বিম্বিসার ধূসর জগতে/ দুই

বাবা (জুন ২০১২)

Lutful Bari Panna
  • ৪৩
এক.
বাঁধানো মাটির রাস্তার পাশে একটা গাছের গুঁড়ির উপর বসে আছে ইভান। রাত ন'টার মত বাজে। গ্রামের হিসেবে অনেক রাত। আধ ভাঙা চাঁদ থেকে ছলকে ছলকে আসা মায়ামাখা জ্যোৎস্না আর দক্ষিণের ধীর বাতাস কোমল হাত বুলিয়ে জুড়িয়ে দিচ্ছে ওকে। এমন রোমাঞ্চকর মুহূর্তে পাশে মিথিলার অভাব খুব করে ডুবিয়ে রাখছে। অসুস্থ ছিল বলে কয়েকদিন আগে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে দাদিকে সহ রেখে এসেছে। ডাক্তার একটা বিশেষ সুসংবাদ জানিয়ে দেয়ায় আর নিয়ে আসেনি।

সেল ফোন হাতে নিয়েও রেখে দেয়। মাঝে মাঝে বোধ হয় কষ্টের অনুভূতিগুলো পুষতে ভাল লাগে। কে জানে কষ্টের মধ্যেও আলাদা একটা ভালোলাগা আছে মনে হয়। বাড়িতে শুধু ও আর ওর দাদু। বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি তাড়াতাড়িই খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মিথিলা থাকতে প্রতিদিনই ওকে নিয়ে এ সময়ে এখানে চলে আসত ও। এলোমেলো খুনসুটিতে কখন যে সময় কেটে যেত টেরই পেত না। অবশ্য আজ যে খুব খারাপ লাগছে তা না। সামনে কলেজ বিল্ডিং পরিপূর্ণ অহংকার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শিগগীরই উদ্বোধন হবে। কাজ শেষ হওয়ায় কলিম আজিজেরা ঢাকায় ফিরে গেছে। ওই জোরজার করে পাঠিয়ে দিয়েছে। সবসময় চোখে চোখে থাকার অনুভূতি খুব বাজে। অনেক বছর পরে নিজের মাকে কাছে পেয়ে ওর বাবা খুব তরল অবস্থায় আছেন। নয়ত ওর এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত মেনে নিতেন কিনা সন্দেহ আছে।

তিন চারজন এসে নিঃশব্দে ওর সামনে দাঁড়াল। সামনেরজন অনাবশ্যক কর্কশ কণ্ঠে বলল, 'আপনেরে চেয়ারম্যান সাব এট্টু সালাম দিছে'।

'এত রাতে?'

কিঞ্চিৎ অশ্লীল ভঙ্গীতে হেসে লোকটা বলল, 'রাইতের কাম রাইতেই তো বালা।'

'মানে?' কড়া গলায় জিজ্ঞেস করল ও।

'চেইততেন না। কাম আছে, আহেন আমার লগে। চেয়ারম্যান সাব কইছে- জরুরী দরকার।'

ঘাড় ত্যাড়ামি করতে গিয়েও কি মনে করে মেনে নিল ইভান। উঠে দাঁড়িয়ে বলল, 'ঠিক আছে চলেন।'

গ্রামের মধ্যে রাজপ্রাসাদের মত বিশাল বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল মৃধার। ডুপ্লেক্স বিল্ডিঙের নীচ তলায় ড্রয়িং স্পেসে নিজের সিংহাসন টাইপের সোফায় গা এলিয়ে বসে আছেন। পরনে সাদা লুঙ্গি আর একটা কারুকাজ করা ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবী। মানুষটা সুদর্শন কিন্তু ইভান আগেও খেয়াল করেছে, তার চোখের চাউনি অনাবশ্যক রকমের নিষ্ঠুর। হাত তুলে সালাম দিল ইভান। ওকে দেখে যেন একটু তরল হলেন, 'বোসো বাবা। কোন কষ্ট হয়নি তো?'

'না। কষ্ট হয়নি। তবে আপনার লোকজনকে বলে দেবেন, ভবিষ্যতে যদি আমার সাথে আচরণ ঠিক না রাখে তবে যেন আমার কাছে কোন কাজে না যায়।'

'কেউ বেয়াদবি করছে তোমার সাথে। খালি নাম বল। যদি বিচার না করতে...'

