অগ্নীলা

গ্রাম-বাংলা (নভেম্বর ২০১১)

রুহুল আমীন রাজু
  • ২০
  • 0
  • ৮২
অগ্নীলার হাতে এই খামটি পেঁৗছার পর একশো চিঠি পূর্ন হলো । আর সেই সাথে চিঠির সেঞ্চুরী হয়ে গেলো। অগ্নীলার নাম ঠিকানা লিখে দশ টাকার নোটে তিন মাস পূর্বে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। মনের মানুষ চাই। এই বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ পর্যন্ত একশো জন মনের মানুষ চিঠি লিখেছে। তবে এ যুবক ব্যতিক্রম। এই যুবক মনের মানুষ হতে নয়, টাকায় কেন এ জাতীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া হল-এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। প্রতিবাদের বিষয়টি বেশ কঠিন। সাত দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে ভুল স্বীকার না করলে আদালতে মামলা করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অগ্নীলার ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো। দু'চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝরতে লাগল। জলের তোড়ে চিঠিটা ভিজে গিয়ে একাকার। এমনিতে চিঠির অত্যাচারে অতীষ্ঠ অগ্নীলা। এবার যদি মামলা মোকদ্দমা হয়!
এক ভয়ংকর মানসিক যন্ত্রণায় পড়ে গেছে সে। পাশাপাশি সামাজিক ভাবেও বিষয়টি আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হতে শুরু করেছে। এমন হওয়ারই কথা,গ্রামের অক্ষাত-অজ্ঞাত যুবতীর কাছে এভাবে চিঠির পর চিঠি আসবে বিষয়টা বেমানানই বটে।
তবে অগ্নীলা অখ্যাত এক মেয়ে হলেও দেখতে খুব সুন্দর। শুধু সুন্দর বললে অবিচার করা হবে। এক কথায় অনিন্দ্য সুন্দরী। আর এই সুন্দরই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রামের বখাটেদের উৎপাত সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অগ্নীলার কলেজ যাওয়ার পথে বখাটে যুবকরা রাস্তার মোড়ে ও দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে নানা অঙ্গ-ভঙ্গি করে থাকে। অগ্নীলাকে দেখা মাত্রই তারা শীষ দেয় এবং কুরুচীপূর্ন গান গায়।
চোখ মুখ বন্ধ করে এক নি:শ্বাসে প্রতিদিন কলেজে যেতে হয় অগ্নীলাকে। অথচ কলেজ যাওয়ার পথে রাস্তার দুুুু\'ধারে সবুজ বন আর কাশ ফুলের দৃশ্য গুলো দেখতে কতই না ইচ্ছে করে! ইচ্ছে করে রৌদ্র বিধৌত নদীর কলতান শুনতে। কিন্তু বখাটেদের কারনে এমন অপরুপ প্রাকৃতিক লাবন্য দর্শন থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাকে। অগ্নীলার প্রায়ই ইচ্ছে হয়, এর প্রতিবাদ করার। কড়া প্রতিবাদ। কিন্তুু তা আর হয়ে উঠে না। রাস্তার মোড়ে যে বখাটে দল শীষ দেয়, তারা সরকারী দল করে। দোকানের মোড়ে যারা শীষ দেয়, তারা বিরোধী দল করে। মোটর সাইকেলে চড়ে যে যুবকটি অগ্নীলার পিছু পিছু টহল দেয় ,সে পুলিশের এক বড় কর্তার ভাগ্নে। কাজেই এসব বখাটেদের ভয়ে সব নীরবে সহ্য করা ছাড়া আর কোন উপায়ন্তর নেই অগ্নীলার। এছাড়া তার পরিবারের পক্ষ থেকেও কড়া নিষেধাজ্ঞা আছে-এব্যাপারে কোন টু শব্দ না করার জন্য।
