ঘড়িতে তখন রাত দশটার কাঁটা ছুঁই ছুঁই। বাংলোতে পেঁৗছা মাত্রই ষাটোর্ধো এক লোক ছুটে এলো।
ঃ ছালাম স্যার, আপনি কি জনাব শাহেদ রহমান? নিশ্চয়ই আপনি!
শাহেদ হ্যাঁ বলতেই লোকটি খুব সুন্দর হাসি মাখা মুখে আবারো ছালাম জানালো।
ঃ আসুন স্যার আসুন, আমি আপনার অপেক্ষাতেই ছিলাম। এই বাংলোতে এ পর্যন্ত যতো নতুন সাহেব এসেছেন, আমিই প্রথমে অভিনন্দনটা জানাই। আমি এই বাংলোর দারোয়ান মতি মিয়া। মতি মিয়া শাহেদের বেডিংপত্র রিঙ্া থেকে ভিতরে নিয়ে গেলো। শাহেদের থাকার ঘরটি আগে থেকেই সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। শাহেদ হাত মুখ ধূয়ে কাপড় পাল্টালো। মতি মিয়া খাবার নিয়ে হাজির।
ঃ স্যার খাবার নিয়ে এসেছি। কই মাছের ভাজি, সবজি আর ডাউল।
ঃ মতি চাচা খাবারটা টেবিলে রেখে যান। আমি একটু বিশ্রাম নিয়ে তার পরে খাবো।
ঃ জি স্যার, আমি বাইরে আছি। যা গরম পড়েছে ঘরে থাকার উপায় নাই। মতি মিয়া চলে গেল। খুব গরম পড়েছে। বিদু্যৎ এই যাচ্ছে এই আসছে। এটা কি লোডশ্যাডিং না বিদু্যৎ অত্যাচার?
জীবনের এই প্রথম কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলো শাহেদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলা ভূমি সিলেটের একটি চা বাগানের এসিসট্যান্ট ম্যানেজার-ভাবতেই কেমন অবাক লাগে! মাঝে মাঝে শাহেদ বিশ্বাসই করতে পারে না যে, চাকুরী নামক সোনার হরিণ তার হাতে। ওর কেবলি মনে হয়, ও এখানে বেড়াতে এসেছে। ঝির ঝির বাতাস আর হাসনাহেনা ফুলের গন্ধে মুগ্ধ করে রেখেছে বাংলোটি।
রাতের খাবার খেয়ে সারে বারোটার দিকে ঘুমাতে গেলো শাহেদ। এতো লম্বা ভ্রমণ ক্লান্তি ভর করে আছে সমস্ত শরীর। বিছানায় গা হেলিয়ে দেওয়া মাত্রই চোখের পাতা দুটো আত্মসমর্পন জানাতে প্রস্তুত। হঠাৎ মোবাইল ফোনের শব্দে কিছুটা কেঁপে উঠলো শাহেদ। গভীর রাতের মোবাইল ফোন মানুষকে সামান্য ভয় পাইয়ে দেয় বটে।
ঃ হ্যালো-হ্যালো শাহেদ স্পিকিং।
ও পাশ থেকে নারী কন্ঠে ভেসে এলো অপরাধের সুর। দুঃখিত আমি বোটন টিপতে গিয়ে সিঙ্ নাম্বারের স্থলে ভূল করে নাইন এ চাপ দিয়ে ফেলেছি। কিছু মনে করবেন না প্লীজ।
শাহেদ স্বাভাবিক রাগ্বত সুরে বললো, কিছু একদম না মনে করে পারছি না। আপনি যদি আশি বছরের বৃদ্ধা কেউ হতেন তাহলে গভীর রাতে এই ভূল মেনে নিতাম। কিন্তু ইয়াং একটা মেয়ে হয়ে এভাবে ভূল করে মানুষের ঘুম নষ্ট করবেন এটা ঠিক না।
ঃ অনিচ্ছাকৃত ভাবে আপনাকে ডিষ্ট্রাব করার জন্য আমি আবারও দুঃখ প্রকাশ করছি।
হু, বলে শাহেদ মোবাইল সেট রেখে দিবে এমন সময় মেয়েটি বললো, এবার ইচ্ছাকৃত একটা ডিষ্ট্রাব করতে চাই- একটা কাজ করবেন প্লীজ...?
