সুখে থাকিস তোরা

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

মোঃ সোহেল রানা
  • ২৫
  • 0
শুভ আর সুমন ঠিক করল আজ তারা এক নতুন অভিযানে যাবে। অভিযানটি হলো পাশের জঙ্গলে নাকি একটি শালিকের বাসার সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে দুটো নতুন ছানা ও আছে। সুমন বলল বড় ভাই আজ কি খাবার নিয়ে যাবে নতুন বন্ধুর জন্য। শুভ বলল,
_ মাকে তো দেখেছি আমাদের ছোট বাবুকে দুধ খাওয়াতে তাহলে আজ আমরা নতুন বন্ধুর জন্য এক বাটি দুধ নিয়ে গেলে কেমন হয় বল তো ! সুমন বলল,
> আমার তো মনে হয় ভালোই হয়। তাহলে তো গরুর দুধ দোহাতে হবে আগে। কিন্তু গরুটা যে বজ্জাৎ দুধ দোহাবে কে ?
> কেন তুমি বড় তুমিই দোহাবে সুমন বলল।
_ যদি লাথি মারে তখন কি হবে শুভ বলল।
যাহোক, দুজনে গুটি গুটি পা'য়ে খুব সাবধানে গোয়ালে রাখা গরুর কাছে যেতেই বাছুর হাম্বা হাম্বা করে শুভ'র কাছে ছুটে এলো। কারন বাছুরটার সাথে শুভ'র আগেই সখ্যতা ছিল। তাই তাদের দুধ দোহাতে আর খুব কষ্ট পেতে হয়নি।
_ যাক দুধ তো পাওয়া গেল চল এবার নতুন বন্ধুকে খাইয়ে আসি শুভ বলল।
পুরনো শেওড়া গাছে এবার উঠার পালা। কে আগে উঠবে সুমন বলল,
> বড় ভাই আমি তো একা উঠতে পারব না। বরং তুমি আমাকে কাঁধে করে দাঁড়াও আমি বন্ধুকে খাওয়ায়।
শুভ'র কাঁধে ভর করে সুমন দুধের বাটিটা নিয়ে ছানা দুটোকে খাওয়াতে গিয়ে হতবাক ! একটি ছানার কিছু পাখনা পড়ে আছে আর একটি চিঁ চিঁ করে কেঁদে মরছে। সুমন ছানাটিকে যেই না হাত দিয়ে ধরতে গেছে অমনি একটি বিষধর সাপ সুমনের হাতে ছোঁবল মেরে বসল। সুমনের চিৎকারে আতংকিত হয়ে শুভ গড় মড়িয়ে পড়ে গেল সাথে সুমন ও। বিষের জ্বালায় সুমন কাঁদতে শুরু করেছে। জনমানব শূন্য পরিবেশটা তার কান্নায় ভারি হয়ে উঠল। শুভ'র হঠাৎ মনে হলো সাপে কামড়ালে সেই হাত বা পা বেঁধে দিতে হয় শক্ত করে । তাই আর দেরি না করে সাথে সাথে সুমনের হাত বেঁধে ফেলল। এখন কি করবে শুভ ? ওকে একা রেখে কাউকে ডাকতে যাবে না চিৎকার করবে। সুমন বলল,
> বড় ভাই আমাকে এখানে একা রেখে যেও না তাহলে আমি মরে যাবো।
এদিকে বিষে সুমনের সারা শরীর নীল হয়ে যাচ্ছে। বিষের জ্বালায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে সে। চিৎকার করেও কাউকে না পেয়ে শুভ বন্ধুকে বাচাঁতে নিজেই কিছুটা করার চিনতা করল। কিন্তু কি করবে সে ?
