অন্ধকার এখনও কাটেনি। ভরা পানির গ্লাসটা একটা পরিষ্কার গামছায় পেঁচিয়ে নিয়ে দ্রুত পা চালাচ্ছে গুঞ্জর আলী। খালি পা। গত পরশু হাট থেকে ফেরার সময় তলিখাওয়া স্পঞ্জের সেন্ডেলের ফিতাটা ছিঁড়ে যাওয়ার পর থেকে সে খালি পায়েই চলছে। কী করবে একজোড়া সেন্ডেল কেনা এখন তার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। খালি পায়ে থাকতে তার মোটেই খারাপ লাগে না। কিন্তু চলার পথে লোকেরা ক্যামনে যেন তাকায়। এতেই যা অস্বস্তি হয়। এখন এই ভোরের কনকনে শীতে পা দুটো জমে যাচ্ছে। কিন্তু সে দিকে তার একটুও ভ্রুক্ষেপ নেই। সে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে। একটাই চিন্তা তার মাথায়। ‘‘যেভাবেই হোক বড় মসজিদের ইমাম সাহেবরে ধরতে অইব। অন্ধকার থাকতে থাকতে মসজিদের সামনে যাইয়া খাড়ইতে অইব ইমাম সাবের পানি পড়া ছাড়া মাইয়াডা আমার চউখ খুইলা চাইব না।’’ কিন্তু কুয়াশার কারণে কয়েক হাত দূরের বস্তুও চোখে পড়ে না।
গুঞ্জর আলী আরও অনেকবার হুজুরের কাছ থেকে পানি পড়া এনেছে। মসজিদের সামনে গ্লাস হাতে দাঁড়িয়ে থেকেছে, নামাজ শেষ করে বের হওয়ার সময় ইমাম সাহেব দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়েছেন। তিনি অবশ্য একটু কড়া মানুষ। প্রশ্ন করছেন, ফজরের নামাজ পরছ গুঞ্জর? যেদিনই সে ‘না’ বলেছে ধমক খেয়েছে। আজও সে সত্যি কথাই বলবে। মনে মনে সে বলল: ‘‘মাইয়াডার অসুস্থ্য মিছা কথা কইয়া পানি পড়া নিলে কোনু কাম অইব না।’’ সে বলবে,না হুজুর পড়ি নাই। আইতে আইতে নামাজের সময় শেষ অইয়া গেছে।’’ দয়া কইরা পানিডায় একটা ফুঁ দিয়া দেন। না অইলে মাইয়াডারে আমার বাঁচাইতে পারতাম না।’’
‘‘পানি পড়ায় মানুষ বাঁচে না বেকুব, বাঁচানোর মালিক আল্লাহ। পানিপড়া তো উছিলা।’’ ইমাম সাহেব বলবেন।
ইমাম সাহেবের অমন ধমক তার সয়ে গেছে। অনেকদিন কথা দিয়েছে নামাজ পড়বে বলে, কিন্তু পড়তে পারে না আলসি লাগে। সব কাজ সে করে অত্যন্ত শক্তি খাটিয়ে, সুচারুভাবে করে কিন্তু নামাজ পড়ার কথা মনে হলেই তার শরীর অবস লাগে। নামাজের প্রতি তার উদাসীনতা দেখে ইমাম সাহেব বলেছেন, ‘‘শয়তান তোমার পেছনে লাগছে গুঞ্জর, ঈমানডারে মজবুত করো।’’
গুঞ্জর আলী মনে মনে বলে ,‘‘কী যে কন ইমাম সাহেব, গরীব মাইনসের আবার ইমান।’’
সে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে। কখনো হাঁটছে কখনো দৌড়াচ্ছে। বিড়বিড় করে বলছে: ‘‘আল্লাহ-আল্লাহ আমার মাইয়াডারে তুমি হুজুরের পানি পড়ার উছিলায় ভালা কইরা দিও।’’ এমনিতে মুখে সে আল্লাহর নাম ঠিকই লয়, বিপদে পড়লে আরও বেশি। কিন্তু নামাজ পড়তেই যত আলসেমি।