ঃ মহা যন্ত্রণায় পড়লামতো দেখছি! এত রাতে কি কাজ করতে বলছেন?
ঃ না মানে... মোবাইল সেটটা এই কিছুক্ষণ টেবিলে রাখুননা দয়া করে।
ঃ কেন বলুনতো? প্রচন্ড বিরক্ত সুরে বললো শাহেদ।
ঃ আপনার ওখানে কে যেন বাঁশি বাজাচ্ছে, শুনতে খুব ভালো লাগছে।
শাহেদ লক্ষ্য করলো, সত্যিইতো কি পাগল করা সুর! শাহেদ মোবাইল সেটটি টেবিলে রেখে বাইরে গেলো। মতি মিয়া বারান্দার এক কোণে বসে কি করুণ সুরেইনা বাঁশি বাজাচ্ছে। এত কাছে থেকেও এতক্ষণ শাহেদের কানে বাঁশির এই শব্দ কেন পৌছলো না ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না। অথচ রং নম্বরের এই মেয়েটি কিনা ঘুমন্তকে জাগিয়ে অচেনা দূর থেকে বাঁশি শুনছে। তাও আবার মোবাইল ফোনে। শাহেদ মতি মিয়ার কাছা কাছি গিয়ে দাঁড়ালো। কি অদ্ভুত সুর! বুকে কেমন তীরের মত বিদ্ধ করছে। শাহেদ লক্ষ্য করলো, মতি মিয়ার দু\'চোখে শ্রাবণের বৃষ্টি ধারা। শাহেদের চোখে চোখ পড়তেই মতি মিয়া থেমে গেল।
ঃ স্যার আপনি এখনো ঘুমাননি?
ঃ ঘুম ভেঙ্গে গেছে মতি চাচা। আপনি থামলেন কেন? বাজান। আসুন আমার রুমে এসে বাঁশি বাজান। আজ রাতটা না হয় বাঁশি শুনেই কাটিয়ে দেব।
স্যারের বাঁশি শোনার আগ্রহ দেখে মতি মিয়া ভীষণ খুশি হলো। মতি মিয়া স্যারের রুমে গেলো।
শাহেদ মোবাইল সেট কানে নিয়ে কয়েকবার হ্যালো-হ্যালো বলল। ওপাশ থেকে কোন উত্তর আসছে না। লাইন কেটে গেছে।
ঃ জানেন মতি চাচা, এতক্ষণ একটা মেয়ে মোবাইলে আপনার বাঁশি শুনছিল। সেজন্য আপনাকে মোবাইলের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলাম। মেয়েটির ভাগ্য মন্দ লাইনটা কেটে গেলো।
ঃ ছোবহান আল্লাহ্- মোবাইলে আমার বাঁশি শুনছিল! মেয়েটির পরিচয় কী ? ও বুঝেছি স্যার। মৃদু হাসলো মতি মিয়া।
শাহেদ লক্ষ্য করলো-মতি মিয়ার হাসি যেন ঠিক নিষ্পাপ শিশুর মত। শাহেদ বললো, না মেয়েটিকে আমি চিনি না। রং নাম্বারে ফোন করেছিল সে।
ঃ যাক কি আর করা। আবার যদি ফোন করে আমাকে খবর দিয়েন স্যার-উনাকে বাঁশি শোনাবো ইনশাল্লাহ্।
ঃ একটু বসুন মতি চাচা, গল্প করি।
মতি মিয়া টুলে বসলো।
ঃ আচ্ছা, আপনিতো দেখছি বেশ সুন্দর করে কথা বলেন।
ঃ সুন্দর মানুষের সাথে থাকিতো স্যার- তাই বোধহয় সুন্দর করে বলতে পারি।
ঃ পরিবারে কে কে আছে আপনার?
ঃ আমি আর এই বাঁশি। একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়লো মতি মিয়া।
ঃ কেন আপনি বিয়ে করেননি?
