ইস তোমার পা দুটি কি সুন্দর। ইচ্ছে করে তোমার পা ধরে বসে থাকি। তোমার এই সুন্দর পায়ে নূপুর পড়লে দারুণ মানাবে। সিমনের এ কথা শুনে মুদু হাসলো নিতু। নিতুকে সিমন ভালোবাসে। নিতু ও ভালোবাসে সিমন কে। দুজন দুজনার মাঝে হারিয়ে যেতে চায়। স্বপ্নের জাল বুনে ওরা। কত শত স্বপ্ন। স্বপ্নের কি শেষ আছে ? নিতু তোমাকে একটা নুপুর কিনে দিব। নুপুর পরে হেটে বেড়াবে। আমি রাজ্যের মুগ্ধতা নিয়ে তা দেখবো বললো সিমন। সিমনের কথা শুনে কিছুটা অনমনা হয়ে গেল নিতু। কি ব্যাপার কি হয়েছে। কথা বলছো না কেন? না কিছু না বললো নিতু। কিছু না বললেই হলো। বলো আমাকে কি হয়েছে বললো সিমন। সে দিন স্বপ্নে দেখলাম একটা চাকা আমার পায়ের উপর দিয়ে চলে গেছে। পা চুর্ন বিচুর্ন করে। সিমন বললো কি যে বলো তুমি। তোমার পেটে গন্ডগোল হয়েছে। তাই আজে বাজে স্বপ্ন দেখেছো। গ্যাসের ট্যাবলেট খাও। নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে নিতু। বাবা জালাল উদ্দিন সরকারী অফিসের কেরানী। সৎ মানুষ বলে তার ব্যাপক সুনাম। পকেটে টাকা পয়সা থাকে না। একটা বিস্কিট খেয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাটিয়ে দেন জালাল সাহেব। চাল বাচানোর জন্য সকালে বাসায় ভাত খান না। সকালে ভাত খেলে ভারী ভারী লাগে। কাজ করতে অসস্থি লাগে। এ জাতীয় কথা বলে ঘর থেকে বেরোন জালাল সাহেব। টিউবয়েল এর এক গ্লাস ঠান্ডা পানি তার সকালের নাস্তা। এ খবর কেউ জানে না। হয়তোবা জানবে ও না কোনদিন। একটা জামা সপ্তাহের সাত দিন পড়েন। এসবের খবর কেউ রাখে না। কি দরকার এসব জেনে ? সৎ মানুষদের জীবনটা বুঝি এরকমই হয়। বেশ কয়েকটা টিউশনী করে নিতু। টিউশনি শেষ করে ফিরতে ফিরতে নিতুর রাত আটটা কখনো বা নটা বাজে। শরীল চলে না। ভেঙ্গে পড়তে চায়। কোন রকমে টেনে টুনে নিতু চালিয়ে নেয়। ঘরে যে ছোট ভাই বোনদের অভুক্ত মুখ। মায়ের অসহায় দৃষ্টি। নিতুর মাথা ঝিম ঝিম করতে থাকে। রাস্তাটা পার হতে পারবে তো ? রাস্তার ওপারে নিতুদের বাসা। নিতুর কাছে মনে হচ্ছে কতদূর? হঠাৎ একটা প্্রাইভেড কার নিতুর উপর দিয়ে চলে গেল। চিৎকার চেচামেচি। একদল লোক নিতুকে ধরাধরি করে হসপিটালে নিয়ে গেল। আঘাত খুব গুরুতর। ডান পায়ে অপরেশন করতে হবে। বা পা ঠিক আছে। ডাক্তারের কথা কানে যাচ্ছে না জালাল সাহেবের। অনেক টাকা পয়সার ব্যাপার। কোথায় টাকা পাবে সে ? হাতের বালা দুটি খুলে জালাল সাহেবর হাতে দিল নিতুর মা। এটা বিক্রি করো। এটা তো তোমার আমার সারা জীবনের স্পৃতি বললো জালাল উদ্দিন। নিজের টাকায় কেনা এই বালা দুটো বাসর রাতে বউকে পড়িয়ে দিয়েছিলেন জালাল উদ্দিন। অপরেশনের দিন খন ঠিক। মূল ডাক্তার এলেন না। ইন্টর্ানী করছে মিজানুর রহমান। অপরেশনটা এখন সে করবে। দেরী করা যাবে না। সব কিছু ঠিক থাক। টেস্ট মেস্ট সব ওকে। আগে