপ। কোন কথা বলেনি। নির্মল মৌন হাসি হাসল। নয়ন তার প্রশ্নের উত্তর হয়তো পেয়েছে। তিথিরও তো কিছু জিজ্ঞাসা থাকতে পারে। কিন্তু কিছুই জিজ্ঞাসা করা হয়নি। নীরবে আর একবার চোখের জল মুছল। তিথির মনে হচ্ছে এ যেন চরম সত্য আড়াল করার এক নীল কষ্ট।
নয়নকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে পাত্রী পছন্দ হয়েছে কিনা। কোন ভণিতা না করেই বলে ফেলল হ্যাঁ হয়েছে। দিদিমা আবার মনে করিয়ে দিল হাতটা দেখেছিস।
- দেখেছি।
- তারপরও ভেবে দেখ, বিয়ে তো জীবনে একবারই করবি।
- দিদা আমি তো বলিনি যে দু'বার করব।
শেষ পর্যন্ত ঘটা করে বিয়ে হলো। বিয়ের আগের রাতেও নয়ন ফোন করেছে। অনেক কথা হয়েছে অনেক রাত পর্যন্ত। তিথি বলেছিল তোমাকে আমার একটা কথা বলার ছিল। আমি আগেও বলেছি। তুমি শুনতে চাওনি। নয়ন হেসে উড়িয়ে দিয়েছে সে কথা। বলেছে এখন আমার কথা শোন। কাল বাদে পরশু বাসর রাত। সেদিন তোমার সব কথা শুনব। আর যে তর সইছে না। পারলে চলে এসো। দুদিন আগে শুভ রাত্রিটা সেরে ফেলি। তিথি আবারও ফুঁপিয়ে কাঁদছে। চুপচাপ দেখে নয়ন আবারও কথা বলছে-ও দুদিন পরে কি হবে তাই ভেবে চুপ হয়ে গেলে। আচ্ছা আগে বলো-বিয়ের শাড়ীটা তোমার পছন্দ হয়েছে কিনা। আমারতো খুব ইচ্ছা করছিল নতুন বৌ-এর চোখ দুটো আর গালে টোল পরা হাসিটা একবার দেখে আসতে।
স্বপ্ন বাসরের এই একটা রাত কিভাবে কাটবে তা নিয়ে ভাবনার অন্ত নেই। দিদিমা বলে দিয়েছে-জামাই ঘরে ঢুকলেই আগে পা ছুঁয়ে প্রণাম করবি। তারপর বিছানায় যাবি। দাদা বাবু বলে দিয়েছে-প্রথম রাত, একটু কষ্ট তো হবেই। সবকিছু মানিয়ে নিতে হবে। কয়েকদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
রাতের অর্ধেকটা প্রায় শেষ। বারোটা বাজে। বৌদি শ্রেণীর যারা তারা কিছুতেই নয়নকে বাসর ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেনা। দু'হাজার টাকা না দিলে বাসর ঘরের দরজা খোলা হবেনা। ওদিকে ননদ, জা, দাদা বাবুরা মিলে তিথিকে ঘিরে ধরেছে। সবাই দুষ্টামি করছে। নানা জন নানা কথা বলছে। সব কিছুর মধ্যে ঠাট্টা মশকারীটাই বেশী। আকার ইঙ্গিতে অশ্লীল কথাবার্তাও কম হচ্ছেনা। একেক জন এক একটা বলছে আর লজ্জায় লাল হয়ে উঠছে তিথির সারা মুখ। তৃষা বলে উঠল-দেখো বৌদি প্রথম দিন বেশী খেতে যেওনা কিন্তু। তাহলে বদহজম হবার সম্ভাবনা বেশী। শেষে সামাল দিতে পারবে না।
সারা ঘরটা কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো। মোহনীয় গন্ধ। পূতঃ পবিত্র। বিছানা পত্র সবিই নতুন। যে দল বাসর ঘর সাজিয়েছে তারা তাদের বকশিস নিয়ে বিদায় হয়েছিল। এখন আবার দলটা এসেছে বৌদির কাছে। সজল বলল-দাও বৌদি পাঁচশ টাকা। নয়তো আমরা জানি কোথায় কি আছে। শেষ পর্যন্ত কাঁটার আঘাতে রাতে ঘুমাতে পারবে না। খামোকা দাদা আর তুমি মিলে আমাদেরকে বকা দেবে। তৃষা বলল, তোরা কি গোলাপের কাটা গুজে দিয়েছিস নাকি। তা নয়তো কি। এমনি এমনি ছেড়ে দেব নাকি।