ঃ করেছিলাম। মতি মিয়া নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলো।
ঃ বুঝতে পেরেছি-আপনার ভেতরে কষ্টরা লুকিয়ে আছে।
ঃ না স্যার এখন আর তেমন কোন কষ্ট নাই। সব সহ্য হয়ে গেছে। মনের নাম যে স্যার মহাশয়। মতি মিয়া কিছুক্ষণ নীরব হয়ে রইল। তার পর বলতে শুরু করলো, আমি ছিলাম একাত্তরের একজন মুক্তিযোদ্ধা। এই খবর রাজাকাররা জানিয়ে দেয় আর্মি ক্যাম্পে। পাক বাহিনী একদিন গভীর রাতে আমার বাড়ীতে হানা দেয়। আমার স্ত্রীর ইজ্জত লুট করে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তারা। অপমানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সে গলায় দড়ি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। ৩ বছরের একমাত্র মেয়েটি যায় হারিয়ে। দেশ স্বাধীন হয়।
কিন্তু মেয়েটাকে আর খুঁজে পেলাম না। সেই থেকে আমার পরিবারের নতুন সদস্য এই বাঁশি। বাঁশিটাও মনে হচ্ছে আমার হাত ছাড়া হয়ে যাবে। হঠাৎ হঠাৎ ইচ্ছা করে...
ঃ থামলেন কেন? কি ইচ্ছে করে বলুন।
ঃ স্যার ইচ্ছা করে, একাত্তরের অস্ত্রটা আবার হাতে ধরি।
ঃ তা আবার কেন? কেন জানেন স্যার? রাজাকারদের গাড়ীতে যখন পতাকা উড়তে দেখি আর মুক্তিযোদ্ধাদের দেখি ভিক্ষা করেত তখন আর বাঁশি বাজাইতে স্যার ইচ্ছা করে না......। শিশুর মত হাসি মাখা মতি মিয়ার চোখমুখ অগ্নীমূর্তির রূপ ধারণ করলো।
ঃ মতি চাচা এ নিয়ে কষ্ট পেলে চলবে না। এটাই যে গণতন্ত্র। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই এমপি হবে মন্ত্রীও হবে।
ঃ না স্যার না! দেশে চিহ্নিত রাজাকারকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার বন্ধ করতে হবে। করতেই হবে।
ঃ মতি চাচা, মানবতা বিরোধী রাজাকার আলবদরদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। আপনার এবং আমাদের সকলেরই ক্ষোভের অবসান হবে। হবেই। শাহেদ ভাবছে নতুন চাকুরী কি বলতে গিয়ে কি হয়। মালিক কোন রাজনৈতিক দলের লোক কে জানে? সে ঘুমানোর কথা বলে মতি মিয়াকেও ঘুমানোর জন্য যেতে বললো। মতি মিয়া চলে যায়।
রাত পোহালে জীবনের প্রথম কর্মক্ষেত্রে পদার্পন। সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগতে হবে। শাহেদ আর কোন কিছু মাথায় না নিয়ে শুধু ঘুমের চিন্তায় মগ্ন। ঘুম ঘুম চোখে কিছুক্ষণ পর ওর কানে ভেসে আসছে মতি মিয়ার বাঁশির শব্দ। রাতের নিস্তব্দতায় বাঁশির শব্দ এখন আগের চেয়ে আরও করুণ লাগছে। শাহেদ মনে মনে ভাবছে, আবার ফোন করলে অনায়াশে বাঁশি শুনতে পারতো মেয়েটি।
বেশ ভালই লাগছে চাকুরীটা। অফিসের চারদিকে সবুজের বিশাল সমারোহ। পাখির ডাকে ভাঙছে ঘুম। মতি মিয়ার বাঁশিতে নিদ্রাদেবীর কোলে আরোহন করছে প্রতিদিন। তবে একটা অপেক্ষা মনের অজান্তেই কেন জানি তাড়িয়ে ফিরছে শাহেদকে। সেই রং নাম্বারের মেয়েটির কণ্ঠ। অদ্ভুত তার কণ্ঠ। যেন মতি চাচার বাঁশি। মধ্য রাতে মোবাইল ফোন বেজে উঠলেই মনে হয়-এই বুঝি সেই মেয়েটি, কিন্তু না।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়-মেয়েটির নাম্বারে কল করতে। তার নাম্বারটি "রংগার্ল" নামে মোবাইল সেটে সেভ করে রেখেছে সে। বহুবার নাম্বারটিতে সেন্ড করার প্রস্তুতি নিয়েও তা করা হয়নি- অনধিকার চর্চার ভয়ে।
একদিন সত্যি সত্যি মাঝ রাতে বেজে উঠল "রংগার্ল" এর। শাহেদের সাথে সামান্য সৌজন্যতামূলক আলাপ চারিতার পর বাঁশি শুনতে চায়লো। এইদিন মতি মিয়া ছিল অসুস্থ। জ্বরে কাঁতরাচ্ছিলো। শাহেদ বিষয়টি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বললো, যদি কিছু মনে না করেন আপনি অনুমতি দিলে মতি চাচা সুস্থ হয়ে উঠলে আমিই রিং দিবো আপনাকে।
ঃ আমাকে বাঁশি শোনানোয় আপনার আগ্রহ দেখে খুশি হয়েছি খুব। থ্যাংক্স ফর ইউ।
ঃ অয়েলকাম। আচ্ছা, আজও কি ভূল করে ফোন করেছিলেন?
