সময়ের পাদটীকা

বর্ষা (আগষ্ট ২০১১)

শামীম আরা চৌধুরী
  • ১১০
  • 0
  • ৯০
আম্মু আজ তুমি অফিসে যাবে না। বিছানায় শুয়ে একটু পর পর রিমনের একই কথা। আম্মু আজ তুমি অফিসে যাবে না।
সকালে উঠেই ছেলেটা বায়না ধরেছে। সকাল হলেই এই এক সমস্যা আমাকে তাড়া করে ফেরে। কখনই খুব ভোরে রিমন ঘুম থেকে জাগে না। দৈবাৎ জাগলে আর রেহাই নেই। আমাকে আর অফিসে যেতে দেবে না। তাই আমিও সবসময় চেষ্টা করি ও ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে বেরিয়ে যেতে।
আচ্ছা যাবনা বাবা হলতো। তুমি এখন ঘুমাও। আমি রিমনের মুখে এক ফিডার দুধ ঠেলে দিয়ে ঘুম পাড়াতে চেষ্টা করি। চোখটা একটু বুজলে ফিরে আসি রান্নাঘরে।
খানিক বাদেই আবার চিৎকার আম্মু, আম্মু আমাকে মশা কামড়াচ্ছে। বার বার মশারি উঠিয়ে ভিতরে যাওয়া আর বের হওয়াতে দু একটা মশা হয়তো ঢুকে পড়েছে। সেগুলো এখন ওকে অক্লেশে কামড়ে যাচ্ছে।
রাতে আমি যখন মশারি খাটাই তখন অনেক সময় ধরে পরখ করি কোন মশা ঢুকে থাকলো কিনা। সকালে তাড়াহুড়োর জন্য সেটা আর হলোনা। ব্যস ছেলেটাকে খাচ্ছে। আমি আবার দৌড়ে গেলাম। বাতি অন করে মশা তাড়িয়ে ওকে পাশ ফিরে শুইয়ে কোলবালিশটাকে দুপায়ের মধ্যে ভাল করে গুজে দিয়ে ফিরে আসি।
আমি রান্নাঘরে রুটি তৈরিতে ব্যস্ত। এ অবস্থায় বারবার হাতের কাজ ফেলে দৌড়ে ওর কাছে যাওয়াতে আমার কাজের যেমন ব্যাঘাত ঘটছে তেমনি হাতে সময় খুব অল্প।
সকাল বেলা অফিসে যাবার আগে যেটুকু সময় তা ঘড়ি ধরেই চলতে হয়। কাজ তো অনেক যেমন রুটি তৈরি, ঘরদোর ঝাড়ু দেয়া, মেয়ের ব্যাগে টিফিন বক্সে ঢুকিয়ে স্কুলে পাঠানো। বিছানা পরিপাটি করা, সেলিমের নাস্তা গুছিয়ে টেবিলে দেয়া। গোসল সেরে নিজে গুছিয়ে তারপর অফিসের উদ্দেশ্যে বের হওয়া বেশ সময়ের ব্যাপার। এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে এক মিনিট সময়ও এদিক সেদিক করার উপায় নেই। অফিসে পৌঁছাতে দেরী হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় রিমনের ঘন ঘন ডাকে আমি বেশ বিরক্ত বোধ করি। আর তা হওয়াটা কী স্বাভাবিক নয়।
রিমনের বোধ হয় ঘুম আসছে না ঠিকমতো। ও একটানা চিৎকার করেই চলেছে আম্মু আমাকে মশা কামড়াচ্ছে। আম্মু তুমি অফিসে যাবে না। সাথে প্যাচপেচে কান্না।
আমি রুটি তৈরি করা রেখে দ্রুত হেটে ওর কাছে যাই। ঠাস করে গালে একটা চড় বসিয়ে দেই। তাতে রিমনের কান্নার জোর আরো বেড়ে যায়।
পাশের রুম থেকে তখন সেলিমের গলার আওয়াজ পাওয়া যায়। একপ্রকার চিৎকার দিয়েই বলতে থাকে খবরদার তুমি বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলবে না।
আমি ঠাণ্ডা গলায় জবাব দেই, তো এসে একটু সামলাও না। এতো চিৎকার দিচ্ছে ছেলেটা । তোমার কানে গেলো না । মারের আওয়াজটাই টের পেলে।
একেতো সারাদিন বাচ্চাগুলো বুয়ার কাছে থাকে। মাকে কাছেই পায়না তার উপর নিষ্ঠুরের মতো মারধর করো। বেশ ক্ষোভ মিশিয়েই সেলিম কথাগুলো বলল।