শেষ পর্যন্ত দেনা পাওনার সমস্ত হিসেব নিকেশ চুকিয়ে নয়ন ঢুকেছে বাসর ঘরে। সাথে পঞ্চ আয়স্থি। মংগল ডালা সাজিয়ে এনেছে। স্বামী স্ত্রী দু'জনকে পাশাপাশি বসিয়েছে। দাদা বাবুরাও আছে। একজন সংকেত দিল তোমাদের হাতে সময় বেশী নেই। রাত একটা বাজে। ভোর চারটায় উঠে স্নান করতে হবে। মনে মনে ভাবছে নয়ন - আমার বয়ে গেছে। একেতো শীতের রাত। আরও কিছু সময় কাটল। স্বামী স্ত্রীর কপালে মংগল ডালা ঠেকিয়ে উলুধ্বনি করল সবাই। কিভাবে দু'জনের সংসার সুখী হবে তার পরামর্শ দিল দিদিমা। বুঝলি দিদি ভাই আজ থেকে তোরা দু'জন এক। সুখ দুঃখ সবকিছু দু'জনে ভাগাভাগি করে নিবি। স্বামী হচ্ছে দেবতা। স্বামীর সেবা করলে স্বয়ং ভগবানের সেবা পাবি।
আর দেরী সইছে না। তিথি ও নয়ন সবাইকে প্রণাম করল। সবাই আশীর্বাদ করল তোমাদের সংসার যেন সুন্দর হয়। সিঁথির সিঁদুর যেন সারাজীবন অক্ষয় হয়ে থাকে। সবার কলকাকলিতে বাসর ঘরটা এতক্ষণ সরগরম ছিল। সবাই বেরিয়ে যেতেই বাসর ঘরটা নীরব হয়ে গেল। দরজায় খুট করে একটা শব্দ হতেই তিথির সম্বিত ফিরে আসে। এই মাত্র নয়ন দরজার হুকটা লাগিয়ে এসেছে। বিছানায় উঠার আগে তিথি বিছানা থেকে নেমে এসে নয়নের দু'পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করল। নয়ন দু'হাতে বুকে টেনে নেয় তিথিকে। অবেক্ষণ বুকের মধ্যে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। শরীরের ভিতর থেকে এক ধরনের উষ্ণতা অনুভব করে। উষ্ণ থেকে উষ্ণততর হচ্ছে শরীরের ইন্দ্রিয়গুলো। তিথি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে শরীর থেকে শরীরের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে নেয়। নয়ন চিবুক স্পর্শ করে তাকায় তিথির চোখের দিকে। ঐ দু'টো চোখের মায়াময় চাহনি নয়নের অন্তর বিদীর্ণ করে ভিতরের সবকিছু কেমন যেন ওলট পালট করে দিচ্ছে।
তিথির ভিতরের নীল কষ্টটা রীতিমত কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারছে না। নিজের উপর প্রচণ্ড ঘৃণা হচ্ছে। অপরাধবোধ কাজ করছে। কেন সবকিছু খুলে বলতে পারলাম না। নিজের চোখের সামনে শরীরটা ভেসে উঠে। কত রাত নীরবে কেঁদেছে তিথি। বাথরুমে স্নান করতে গিয়ে কতবার এই উদোম শরীরটার উপড় কত ঘৃণা জন্মেছে। কতবার জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছে পারেনি। আত্মহত্যা করতে চেয়েছে পারেনি। কত কষ্ট হয়েছে নিজের শরীরটাকে এই পর্যন্ত বয়ে নিয়ে আসতে। কিন্তু কখনও অপরাধবোধ জাগেনি। শরীরটাতো আমার একান্ত নিজস্ব। তার উপর কারও অধিকার নেই। আজ দুটোই পেয়ে বসেছে তিথিকে। আজ তিথির শরীরটা আর নিজের নেই। নয়নের পূর্ণ অধিকার রয়েছে এ শরীরের উপর। জোড় করে না বলাও যাবে না। এই একটা স্বপ্নের রাত। সব মেয়েদের জীবনে এই একটা রাতের স্বপ্ন থাকে সারা জীবন।
বিয়ের কথা পাকাপাকি হবার পর যতবারই নয়নের সাথে কথা হয়েছে ততবারই মনে হয়েছে অনেক জনমের সাধনার ফলে হয়তো আমি তাকে পেয়েছি। লোকটার মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়ার একটা ঐশ্বরিক শক্তি আছে। তিথি বোধ হয় বাঁচবে না। সুন্দর চোখ, সুন্দর হাসি আর সুন্দর মুখশ্রীর আড়ালে এই বুঝি একটা কদর্য, বীভৎস চেহারা ভেসে উঠবে। সবাই ধিক্কার দেবে। আমি কেন এই ভালো মানুষটিকে এভাবে সারাজীবনের জন্য ঠকিয়ে গেলাম। সারা জীবনেও হয়তো এই ভালো মানুষটি তিথির এই বীভৎস শরীর আর স্পর্শ করবে না।