ঃ না। আজ ভূল করে নয়, ইচ্ছে করেই ফোন করেছি। কে বাঁশি বাজায় আপনার ওখানে?
ঃ একজন মুক্তিযোদ্ধা। নাম মতি মিয়া। তিনি আমার এখানকার প্রহরী।
ঃ রিয়্যালি, খুব সুন্দর বাজান তিনি।
ঃ মতি চাচার বাঁশি আপনার কন্ঠের মতই সুন্দর। ভূল বললাম নাতো?
ঃ তাই নাকি? আমি অসুন্দরতো, তাই বোধহয়....।
ঃ আর আমি যদি বলি আপনি সুন্দর, তাই আপনার কন্ঠও সুন্দর।
ঃ ধন্যবাদ। তো অদেখাকে অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, কোকিল কালো বলেই তার কন্ঠ এতো মধুর করেছেন সৃষ্টিকর্তা। আরো যদি বলি- সাগর দেখতে খুব সুন্দর, "সাগরের কন্ঠ"... আই মিন ঢেউয়ের শব্দ ভীষণ ভয়ংকর। আসলে সৃষ্টিকর্তা সব সুন্দরের মাঝেই একটা ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখবেন, আপনার ওখানে যে মুক্তিযোদ্ধা বাঁশি বাজায় তার মধুর সুরটা আসছে কতইনা কষ্টের দহন থেকে।
ঃ মানুষতো মনের সুখেও বাঁশি বাজায়-গান গায়।
ঃ হঁ্যা বাজায়, গায়। সুখের সুর ক্ষণস্থায়ী। কষ্টের সুর দীর্ঘস্থায়ী।
ঃ তাহলেতো বলতে পারি ক্ষতচিহ্নও এক প্রকার অলংকার।
ঃ হ্যাঁ বলতে পারেন। কবি সাহিত্যিকরা অনেক কিছুই বলতে পারেন।
খুব হাসতে লাগলো মেয়েটি।
ঃ দেখুন আমি এই জাতীয় কেউ নই। সাধারণ ছাপোষা একজন মানুষ। আপনার নামটা জানা হলোনা এখনো।
ঃ নূপুর-বলা মাত্রই লাইনটি কেটে গেল।
আবার অপেক্ষার পালা। দিন কেটে যায় নূপুরের ফোন আর আসে না। শাহেদ অনেকবার ট্রায় করেছে শুধু ভেসে আসছে- 'দুঃখিত এই মুহুর্তে মোবাইল সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না , একটু পরে আবার ডায়াল করুন।' কি হলো নূপুরের...? ভেবে পায়না শাহেদ। অপেক্ষা করার যন্ত্রনা কি যে ভয়াবহ তা মর্মে মর্মে উপলব্দি করছে সে। ফোন নামক অপেক্ষার যন্ত্রণা। কোন কিছুতেই মন বসছে না তার। অফিসে কর্মবীর শাহেদ হিসাবে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল অল্পদিনে। সেই খ্যাতি এখন চরম ভাবে ম্লান হওয়ার পথে।
এভাবে অনেকদিন পর অপেক্ষার যন্ত্রনার পালা শেষ হয়। হঠাৎ একদিন আবার ফোন আসে নূপুরের। নূপুর এখন আর ভূল এবং শুধু বাঁশি শুনতেই নয়, সে প্রতিদিন ফোন করে মধ্যরাতে। ফোন করে শাহেদও। কথায় কথায় রাত কেটে যায় ওদের।
