ডাক্তার সাফ জানিয়ে দিয়েছে- মুন্নীর বাবা আশরাফ হোসেন আর বাঁচবেন না| আর বড় জোর দূএক মাস! পাকস্থলীর ক্যান্সার! লাস্ট ষ্টেজ, কোনো স্টেপ নেয়ার সুযোগ নেই|
স্রোতে ভেসে যাওয়া মানুষের খরকুটো আঁকড়ে ধরার মতই মুন্নি একবার ডাক্তারকে অপারাশনের কথাটা বলেছিল| অসহায় ভাবে ডাক্তার তাঁর মাথায় হাত রেখে বলেছিল - দেখো বাবা, তোমার বাবাকে আমরাও জীবিত দেখতে চাই! কিন্তু অনেক দেরী হয়ে গেছে| এখন আর কোনো কিছুই ভাববার সুযোগ নেই| আল্লাকে ডাক!
প্রিয়জন হারানোর কষ্ট সইতে হয় না এমন মানুষ পৃথিবীতে হয় কিনা জানা নেই| কিন্তু কাছের মানুষটির চোখের সামনে তিলে তিলে নিঃশেষ হতে দেখার মত দুর্ভাগ্য সবার হয় না| সে পীড়ার তীব্রতা যে কত কষ্টের তা ভুক্তভুগী ছাড়া উপলব্ধি করা অসম্ভব| চোখের সামনে জলজ্যেন্ত একটা মানুষের জীবন প্রদীপ ধীরে ধীরে নিভে যাওয়া স্বজনদের জীবনের সব শান্তির গলা চেপে ধরার নামান্তর মাত্র!
আশরাফ সাহেব বহু আগে থেকেই পেটের পীড়ায় ভুগছিলেন | দিন দিন পেটের নানা রকম সমস্যা বেড়েই চলেছিল| পাড়ার ওষুধের দোকান থেকে নিজে নিজেই আজ গ্যাস্ট্রিকের তো কাল আমাশয়ের ওষুধ কিনে খেতেন| বেশ কিছু দিন থেকে সকালে ঘুম থেকে উঠলে বমির ভাব হত| দাঁত ব্রাশ করার সময় বিশ্রী রকমের ওয়াক ওয়াক শব্দে আশে পাশের লোকজন বিরক্ত হত| কিছু দিন থেকেই অনেকটা অকারণে পাতলা পায়খানা হত| শেষে পায়খানার সাথে রক্ত| ডাক্তারের কাছে আজ যাব কাল যাব করে আর না গেলেও অবশেষে সরাসরি হাসপাতালেই যেতে হলো |
প্রায় পচিশ বছর আগে মতিঝিলে একটা জাহাজ কোম্পানির অফিস সহকারী হিসেবে নিজের কর্ম জীবন শুরু করেছিলেন| বেতন ভাতা আর দশটা কেরানির যেমন হয় তেমনি- কোনো মতে চলে যাওয়ার মত আর কি! জীবনটা এক অফিসের এক চাকুরিতেই কাটিয়ে দিলেন| অন্য কোনখানে আর অন্য কোনো চেষ্টা করে দেখেননি| অল্পে তুষ্ট মানুষটার জীবনে কোনদিন উচ্চাভিলাষ ছিল না| খেয়ে পরে বেচে থাকতে পারলেই হলো- আলহামদুলিল্লাহ!
অন্য কোম্পানির ফুসলানো দু একটা প্রস্তাব পেয়েছিলেন কিন্তু তাতে মত দেননি- আশরাফ সাহেব | এক অফিসের কেরানি তো আর অন্য অফিসের এম. ডি বা জি. এম হতে পারবে না অযথা অত ছুটোছুটি করে লাভ কিরে বাবা!
অজপাড়া গাঁয়ের স্কুল থেকে ম্যাট্রিক আর বাড়ি থেকে মাইল দশেক দুরের একটা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছিলেন| সংসারের অভাব অনটনে আর পড়ালেখাটা হল না| পরে পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে মালবাহী জাহাজ কোম্পানির অফিসের চাকুরিটাও নিজেই জুটিয়ে নিয়েছিলেন!
চাকুরী নেয়ার বছর দুএকের মাথায় বাবা মায়ের পছন্দ মতো বিয়ে হলো| বিয়ের পরই `কোথায় থাকিস কি ছাইপাস খাস' বলে বাবা মা নতুন বৌকে সাথে দিয়ে দিলেন| কমলাপুর এলাকায় এক টিনশেড বাসায় উঠলেন| আজ অবধি সেই বাড়িতেই আছেন| প্রথম দিন বাড়িওয়ালা ভাড়া চেয়েছিলেন- `দিও, তোমার মনে যা চায়'!