অগ্নীলার বাবা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত স্কুল মাষ্টার মাধব চক্রবর্তীর চিন্তা ভাবনা-পেনশনের টাকা গুলো হাতে পাওয়া মাত্রই মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দিবেন। এ ক\'টা দিন রামরাম হরে কৃঞ্চ-হরে কৃঞ্চ করে কাটানোই উত্তম। মাধব বাবুর ছেলে সন্তান নেই, একটি মাত্র মেয়ে। তাও আবার সংখ্যালঘু। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিমিরা পর্যন্ত বখাটেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে রেহাই পায়নি। থানা পুলিশ, সমাজ কেউই সিমিকে বাঁচাতে সাহায্য করেনি। বরং পুলিশ বখাটেদের পক্ষ নিয়ে সিমিকে আত্মহননের পথে যেতে বাধ্য করেছে। এভাবে কত ঘটনাইনা ঘটছে প্রতিদিন। ঘটনার পর মানব বন্ধন আর সভা সিম্পুজিয়ামে সীমাবদ্ধ থাকছে। হচ্ছে না কিছুই।
অগ্নীলা টাকায় বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিষয়ে যে চিঠি অত্যাচারে ভূগছে, এ কাজটিও বখাটেদের নতুন একটি আবিস্কার। মেয়েদের উত্যক্ত করার ভিন্ন কৌশল। কে বা কোন বখাটে দশ টাকার নোটে...মনের মানুষ চাই... এই আহ্বান জানিয়ে অগ্নীলার নাম ঠিকানা প্রকাশ করেছে। তার পর থেকে চিঠি আক্রমন শুরু হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। মনের মানুষদের ভালোবাসার লেখালেখিতে অগ্নীলার কাছে ভালোবাসা শব্দটি ভালফাঁসায় পরিনত হয়েছে। অথচ বুকের গভীরে অগ্নীলা ভালোবাসার একটি বীজ বপন করেছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিচর্যার অভাবে অংকুরিত হচ্ছে না তা। এত গুলো চিঠি এলো তবু তারটা এলো না। স্বপ্নের সেই যুবকের সাথে অগ্নীলার কথা হয় শুধু চোখের নীরব ভাষায়।
অগ্নীলা সবই বুঝে। বুঝে যুবকটিও। বুঝেনা হয়তো সমাজ-ধর্ম। এই ..... সমাজ আর ধর্মের দেয়ালের কারনে একজন মানুষ আর একজন মানুষকে আপন করে নিতে পারছেনা।
অগ্নীলার মনে চাপা এক লালিত বাসনা-বি.এ টা পাশ করার পর এই দেয়াল সে একদিন ভাঙ্গবে।
অবশেষে সেঞ্চুরী পুর্নকারী পত্র লেখক প্রতিবাদকারীর কাছে লিখতে বাধ্য হয় অগ্নীলা। ক\'দিন পর এর উত্তর এলো।
অগ্নীলা,
শুভেচ্ছা সহ লিখছি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে আদালতে যাচ্ছি , ঠিক এসময় ডাক পিয়ন এসে হাজির। আপনার চিঠি পেয়ে বিস্তারিত সব বুঝতে পারলাম। আসলে সত্যিই আমরা এক নোংরা সমাজে বাস করছি। এই দেখুন না আমিও না জেনে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচিছলাম। আমার কথা আর কি বলবো-সমাজে আরো উচুঁ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের কথাই ধরুন , একটা মেয়ে ধর্ষণ হওয়ার পর দ্বিতীয় বার ধর্ষণ করছে সংবাদপত্র ওয়ালারা। পত্রিকার কাটতি বাড়াতে ধর্ষিতার নামধাম ও ছবি ছাপিয়ে দিচ্ছে তারা। কি ঠান্ডামাথায় অন্যরকম দ্বিতীয় ধর্ষণ, তাই না ?