তিথি নয়নের বুকে মাথা রেখে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে। নয়ন পাগলের মত আদর করছে তিথিকে। যে চোখের দিকে তাকিয়ে নয়ন অবাক বিস্ময়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলত সে চোখে চোখ পরতেই নয়ন তিথির দু'গালে দীর্ঘ সময় চুমু খাচ্ছে। দু'জনের কেউই নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছে না। পরস্পরের দুজোড়া হাত কেউ কাউকে ছাড়ছে না। নয়ন নিজেকে আলগা করে আলোটা নিভিয়ে দিতে চাইল। তিথি নয়নের হাত দু'টো চেপে ধরে বলল-প্লিজ আলোটা এখন নিভিয়ে দিওনা। আগে আমার কথা শোন।
তিথি এক এক করে শরীরের সব কাপড় খুলে ফেলছে। নয়ন বাঁধা দিতে চাইল। তিথির অস্থির চিত্ত বলে উঠল আজ না হলে বড্ড দেরী হয়ে যাবে। শরীরে একটা সুতোও নেই। আলোর উল্টোদিকে দাঁড়িয়েছে তিথি। নয়ন পাগলের মত নিজের চুল টানছে আর বলছে-এ আমি কি দেখলাম। এ কি করে সম্ভব। তোমরা আমাকে এভাবে ঠকালে। আমি তো কোন পাপ করিনি। তিথির দিকে তাকাতে পারছে না। চোখ বন্ধ। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। মনে হচ্ছে পৃথিবীটা ঘুরছে। মৃত্যর কাছাকাছি পৌঁছতে হয়তো আর বেশী সময় লাগবে না। তিথির বাম পাশটা কাঁধ থেকে হাঁটুর গোড়ালি পর্যন্ত কালো। চামড়াগুলো কুঁচকানো। কি বীভৎস সে উলঙ্গ দৃশ্য।
নয়নের শরীরের সমস্ত উষ্ণতা উবে গেছে। চোখ তুলে তাকায় তিথির চোখে। তিথি কোনভাবে কাপড়টা গায়ে জড়িয়ে নয়নের বুকে মাথা রেখে কাঁদছে। আর বলছে বিশ্বাস করো আর নাই করো, আমি তোমাকে ঠকাতে চাইনি। আমি অনেকবার তোমাকে কথাটা বলতে চেয়েছি। পারিনি। আমার বাবা মার সাথেও অনেক ঝগড়া হয়েছে। বিয়ে ভেঙ্গে দিতে চেয়েছি। অন্য একটা মোবাইল থেকে তোমাকে মিথ্যা মেসেজ পাঠিয়েছি। তুমি বিশ্বাস করনি। আজ আমি নিজে থেকে তোমাকে না দেখালে তুমি হয়তো আমাকে ভুল বুঝতে। এখন আমাকে গ্রহণ করা না করা দুটোই তোমার হাতে। আমাদের বিয়ে হয়েছে, তাতে অসুবিধা নেই। একঘরে না হোক অন্তত বারান্দায় একটু শোবার জায়গা পেলে আমার জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারব। তুমি শুধু আমাকে এটুকু দয়া করো।
নয়ন শুধু বলল - কিভাবে। তিথি বলল - ছোটবেলায় ঠাকুরঘরে পূজো দিতে গিয়ে শাড়ীতে আগুন লেগেছিল। মরে গেলে হয়তো ভালো হতো। অনেক চেষ্টা করেও মরতে পারিনি। বিধাতা হয়তো নিজের ইচ্ছাতেই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
নয়ন আলতো করে পরা শাড়ীর ভিতর দু'হাত ঢুকিয়ে তিথির বুকের কাপড়টা সরিয়ে নিয়ে নিজের লোমশ বুকে জায়গা করে দেয়। নরম শরীরের স্পর্শ নেয় আর চোখ দু'টোর দিকে তাকিয়ে বলে - আমি তো তোমার চোখ দু'টো আর মিষ্টি হাসিতে হারিয়েছিলাম। শরীর নিয়ে কখনও ভাবিনি। আজ যা দেখেছি তার কাছে ভালোবাসা কখনও ছোট হতে পারে না। বিধাতা হয়তো আমার জন্যই তোমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তুমিই পারো আমাকে সুখী করতে। নয়নের দুষ্টু চোখ দু'টো বাঁধা পরে আছে তিথির সেই মায়াময় চাহনিতে।
সকালে দরজার কড়া নাড়ার শব্দে খেয়াল হলো পরনের কাপড়গুলো সব এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদের ছায়া এই গল্পটি এখনো পড়া হয় নি কেন তাই ভাবছি ........তো শেষ পর্যন্ত সুন্দর গল্পটি পড়লাম , ভীষণ ভালো লিখেছেন .....অল্প পরিসরে অনেক কিছুই আছে ....