স্বপ্নের মত দু তিনটা বছর কোথা দিয়ে কেটে গেল টেরই পেলেন না| ঘর আলো করে অতিথি এলো- মুন্নি! বছর পাচেক পরে তিন্নি! তিন্নির আগমনে আশরাফ গিন্নির মুখে হাসি থাকলেও তা একটু বিবর্ণ ছিল| কিন্তু আশরাফ সাহেব প্রথম মেয়ের বাপ হয়ে যেমন খুশি হয়েছিলেন তেমনি দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের বেলায়ও খুশিই হলেন| স্ত্রীর মনের অবস্থাটা ঠিক ধরে ফেললেন কিন্তু কিছুই বুঝতে দিলেন না| উচ্ছসিত হয়ে স্ত্রীকে বললেন- মুন্নির মা, তুমি খুব সুখী হবে গো! দু দুটি লক্ষ্মীর মা যে সে কি সুখী না হয়ে পারে গো!
হ্যা, আশরাফ সাহেবের মেয়ে দুটি সত্যি সত্যি লক্ষ্মী মেয়ে! দশটা বড় লোকের মেয়ের মত ওরা অনেক কিছু পায় না সত্যি কিন্তু তাতে ওদের কোনো মনোকষ্ট নেই| বাবা মা আর নিজেদের পড়ালেখা নিয়ে ওরা বেশ সুখী মানুষ! ওদের অনেক অনেক গহনা নেই, দামী দামী দেশী- বিদেশী প্রসাধনী নেই, কাপড় চোপড় নেই| তাতে কোনো দুখ নেই| ওরা কম দামে কেনা কাপড়চোপড়, আসবাবপত্র পরিস্কার, পরিপাটি করে রাখে| দেআলে টাঙানো রবীন্দ্র, নজরুলের কমদামী ফটো ওদের হাতের যত্নের পরশ পেয়ে যেন জীবন্ত হয়ে উঠে!
নিজেদের পড়া লেখার পাশাপাশি টিউশনি করে বেশ কিছু আয় করে| নয়তো কেরানি বাপের কি সাধ্য ছিল একা কামাই করে দুটু মেয়েকে শহরে লেখাপড়া করানোর?
মহল্লার লোকজনও মুন্নি তিন্নির প্রশংসা করে| নিজেদের ছেলে মেয়েকে মুন্নি তিন্নির কথা বলে- ওদেরকে দেখো, কিভাবে পড়তে হয়, কিছু করতে হয়- ওদের কাছ থেকে শিখো!
এক রত্তি মেয়ে দুটি চোখের সামনে দিয়ে কখন যে বড় হয়ে গেল কিছুই যেন বুঝতে পারলেন না- আশরাফ সাহেব | এই তো সেদিন মুন্নি যেদিন বলছিলো তার অনার্সটা শেষ হলো| এখন সে কি করবে? অনেকক্ষণ আশরাফ সাহেব কোনো কথা বলতে পারেননি| মনে হয়েছিল মেয়েটা যেন এক লাফে অনেক বড় হয়ে গেছে, অনেক দূর এগিয়ে গেছে! মাস কযেক আগে যখন তিন্নিটা কলেজে ভর্তি হয়েছিল তখনও এরকমই একটা অদ্ভুত অনুভুতি মনে জেগেছিল|
মুন্নি খেআল করেছে আজ কাল বাবা তাঁর ছোট বেলার কথা, নিজ গ্রামের কথা খুব বেশি বেশি বলেন| এমন কেন? তবে কি বাবা তাদেরকে মানুষ করতে গিয়ে পিছনে ফিরে দেখার সময় পেতেন না? নাকি মানুষ মৃত্যুমুখী হতে চায় না বলেই তার মন পিছনের সোনালী সময়গুলিতে বার বার ফিরে যায়?