গুঞ্জর আলীদের বাড়িটা কান্দাপাড়া গ্রামের পূর্ব পাশে। বওলা বাজার থেকে যে বড় কাঁচা সড়কটা পূর্বধলা হয়ে নেত্রকোণা গেছে সেই সড়কের দক্ষিণ পাশে। তাদের বাড়ির পরেই দক্ষিণ দিকের বিশাল এলাকা জুড়ে আশিবিল। আশি বিলেরই একটা নালা বড় একটা খালের আকারে কোকাইল আর কান্দাপাড়ার মধ্যদিয়ে বড় সড়ক বিভক্ত করে হাতিবান্দা গ্রামের দিকে গেছে। সড়কের পরেই বিশাল নিম্নাঞ্চল। বর্ষাকালে পানি থৈ থৈ করে, দেখে মনে হয় সমূদ্র। মাঝখানে সড়কের বিভক্তিস্থলে একটা পাকা সেতু। সেতুর খবু কাছেই উত্তর দিকে কতকটা জায়গা অনেক উঁচু। বড় একটি ঈদগা মাঠ। কাছেই দক্ষিণে পুরনো পরিত্যক্ত ইউনিয়ন পরিষদের একটি অফিস ভবন। ভবনের পাশেই বেড়া ভাঙা একটা মাদ্রাসা। ভবনটা পরিত্যক্ত হওয়ার পর কেউ মেরামত করে নি। ফলে সব সময় বালি সিমেন্টর আস্তরণ খসে পড়তেই থাকে। হয়তো সরকারি সম্পদ বলেই এমন ধ্বংসাবশেষে পরিণত হতে পেরেছে ভবনটা। ওটির সমনেই কটি বড়ই গাছ। আর পেছনে কাঁটা মেহেদী, হাইডরা, নিসুন্ধা গাছের ঝোপ। ঝোপগুলোকে জড়িয়ে রয়েছে স্বর্ণলতার ঝাড়। দিনের বেলাতেই জায়গাটা কেমন ভিত্ভিতে। এর ওপর কিছুদিন আগে এলাকার এক বখে যাওয়া এক যুবক, দিন দুপুরে ইলিম ফকিরকে খুন করে ফেলে রেখেছিল সড়কটির ওপর। ভবন থেকে উত্তরে কতকটা জায়গা আরও উঁচু। সবুজ দুর্বায় ছাওয়া। ওখানে রয়েছে ক‘টি হিজল- শেওড়া, মাছের কাটা গাছ। বেশিরভাগ গাছ আবার খালটার তীর ঘেঁষে। দুর্বায় ছাওয়া জায়গাটায় সপ্তাহে দুদিন হাট বসে। আশ-পাশের গ্রামের লোকজন নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা দ্রব্য সামগ্রির ক্রয়-বিক্রয় করতে এখানে আসে। হাটবার ছাড়া বড় ফাঁকা পড়ে থাকে জায়গাটা। নামটাও বড় অদ্ভুদ, খালমাগড়া। এমন অদ্ভুদ নাম কেনো হলো কেউ বলতে পারে না। খালমাগড়াকে ঘিরে অনেক আজগুবি গল্প ছড়িয়ে আছে এলাকায়। কেউ বলে রাতে এখানে আশ-পাশের ডাকাতরা সংঘবদ্ধ হয় এবং পরে ডাকাতি করতে যায়। রাত গভীর হলে কখনো কখনো ওখানে বহু শক্তিশালী টর্চ লাইটের আলো জ্বলতে দেখেছে অনেকে। আর ওই ঝোপঝাড়গুলোতে সন্ধ্যের পরেই জ্বলতে থাকে অসংখ্য জোনাকি। এসব দৃশ্য গুঞ্জর আলীর বহু পরিচিত।