হঠাৎ মনে হলো বিষ চুষে ফেলে দিলেই বুঝি ও বেঁেচ যাবে। সুমন বিষে অচেতন প্রায়। শুভ কোন কিছু না ভেবে সুমনের সাপে কাটা আঙুল মুখে চুষতে শুরু করল। সুমনকে বাঁচানোর চিনতায় এতোটাই ব্যসত ছিল শুভ যে বিষ তার মুখের ভেতর যে চলে যেতে পারে সে চিনতা তার একবার ও হলো না। অন্য কোন উপায় না পেয়ে শুভ বিষ চুষতে আরম্ভ করল। শুভ চুষতেই থাকল। আসতে আসতে সুমন বিষমুক্ত হতে লাগল। ওর জ্ঞান ফিরে আসতে শুরু করল। চোখ মেলে দেখল শুভ কি অস্থিরতার সাথে তার শরীর থেকে বিষ অপসারণ করে চলেছে। সুমনকে তাকাতে দেখে শুভ সাথে সাথে সুমনকে বুকে জড়িয়ে ধরে স্বসতির নিঃশ্বাস ফেলল। কাল বিলম্ব না করে শুভ সুমনকে নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটতে আরম্ভ করল। সুমন এখনও চলার শক্তি পায়নি তাই শুভকেই বুকে জড়িয়ে প্রায় মাইল খানেক মাঠ পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো।
এদিকে শুভ'র অজানতেই কখন যে বিষ তার পেটে চলে গেছে তা সে বুঝতেও পারেনি। তার শরীরও ক্রমশ শীতল হয়ে আসছে। চালিকা শক্তি লোপ পাচ্ছে। তবু সে সুমনকে বাড়ি না নেওয়া পর্যনত থামছে না। যাহোক, টলতে টলতে কোন মতে বাড়ির উঠান পর্যনত আসতেই সবাই চেঁচিয়ে উঠল,
্#৯৬৭৯; কি হয়েছে সুমনের ? শুভ কোনমতে সুমনকে বারান্দায় শুইয়ে দিয়ে বলল,
_ ওকে সাপে কেটেছে। সাথে সাথে সুমনের মা কান্না কাটি শুরু করল,
্#৯৬৭৯; এ কি সর্বনাশ হলো আমার। তোমরা তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকো কবিরাজ আনো। আমার মানিককে বাঁচাও। সব ঐ হতভাগা শুভ'র জন্য। কতবার করে বলি ওর সাথে খেলতে যাস নে। কে শোনে আমার কথা। আমি যে মা আমার কথা কি শোনে। শুভই যেন তার সব। এখন বোঝ মার কথা না শুনলে কেমন হয়। এতোক্ষণে সুমন আর চুপ করে থাকতে পারল না। কাতর কণ্ঠে বলল,
> শুভ'র কোন দোষ নেই আমিই আজ ওকে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলাম। আর আমার গায়ে কোন বিষ নাই। ও সব চুষে ফেলে দিয়েছে।
এবার সবার টনক নড়ল। এতোক্ষণে বিষের জ্বালায় শুভ নিথর হয়ে গেছে। এবার শুভকে নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। শুভ'র মা কান্নার সাথে সাথে তার ছোট্র ছেলেটার মহানুভবতায় গর্ববোধ করতে লাগলেন। হাসপাতালে নেওয়া হলো শুভকে। কর্তব্যরত ডাক্তার বললেন,
্#৯৬৭৯; অনেক দেরি হয়ে গেছে। বিষ ওর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। শরীরে বিশেষ অঙ্গগুলো ঠিকমত কাজ করছে না। বাহাত্তর ঘন্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এ যাত্রা বেঁেচ গেলেও ওর শরীরের কোন একটা অঙ্গহানি হতে পারে।
আল্লাহ্ শুভ'র মায়ের আর্তনাদ শুনলেন। তাই শুভ এ যাত্রা বেঁচে গেল এবং বাহ্যিক দৃষ্টিতে পুরোপুরি সুস্থও হয়ে গেল। কিন্তু ধীরে ধীরে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শুভ তার শরীরে কিছু একটার অভাব অনুভব করতে লাগল। তা সে নাগালেই নিল না। এমনি করেই সুমনের সাথে তার বন্ধুত্বটা আরও গাঢ় হতে লাগল। খেলতে যাওয়া। বেড়াতে যাওয়া। বৃষ্টিতে ভেজা। নদীতে সাঁতার কাটা। খাওয়া-দাওয়া এমনকি ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও একে ওপরকে ছাড়া যেত না। এটা আরও বেশি সম্ভব হয়েছিল ওরা সম্পর্কে ফুফাতো-মামাতো ভাই হওয়ায়।