কযেক দিন আগে অসহ্য যন্ত্রনায় সারা রাত বাবা ঘুমাতে পারেননি| মুন্নিও ঘুমায়নি| সারাটি রাত বাবার শিয়রের পাশে বসেই কাটিয়েছে সে| ভোর রাতে বাবা অনেকটা শান্ত হয়ে গেলে মুন্নির মনেও শান্তি নেমে আসে| বাবার পাশেই সে একটু শুএ পড়তে যাবে তখনি বাবা একেবারে কচি শিশুর মত নিস্পাপ হাসলেন| যেন তাঁর কিছুই হয়নি| মরণ ব্যাধির কুঁড়ে কুঁড়ে খাওয়ার কোনো ক্লেশ, কষ্ট, বেদনার চিন্হ মাত্র তাঁর চেহারায় দেখা গেল না মুখে যেন এক অপূর্ব হাসির আলো ছড়িয়ে পড়েছে| মুন্নির মুখের দিকে স্থির তাকিয়ে বললেন- একবার হয়েছে কি মা জানিস? আমি তখন ফাইভ কি সিক্সে পড়ি| বৈশাখ মাসে একদিন অনেক ঝড়, তুফান হলো সাথে শিলা বৃষ্টি| ঝড় বৃষ্টি থেমে গেলে আমি গেলাম আমাদের গাছের আম কুড়াতে| হঠাত দেখি কি- একটা ঘু ঘু পাখি মাটিতে পরে ডানা জাপ্টাচ্ছে | পাখিটার একটা ডানা ভেঙ্গে গেছে| আমার খুব মায়া হলো আমি ওটাকে ধরতে গেলাম ওটা আমার ভয়ে একটু দুরে সরে গেল| পরে আমি ওটাকে ধরতে চাই তো ওটা আমার ভয়ে আরও দুরে চলে যায়| এরকম করতে করতে আমি পাশের একটা মরিচ খেতের বেড়ার উপর পড়ে গেলাম| আমার পায়ে একটা মস্ত খেজুর কাঁটা ঢুকে গেল| কাঁটাটা আর বের করা গেল না| মাস খানেক পরে পঁচে বের হলো| কি কষ্টটাই না করলাম রে বাবা!
মুন্নি ছুটে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো| ছোট্ট বারান্দাতে দাঁড়িয়ে সে দুহাতে নিজের মুখ চেপে ধরে আপ্রাণ নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করলো| কিন্তু বুকের গভীর থেকে ঠেলে উঠে আসা কষ্টের দলাটাকে সে কোনভাবেই আটকাতে পারলো না| ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে একসময় ধুলাবালিময় বারান্দায় বসে চাপা স্বরে বিলাপ করতে লাগলো- বাবা তোমার গল্প বলার সময়গুলি যে দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে!
বাবার মরণ ব্যাধির কথা জানার পর মুন্নি স্থির করেছিল কোনো ভাবেই সে ভেঙ্গে পড়বে না| সে যদি ভেঙ্গে পরে তবে মাকে সামলাবে কে? তিন্নির কি হবে? সেই থেকে সে সবসময় বাবার সান্নিধ্যে আছে| রাতের বেলাও সে বাবার পাশেই গুটিসুটি মেরে প্রায় নির্ঘুম শুএ থাকে| মা মেঝেতে বিছানা পেতে শোয়, মুখটা আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখে| গভীর রাতে বাবা ঘুমিয়ে গেলে প্রতি রাত্রেই মায়ের আঁচলের নীচ থেকে অস্পষ্ট শব্দ ভেসে আসে| আঁচলটা থির থির করে কাঁপে| এমনিতেও মুন্নি খেয়াল করেছে আজ কাল মা কাজের অজুহাতে বেশির ভাগ সময় রান্না ঘরে, কলঘরেই কাটায়| কখনো কখনো একটু তারাতাড়ি সামনে থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে| কিন্তু চেহারায় লেগে থাকা কান্নার, কষ্টের প্রকট ছাপ আড়াল করতে পারে না|
তিন্নিটা খুব মেধাবী ছাত্রী- সারাক্ষণ লেখা পড়া নিয়ে থাকতে ভালবাসে| দিনে দু একবার টিভির সামনে বসতো কিন্তু এখন সে গালে হাত রেখে পড়ার টেবিলের সামনে ঠায় বসে থাকে| মুন্নিকে দেখলে সে তাড়াতাড়ি কোনো বই টেনে নিয়ে পড়ার ভান করে| নয়তো তাঁর দৃষ্টি চলে যায় ছোট্ট জানালার ফাঁক দিয়ে আঙ্গিনার আতা গাছ, ডালিম গাছ, লাউ, সিমের ডগার দিকে| এই বাড়িতেই তার জন্ম হয়েছে বাড়ির মালিকও বেশ কযেক বছর আগে তাদের চোখের সামনেই মারা গেছে| বুড়ো মানুষটা নেই, তাঁর ছেলে মেয়েরা এমেরিকা ইউরোপ থাকে| ওরা নাকি কিছু দিন পরে দেশে আসবে এই পুরানো ছোট্ট বাড়িটাকে ভেঙ্গে আধুনিক মডেলের নতুন বড় বাড়ি বানাবে| বড় বাড়িটা হয়তো আকাশ ছোবে| পুরানো বাড়িটা বুড়ো মানুষটার মতোই চির দিনের মত পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে| বাবাও এমনি করে হারিয়ে যাবে?