সে গোবেচারা ধরনের লোক। সাহস নেই। ফলে ভয়ানক কোনো দৃশ্যের মুখোমুখিও কোনোদিন হতে হয় নি তাকে। তবে জায়গাটা সবচেয়ে আতঙ্কের হয়ে পড়ে ইলিম ফকির হত্যার কিছু দিন পর থেকেই। ইলিম ফকির ছিলেন একদল ভাসমান মানুষের নেতা, যারা রায়দের পরিত্যক্ত জমিতে আবাস গড়ে তুলেছিল। তিনি এই জনগোষ্ঠীকে নিয়ে রুটি-রুজির সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন স্থানীয় এলিটদের সঙ্গে। দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে তিনি তাদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন বটে কিন্তু নিজে মরে গেছেন। গুঞ্জর আলী আরও অসংখ্য লোকের সঙ্গে ইলিম ফকিরের ক্ষতবিক্ষত লাশটা দেখতে গিয়েছিল। এটাই তার জীবনে খুন হওয়া মানুষের লাশ দেখার প্রথম ও শেষ অভিজ্ঞতা। ইলিম ফকির হত্যার আরও বহু বছর আগে কালো কাপড়ে মুখ বাঁধা একদল লোক স্থানীয় এক মেম্বারকে ওদিককার হিজল গাছটার নিচে জবাই করে ফেলে রেখে গিয়েছিল। গুঞ্জর আলীকে এখন সেই হিজল গাছটার নিচে দিয়েই যেতে হবে। অনেকে বলে, ওই মেম্বারকে জবাই করার পর কেউ তার লাশ ওখান থেকে নিতে সাহস করে নি। এমন কি তার আত্মীয়-স্বজনেরা লাশটা নিয়ে দাফন পর্যন্ত করে নি।
পুলিশ এসেছিল তিনদিন পর। লাশটা পঁচে গলে গিয়েছিল। এর কিছুকাল পর থেকেই এলাকার লোকজন, মাঝেমধ্যে, বিশেষ করে, চাঁদনি রাতে সেই মেম্বার সাহেবকে ওই গাছের নিচে হাঁটতে দেখেছে। তারা দেখেছে মেম্বার সাহেব দু‘হাত পেছনে ধরে সামনে দিকে ঝোঁকে এদিক-ওদিক করছেন। ধব্ধবে শাদা পাজামা-পাঞ্জাবি তার পরনে। আবার কোনো রাতে কেউ হয়তো দেখেছে যে, ওই গাছতলে বসে তিনি দু‘হাতে মুখ ঢেকে বিলাপ করছেন। গুঞ্জর আলী যদিও খুব দ্রুত পা চালাচ্ছে, তবু এ সব কথ মনে পড়ে যাচ্ছে তার। যত চেষ্টা করছে মনে না করতে, আজগুবি গল্পগুলো মাথায় ভুরবুরি তুলছে, ফেনিয়ে তুলছে মাথার মগজ। আর এজন্য দৌড়ে দৌড়ে জায়গাটা অতিক্রম করতে চেষ্টা করছে সে। কতটুকুই বা পথ, তবু শেষ হচ্ছে না। এই যে দৌড়াচ্ছে। গাছতলাটা পার হয়ে মাঠে পড়েছে। ভয়টা কেটে গেছে। যথাসময়েই মসজিদের দুয়ারে গিয়ে হাজির হয় সে। নামাজ সবে শেষ হয়েছে। দলবদ্ধভাবে মুসুল্লিরা বেরিয়ে আসছে। প্রথমে গুঞ্জর আলী ভাবল, ইমাম সাহেব সবার পেছনে। কিন্তু দেখতে দেখতে সব মুসুল্লি বেরিয়ে গেল, রইল শুধু মুয়াজ্জিন সাহেব।
গুঞ্জর আলীর খটকা লাগল, এতগুলো মুসুল্লি বেরিয়ে গেল, পানি হাতে সে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অথচ কারও চোখেই যেন সে পড়ে নি। কেউ একবার বলে নি যে, ইমাম সাহেব নেই। মুয়াজ্জিন সাহেব বেরিয়ে এসে মসজিদের দরজায় তালা লাগাচ্ছেন। তিনিও তার দিকে তাকাচ্ছেন না।
-হুজুর, ইমাম সাহেব নাই?