বাচ্চাগুলোর একা থাকার কথা বলাতে আমার মনটা কেমন যেন একটু বিষণ্ণতায় ছেয়ে গেল । সত্যিই তো ওরা আমাদের আর কতটা সময়ই বা কাছে পায়।
সকালে অফিসে যাবার আগ মুহূর্তে বিপত্তি বাধাতে চাইলাম না। কথা না বাড়িয়ে ছেলেটাকে শুইয়ে পিঠের মধ্যে আস্তে আস্তে থাবা দিতে থাকলাম। চুলে আঙুল ঢুকিয়ে বিলি দিতে দিতে একসময় ও ঘুমিয়ে পড়লে আমি আবার রান্নাঘরে ফিরে আসি।
একটা চুলার মধ্যে রুটি সেঁকার জন্য লোহার তাওয়াটা বসিয়ে অন্যটাতে চায়ের পানি গরম দেই। সকালের নাস্তা হিসাবে এককাপ চা আর একটা বিস্কুট ছাড়া আমি আর কিছুই খেতে পারিনা । সে হিসাবে আমাকে চারটা রুটি করতে হবে। দুটো শেষ হয়েছে আরও দুটো বানানো, সেঁকা। তিনটা রুটি আর একটা ডিম ভেজে টেবিলে রাখতে হবে সেলিমের জন্য। একটা আমার দুপুরে খাওয়ার জন্য ব্যাগে ঢুকাতে হবে। আর সব কাজ তো পড়েই আছে। মাথাটা গরম হয়ে উঠছে। সেলিমের উপরে তো বটেই।
এইসব কাজগুলো আগে কখনই আমাকে করতে হয়নি। আমার সংসারে সব সময় দুজন করে বুয়া থেকেছেই। একজন পার্মানেন্ট আর একজন ছুটা । অথচ আজ একমাস যাবত একজন বুয়াও নেই। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ের পার্মানেন্ট বুয়াটা সেদিন একপ্রকার রাগ করেই চলে গেছে শুধুমাত্র সেলিমের কারণে। প্রায়ই সে তাকে বকাবকি করে, কথায় কথায় ধমকায়। বুয়া আমাকে কথাগুলো জানিয়েছিল। আরো জানিয়েছিল এমন চলতে থাকলে তার পক্ষে আর থাকা সম্ভব হবে না ।
ইদানীং ওর কী এমন হলো যে বুয়ার সাথে রাগারাগি শুরু করলো । আমি কিছুদিন চুপ থেকে বিষয়টা পরখ করতে চেষ্টা করেছি । এবং তা আমারও নজরে পড়েছে ।
বুয়ার বয়স পঞ্চাশের উপরে । শুকনা ছোটখাটো একজন মানুষ । চুপচাপ সারাদিন খাটে । বাচ্চাগুলোকে দেখাশুনা করে । তার সাথে বকাবকির কী আছে আমার বোধগম্য হয় না।
কয়েকদিন আমি বিষয়টা খেয়াল করার পর একদিন সেলিমকে বুঝিয়ে বললাম । তুমি বুয়ার সাথে এমন আচরণ করছ যে সে চলে যেতে চাচ্ছে । এতদিনের পুরানো বুয়াটা চলে গেলে আমাদের কী অবস্থা হবে একটু ভেবে দেখ । তাছাড়া এখন যা দিনকাল তাতে বুয়া পাওয়া খুব কঠিন । একজন গেলে আর একজন সহসা পাওয়া যাবে না ।
তাতে কাজ হয়নি। বুয়ার কাজে সে সন্তুষ্ট হতে পারে না। কিছু একটা মনোপুত হলো না তো বকাবকি শুরু করে দেয় । এতে বুয়াও বেশ ক্ষিপ্ত হয়। একসময় আমাকে না জানিয়ে সে চলে যায় ।
বুয়াটা চলে যাওয়াতে বাচ্চাদের যেমন ক্ষতি হলো তেমন ক্ষতি হলো আমার । আমার সময়টা এখন কীভাবে চলে যায় বলতেই পারব না । ফুরসত বলতে কিছু নেই । এত কাজ, এত কিছু একজন মানুষ একাকী কীভাবে সামলাতে পারে ? আমাকে তাই পারতে হচ্ছে। রাগে দু:খে নিজের চুল নিজেই ছিঁড়তে ইচ্ছে হচ্ছে । সেলিমের উপর রাগটা তখন আমার তুঙ্গে উঠে যায় । কোন কাজে শেয়ার করবে না আবার অতি ক্ষুদ্র কোন ব্যাপারে ইন্টার ফেয়ার করবে । খবরদারী করবে ।