তিন্নি মনকে কিছুতেই সায় দিতে পারে না| মাকে কিংবা বড় বোনকেও জিগ্যেস করতে পারে না| বাবা চির দিনের মতো চলে যাবে একথাটা সে কিছুতেই কারো মুখ থেকে শুনতে চায় না!
হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসার দুদিন পর বাবা মুন্নিকে ডেকে বললেন- এভাবে শুএ থাকতে থাকতে আমি দম বন্ধ হয়ে মরে যাবরে মা| একটু টিভিটা আমার ঘরে দিয়ে যা| হয়ত কিছুটা সময় কেটে যাবে|
মুন্নি মনে মনে খুশি হয়- তাইতো! বাবার যদি একটু ভালো লাগে! দুবোন মিলে সাথে সাথে টিভিটা ওদের ঘর থেকে বাবার ঘরে নিয়ে আসে| দেখতে সুবিধা হয় এমন একটা জায়গায় ছোট টি টেবিলের উপর টিভিটা পেতে দেয়|
মৃত্যু যাকে অনবরত কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে সামান্য টিভি কি আর তাকে শান্তি এনে দিতে পারে? উল্টো আরও ঝামেলা যেন বেড়ে গেল| অনবরত এই চালু কর এই বন্ধ কর- এ রকম চলছে|
মুন্নি খেয়াল করেছে মাঝে মধ্যে বাবা এমন মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখেন যে মনেই হয় না তিনি একজন অসুস্থ মানুষ! একদিন কি একটা টক শো দেখছিলেন| মুন্নিকে ডেকে বললেন- জানিস মা, এই লোকগুলি দেশটার খুব ক্ষতি করে|
উচ্ছের ঝোল দিয়ে নরম করে ভাত মাখাতে মাখাতে মুন্নি বাবার কাছে এসে বলল- কোন লোকগুলি বাবা?
-এই তথা কথিত বুদ্বির ঢেকিগুলিরে মা!
-কেন ওরা আবার কি করেছে?
-ওরা বলছে দেশটায় এখনো ভালো মানুষ আছে! মুন্নি বাবার গলায় বেশ উত্তেজনার আঁচ টের পেল|
- সত্যি তো বলেছে! তুমি ও তো একজন ভালো মানুষ| সারা জীবন কোনো অন্যায় করনি|
-দশটা গাব গাছের ভিতর দুটো আপেলের চারা লাগিয়ে তাকে আপেল বাগান বলাটা বোকামি বই আর কিছু নয়| আমরা নৈতিকতা বিসর্জনের শেষ ধাপটিতে এসে দাড়িয়েছি| সামান্য সম্পত্তির জন্য ভাই ভাইকে খুন করছে, স্বামীর হাতে স্ত্রী নির্যাতিত হচ্ছে, ছাত্ররা মারামারি কাটাকাটি করছে ছাড়া কেউ কোনো কাজ করছে না, ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতে পারছে না| আমাদের অপকর্মের পরিমান কোনো ফিরিস্তি দিয়ে শেষ করা যাবে? এরকম একটা পরিস্থিতিতে ওরা কিভাবে এখনো ভালো মানুষ আছে বলে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে?
মুন্নি চুপ করে থাকে কিছু বলতে পারে না| কি বলবে? কিছু বলার আছে কি?