এমনি ভাবেই তারা শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে একদিন যৌবনে পা দিল। কলেজে ভর্তিও হলো একই সাথে। হঠাৎ একদিন পরিচয় হলো ছন্দার সাথে। তিন জনের বন্ধুত্বটা জমতে লাগল বেশ। একদিন কেউ কাউকে না দেখলে কিংবা ফোনালাপ না হলে ঘুমই আসত না কারও। এভাবেই চলতে থাকল তাদের বন্ধুত্বের স্বপ্ন-তরী।
সুমন ছোট বেলা থেকেই ছিল একটু ছনমনে আর প্রচণ্ড আবেগী। অপরদিকে, শুভ ছিল ঠিক তার উল্টো স্বভাবের। চুপচাপ থাকতেই বেশি পছন্দ করত। মেয়েদের সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলত সে। কোন মেয়েরই যোগ্য মনে করত না নিজেকে। তাই অকারনে মেয়েদের সাথে খুব একটা মিশত না। কিন্তু মেয়েদের প্রতি সুমনের ছিল প্রচন্ড দূর্বলতা। স্বাভাবিকভাবেই সে ছন্দার সাথে বেশি মিশতে শুরু করল। তাদের মেলা-মেশাটা শুভ'র কাছেও ভালোই লাগত। সে ভাবত আমি না হয় মিশতে পারি না ও মিশলেই তো হলো। ধীরে ধীরে সুমন ছন্দার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়তে লাগল। এক পর্যায়ে শুভকে তার দূর্বলতার কথা খুলে বলল সে।
শুভ'র মুখ থেকে এক রকম জোর করেই তাকে সাহায্য করার কথা আদায় করে করে নিল সুমন। শুভ নিরূপায় হয়ে সম্মতি দিল তাকে যথা সম্ভব সাহায্য করার। তাই একরকম বাধ্য হয়েই শুভকে ইদানিং ছন্দার সাথে বেশি বেশি মিশতে হয়। কারন ছন্দার সাথে না মিশলে তো আর সুমনের দূর্বলতার কথা ওকে বলা যাবে না।
এদিকে সুমন তার ফলাফলের জন্য অস্থির হয়ে যেতে লাগল। এমনিতেই তার ধৈর্য্য কম তার উপর শুভ ইদানিং ছন্দার সাথে বেশি বেশি মেলা-মেশা শুরু করেছে সেটা তার ভালো লাগছে না। সে মনে মনে শুভকে সন্দেহ করতে শুরু করল। সাথে সাথে ছন্দাকেও। শুভ অনেক চেষ্টা করেও ছন্দাকে সুমনের কথাটা বলার মত সুযোগই পাচ্ছে না। বলি বলি করেও আর বলা হচ্ছে না। মাঝখান থেকে ছন্দা শুভ'র চুপচুপ থাকাটার প্রেমে পড়ে যেতে থাকে। শুভ'র প্রতি ছন্দার দূর্বলতাটা শুভ কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে আর দেরি না করে সুমনের কথাটা বলে বসে। কারন ইতোমধ্যে সুমন তাকে সন্দেহের বশে কিছু বাজে কথা বলে ফেলেছে। তাই বন্ধুত্বটা নষ্ট হোক সেটা শুভ চায় না। সুমনের কথাটা শোনামাত্র ছন্দা খুব রেগে যাই। সে ভেবেছিল শুভ তাকে নিজের ভালো লাগার কথাটাই বলবে। কিন্তু হলো তার উল্টো।
শুভ সব রকমভাবে ছন্দাকে বোঝানার চেষ্টা করল সুমন তাকে অনেক পছন্দ করে। শুধু পছন্দই করে না প্রচন্ড ভালোও বাসে তাকে। ছন্দা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। শুভকে উদ্দেশ্য করে বলল,
্#৯৬৫৮;কেন তুমি তোমার ভালো লাগার কথাটা বলতে পারো না অন্যের হয়ে ভালোবাসার কথা বলতে আস ?
্#৯৬৫৮;আমার প্রতি কি তোমার এতটুকু দূর্বলতাও নেই নাকি ? বুকে হাত রেখে বলতে পারবে তুমি আমাকে একটুও ভালোবাস না ?