সেলিমের কারণে যেদিন পার্মানেন্ট বুয়াটা চলে গেলো সেদিন থেকে ওর সাথে আমার সম্পর্কটা চরম অবনতির দিকে মোড় নেয় । আমি ওকে আর এক বিন্দুও সহ্য করতে পারি না । সেলিমও সেটা বুঝে যায়। সেও বৈরী আবহাওয়ার আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে দুরে সরে সরে থাকে । সহসা সামনে আসে না । আর এই দুরে দুরে থাকাতে ওর মাঝেও একটু ক্ষোভের জন্ম হয় । সুযোগ পেলে সে ক্ষোভটা ঝেড়ে দেয়। তারই একটা উদাহরণ হল রিমনকে থাপ্পড় দেয়ার বিপরীতে আমার প্রতি ওর কপট শাসন ।
আমাদের সংসার জীবনটা শুরু হয়েছিল একটু আলাদা ভাবে । আর বিয়েটাও হয়েছিল ভিন্ন ধারায় । ওকে আমার পছন্দ ছিল না । তারও অবশ্য কিছু কারণ আছে । প্রধান কারণটা হল ওর বয়স বেশি । আমার বিশ তো ওর তেত্রিশ । তার উপর কেমন যেন চেহারার মধ্যে একটা রুক্ষভাব। দেখলেই মনে হয় মেজাজি ।
সেলিমের অর্থ সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তির কমতি নেই । যদিও সেগুলো আমাকে টলায়নি । টলিয়েছে ওর দুরন্ত আকাঙ্ক্ষা। ওর আমাকে চাওয়ার মধ্যে কেমন যেন একটা আকুতি লক্ষ করতাম । আর সে আকাঙ্ক্ষার মায়াবী মুখটা আমাকে পিষ্ট করতো । দলিত মথিত করতো । ওকে তখন আমার কাছে অতিশয় নির্ভেজাল মনে হতো । তাইতো প্রস্তাব পাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমরা বিয়ে করে সংসার শুরু করি।
বিয়ের পর ওর আচরণে পরিবর্তন আসতে থাকে। আসল চেহারাটা দিন দিন প্রকাশিত হতে থাকে । মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ওকে আমি পুরোপুরি বুঝে যাই । বিয়ের আগে আমাকে পাওয়ার জন্য ওর যে আকুলতা আমি লক্ষ করেছি । তার ছিটেফোঁটাও আর নেই । মাত্র একমাসে ওর ভিতরে আকাশ আর পাতাল ব্যবধান। যে কোন ক্ষুদ্র বিষয়ে এত বেশি রেগে যায় যে সে পরিস্থিতি সামাল দেয়া খুব কঠিন হয়ে দাড়ায় ।
আমার সাথে এমন আচরণ করে যেন আমি একটা ছোট বাচ্চা মেয়ে । বাইরে যেতে গেলে মাথায় ঘোমটা দাও । অফিস থেকে আসতে দেরি হলো কেন ? সাজগোজ করে বাইরে যেতে পারবে না । একাকী চলতে পারবে না । সামান্য কোন ব্যাপার নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে । জিনিষপত্র ছুড়ে মারে । নির্দ্বিধায় এটা সেটা ভেঙে ফেলে । এগুলো আমাকে ভীষণ পীড়া দেয় । আর মনে মনে স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হই আমি আর ওর ঘর করবো না । কিন্তু পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে আবার সব ভুলে যাই । আমি আবার রাগ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারিনা । সেলিম ঠিকই পারে । রাগলে সহজে আর বশে আসে না । না খেয়ে কথা না বলে কয়েকদিন কাটিয়ে দিতে পারে । পুরুষ মানুষের এমন চরিত্র এই আমি প্রথম দেখছি ।
সবচেয়ে বেশি যেটা আমার খারাপ লাগতে থাকে তা হলো আমার পারসোনালিটিতে আঘাত । ও ভীষণ রকমভাবে আমার পারসোনালিটিতে হস্তক্ষেপ শুরু করে দেয় ।