আজ কাল রাজনৈতিক দলগুলি সেনা শাসনের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলে, অপশক্তির ক্ষমতা দখল নিয়ে কথা বলে| কিন্তু অপশক্তি কখন ক্ষমতা দখল করে? অপ রাজনীতি অপশক্তির ক্ষমতা দখলের পথ প্রশস্থ করে| এটা কি আমদের দেশের নেতা নেত্রীরা বুঝতে পারেন না? বুঝতে পারেন ঠিকই কিন্তু ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেন না| অনৈতিকতার এই বিষ বৃক্ষই গনতন্ত্রের গলা চেপে ধরে| সবাইকে শুধরাতে হবে| নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য একটা বিপ্লব ঘটানো জরুরি হয়ে পড়েছে| সংসার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত নীতি আদর্শের জন্য একটা আন্দোলন এখন থেকেই শুরু করা জরুরি, অনেক জরুরি হয়ে পড়েছে- বাবা অসুস্থ শরীরে অনেক কথা বলে হাফাতে থাকেন| মুন্নি বাবার মাথায় হাত রাখে|
একদিন পত্রিকার একটা বিজ্ঞাপনের দিকে মুন্নির চোখ আটকে যায়| চাকুরীর বিজ্ঞাপন| দ্রুত প্রসার লাভ করা একটা ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদে শতিনেক তরুণ কর্মকর্তা কর্মচারী নিযোগ দেআ হবে| মনের ভিতর অন্য একটা অনুভুতি কাজ করে| এসময় একটা ভালো কাজের খুব দরকার| সংসারের জন্যও আবার বাবা যদি দেখে মেয়ের ভালো একটা চাকুরী হয়েছে তবে তা কি অসুস্থ এক পিতার জন্য কম আনন্দের, কম খুশির খবর? মুন্নি মনে মনে রোমাঞ্চিত হয়, আল্লাহকে ডাকে|
কাগজপত্রগুলি রেডী করতে গিয়ে মুন্নির মনে পরে একটা সমস্যা আছে| তার জাতীয় পরিচয় পত্রে একটু ভুল আছে- বাবার নাম আশরাফ এর জায়গায় ভুল করে আশফাক ছাপা হয়েছে| এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিসে যাই যাচ্ছি করে আর যাওয়া হয়নি| এখন কি হবে?
মনটা খারাপ হয়ে যায়| কিন্তু মুন্নি দমে না| সে বিজ্ঞাপন দাতা ব্যাঙ্কের এইচ. আর. এম. অফিসারদের সাথে কথা বলে| ওরা বলে এটা তত জটিল কিছু না প্রথম শ্রেনীর মেজিস্ট্রেট দিয়ে ভুল সংশোধনীর একটা নোট দিলেই চলবে|
মহল্লারই মুখ চেনা এক বড় উকিলের অফিসে ছুটে যায় মুন্নি| রুম ভর্তি মানুষ গিজগিজ করছে| মুন্নির দিকে জিজ্ঞাসু নেত্রে তাকাতেই মুন্নি সামান্য এগিয়ে গিয়ে নিজের সমস্যাটার কথা বলে| উকিল সাহেব ঘাড় ঘুরিয়ে এক তরুনের দিকে তাকিয়ে বলেন- আরিফ, তুমি ওর কাজটা করে দিবে|
রুমের এক কোণার টেবিলটায় তরুণ উকিল বসে, মুন্নিকেও মোখুমুখী একটা চেআরে বসতে বলে| তারপর মুন্নির কাছে থেকে কাজের বিষয়টা শুনতে চায়|
- আপনার বাবাকে লাগবে| ওনাকেই হলফ নামাটি দিতে হবে যে আমার মেয়ের পরিচয় পত্রে ভুলবশত আমার নাম আশরাফ এর স্হলে আশফাক লেখা হয়েছে| কালকে ওনাকে নিয়ে সকাল দশটায় কোর্টে চলে যাবেন| কার্ড দিয়ে দিচ্ছি মোবাইলে ফোন দিলেই আমাকে ওখানে পেয়ে যাবেন| উকিল সাহেব ড্রয়ার থেকে একটা কার্ড বের করে মুন্নির সামনে রাখে|
কার্ডটা তুলে নিতে নিতে মুন্নি বলে- বাবাকে তো কোর্টে নেয়া যাবে না|
-কেন? উকিল চোখ তুলে মুন্নির দিকে তাকায়|
মুন্নি মাথা নীচু করে বাবার অসুস্থতার কথাটা বলে|
সরি- বলে উকিলও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে| হাতের কলম দিয়ে টেবিলটার গায়ে ঠক ঠক করে আঘাত করতে থাকে| চুপ করে থেকে বেশ কিছুক্ষণ কি যেন ভাবে|
-ওকে, কিছু ভাববেন না| এই একটা স্ট্যাম্প দিয়ে দিচ্ছি| যেখানে যেখানে টিক চিন্হ দিয়ে দিচ্ছি সেখানে সেখানে আপনার বাবার স্বাক্ষর নিয়ে কাল কোর্টে চলে যাবেন| কাজ হয়ে যাবে| উকিল সাহেব দুই পাতার একটা সাদা স্ট্যাম্প এর উপর স্বাক্ষরের জায়গা চিন্হিত করে মুন্নির হাতে দেয়|
মুন্নি একটু আমতা আমতা করে বলে- আমাকে কত দিতে হবে?