যাক এসব নীতি কথা। আমি একজন সাংবাদিক। একটি দৈনিক কাগজে গ্রাম বাংলার পাতার দায়িত্বে আছি। সামপ্রতিক বখাটেদের অত্যাচারে যুবতী মেয়েদের আত্মহননের উপর আমি গবেষণামূলক একটি রিপোর্ট তৈরী করছি। ইতিমধ্যে সিমিসহ বেশ কয়েকজন আত্নহননকারীর ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। আপনাদের কটিয়াদী উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামে আত্মহননকারী রোজীনাদের বাড়ি আসবো শীঘ্রই। তখন আপনার সাথে দেখা হবে আমার। আপনাকে নিয়েও একটা রিপোর্ট করবো ভাবছি। আপনি তৈরী থাকবেন, কেমন।
ইতি
সৈকত হাসান
বিভাগীয় সম্পাদক (গ্রাম বাংলা বিভাগ)
দৈনিক নতুন ধারা, ঢাকা।

বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো সাংবাদিক সৈকত হাসান এখানো আসছে না। অগ্নীলা প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকে সাংবাদিকের জন্যে। অগ্নীলার ভাবনা, এসব বখাটেদের বিরুদ্ধে একটা কিছু করা দরকার। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। সাংবাদিক সৈকত হাসান তাদের গ্রামে এলে বজ্জাত বখাটেদের বিরুদ্ধে একটা শক্ত নিউজ করতে বলা হবে। শয়তানগুলির ছবি তুলে পত্রিকায় ছাপা হলে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া হবে।
অগ্নীলার বাবা এব্যাপারে চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে বহু নালিশ এবং থানায় জিডি পর্যন্ত করেছেন। কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো আরো কথা শোনাচ্ছে তারা। চেয়ারম্যানের বক্তব্য-এমন সুন্দরী মাইয়া ঘরে রাহুনের দরকার কি? জলদি বিয়া শাদি দিয়া দেন মাধব বাবু। দারোগা সাহেবের বক্তব্য-পুলিশ কি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিউটি করবে নাকি?
অগ্নীলার ভাবতে কষ্ট লাগে-এদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী নেত্রীও মহিলা। অথচ এরপরও মহিলাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা দুরের কথা, স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগটুকু সৃষ্টি হয়নি এখনো। হবেই বা কি করে দু\'নেত্রীর মুখে গণতন্ত্র-গণতন্ত্র বললেও অন্তরে হিংসাতন্ত্র বিরাজ করছে। নিজেদের ছেলে মেয়েদের বিয়ে জন্মদিন অনুষ্ঠানে একে অপরের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যান-অথচ রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ থাকা সত্ত্বেও দেশের জন্য এক টেবিলে বসতে পারেন না তারা।
অগ্নীলার মতে এ কারণেই দেশের সামাজিক পরিস্থিতি এতোটা নীচে নেমে গেছে। বেকারত্বের অভিশাপের দরুণ যুব সমাজ আজ বখাটে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে নিমজ্জিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব বখাটেদের বিরুদ্ধে বাস্তবমুখী কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অগ্নীলা অসহায়ের মতো পরাধীন দিন কাটাচ্ছে।
অপেক্ষায় থাকতে থাকতে অগ্নীলা ক্লান্ত। দু'মাস পেরিয়ে গেছে, এখনো সাংবাদিক সৈকত হাসান আসার নাম গন্ধ নেই। তবুও অপেক্ষা করতে ভাল লাগে তার। এই ভাল লাগা একটু একটু করে এক সময় তা মনের অজান্তেই ভালবাসায় রূপান্তরিত হয়। সৈকত হাসানকে ভালবেসে ফেলে অগ্নীলা। অগ্নীলার হৃদয়ের গভীরে বপনকৃত পূর্বের বীজ ধ্বংস হয়ে যায়। বখাটেদের সীমাহীন যন্ত্রণা আর হঠাৎ ভালবাসার নতুন সূর্য উকি দেওয়ায় অগ্নীলার হৃদয়ে রক্তপাতহীন এক নীরব অভু্যত্থান ঘটে যায়। এই অভু্যত্থানে সাংবাদিক সৈকত হাসান অগ্নীলার হৃদয় রাজ্যের রাজা হিসেবে আরোহন করে।
সৈকত হাসান অন্য এক চিঠিতে লিখেছে, অগ্নীলাকে সে যেভাবেই হোক এই যন্ত্রনা থেকে তাকে মুক্ত করবেই। ধর্মের দেয়াল ভেঙ্গে অগ্নীলাকে বাঁচাতে সৈকত প্রস্তুত। এ কথার পরই অগ্নীলার ভেতরে ঝড় বয়ে যায়। আর এই ঝড় থেকেই ঘটে যায় নতুন বীজ বপনের অভু্যত্থান।
নদীতে ডুবে যাওয়া কোনো মানুষ যদি এক টুকরো খড়ও ভাসমান দেখতে পায়, তখন এতে অবলম্বন করেই সে বাঁচার স্বপ্ন দেখে। আর সৈকত হাসান তো একজন মানুষ। মানবতাবাদী সাহসী মানুষ। কাজেই অদৃশ্য নদীর অথৈ জলে ডুবে যাওয়া অগ্নীলা তাকে নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখবেনা কেন?