অথচ স্টুডেন্ট লাইফে আমার প্রখর পারসোনালিটির কাছে কেউ ভিড়তে পারতো না । যে আমি বিশ্ববিদ্যালয় লাইফে কি না করেছি । রাজনীতি, সমাজসেবা, কালচারাল প্রোগ্রাম, কাব্যচর্চা, গল্পলেখা কোনটাতে কেউ পিছে ফেলতে পারেনি । সেই আমাকে আমার পারসোনালিটিতে চরম আঘাত হানতে থাকে ।
সেলিমের প্রবল পরাক্রমশালী পুরুষত্বের কাছে আমাকে কতভাবে পিষ্ট হতে হচ্ছে । আমার সেই দুর্দমনীয় পারসোনালিটি বানের জলের মতো ভেসে যেতে বসেছে । আমি মাঝে মাঝে ভীষণ প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠি আবার নিজেকে নিজেই দমন করি । কারণ ততদিনে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছি। আর যাই ঘটুক পিছনে ফেরার উপায় নেই ।
কখনও কখনও ওর আচরণ এমন পর্যায়ে পৌঁছাতো যে আমি ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে সব কিছু গুটিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছি । হয়তো ভেবেছি আর আসবো না । নাহ সেখানেও বেশিদিন থাকতে পারিনি । বার বার ফোন করেছে চলে আসার জন্য । আমার রাগ নির্জলা পানি হয়ে গেছে । আমি ফিরে এসেছি । ফিরে এসে দেখেছি সেলিম আমার জুতার শোকেস থেকে সব জুতাগুলো বের করে পরিষ্কার করে রেখেছে। একইভাবে শাড়ি থী্রপিছ রোদ লাগিয়ে পরিপাটি করে রেখেছে । সেই-ই কিনা আবার কথা নেই বার্তা নেই রেগে গেছে তো কাপড়গুলো বের করে বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে ।
এরকম একদিন আমার একটি নতুন পোশাক কিনে আনাকে কেন্দ্র করে বাড়ি মাথায় করে তুললো । এক পর্যায়ে আলমারি খুলে আমার সবগুলো ড্রেস বের করে ঘরের মেঝেতে বিছিয়ে রাখলো । সেগুলো নাকি আগুন দিয়ে পোড়াবে । আমি চুপচাপ দেখলাম । ওর আক্রমণকে প্রতিহত করতে চেষ্টা করলাম না । পোশাকগুলো ওভাবে দুই তিনদিন পড়ে ছিল । সেলিমও উঠায় না আমিও উঠাই না । একসময় সেলিমই ওর রাগের কাছে পরাজিত হয়েছিল ।
এরকম দ্বৈত চরিত্রের মানুষ সেলিম । ওর সাথে মনের মিল হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার । আর একমাত্র এ কারণেই ওর প্রতি আমার কোন ভালবাসা কখনও জন্ম নেয়নি । তবে মায়া আছে প্রচণ্ড। ওর অসুখ হলে আমার অনেক কষ্ট হয় । কান্না পায় । ওর অসহায়ত্ব আমাকে ভীষণ পীড়া দেয় । কিন্তু স্বামী হিসাবে যে ভালবাসা ওর পাওনা তা আমি দিতে পারি নি । আমার অন্তরে স্বামীর জন্য সৃষ্ট ভালবাসা তাই অবহেলায় আর অনাদরে কুড়িতে যেমন ছিল তেমনই থেকে যায় ।
এই ভালবাসাহীন জীবনে হাসি কান্না আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়ে আমার না ভালো না মন্দ সময়টা পার হয়ে যেতে থাকে । একটু একটু করে সংসারটা সেটেলড হয়ে গেছে ঠিকই কিন্তু আমার আর সেলিমের মাঝে দূরত্বের দেয়ালটা ততদিনে বেশ খানিকটা উপরে উঠে গেছে।
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিবাহিত জীবন একটি পুরুষ ও একটি নারীকে এক ছাদের নিচে এনে দেয়। আমাদের ছাদটা এক থাকলেও ঘর পৃথক হয়ে যায় । আমরা একে অন্যকে আর সহসা কাছে টানতে পারি না ।