- কি বলবো আপনাকে বুঝতে পারছি না| আপনার বাবার অসুস্থতার কথাটা শুনে মনটাই খারাপ হয়ে গেল| এধরনের কেইসে আমরা সাধারণত ৪/৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকি! আপনাকে অত দিতে হবে না| আপনার যা মন চায় দিবেন, অসুবিধা হবে না| উকিল ঝটপট উত্তর দেয়|
-টাকাটা কি এখুনি দিতে হবে? মুন্নি ইতস্তত করে|
-থাকলে দিতে পারেন, নয়তো কালকেই একবারে দিয়ে দিবেন| উকিল সাহেব হাসি মুখে বললেন|
-কালকেই দেই! মুন্নি হাফ ছেড়ে বাঁচে| যদিও সাথে হাজার তিনেক টাকা আছে তবু সে কত দিতে হবে তাই স্থির করতে পারছিল না| ভুল হয়ে গেছে বাসা থেকে বেরুনোর সময় বাবাকে জিগ্যেস করে একটু ধারণা নিয়ে বের হলে ভালো হতো|
বেশ হালকা মনে মুন্নি বাসায় ফিরে আসে| বাবাকে সব খুলে বলে| এক ফাকে চিন্হিত জায়গাগুলিতে বাবার স্বাক্ষর নিয়ে নেয়|
একসময় বাবা আস্তে আস্তে বললেন- মা রে, উকিলরা নাকি খুব ঠকবাজ হয়| তোকে ৪/৫ হাজার টাকার গল্প শুনিয়ে দিল| ওদের খরচটা কি শুনি? দিল তো ২০ টাকা দামের ২ পাতা স্ট্যাম্প | এটা কম্পিউটার কম্পোজ করতে না হয় আরও ৫০ টাকা গেল| এটা যখন ওদের পেশা তখন পাঁচশ একহাজার রাখলেই তো যথেষ্ট|
বিকেলে আরও দুএকজনের সাথে মুন্নি কথা বলল সবার কথায়ই বাবার কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেলো- এ আর এমন কি হাতি ঘোড়া কাজ, এক দেড়হাজারই যথেষ্ট!
সকাল বেলা মুন্নি যথা সময়ে কোর্ট এলাকায় গিয়ে উকিলের মোবাইলে ফোন দিলো| উকিল সাহেব বার অফিসে নিজের অবস্থানটা কোথায় জানালেন| একটু খোজাখুজির পরই মুন্নি উকিল সাহেবকে পেয়ে গেলো, খুব একটা কষ্ট হলো না|
জীবনের প্রথম মুন্নি কোর্ট চত্বরে গেলো| মানুষের চিত্কার চেচামেচিতে তার প্রানান্ত অবস্থা| উকিল সাহেবই মুন্নিকে তাড়া দিলো- আপনি সকাল সকাল এসেছেন বেশ ভালো করেছেন| কিছুক্ষণ পর আমাকে আবার একটা কোর্টে উঠতে হবে| স্ট্যাম্প সই করিয়ে এনেছেন তো?
মুন্নি কোনো কথা না বলে বাবার স্বাক্ষর করা কাগজটা ব্যাগ থেকে স্বযত্নে বের করে দিলো| উকিল সাহেব এক প্রকার ছো মেরে হাত থেকে তা কেড়ে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেলেন- আপনি একটু বসুন আমি আসছি|
মুন্নিকে বেশি বসতে হলো না| মিনিট চল্লিশের মধেই উকিল সাহেব হাসি মুখে চলে আসলেন- এই নিন আপনার কাজটা হয়ে গেলো!
মুন্নি একনজর কাগজটা চোখ বুলিয়ে দেখল- কি সব সীলটিল মারা| লাল গোল মত একটা সুন্দর কাগজও স্ট্যাম্প এর উপর সেটে দিয়েছে| সে কাগজটা ব্যাগে ঢুকিয়ে রেখে আগেই ভাজ করে রাখা টাকাটা হাতে তুলে নেয়|
-এই নিন দু হাজার দিলাম| মুন্নি বাবা বা অন্যান্যদের কথার চেয়ে পাঁচশ টাকা বেশি এগিয়ে দেয় উকিল সাহেবের দিকে| পনেরশ দিতে কেমন জানি তার খুব লজ্জা লাগছিল| লোকটা যেখানে চার পাঁচ হাজার টাকার কথা বলছিল সেখানে লজ্জায় সে পনেরশ টাকা দিতে পারেনি| তাই সে পাঁচশ টাকা বাড়িয়েই দিয়ে দেয়|
- দু হাজার দিলেন? আর পাঁচশ টাকা দেয়া যায় না? উকিল সাহেব টাকাটা টেনে নিতে নিতে বললেন|
- এবারের মত দুহাজার-ই রাখেন| মুন্নি অনেকটা বোকার মত হাসে|
বাসায় ঢুকতেই তিন্নি মুন্নির বুকের উপর একরকম ঝাপিয়ে পড়ে- আপু তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে? জানো- বাবা জানি কেমন করছিলো!