অবাক বিষয় - কথায় কথায় বেশ কিছুদিন কেটে গেল অথচ কেউ কাউকে দেখেনি। শাহেদ বহুবার বলেছে মুখোমুখি হতে। নূপুরের জন্য তা হচ্ছে না। আজ নয় কাল নয় পরশু এভাবেই দিন অতিবাহিত করছে নূপুর।
শাহেদ এখন নাছোড়বান্দা। ইতি মধ্যে নূপুরের কাছে শাহেদের অনেকগুলি দফা ছিল। সব দফা এক দফায় রূপ নিয়েছে। এক দফার এক দাবী - নূপুরকে আগামী শুক্রবার সকাল দশটায় জাফলংয়ে আসতেই হবে। মোবাইল ফোনে আর নয়। এবার কথা হবে সামনা সামনি। হাত ধরে দু'জন ঝর্নার বয়ে চলা ঝির ঝির পানিতে হেঁটে বেড়াবে। হাটঁতে হাঁটতে চলে যাবে দূরে, অনেক দূরে-অনেকটা পথ। পথেই কেটে যাবে সকাল দুপুর বিকাল গোধুলী। আসবে সন্ধ্যা। সন্ধ্যার আধাঁরীতে ওরা হারিয়ে যাবে ভালবাসার রাত্রিতে। ভোরের সূর্য্যের আলোয় আবার খুঁজে পাবে হারানো পথ।
কথামত নূপুর নীল শাড়ী পড়ে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছালো। সে সামান্য দূর থেকে লক্ষ্য করলো শাহেদও উপস্থিত ধুসর রঙের পাঞ্জাবী পরে। অপেক্ষারত শাহেদ ঝর্নার সামনে বসে বিরামহীনভাবে সিগারেট ফুকছে। দৃশ্যটি দেখে নূপুরের খুব রাগ হলো। এত নিষ্পাপ মুখে জ্বলন্ত সিগারেট মানাচ্ছে না। নূপুর ভীরু ভীরু পায়ে এগুচ্ছে। নূপুর ভাবছে কাছে গিয়েই সিগারেটটা ছু মেরে কেঁড়ে নিয়ে তা ঝর্নায় ফেলে দিবে। পরক্ষনই আবার ভাবছে, এটা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়না? হলে হোক। ধূমপান বিষপান। বেশ কিছুটা কাছে গিয়ে নূপুর দেখতে পেল, শাহেদ পকেট থেকে একটি লাল রঙের ছোট বঙ্ বের করলো। কি আছে ঐ বঙ্?ে কৌতুহলের অবসান ঘটলো সঙ্গে সঙ্গেই। শাহেদ বঙ্ থেকে এক জোড়া রূপার নূপুর বের করে নাড়া-চাড়া করতে লাগলো।
নূপুরটি দেখে থমকে যায় নূপুর! নূপুরটি নিশ্চয়ই তাকে প্রেজেন্ট করার জন্য , পা আর এক ইঞ্চিও সামনে এগুচ্ছে না। অবশেষে পিছু ফিরে যেতে বাধ্য হলো সে। নূপুর জানে - তার এই ফিরে যাওয়ায় শাহেদ কষ্ট পাবে, ভীষণ কষ্ট। তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে শাহেদ এক পর্যায়ে তাকে ছলনাময়ী ভেবে নূপুরটি ঝর্ণার জলে ছুঁড়ে ফেলে দিবে। নূপুর চাপা কান্না নিয়ে মনে মনে বললো, শাহেদ তাই করুক। ক্র্যাচে নির্ভর করে চলা তার এক পায়ে নূপুর শোভা পাবে না।
০৬ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৩৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