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ায় সাংবাদিক সৈকত হাসান মফস্বলে যাওয়ার সময় পাচ্ছে না। ডেস্কে রাত দিন কাজ করতে হচ্ছে তাকে। বিকাল পাঁচটার পর থেকে পত্রিকা অফিসের ফ্যাঙ্, ই-মেইল ও টেলিফোন সরগরম হয়ে উঠে। আজ ব্যতিক্রম কিছু ঘটতে যাচ্ছে নাকি? দেখতে দেখতে রাত নয়টা বেজে গেছে অথচ এখনও কোনো গরম খবর আসছে না। দেশ কি ঠান্ডা হয়ে গেল। যাক ভালই হলো, আগামীকাল কোনো দুর্ঘটনা হাঙ্গামার খরব ছাপাতে হবে না। এসব ভাবনার মাঝে হঠাৎ একটি ফ্যাঙ্ বার্তা আসে কিশোরগঞ্জ থেকে।
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদীতে মা-বাবাকে বেঁধে রেখে কন্যাকে গণধর্ষণ \\
কিশোরগঞ্জ,কটিয়াদী থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার শিমুলডাঙ্গা গ্রামে সংখ্যালঘু এক পরিবারের ষোড়শী কন্যা পাঁচ নরপশু কতর্ৃক ধর্ষিত হয়েছে। জানা গেছে, আজ রাত আটটার সময় শিমুলডাঙ্গা গ্রামের স্কুল মাষ্টার মাধব বাবুর বাড়ীতে একদল যুবক হানা দেয়। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দুবর্ৃত্তরা অগ্নীলাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে বাড়ীর পাশের এক পরিত্যক্ত ঘরে দুর্বৃত্তরা অগ্নীলাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তার গোঙাণীর শব্দ শুনে গ্রামবাসী অগ্নীলাকে উদ্ধার করে।
অভিযোগে প্রকাশ, ধর্ষকরা অগ্নীলাকে প্রতিদিনই উত্যক্ত করতো। এব্যাপারে অগ্নীলার বাবা মাধব চক্রবর্তী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলাটি ধর্ষণ মামলা হিসেবে নিতে রাজী হয়নি। ধর্ষকরা প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হওয়ায় পুলিশ মামলা গ্রহনে নানান তালবাহানা করছে। একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, মোটা অংকের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে পুলিশ ধর্ষকদের রক্ষার জন্য ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই ঘটনায় এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
ফ্যাঙ্ পড়ে ঝড় উঠেছে সৈকত হাসানেরও। প্রচন্ড এক ঘূর্ণি ঝড়। নিউজ প্রিন্ট কাগজের প্যাডে কলমটা বিদ্ধ করে উঠে দাঁড়ালো। সে কাউকে কিছু না বলে দ্রুত নিচে নেমে গিয়ে মটর সাইকেলে চড়ে বসলো। মটর সাইকেল ষ্টার্ট দিয়ে বেহুশ হয়ে ছুটতে লাগলো কিশোরগঞ্জের দিকে।
কটিয়াদী বাসষ্টেন্ডে পেঁৗছার সামান্য কিছু দূর আগেই গাড়িটি বদ্ধ হয়ে গেল। রাত তখন তিনটা বাজে। ফ্লাগ পরিস্কার সহ বিভিন্ন কলাকৌশল চালিয়েও গাড়ি ষ্টার্ট করানো গেল না।
নিরুপায় হয়ে মহাসড়কের পাশে মটর সাইকেল ফেলে রেখে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলো সৈকত হাসান। অগ্নীলা চিঠিতে তাদের বাড়ীর দিক নির্দেশনা দিয়েছিলো সৈকত হাসানকে। কটিয়াদী বাসষ্ট্যাণ্ডের খাঁন পেট্টোল পাম্পের দক্ষিণ পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি চলে গেছে দুই কিলোমিটার পরেই ব্রক্ষপুত্র নদী। নদীর তীরেই শিমুলডাঙ্গা বাজার। বাজার অতিক্রম করে যে তালগাছটি পড়বে এ বাড়ীটিই অগ্নীলাদের। বাসষ্ট্যান্ডে এসে শিমুলডাঙ্গার পথ চিনে নিতে একটুও কষ্ট হয়নি সৈকত হাসানের। সড়কের পাশে দূরত্ব বোর্ডে স্পষ্ট লেখা শিমুলডাঙ্গা ০২ কি: মি:। শিমুলডাঙ্গার পথ চিনতে অসুবিধা না হলেও হাঁটতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