্#৯৬৫৮;শোন সব কিছু বন্ধুকে দেয়া যায় ভালোবাসা নয়।
শুভ যে ছন্দার প্রতি দূর্বল ছিল না তা কিন্তু নয়। সেও ছন্দাকে খুব ভালোবাসত। কিন্তু তার কাছে বন্ধুত্বটা ছিল অনেক বড়। এদিকে সুমন শুধু শুভকেই না ছন্দাকেও সন্দেহের বশে বাজে কথা বলতে শুরু করল। যা ছন্দাকে আরো শুভ'র প্রতি দূর্বল করতে লাগল। একপযর্ায়ে, সুমন শুভকে তার ভালোবাসার সত্রু ভাবতে আরম্ভ করল। শুভ সুমনকে বোঝানোর চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হলো তখন সুমনের কাছ থেকে ছন্দাকে বোঝানোর জন্য তিন দিন সময় চাইল।
একদিন না যেতেই সুমন ছন্দাকে শুভ'র সম্বন্ধে কটু কথা বলতে আরম্ভ করল। খারাপ চরিত্রের বলে উপস্থাপন করতে লাগল। যেটা শুভ'র প্রতি ছন্দার দূর্বলতাকে দিল বহুগুন বাড়িয়ে। সে সুমনকে বলে বসল আমি তোমাকে পছন্দ করি না।
সুমন আরো হিংস্র হয়ে গেল। তার দেয়া সময়ের কথা ভুলে গেল। শুভকে অকথ্যভাবে গালি-গালাজ করতে লাগল। শুভ কোন উপায় না দেখে ছন্দাকে ফোন করে আসতে বলল। ছন্দা কোন ভাবেই যখন বুঝল না তখন সে বাধ্য হয়ে ছন্দাকে বলল ,
_ তুমি আমাকে কতটুকু ভালোবাস ?
ছন্দা বলল আমি তোমাকে ততটুকুই ভালোবাসি যা কেউ কখনও তোমাকে বাসবে না।
_ তুমি এই ভালোবাসার পরিণতি কি জান ?
্#৯৬৫৮;জানি সুমন আমাকে কখনও সুখে থাকতে দেবে না এইতো ! ছন্দা বলল।
_ নাহ্ তুমি এই ভালোবাসার পরিনতিটা জান না। জানলে তুমি আমাকে ভালোবাসতে না সুমনকেই ভালোবাসতে।
্#৯৬৫৮;কখ্খনও না। আমি তোমাকেই ভালোবাসি। সে যেকোন মূল্যেই হোক না কেন। ছন্দার সোজা সাপ্টা জবাব।
_ আমি তোমাকে বলছি তুমি এপথ থেকে সরে আস না হলে সারা জীবন শুধু আপসোসই করবে। কারণ আমি তোমাকে যতই ভালোবাসি না কেন কখনও তোমাকে সুখী করতে পারব না। একজন নারীর আরাধ্য সুখ-সংসার আমি তোমাকে দিতে পারব না। কোন সনতান আমি তোমাকে দিতে পারব না। স্বামীর সোহাগ দিতে পারব না আমি তোমাকে। খুব কঠিন ভাষায় ছন্দাকে কথাগুলো বলল শুভ। আরো বলল,
_ পারবে এমন একজন পুরুষকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে ?
_ পারবে সারা জীবন স্বামী সোহাগ বঞ্চিত থাকতে ? একজন পুরুষত্বহীন মানুষকে সারা জীবন স্বামীর আসনে বসিয়ে রাখতে ?