ধন্যবাদ রোদের ছায়া..আমার খুব ভালো লাগলো যে শেষ পর্যন্ত আমার লেখাটা পড়েছেন..আমিও চেষ্টা করি সবার লেখা পড়ার এবং আশাও করি যে আমার লেখাগুলোও সবাই পড়ুক..আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা...
রওশন জাহান অত্যন্ত চমৎকার গল্প ! অসাধারণ ! এরকম লেখাই তো পড়তে চাই ।
রওশন আপা..আশীষ রাখবেন যেন আপনাদের মনের মত লিখতে পারি..অনেক ধন্যবাদ....
মোঃ শামছুল আরেফিন গল্পের শেষে আবেগঘন মুহূর্তে চোখে পানি এসে গেল প্রায়। নয়নের মত ছেলেদের খুব দরকার। স্যালুট টু নয়ন অ্যান্ড হিজ ক্রিয়েটর প্রিয় ত্রিনয়ন ভাই। পারলে বোনাস পয়েন্ট সহ ৮ দিতাম। সেই সিস্টেম না থাকায় খারাপ লাগছে।
আরেফিন ভাই..আপনার ভোট আমার সাধনার ফসল..আর আপনার ভালো লাগা আমার বোনাস আর অসামান্য প্রেরণা..
আহমাদ মুকুল খুব সুন্দর গল্প। আপনার গল্পে সততা, প্রেম, মানবিকতা দারুন ফুটে উঠেছে। গল্পের মেসেজটি হৃদয়গ্রাহী।
মুকুল ভাই আপনার অসীম প্রেরণা আমাকে সত্যিই এগিয়ে যাবার সাহস যোগাচ্ছে..শুধু আমার লেখাগুলো পড়ে মন্তব্য পেলে আমার অনেক পাওয়া হয়ে যাবে..শুভ কামনা..
প্রদীপ খুব ভালো লাগলো দাদাভাই! অনেক অনেক শুভেছা রইল! সঙ্গে ভাইয়ের ভালোবাসা টুকু!
ধন্যবাদ ভাই অমূল্য জিনিসটুকুই দিলে..ভালো লাগলো...
আহমেদ সাবের আপনার সাবলীল লেখা আমাকে সব সময় আকৃষ্ট করে। এ গল্পটাও বেশ ভাল লাগল। তিথির শারীরিক ক্ষুতকে নয়ন ভালবাসার জোরে জয় করে নিয়েছে - নয়নের উদারতা প্রশংসার যোগ্য বইকি। ভাল থাকবেন।
সাবের ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য অপেক্ষার কমতি ছিল না..আগেই বলেছি আমি আপনার একজন ভক্ত..মেসেজও পাটিয়েছিলাম..এখনো আপনার মত কজনের লেখা আগে পড়তে চেষ্টা করি..খুব ভালো লাগলো আপনাকে পেয়ে..
মৃন্ময় মিজান সব পুরুষরাই যেন নয়নের মত হয় এই কামনা করি। আমরা পুরুষরা এত বেশি স্বার্থপর এবং নিষ্ঠুর প্রকৃতির হয়ে পড়েছি যে, এ ধরনের সমাপ্তি টানা গল্পগুলোকে ভীনগ্রহের মানুষের জীবনী বলে মনে হয়। চারদিকে বখাটেদের উৎপাত আর নিত্য নতুন তিথিদের আত্মহত্যায় কোন আশার আলোই চোখে পড়েনা। আপনার গল্পের মতই ভালবাসা বিরাজ করুক আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে। নারীরা পাক তাদের সঠিক মূল্যায়ন আর পুরুষরা মানুষ হয়ে উঠুক।
মিজান ভাই ভালো মন্দ আছে বলেই পৃথিবী..এত হতাশ কেন..সবকিছুই শেষ হয়ে যায়নি..কত অসংগতি মেনে নিয়ে হোক আর মনে নিয়ে হোক মানুষ ভালোবেসে যাচ্ছে সংসার করছে..এও কম কি..ধন্যবাদ আপনার কষ্ট মেশানো মন্তব্যের জন্য....
প্রিয়ম খুব খুব ভালো, সারা জাগানো
প্রিয়ম ভাই, ধন্যবাদ..ভালো লাগলো...
ম্যারিনা নাসরিন সীমা ঝরঝরে বাক্যে সাবলীল লেখায় মুগ্ধ হয়ে গেলাম । পরিণতিটা লেখককে মহানুভব করেছে । ধন্যবাদ ।
সীমা আপা আপনার মুগ্ধতা আমাকে ঋনী করলো..শুভ কামনা সতত...

০৭ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১১৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