শ্রাবণের আকাশ। আকাশটা সাংঘাতিক অভিমানী আজ। ঘনকালো মেঘগুলো চাঁদটাকে ঢেকে দিয়েছে। যার ফলে পৃথিবীটা গহীন অন্ধকারে আচ্ছন্ন। জন মানব শূন্য গভীর অন্ধকার রাতে একা আর হাঁটতে পারছিলো না সৈকত। ঠিক এমন সময় রাস্তার বাঁক কাটার পর হঠাৎ আলোর রশ্মি এসে পড়লো পথে। এখন খুব সহজেই সামনে এগুনো যাচ্ছে। সামনে যতো এগুচ্ছে আলো ততো বাড়ছে। কিছুদুর যাওয়ার পর দেখা গেল শ্মশান ঘাটে আগুন জ্বলছে। বিশাল সে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। আগুনের চারপাশে শ'শ মানুষের ভিড়।
কাছে গিয়ে দর্শনার্থীদের মুখে শোনা গেল, ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যার চিতা জ্বলছে, মেয়েটির নাম অগ্নীলা।
অভিমানী মেঘলা আকাশে এখনো বর্ষণ শুরু করেনি। বর্ষণ শুরু হয়েছে সাংবাদিক সৈকত হাসানের দু\'চোখে।
নি:শব্দ উচ্চারণের সাংবাদিক সৈকত হাসান বললো অগ্নীলা আমরা সবাই পাষানের মতো অসময়ে তোমায় আগুন জ্বালালাম। আর তুমি-তুমি জ্বালালে আলো। যে আলোয় আজ আমার পথ দেখা হলো। এ আলো আমি ধরে রাখবো। আমৃতু্য ধরে রাখবো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মনির মুকুল লেখাটি কয়েকদিন আগে একবার পড়তে শুরু করেছিলাম কিন্তু ব্যস্ততার কারণে শেষ করতে পারিনি। আজ আবার নতুন করে শুরু থেকে পড়ে শেষ করলাম। গত মাসের মত এবারও আমাদের সমাজকে আরেকটা গুতা দিয়ে দিলেন। তবু আমাদের চোখ খুলবে না। কারণ আমাদের দেশে গণতন্ত্র নেই’ আছে হিংসাতন্ত্র। এটাই আমাদের নীতি হয়ে গেছে। ভালো লাগার পরশ বুলিয়ে দিয়ে গেলেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
রোদের ছায়া গল্পে গ্রামের সমাজ চিত্র কিছুটা দেখতে পেলাম আরো বেশি আসতে পারত কিন্তু. সমাজের দুষ্টু ক্ষত গুলো আসলেই মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে/
sakil সামাজিক সমস্যার উপর লেখা বেশ সুন্দর একটি গল্প . অনেক শুভকামনা রইল .
সালেহ মাহমুদ অসাধারণ একটি গল্প। খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ রুহুল আমিন রাজু।
সেলিনা ইসলাম সমসাময়িক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে নিয়ে লেখার জন্য লেখককে সাধুবাদ জানাই . শুভকামনা
মোঃ আক্তারুজ্জামান চমৎকার বিষয় নিয়ে লিখেছেন কিন্তু তাড়াহুড়া বশতঃ কোথাও কোথাও হোঁচট খেয়েছেন আর একটু স্থির হয়ে লিখলে আমার মনে হয় অসাধারণ একটা গল্প হয়ে উঠত। অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।
ঘাসফুল গল্পটি পড়ে খুব ব্যতিথ হলাম।
নিলাঞ্জনা নীল আমাদের সমাজের কিছু নষ্ট মানুষিকতার অমানুষের জন্য অগ্নিলাদের এই পরিনতি.........
মামুন ম. আজিজ খুবই ভালো একটা বিষয় খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।

০৬ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