জলোচ্ছাস এবং আসমানী

পরিবার (এপ্রিল ২০১৩)

নুরুল্লাহ মাসুম
  • ১৩
  • ১৪
হুসফিরা আসতি আসমানি, তরেই খোঁজলাম
ডাইনে-বামে, এদিক-সেদিক
কোনহানে পাইলাম না।

রাইতের কালে হুইছিলাম
একলগে- এক বিছানায়, আর মনে নাই-
হাচাই কই আসমানী, আর মনে নাই।

ক্যাদা মাটি আর
পাশে আছে কত্ত মরা গরু-ছাগল
পেটফুলা বহুত মানুষ দেখলাম
কিন্তুক- তরে পাইলাম না।

চোখটা ঝাপ্সা লাইগলো
চলি গেইলাম হপ্পনের রাজ্যি-
য্যান- হাচাই হেই দিন!

বিয়ন বেলা উডি
মেলায় যাবার কথা আছিল-
তোর লাগি আলতা আর
ঠোট মালিস আনুম- কথা দিছিলাম।

ঠোটে লাগাবি, আদর করুম,
গাল লাল হইব-
সব কথা কওনও যায় না,
তরে খুজিও পাই না।

আগামীর কথা ভাবি
আদর করি তরে, ঘুমাইলাম-
বড় শান্তর ঘুম-
য্যান বেহেস্তের চির শান্তি।

মট্ মটাস্ শব্দে
ঘুম ভাঙ্গি গেল, মনে অইল
পানিতে ভাসতাছি-
তুই আমি- পাশাপাশি।

আন্ধার চারদিক, খালি দেহা যায়
ধলা পানির মুকুট-
য্যান তুফান দৈত্যের রাজা আসতিছে,
তুই জড়াইয়া ধরলি মোরে;
সাতার কাইট্তাছি- কাইট্তাছি
তুফানের ধাক্কায় জোর কমি গেল
বিষ্টির ঝাপ আরেক জ্বালা-
শীত করতি লাইগল।

খানিক বাদে-
কত মাইনষের চিৎকাইর
কে কারে বাচাইব, নিজে ব্যস্ত
যেমনি অইল নিজের বেলায়।

তর কতা হুনলাম, পেরেশান-
সাতার কাটতি পারস না
কি করুম ক’ আমি কাহিল-
কেমনে ধরি রাহি!

গর- গর- গরম! বাজ পইড়ল
তুফান দৈত্যি ছুটি আইসলো
গুড়ি একখান পাইলাম হাতে-
তুই নাই, গুড়ি ছুটি গেল।

কত বাচাও বাচাও হুনলাম-
ছুটি গেলাম, আসমানী কই
খুজতি লাগলাম অথৈই পানির মদ্যি।

মহাজন হিকদার আর দারোগা বাড়ী
বড় দালান গুলান য্যান
লাল চর, নতুন চর, কুককির চর
দেখতে ভালাই লাইগল।

লাল ভেজা কাপড় মাথায়,
এই আসমানী-
হায়! কতা কইল না
গেলাম আরেক চরে।

কত সাতরাইলাম
জানি না তুই কুনডে আছিলি,
হায় আসমানি!
কোথায় গেলি- ঠোট মালিস পরলি না!

সাহেবেরা আইলো, মোরে তুলি লইল
কত আদর যত্ন কইরল-
ট্যাকা দিল,
তরে পাইলাম না।

আসমানী- আসমানীরে,
কোনডে গেলি-
সমুদ্দুরে চরে ফেলাই মোরে
ওরে আসমানী!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রনীল আপনার কবিতায় সবসময় একটা গল্প একটা চিত্র খুঁজে পাই। খুব সহজ ভাষায় আসমানির জন্য শোকগাথা হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
ধন্যবাদ রনীল। ভাল থাকবেন।
তাপসকিরণ রায় আবেগ বহুল কবিতা--স্থানীয় ভাষায় লেখা--দীর্ঘ কবিতা--নারী পুরুষের বিরহ গাঁথা--তবু কোথায় জেনো ভালো লাগা মিলে মিশে গেছে।
ধন্যবাদ কিরণ রায়। ভাল থাকুন।
তানি হক আসমানী- আসমানীরে, কোনডে গেলি- সমুদ্দুরে চরে ফেলাই মোরে ওরে আসমানী! ..... দীর্ঘ সুন্দর কবিতা ...
রুদ্র চৌধুরী চমৎকার লিখেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা।
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি সাহেবেরা আইলো, মোরে তুলি লইল কত আদর যত্ন কইরল- ট্যাকা দিল, তরে পাইলাম না। আসমানী- আসমানীরে, কোনডে গেলি- সমুদ্দুরে চরে ফেলাই মোরে ওরে আসমানী! .............// শেষ ভাল যার সব ভাল তার......খুব ভাল কবিতা আঞ্চলিক ভাষার কারণে কবিতার মান বেড়েছে.......নুরুল্লাহ মাসুম ভাই শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ আনিসুর রহমান জ্যোতি। মনোযোগ দিয়ে কবিতা পড়েছেন বলেই মনে হয়। আপনার জন্য আমার শুভকামনা। ভাল থাকুন।
আরমান হায়দার বেদনাবিধুর অসাধারন কবিতা। পড়তে পড়তে কেন জানিনা উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়র্থের সলিটারী রিপারের কথা মনে পড়ে গেল।গ্রামীণ মানবীর কথা, দুৎখ গাথা আছে বলেই হয়তো হবে। অথবা অন্য কিছু। কবিকে অভিনন্দন।
ধন্যবাদ আরমান হায়দার। মনযোগ দিয়ে কবিতা পড়ার জন্য আরো ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
মিলন বনিক মাসুম ভাই..খুবই বেদনার কাব্যগাথা....অনেক ভালো লাগলো....শুভ কামনা....
ধন্যবাদ ত্রিনয়ন। ভাল তাকবেন নিরন্তর।
এফ, আই , জুয়েল # রেল লাইনের মত লম্বা ----অনেক সুন্দর কবিতা ।।
এশরার লতিফ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে একটি প্রান্তিক পরিবারের ভেঙ্গে পড়ার কাহিনী ভাষার দারুন নৈপুণ্যে মনকে দ্রবীভূত করল।

১৭ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "যানজট”
কবিতার বিষয় "যানজট”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৮ অক্টোবর,২০২৪