আমি কখনই ডিটাচ হতে চাইনি । বিছানা আলাদা হোক । ছাদ নয় । তারও আবার কিছু কারণ আছে । আমাদের সমাজে সংস্কার বড়ই শক্তিশালী । সেখানে মেয়েদের জীবন বা অবস্থার কয়েকটি পর্যায় আছে। যেমন বাবা মা না থাকলে একরকম । অর্থ সম্পদ না থাকলে একরকম । বাবা-মার অমিলের জন্য ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া পরিবারেরটা আর এক রকম । এই ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া পরিবারকে সভ্য সমাজে সভ্য ভাষায় বলা হয় ব্রোকেন ফ্যামিলি । ব্রোকেন ফ্যামিলির মেয়ের দিকে সবার আঙ্গুলটা উঁচু করা থাকে। সেই মেয়েটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে হতে নি:শেষ হয়ে যায় ।
তাছাড়া আমাদের মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েরা সহজে স্বামীর ঘর ত্যাগ করে না সন্তানের কথা চিন্তা করে । আমিও তার ব্যতিক্রম নই । আমি সন্তানকে সব দিতে পারবো কিন্তু বাপ দিতে পারবো না । বাপের ভালবাসা, আদর আহ্লাদ কী জিনিস ওরা বুঝতে শিখবে না । ওদের ভিতরে থেকে যাবে কঠিন হাহাকার করা শুন্যতা । আর সেই শুন্যতা থেকে ওরা আমাকে অভিশাপ দেবে । ওদের সুপ্ত আত্মা আমাকে অভিশাপ দেবে। প্রত্যক্ষ না হোক পরোক্ষভাবে। এসব নানাবিধও কথা চিন্তা করে আমি কখনও ছাড়াছাড়ির কথা মাথায় আনিনি ।
চলতে চলতে আজ এখানে একপর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি । দীর্ঘ এত বছর সেলিমের এই মানসিক নির্যাতন আমি এক প্রকার নীরবে সহ্য করে আসলাম । আর সেজন্যই হয়তো ওর জন্য ভালবাসার দুয়ারটা আর খুলতে পারলাম না । ভালবাসার পাখীরা আর সুখের আকাশে ডানাও মেলতে পারল না ।
এখন আবার নতুন যন্ত্রণা । বুয়া নেই । বুয়ার কাজটাও আমাকে করতে হচ্ছে । এলাকার এক পরিচিত মহিলাকে মাসিক তিন হাজার টাকার বিনিময়ে জোর করে এনে রেখেছি রিমন আর রিয়াকে দেখাশুনা করার জন্য । সে আর কোন কাজই করতে চায় না । কাজ যা সব আমাকেই করতে হচ্ছে । ছুটা বুয়া খুঁজতে বের হবো সে সময়ও করতে পারছি না । তার মধ্যে ও যদি কথায় কথায় এমন রূঢ় আচরণ অব্যাহত রাখে । এখনও যদি ও পরিবর্তন না হয় । তাহলে কতক্ষণ আর সহ্য হবে । আমার দুচোখ ছাপিয়ে পানি চলে আসে । আমি তড়িঘড়ি সব কাজ শেষ করি । সেলিমকে না বলেই ঘর থেকে বের হয়ে যাই ।
অফিসে এসেও আমার ভিতরে খচখচানিটা রয়ে গেছে । কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না । রাগের যে আবহ শরীরে মনে লেগে আছে তা আর কোন মতেই দুরে সরাতে পারছি না ।
দুপুরে খাওয়া নামাজ শেষ করে ডেস্কে এসে বসতেই সেলিমের ফোন । প্রতিদিন কয়েকবার করে ফোন করা ওর আর এক বদভ্যাস । আজ যেহেতু আমি রাগ করে বেরিয়েছি তাই সকাল থেকে একবারও ফোন করেনি । এই প্রথম ফোন আসলো । একবার ভেবেছি রিসিভ করবো না । তারপর আবার বুকের ভিতরে সব ক্রোধের জ্বালা চেপে রেখে স্বাভাবিক আচরণে হ্যালো বললাম ।
তুমি কি আজ একটু আগে বের হতে পারবে ?