_জানি পারবে না। কোন মেয়ে পারে না। কখনও কোন মেয়েই পারে নি তুমিও পারবে না। কারন আমি প্রজনন ক্ষমতাহীন। অনেক আগেই একটা দূর্ঘটনায় আমি সেটা হারিয়ে ফেলেছি। ডাক্তার বলেছেন হয়ত আমি আর কোনদিন তা নাও ফিরে পেতে পারি।
_ এখন সিদ্ধানতটা তোমার হাতে। একদিকে সবকিছুর হাতছানি। অন্যদিকে সব কিছু হারানোর হাতছানি। কোনটা নেবে তুমি ? সিদ্ধানত তোমার।
ছন্দা ততক্ষনাৎ বলে উঠল,
্#৯৬৫৮;আমি জানি না তুমি সত্য বলছ, নাকি বন্ধুর জন্য মিথ্যে বলছ তুমি সত্য বললেও আমি তোমাকেই চাই। অনেক বড় ডাক্তার দেখাব তুমি অবশ্যই ভালো হয়ে যাবে আর যদি ভালো নাও হও ধরে নেব ওটায় আমার নিয়তি।
শুভ এবার রাগের সাথে বলে উঠল,
_ আমি জানি এটা তোমার আবেগের কথা। তুমি এখন আবেগের বশবতর্ী হয়ে বলছ এসব কথা। তুমি এখন বাসায় যাও ঠান্ডা মাথায় চিনতা করো আমার মনে হয় তুমি সঠিক সিদ্ধানতটাই নেবে।
ছন্দা বলল তুমি একদিন কেন একশো বছর চিনতা করতে বললেও আমি একথাই বলব, আমি তোমাকেই চাইব।
সুমন এতোটাই অশানত হয়ে পড়ল যে সেই রাতেই ছন্দাকে ফোন করে নানা কটু কথা বলেও যখন কাজ হলো না তখন শুভ'র অযোগ্যতার কথা তুলে ধরল।
> কি পাবে তুমি শুভকে ভালোবেসে। না পাবে সুখ না পাবে সংসার না পাবে সনতাদি। তুমি আমাকে ভালোবাস। স্বামী-সংসার সবই পাবে আমার কাছে।
ছন্দা বলল আমার কিছুই চায় না। শুভ'র কাছে সুখ-সংসার না পায় শানতি তো পাব। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ফোনটা করার জন্য। কারন আমি একটা সিদ্ধানত নিতে পারছিলাম না। সেটা এখন অনেক সহজ হয়ে গেল। শোন এখন আর আমার কোন দ্বিধা-দ্বন্ব নেই। আমি তোমার ভাইকেই ভালোবাসি। তাকেই চায়।
সুমন এবার শুভকেও ছাড়ল না। তার অযোগ্যতা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে লাগল।
> তোর তো কোন যোগ্যতায় নাই ভালোবাসার। তবে কেন ভালোবাসতে যাস। তুই অধম। তুই অক্ষম।
কথাগুলো অন্য কেউ বললে হয়তো শুভ কিছু মনে করত না। কিন্তু সুমনের মুখ থেকে কথাগুলো তার বুকে বানের মত বিঁধল। বাধ্য হয়েই এতোদিন পর শুভ আজ মুখ খুলল,
_ বলতে পারিস কেন আজ আমি অধম ?
_ বলতে পারিস কেন আজ আমি অক্ষম ? তোর জন্য।
_ শুধু তোর কারনে আজ আমি অধম।
_ শুধু তোর কারনে আজ আমি স্বপ্ন দেখতে পারি না। কাউকে ভালোবাসার সাহস করতে পারি না। কারো ভালোবাসা গ্রহণ করতে পারি না ।
_ শুধু তোর কারনে। মনে পড়ে তোর শৈশবের সে স্মৃতির কথা। মনে পড়ে সেদিনের ডাক্তারের সেই ভবিষ্যত বানীর কথা।
_ তোর মনে পড়বে না জানি। কারন তুই তো শুধু ছন্দাকে ভালোবেসেছিস আমাকে নই।
শুভ আর সুমনের কথোপকথের মধ্যেই ছন্দা এসে পড়ল। সে তাদের সব কথায় দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে শুনেছে। ছন্দা সুমনকে বলল,
্#৯৬৫৮;তুমি কি জান শুভ আমার চেয়েও তোমাকে কতটা ভালোবাসে ?
্#৯৬৫৮;একটি বারের জন্যেও সে কখনও আমার কাছে তার নিজের কথা বলেনি তোমার কথা ছাড়া। যে লোকটি তার জীবনের সব কিছুকেই তোমার জন্য বিসর্জন দিয়েও তোমার সুখের জন্য নিজের ভালোবাসার কথাটা পর্যনত কাউকে কোনদিন বলেনি আর তুমি সেই মানুষটিকে বলছ স্বার্থপর।
্#৯৬৫৮;এতো অপমান, অপদসত করার পরও সে তোমার এখনও কিছুই করেনি। কেন যান সে তোমাকে প্রচন্ড ভালোাবাসে বলে।
্#৯৬৫৮; সে যখন তোমার জন্য সবকিছুই ছাড়তে পারল তুমি কেন আমাকে ছাড়তে পার না তার জন্য। যদি এমন হতো তোমার ভাইয়ের দুটো কিডনিই অকেজো হয়ে যেত তাহলে তাকে বাঁচাতে কি তুমি তোমার একটা কিডনি দিতে না ?