-না, উনি তো আসেন নি। আরও তিন দিন আসবেন না।
-ও আচ্ছা। মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে গুঞ্জর আলী।
-কার অসুখ? মুয়াজ্জিন সাহেব জানতে চাইলেন।
-আমার মাইয়ার।
-কী হইছে?
গুঞ্জর আলী সবিস্তারে বর্ণনা করে মেয়ের অসুস্থতার কথা।
-আহো আমিই পইড়া দিই, ইনশাল্লাহ ভালা অইয়া যাইব।
পানি পড়া নিয়ে আবার ছুটতে থাকে গুঞ্জর আলী। সেই একই পথে ফিরছে সে। ততক্ষণে আকাশ বেশ ফর্সা হয়ে গেছে, লোকজনও কিছু কিছু রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে। শীতটাও কমে এসেছে। গুঞ্জর আলী মাঠ পেরিয়ে খালমাগড়ার ঈদগা মাঠের কাছাকাছি চলে আসে। সামনেই হিজল গাছটা। আশপাশের কোথাও কোনো লোক নেই। তবু এখন আর তার ভয় করছে না। একটা ব্যাপার হিজল গাছটার সঙ্গে হেলান দিয়ে সামনের খালের দিকে তাকিয়ে কে যেন বসে আছে। গুঞ্জর আলীর বুকটা ধক্ করে ওঠে। যাওনের সময় তো কাউরে দেইখা গেলাম না। আরও কাছাকাছি হয় সে, বুকে থুথু দেয়। গামছায় প্যাঁচানো গ্লাসটা শক্ত করে ধরে। সে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছ লোকটাকে। পশ্চিম দিকেই খালের পানিতে চোখ স্থির রেখে চুপচাপ বসে আছে।
পেছন থেকে দেখা যায় গায়ে ছেঁড়া কাঁথা-মাথার লম্বা চুলে জট। গুঞ্জর আলী নিশ্চত, লোকটা তাকে দেখতে পাচ্ছ না এবং এটা সেই খুন হওয়া মেম্বার সাহেবের প্রেতাত্মাও নয়। তবু সে ধীরে ধীরে পা ফেলে গাছটাকে পেছনে ফেলে যেতে চাইছে। কিন্তু হাঠৎ দৃঢ় শান্ত একটা কন্ঠস্বর।
-কী গুঞ্জর, আলী ইমাম সাহেবরে পাইলা না?
গুঞ্জর আলীর দম বন্ধ হবার উপক্রম। তার শরীর কাঁপছে। লোকটা আমারে দেখল ক্যামনে? দৌড় দিতে উদ্ধত হয় সে।
-খাড়ও গুঞ্জর। আমার প্রশ্নের উত্তর তো দিলা না।
তাজ্জব ব্যাপার, লোকটা এখনও পেছনে ফিরে তাকায় নাই। অথচ আমারে দেখতে পাইতাছে? মনে মনে ভাবে গুঞ্জর। সে তোতলাতে তোতলাতে কোনো রকমে বলে: ‘‘জি-জি না...।’’
-তোমার মাইয়াডার খুব অসুখ না?
-জি!