আমি অবাক হই । সেই প্রথম জীবনে ও প্রায়ই আমাকে আনা নেওয়া করতো । আমার অফিসের কাছেই ওর এক বন্ধুর অফিসে বিকাল হলেই এসে বসে থাকতো । অফিস টাইম শেষ হবার আগেই ঘন ঘন ফোন দিত । তাড়াতাড়ি বের হয়ে আস । রাস্তায় জ্যাম লেগে যাবে । অগত্যা আমিও বসের কাছ থেকে ঝাড়ি ঝুড়ি খেয়ে ছুটি নিয়ে চলে আসতাম ।
এরকম তাড়াতাড়ি বের হবার ব্যাপারটা তো সেই কবেই মিটে গেছে । এখন আমি সময়মত অফিসে আসি । সময়মত বের হই । কারো কোন তাড়া নেই । যন্ত্রণা নেই । টেনশন নেই । তাছাড়া আজ সকালে আমাদের কিছুটা মনোমালিন্যতাও দেখা দিয়েছে । এরকম অবস্থায় সেলিমের তো পরাজিত হবার কথা নয় । পরাজয় যা তা তো আমারই । ও কেন এভাবে এত নরম সুরে আমাকে তাড়াতাড়ি বের হতে বলছে । বুঝে উঠতে পারলাম না । তাই ওর প্রস্তাবটাকে গুরুত্ব না দিয়ে হালকা ভাবে উত্তর দেই, কেন ? দেখি ।
ওপাশ থেকে সেলিমের আক্ষেপের কণ্ঠস্বর । নিজের প্রয়োজনে ছুটি নিতে পার আমাদের বেলাতে এসে সেটা ঠেকে যায় ।
কথাটা শুনতে আমার একটু খারাপ লাগে । অগত্যা বলে ফেলি আসবো । কয়টায় আসতে বলছো ?
পাঁচটায় আমি শাহবাগের মোড়ে থাকবো । তুমি বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে ওখানে চলে আসবে ।
ওকে ঠিক আছে । বলে আমি ফোন রেখে দেই । কিন্তু মাথার মধ্যে তোলপাড় করতে থাকে । ও হঠাৎ আজ কেন শাহবাগ আসবে । কিছুতেই মিলাতে পারি না । বহুবছর আগে যেগুলো শেষ হয়ে গেছে আজ আবার তা কেন ? শেষে এই ভেবে শান্ত হলাম বুঝি ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে যাবে । ওখানে একজন কার্ডিওলজিস্ট আছে ওর বন্ধু । হয়তো কোন সমস্যা অনুভব করেছে তাই ডাক্তার দেখাতে এসেছে । আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবে ।
দুপুরের পর অফিসে আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে । তড়িঘড়ি করে সেগুলো সেরে ফেলি । বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছি । একসময় সুযোগ বুঝে বসের কাছ থেকে ছুটি চেয়ে নেই । টেবিল গুছিয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে আসি । বের হয়ে আমি এমন ভাবে হাঁটছি যেন খাঁচা থেকে মুক্তি পাওয়া পাখি উড়ে যাচ্ছে তার ঠিকানায় ।
আমার মনে হতে লাগলো কেউ, কোন নতুন মানুষ যেন আজ আমার জন্য অপেৰা করছে । আমি যেন কোন অভিসারে যাচ্ছি । যেন আমার প্রেমিক পুরুষটি দীর্ঘক্ষণ আমার জন্য অপেৰা করে করে হাফিয়ে উঠছে । আমি দ্রুত পদক্ষেপে নিচে নেমে আসি । কোন দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই । নিচে নামতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল ।
আষাঢ় মাস । বৃষ্টি আসতেই পারে । থামলে যাব কিন্তু মন বাধ মানছে না । ও দাড়িয়ে আছে । আমার জন্য । আমি ব্যাগ থেকে ছাতাটা বের করে নেই । একদৌড়ে রাস্তা পার হয়ে উঠে বসি রিক্সায় । শাহবাগ চলো । ভাড়া যা লাগে দিব । রিকশাওয়ালা কোন কথা না বলে টানতে লাগলো ।
ঢাকা শহরের বিড়ম্বনা অনেক । একটু ভারি বর্ষণ হলেই রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাবে । রাস্তায় জ্যাম লেগে যাবে । দশ মিনিটের রাস্তা পার হতে একঘণ্টা লেগে যাবে । অপেৰার প্রহর কাটেনা । আমার রিক্সা যেন এগুচ্ছে না । বার বার বেচারাকে তাগাদা দিতে থাকি ।
একসময় রিক্সা শাহবাগ পৌঁছলও । তখনও প্রবল বর্ষণ । আকাশের যা অবস্থা তাতে আজ আর বৃষ্টি থামবে বলে মনে হচ্ছে না । মাত্র পাঁচটা বাজে তাতেই ধরণীতে ঘোর আঁধারের আনাগোনা । আমি দুর থেকেই সেলিমকে দেখে চমকে উঠলাম । হাতে সুদৃশ্য ঝকমকে কাগজে মোড়া একটা প্যাকেট । আমার আসার রাস্তার দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে । আর প্রবল বর্ষণ ওকে নিষ্ঠুরের মতো ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
আমার বুকের মধ্যে একটা মোচড় দিয়ে গেল । কী ব্যাপার ও ভিজছে কেন ! ওর কাছে ছাতা নেই কেন? আসতে আসতে একথাগুলো মনে মনে আওড়ে ফেললাম।
কাছে গিয়েই বকা শুরু করি। এভাবে ভিজছো কেন ?