্#৯৬৫৮;ধরে নাও না আমি তোমার সেই একটা কিডনি যেটা তোমার ভাইকে সারাজীবন বাঁচিয়ে রাখতে পারে। কাঁদতে কাঁদতে অনুরোধের সুরে কথাগুলো সুমনকে বলল ছন্দা।
সুমন নিজের ভুল বুঝতে পেরে নিজেকে অপরাধী ভাবতে লাগল। চরম অপরাধ বোধ তাকে অস্থির করে তুলতে লাগল। ছন্দার হাত দুটো ধরে করুন কণ্ঠে বলল,
> আর বলো না। আমাকে আর অপরাধী করো না। আমি আর সহ্য করতে পারছি না ।
> আমি শুভকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। অনেক অপমান করেছি।
> চলো আমি ওর কাছে ক্ষমা চাইব। আমাকে ক্ষমা করবে তো শুভ বলো !
সুমন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে দেখে ছন্দা আনন্দিত বোধ করল বলল,
্#৯৬৫৮; কেন করবে না। সে যে তোমাকে অনেক ভালোবাসে।
কিন্তু কোথায় শুভ। সে তো পাশের ঘরেই ছিল। এ ঘর ও ঘর খুঁজে কোথাও আর পাওয়া গেল না শুভকে। চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল শুভ। শুধু পড়ে থাকল তার শেষ লেখাটা "সুখে থাকিস তোরা"।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানভীর আহমেদ বিষয়বস্তু খুবই ভালো, তবে বর্ণনাভঙ্গি খুবই দূর্বল। গল্পের মানসম্পন্ন যথাযথ ভাব আনতে হলে ভাষার ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে। আর পরদর্শী হতে হলে বেশি বেশি লিখতেই হবে। লেখার আগে অনেক অনেক পড়তে হবে। পড়তে হবে প্রতিষ্ঠিত সব লেখকদের গল্প। যতটা না গল্পের স্বাদ আস্বাদন করা তারচেয়ে মনযোগ দিতে হবে লেখার স্টাইল, বর্ণনাভঙ্গি, ডায়লগের বিন্যাস, শব্দ নির্বাচন ইত্যাদি ইত্যাদি। সুতরাং থামাথামি নেই। সর্বদা সাহিত্যের ভেতরেই থাকুন। উন্নতি ধীরে ধীরে আসবেই। কেননা সাহিত্যে রাতারাতি উন্নতি করা যায় না। এটা দীর্ঘসূত্রিতার ব্যাপার।
junaidal গল্পটি ভালো লাগলো, এগিয়ে যান।
Ruma সুন্দর হয়েছে।
মোঃ আক্তারুজ্জামান ভালো তবে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল|
সেলিনা ইসলাম সুন্দর গল্প তবে উপস্হাপনা এবং আবেগের গভীরতা আর একটু আশা করেছিলাম তবুও ভাল লাগল ধন্যবাদ
বিন আরফান. ভালো লাগলো. চালিয়ে যান. ৯৬৫৮ ?
সূর্য প্রথম আলো পত্রিকায় গত মাসেও একটা উপন্যাসের অংশ বিশেস পড়েছি যেখানে আমি বললাম, ও বলল, পদ্ম বলল>> এরকম আছে তবে তার কাছে বার্তা দেয়ার উপায় নেই। এটা পড়তে বাজে লাগে। গল্প বলার সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারা হলো প্রথম পুরুষে বলা, সেভাবে লিখে গেলে আর ডায়লগ আলাদা করে দিলে ওভাবে বলতে হয়না। ****গল্প ভাল আর বাকিটা নিয়মিত লিখলেই ঠিক হয়ে যাবে।

৩১ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