রোদ্রুজ্জল দুপুরটা মুহুর্তেই মুন্নির কাছে অন্ধকার হয়ে যায়| তিন্নিকে বুকে ধরে রেখেই সে বাবার ঘরে যায়| বাবা ঘুমুচ্ছে| কঙ্কালের মত দেহটা বিছানার সাথে যেন লেপ্টে গেছে, পেটটা সামান্য ফুলে উঠেছে| শ্বাস টানার সাথে কেমন একটা চাপা গোঙ্গানীর আওয়াজ ভেসে আসছে| সে বুঝতে পারে বাবা যেন বাতাসে জ্বলানো মোমের মত দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে| যে কোনো সময় শেষ আলোটুকু নিঃশেষ হয়ে যাবে|
মুন্নির নাওয়া খাওয়া হয় না| বাবার শিয়রের কাছটায় বসে থাকে, মাথায় হাত বুলাতে থাকে| তিন্নিও বাবার পায়ের কাছটায় চুপ বসে থাকে|
সন্ধ্যার দিকে বাবার ঘুম ভাঙ্গে| একেবারে স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের মতই নিজে নিজে উঠে বসেন| তিন্নির দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট গলায় বললেন- বাবা কিছু খেতে দিবিরে?
তিন্নি দ্রুত ঘর ছাড়ে| আবার খুব তাড়াতাড়ি বাবার জন্য খাবার নিয়ে ফিরে আসে| খাবার বলতে নরম জাউ | নিজ হাতে চামচে করে বাবার মুখে খাবার তুলে দেয়| দু তিন চামচ দেআর পরই বাবা হাত দিয়ে নিজের মুখ থেকে চামচ সরিয়ে দেয়| মুন্নির দিকে তাকিয়ে বললেন- মা, কই তোর কাগজটা নিয়ে আয় দেখি কি লিখেছে|
মুন্নি বাবার খাটের উপর রাখা ব্যাগটা থেকে কাগজটা বের করে দেয়|
-সে কিরে মা এতে তো কোনো মেজিস্ট্রেট এর নাম গন্ধও নেই| এটা তো একটা নোটারি পাবলিক করা কাগজ মাত্র| বাবার কথা শুনে মুন্নির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে| সে তো এত কিছু বোঝে না, জানে না| উকিলটা তাঁর সাথে এমন একটা প্রতারণা করলো? ছি:| মুন্নি কেদে ফেলে|
বেটাকে ছাড়বি না কালই গিয়ে ধরে এমন শিক্ষা দিবি না যে বাকি জীবন আর মানুষ ঠকানোর কথা চিন্তা না করে- বাবা মুন্নিকে যেন সান্তনা দিলেন|
রাত আসে অন্যান্য রাতের চেয়ে এই রাতটা মুন্নির কাছে অসম্ভব রকমের দীর্ঘ মনে হয়| অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে সারা রাত বাবা ছটফট করে কাটান| বাবা মা যেমন সন্তানের কষ্ট সহ্য করতে পারেন না| সন্তান ও কি বাবা মায়ের কষ্ট সহ্য করতে পারে? মুন্নি, তিন্নিরও খুব কষ্ট হয়| মা সারারাত জায়নামাজে বসে কাটান|
সকালে উকিলের কাছে যাওয়া হয় না| মুন্নি মাকে বলে- বাবা কে চলো জলদি আবার কোনো হাসপাতালে ভর্তি করি|
বাবা হা হা করে উঠেন- তোর দুটি পায়ে পড়ি রে মা আমাকে আর টানা হেচড়া করিসনে| আমার সময় শেষ| আমি তোদের সবার সামনে থেকেই চলে যেতে চাই| আমাকে আর কষ্ট দিসনে| আমার জন্য বরং তোরা দোআ কর আমি যেন খুব তাড়াতাড়ি এ কষ্ট থেকে মুক্তি পাই|
মুন্নি কোনো ভাবেই বাবাকে হাসপাতালে নিতে পারলো না| অবশেষ আগে যে ডাক্তার চিকিত্সা করেছেন কাগজ পত্র নিয়ে মুন্নি তাঁর কাছেই ছুটে গেলো!
কয়েক দিন পর বাসার গেট এ কারো অনবরত করাঘাতের শব্দে মুন্নি গিয়ে তা খুলে দিয়েই ভ্রুকুঞ্চিত করলো| তার চোআল শক্ত হয়ে গেলো- আপনি? এখানে কেন এসেছেন?