তোমাকে যদি মিস করি।
মানে।
মানে তুমি যদি আমাকে খুঁজ না পাও। কথাগুলো বলার সময় ওকে বেশ বাচ্চা বাচ্চা মনে হতে থাকে।
সেটা কেমন কথা ফোন আছে না ।
ফোন করলেই তো পেয়ে যেতাম।
থাক ওসব কথা । চলো । রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে ও আমাকে নিয়ে ফুলের দোকানে ঢুকে ।
আমার নতুন করে ভাবতে হচ্ছে আজ কতো তারিখ । কেন ওর হাতে প্যাকেট । আর কেনই বা আমাকে নিয়ে ফুলের দোকানে ঢুকছে ।
মনে হলো সারাদিন অফিসে যা কিছু সাইন করেছি সবটাতে দুই তারিখ লিখেছি । আজ ২ জুলাই । আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন । আমাদের বিবাহ বার্ষিকী । বিবাহের দিনটিকে সবাই ম্যারেজ ডে বললেও আমি বলিনা, বলি ডেথ ডে । মানে মৃত্যু দিন । আমার কাছে বিয়ে মানে মৃত্যু । সব ব্যাপারেই মৃত্যু । চলায় মৃত্যু বলায় মৃত্যু আনন্দের মৃত্যু বেদনারও মৃত্যু । বিয়ের পর মেয়েদের সব স্বাধীনতার মৃত্যু ঘটে । ঝট করে হিসাব করে ফেললাম কতো বছর পার হলো ।
অত্যন্ত দু:খজনক হলেও সত্য যে আমরা জীবনে একটিবারও বিবাহবার্ষিকী পালন করিনি । এমনকি প্রথম বছরও না । কারণ প্রথম বছরেই আমার প্রথম বাচ্চা হয়ে যায় । তাছাড়া এত বেশি মানসিক বিষাদের মধ্যে দিনাতিপাত করেছি যে স্বতুষর্ফুতভাবে তারিখটাকে স্মরণ রাখা তার জন্য কিছু আয়োজন করা হয়ে উঠেনি । কোন পাশ থেকে যে তারিখটা চলে গেছে । খেয়ালই করিনি । হয়তো পরে কোন একদিন মনে পড়েছে । কখনো হয়তো মনে পড়েও নি । তাইতো আজও সহজে বুঝে উঠা সম্ভব হচ্ছিল না আজ বিশেষ কী দিন ।
দোকানে সাজিয়ে রাখা সবচেয়ে বড় আর সুন্দর ফুলের ঝুড়িটি কিনে একটি সিএনজি বেবি ঠিক করে আমরা তাতে উঠে বসি । ড্রাইভার ভাল করে পর্দা লাগিয়ে দিয়ে আমাদের নিয়ে ছুটে চললো ফার্মগেটের দিকে । পথে একটু থেমে স্টার কাবাব থেকে কাবাব পরোটা নিয়ে সোজা বাসায় যাবো।
আমরা একে অপরের কাছাকাছি এগিয়ে বসি । আমি ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে যথা সম্ভব ভাল করে সেলিমের মাথা মুখ মুছিয়ে দেই । অনেকক্ষণ ভেজাতে ওর ঠাণ্ডা লেগে গেছে । ও রীতিমতো কাঁপছে । সেলিম আমার হাতটা ধরে । গভীর উদ্বেগে বলে বিউটি জানি তুমি আমাকে ভালবাসনা ।
আমার ডাক নাম বিউটি। বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পর থেকে নামটা হারিয়ে গেছে। আমাদের প্রথম সন্তান মেয়ে আর ওর নাম রিয়া । তাই আমরা একে অন্যকে 'রিয়ার মা' 'রিয়ার বাবা' বলেই বেশির ভাগ সময় ডাকি। মাঝে মধ্যে অবশ্য ও আমাকে নাম ধরে ডাকে। আমিও ওর নাম ধরেই ডাকি।
আজ আবার সেই নাম ধরে ডেকে বলে, এত বছর যা পারনি আর কোনদিন হয়তো ওকাজটা পারবেও না। তাতে আমার কষ্ট নেই । কষ্ট একটাই আজ আমাদের সংসার জীবনের ষোল বছরে পদার্পণ অথচ আমরা একে অপরকে এখনও চিনতে পারিনি । আমরা একটি দিনের জন্য কেউ কাউকে একফোঁটা সময় দেইনি কথা বলার, ভালবাসার, জীবনকে নিয়ে ভাববার । দিনে দিনে আমাদের মাঝে এক বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়েছে । চলো আজ থেকে অন্তত তা কমিয়ে আনার চেষ্টা করি । বাকি জীবনটা যেন আমরা ভালভাবে বাঁচতে পারি । বাঁচাতে পারি বাচ্চা দুটোকে । তৈরি করতে পারি ওদের জন্য একটি সুন্দর জীবন ।