-সময় নষ্ট কইরা ফালাইছ।
-কী করতাম গরীব মানুষ, ট্যাকা-পয়সা নাই...।
-আচ্ছা, পানিডা নিয়া আস।
-মুয়াজ্জিন সাহেবে তো পইড়া দিছে।
-অসুবিধা কী? দেও আমিও পইড়া দেই। গুঞ্জর আলী তার সামনে যায়। লোকটার বয়স আন্দাজ করতে চেষ্টা করে। পারে না। জীর্ণ-শীর্ণ মুখে তার লম্বা দাড়ি। সে অনিচ্ছা সত্তে¡ও কিছুটা দূর থেকে গ্লাসটা তার সামনে ধরে। পাগলও দূরে থেকেই পানিতে ফুঁ দিয়ে দেয়।
-ঠিক আছে যাও, যত তাড়াতাড়ি পার গিয়া পানিডা খাওয়াও।
-জি আচ্ছা, ছালামালাইকুম ফকির সাহেব।
গুঞ্জর আলী গ্লাস হাতে কাঁপতে কাঁপতে হিজলতলা ত্যাগ করে।
কিন্তু কিছুটা দূরে এসে হঠাৎ তার মনে হলো পানিতে ফকিরের ফুঁ ঠিকমত লাগে নি। এবং অল্পক্ষণের মধ্যেই এ ধারণাটা তার মাথায় বদ্ধমূল হয়। সে আবার পেছনে ফিরে যায়...।
ফকির সাহেব...।
-আরে গুঞ্জর, পানি লইয়া তুমি গেছ না? যাও, দৌড় দেও।
-ফকির সাহেব আমার মনে অইতাছে-পানিতে আপনের ফুঁ লাগে নাই।
-যতটুকু লাগছে তাতেই কাম অইব, তুমি দৌড় দেও।
-ফকির সাহেব রাগ করইন না আরেকটা ফুঁ দিয়া দেন। আমার মনডা ক্যামন খুঁত খুঁত করতাছে।
-আচ্ছা আন।
গুঞ্জর আলী শক্ত দু’হাতে গ্লাসটা করে ফকিরের সামনে ধরল।
মাটিতে রাখ।
গুঞ্জর গ্লাসটা মাটিতে রেখে জড়সড়ো হয়ে পাশে দাঁড়ায়। ফকির গ্লাসটার দিকে তাচ্ছিল্যভরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ফুঁ দেয়। ফুঁয়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্লাসটা ফেটে চৌচির হয়ে যায়। আর ছড়িয়ে পড়া পানিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে।
গুঞ্জর আলী আরও কাঁপতে থাকে। সে ফকিরের পা জড়িয়ে ধরে।
-এ কী অইল ফকির হুজুর, অহন আমি মাইয়ার লাগি কী লইয়া যাইয়াম?
-দুর্বল বিশ্বাসের মানুষ তুমি গুঞ্জর। আমি তো আগেই কইছলাম এইটুকতেই চলব। তুমিই ত মানলা না।
-আমার ভুল অইয়া গেছে ফকির সাহেব। আমারে আপনে মাপ কইরা দেন। আমি দৌড়াইয়া যাইয়া পানি লইয়া আইতাছি।
-যাও...।
গুঞ্জর আলী বাড়ি গিয়ে দেখল, মেয়ে উঠে বসেছে। তার মা তাকে ভাত খাওয়াচ্ছে। ম্লান হাসি মেয়ের মুখে। গুঞ্জর মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরল। এরপর এক গ্লাস পানি নিয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল:‘‘তুমি খাও মা, আমি ফকির সাহেবে কাছ থেকে পানি পড়া নিয়া আসি।’’
কিন্তু হিজল গাছতলে গিয়ে গুঞ্জর দেখল পাগল ফকির নেই।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
গ্রামবাংলার শীতে এদেশের গরীব মানুষদের জন্য কতটা কষ্টের তারাই জানেন যারা কাছে থেকে বাংলাদেশকে দেখেছেন। এখন যদিও অনেকটা উন্নতি হয়েছে কিন্তু ৩০-৪০-৫০ বছর আগে কেমন ছিল আমার এ গল্প থেকে কিছুটা হলেও আঁচ করা যাবে। বাংলাদেশ জানতে হলে তার গ্রাম-নদী-খাল বিল, সাধারণ থেকে অতি সাধারণ মানুষকে তাদের জীবনাচারকে জানতে হবে। বুঝতে হবে। আমি একটি পরিবারের কষ্টের চিত্র আঁকার পাশাপাশি গ্রামের জীবন যে রূপ কথা, উপকথা, অবিশ্বাস্য লোকগল্প লুকিয়ে আছে, তেমনই একটি গল্পকে এখানে উপস্থান করেছি। আশা করি যারা গল্পটি পড়বেন আনন্দ পাবেন। শীতে বাংলার মানুষের জীবনাচারের ভিত্তিতে অতি প্রচলিত প্রকৃত গল্প।
২৪ মার্চ - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