আপনার বাবা আমাকে ফোন করেছিলেন| আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি- আগন্তুক মাথা নিচু করে গেট অতিক্রম করে|
বাবা এই লোকটাকে ফোন করেছে?- অনেকটা অবশ পায়ে মুন্নিও লোকটার পিছন পিছন বাসার সামনের খোলা জায়গাটাতে দাড়ায়| মুন্নির কাছে একটা ছবি স্পষ্ট হয়ে উঠে| বাড়ির একটা মোবাইল বাবার বিছানায়ই থাকে সবসময় | সেই নোটারি পাবলিকের কাগজটা আর উকিলের ভিজিটিং কার্ডটাও বাবার বিছানায়ই ছিল| মুন্নি যেদিন দিশেহারা হয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল সেদিন কোনো এক ফাকে সবার অগোচরে বাবা এই জোচ্চোর উকিলটার সাথে কথা বলেছিল|
আমি যখন রসায়নে অনার্স করছিলাম তখন একদিন এক বন্ধু রসিকতা করে বলল অনার্সটা করতেই সত্তুর বছর লেগে যাবে| আমকে ভাবিয়ে তুললো কারণ আমি গরিবের সন্তান| এ নিয়ে আমি অনেক ভাবলাম| ভেবে চিন্তে অনার্সের পাশাপাশি ল তে ভর্তি হয়ে গেলাম| সত্যি সত্যি অনার্সটা শেষ হতে আমার ছয় বছর লেগে গেলো| কিন্তু কোথাও একটা চাকুরিও পেলাম না| আমার না ছিল টাকার জোর, না আত্মিয়ের| বছর খানেক ধরে আমি আপনাদের মহল্লার ওই এডভোকেট সাহেবের সহকারী হিসেবে কাজ করছি| সেদিন আপনি যখন বললেন আপনার বাবা গুরুতর অসুস্থ তখন ভেবে দেখলাম মেজিস্ট্রেট এর সামনে আপনার বাবাকে স্বশরীরে হাজির করতে না পারলে কাজটা করা যাবে না| মনে হলো নোটারি করিয়ে দিলেই আপনার কাজটা চলে যাবে| আমারও বেশ কিছু টাকা বাড়তি আয় হবে- উকিল সাহেব এবার মুন্নির চোখের দিকে মুখ তুলে তাকালেন|
আপনার কাছে যা ভালো মনে হয়েছে আপনি তো তাই করছেন| তা এখন কোর্ট এ না গিয়ে এখানে এসেছেন কেন?-মুন্নির গলা থেকে এক রাশ ঘৃণা আর ক্ষোভ ঝরে পড়ে|
-ওকালতিটা ছেড়ে দিয়েছি|
- সেটা একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার|
- আমি আজই আমার গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছি|
-এসব বলার জন্যই কি এখানে এসেছেন?-রাগে দুঃখে মুন্নির চোখের তারা জ্বলে উঠে|
-না মানে আপনার বাবাকে একটা কথা বলতে এসেছিলাম| উকিল আমতা আমতা করে বলে|
বাবার সাথে আপনি কথা বলতে পারবেন না- মুন্নির গলার স্বর কঠিন শোনায়|
আমি জানি আমার ওপর আপনার অনেক রাগ, অনেক ঘৃণা| সেটাই স্বাভাবিক| আপনার বাবা বলছিলেন- নীতি আদর্শহীন মানুষ মানুষ নয়, মানুষ নামের কলঙ্ক মাত্র| আমি ওনাকে শুধু এইটুকুই বলতে এসেছিলাম- আমি নির্লোভ, নির্মোহ হতে চাই| তাই আবার সব নতুন করে শুরু করার জন্যই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি- উকিলের গলা থেকে নিস্পাপ আকুতি ঝরে পড়ে|
মুন্নির গলা ধরে আসে চোখ দুটি ঝাপসা হয়ে যায়| প্রায় চিত্কার করে সে বলতে থাকে- আপনি চলে যান, বাবার সাথে আপনি আর কোনদিনই দেখা করতে পারবেন না| আপনি এখান থেকে চলে যান| চলে যান|
মুন্নির ক্রন্দনরত মুখের কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কি যেন বুঝতে চেষ্টা করে তারপর ধীর পায়ে রাস্তার দিকে এগিয়ে যায় জোচ্চোর উকিল্টা! যেতে যেতে সে বিন্দুতে মিলায় না মুন্নির চোখে সে একটা মানুষ হয়ে উঠে!
২২ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৩২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