থেকেই নিতুর বাম পায়ে সামান্য সমস্যা ছিল। একি নিতু তোর বাম পায়ে বেন্ডিজ কেন? চিৎকার দিয়ে উঠলো নিতুর মা। ডাক্তার ভুল করেছেন। তিনি ডান পায়ের বদলে নিতুর বাম পা অপরেশন করেছেন। তাও সফল হয়নি। এরপর নিতুর ডান পায়ে ও অপরেশন করা হলো। নিতু এখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটে। সিমন মাত্র একবার এসে নিতুকে দেখে গেছে। ভালো হয়ে যাবে । চিন্তা করো না এই জাতীয় কথা বলে গেছে। বড্ড অচেনা মনে হয়েছে সিমনকে। নিতু ভাবে এই কি সেই সিমন যে নুপুরের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। একদলা মুখ ভর্তি থুথু জমা হয়। ওয়াক থু । নিতু কাকে উদ্দেশ্য করে থু থু ফেললো ? খোড়া মানুষ কে কেউ ভালোবাসে? ভালোবাসার বাজারে খোড়া মানুষদের কোন দাম নেই। ডাক্তার মিজান নিজের ভুল স্বীকার করে। টাকা দিতে চেয়েছে। নিতু ভাবে কি হবে টাকা নিয়ে? পঙ্গুত্বকে কি টাকা দিয়ে ঢাকা যাবে ? চোখের জ্বলে আচল ভিজে যায়। বুকের মধ্যে চিন চিন করে। একটি ভুল নিতুর জীবনকে এলোমেলো করে দিলো। একটি ভুল নিতুর সারা জীবনের কান্না, সারা জীবনের কস্ট।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
খুব চেনা আঙ্গিকে গল্পটা। ১)তোমার পেটে গন্ডগোল হয়েছে। তাই আজে বাজে স্বপ্ন দেখেছো। ২) নিতুর বা পায়ে আগেই সমস্যা ছিল>> এজাতীয় উপমা গল্পে বেমানান। গল্প লিখতে গেলে আমি পাঠক হয়ে লিখি। তাতে কোন সময় কোন ঘটনা হুট করে আসার ঝুকি কমে যায়, আর পাঠকের দিক থেকে প্রশ্ন যা আসতে পারে তা মাথায় থাকে। তোমারও এভাবে লিখলে গল্প পূর্ণতা পাবে বলে বিশ্বাস। উপদেশ বা পন্ডিতি হিসাবে দেখবেনা এবং পজিটিভলি নিবে বলে বিশ্বাস করি।
মোঃ আক্তারুজ্জামান
থিমটা সুন্দর কিন্তু আপনি নিপুন হাতে তা টানতে পারেন নি| আপনাকে এই 'টানতে পারার' কাজটি করতে হবে| যেদিন সফল হবেন সেদিন আপনি লেখক হয়ে উঠবেন| ধন্যবাদ|
সেলিনা ইসলাম
লেখার থিমটা কিন্তু অসাধারন । আমাদের দেশের মধ্যবিত্য ও নিম্ন মধ্যবিত্য মানুষরা যে কতটা অসহায় এবং জিম্মি তার সুন্দর বহিঃপ্রকাশ এই গল্প । কেউ রিসার্স করছে আবার কেউ একজন অপারেশন আছে যেনেও কর্তব্যে অবহেলা করছে । মানুষের জীবনএর যেন কোন দাম নেই এই সমাজে । গল্পটা আরও একটু বড় করলে ভাল লাগত । একটা নাগরিক সচেতনাতামুলক গল্প হতে পারত । শুভ কামনা । ধন্যবাদ
sakil
বাস্তবিক জীবনের গল্প . গল্প কে টেনে নিয়েছেন ঠিকমত . মাঝে মাঝে হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে , এই নিয়তির উপর কারো হাত নেই . যার হাত আছে সেই ভালো বুঝে কেন সে কিছু মানুষ কে কষ্ট দেয় . তার কাছে কোনো প্রশ্ন করা যায় না . উনি উপরে বসে জীবনের কলকাঠি নাড়েন নিজের ইচ্ছেমত . নিয়মিত লিখবেন আশা করি .
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।