ওর এরকম কথার কোন জবাব আমার কাছে নেই । কিছু বলতে গিয়েও পারলাম না । আমার গলা ভার হয়ে আসতে থাকে । ওর ঘাড়ের উপর মাথাটা রেখে চোখ বুজে থাকি । আমার চোখের কোন বেয়ে দুফোটা জল বেরিয়ে গেল । অবিরাম বর্ষণের সাথে এক ঝলক বাতাসে পর্দার ফাঁক গলে এক পশলা বৃষ্টির ঝাপ আমার চোখে মুখে এসে ছিটকে পড়লো । চোখের নোনা জল আর বৃষ্টির মিষ্টি পানি মিলেমিশে এককার হয়ে গেল ।
বাঁধভাঙা বর্ষণে তলিয়ে যাচ্ছে প্রিয় ঢাকা শহর । আমি এক পাশ থেকে পর্দা উঠিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি শহরের নিয়ন বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে । গাছপালা সব বৃষ্টিতে ভিজে যবুথবু হয়ে দাড়িয়ে আছে । কিছুক্ষণ আগে ভিজতে থাকা সেলিমের মতো । বেবিট্যাক্সি ছুটছে থেমে থেমে । বাংলামটর এসে সিগনালের এক বিশাল জ্যামে থমকে গেলাম । কতক্ষণে বাসায় পেঁৗছাতে পারবো বোঝা যাচ্ছে না ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
শামীম আরা চৌধুরী শুভেচ্ছা আহমেদ সাবের
ভালো লাগেনি ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১
শামীম আরা চৌধুরী ধন্যবাদ কবির। পরবর্তী সংখ্যায় আশা করি থাকব
ভালো লাগেনি ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১
কবির সিদ্দিকী আপনার উপস্থিতি সবসময় কাম্য। চলতি সংখায় লেখা নাই কেন ... বন্ধু ?
ভালো লাগেনি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১
আহমেদ সাবের দেরী করেই পড়লাম আপনার গল্পটা। আমাদের দৈনন্দিন পারিবারিক সমস্যার বিশ্বাসযোগ্য চিত্র। আপনার কুশলী কলমের টানে ফুটেছে বেশ। জীবনে তো সমস্যা থাকবেই। এবং জীবনই পথ বাতলে দেয় সমাধানের। সেলিমের চরিত্রের দুরন্ত চাওয়ার আকুতি বোধ হয় সব মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান। পাওয়ার পর বাস্তবতার ঝড়ের ঝাপটায় আকুতি হারিয়ে যায়। ভবিষ্যতে আপনার আরও লেখা পাব আশা করি।
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১
শামীম আরা চৌধুরী ধন্যবাদ অরুপ কুমার। শুভেচ্ছা থাকল
Arup Kumar Barua চমত্কার গল্প | আজকাল গল্প প্রায় পড়িনা সময় অভাবে কিন্তু আপনার গল্পের শুরুটা শেষ অবদি টেনে নিয়ে গেল আমাকে | বৃষ্টিটা যদি এমন মধুর হউক সবার| আগানিতে আরো ভালো লেখার প্রত্যাশায় .................
শামীম আরা চৌধুরী ভাই জীবন দাস না পড়েই ভোট দিলেন। ধন্যবাদ
জীবন দাস অনেক লম্বা গল্প পুরা পড়তে পারলাম না । যা পড়লাম মান খুব ভালো ভোট গৃহীত হয়েছে।
শামীম আরা চৌধুরী এধরনের অবস্থাই সৃস্টি হোক আমাদের ঘরে ঘরে। অশান্তি দুর হয়ে যাক। শুভেচ্ছা
শামীম আরা চৌধুরী ধন্যবাদ মনির মুকুল। অত্যন্ত হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেছেন গল্পটা। শুভ কামনা

০৪ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