হাত তুলে তাকে থামাল ইভান। 'ওরা তো আপনারই আজ্ঞাবাহী। তাই আপনার কাছে বললাম। এখন বিচার করতে হবে না। ভবিষ্যতের জন্য সাবধান করে দেবেন।'

'গ্রামের মানুষ বাবা। তোমাদের শহুরে ভদ্রতা ওরা শিখবে কোথায়? কিছু মনে নিও না বাবা, আমি শাসন করে দিবো। কি খাবে বল?' বলে পেছনে কোথাও তাকিয়ে বললেন, 'মীরা মা তোমার ইভান ভাই আসছে। নাশতা নিয়ে এস।'

'ব্যস্ত হবেন না। আমার এখন কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।'

'তাই কি হয় বাবা। চেয়ারম্যান বাড়ির একটা ইজ্জত আছে। মিনিস্টার সাহেব আমারে বহুত পেয়ার করেন। কেউ না খেয়ে গেলে এই বাড়ির সম্মান থাকে না। তাছাড়া তোমার বাবা আমার ছোট বেলার বন্ধু।'

একটু সচেতন হল ইভান। মিনিস্টারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি কি ইভানকে কিছু বোঝাতে চাইছেন? তবে ভাবান্তরটা ধরতে দিল না। ও শুনেছে চেয়ারম্যান সাহেব আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির লিডার। ধীরে সুস্থে বলল, 'যে জন্য আসতে বলেছেন, বলে ফেলেন। খাওয়া যাবে ক্ষণ।'

বড়সড় একটা বেতের তৈরি নকশী ট্রেতে করে একরাশ ফলফলাদি নিয়ে একটা মেয়ে ওর সামনে রাখল। কথা বলায় ব্যস্ত ইভান তাকাল না। চেয়ারম্যান সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 'তুমি আগে খাও। তোমার চাচি তোমার খুব ভক্ত। প্রায়ই তোমার কথা বলে। কথার চাইতে তোমাকে আপ্যায়ন করাটাই বেশী জরুরী।'

তিনি উঠে চলে গেলেন। মেয়েটা ওর পাশের একটা সিঙ্গেল সোফায় বসতে বসতে বলল, 'আমাদের গাছের আম কাঁঠাল। এমন খাঁটি জিনিস আপনি শহরে পাবেন না। খান।'

চোখ তুলে তাকাল ইভান। তাকিয়েই একটা চমক খেল। এরকম সুন্দরী মেয়ে গ্রামে থাকতে পারে তা ওর ধারণায় ছিল না। নিখুঁত গড়নের কাটাকাটা নাক মুখ আর সেই রকম গায়ের রং। ত্বকের লাবণ্য রীতিমত চোখ পুড়িয়ে দেবার মত। মুখের ভাবে ব্যক্তিত্বের ঝলকটুকুও ঝটকা লাগিয়ে দেয়। গায়ে জড়ানো বাহারি থ্রিপিসের দামে বাবার টাকার গন্ধ আছে। আর যেটা আছে সেটা টাকা দিয়ে হয় না- রুচি। মাথা ঢেকে ওড়না পড়ার মধ্যে শালীন ভাবটা চোখে পড়ার মত। একটু অবাক হল ও। বাপের সাথে কোথায় যেন মিলছে না। ইভান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতে বলল, 'আমি মীরা। এবার এইচএসসি পাশ করলাম। শহরের কলেজে পড়ি। পরীক্ষা শেষ হওয়ায় বাড়িতে এসেছি।' অভিজ্ঞ ইভানের দৃষ্টি এড়ালো না মেয়েটার চোখের তীব্র মুগ্ধতা। ইভানের চোখ দেখে কি বুঝল কে জানে, লাজুক ভঙ্গীতে হেসে ফেলে বলল, 'রাঙ্গা দাদির সাথে আমার খুব ভাব। আপনাদের কথা প্রায়ই বলতেন আর চোখের জল ফেলতেন।' রাঙ্গা দাদি মানে ইভানের দাদি। গ্রামের অনেকেই তাকে রাঙ্গা চাচি, রাঙ্গা দাদি ডাকে। পরিষ্কার কারণ না জানলেও সেটার সাথে দাদির গায়ের রং আর চেহারার সম্পর্ক আছে তাতে ইভানের কোন সন্দেহ নেই।

'এইবার এসে রাঙ্গা দাদিকে দেখলাম না।'

'ওহ আপনার রাঙ্গা দাদি ঢাকায়। আমার স্ত্রীর বাচ্চা হবে, তাই নাতবৌ-এর সাথে আছে।'

তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল বলে এক পলকের ম্লান হয়ে যাওয়া মুখটা ঠিক চোখে পড়ে গেল ইভানের। মেয়েটা কি জানতোনা ও বিবাহিত? কেবল এসেছে, হয়ত বলার মত সুযোগ তৈরি হয়নি কারো- ভাবলো ইভান। মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নিয়ে হাসিমুখে বলল মীরা, 'আপনি যান নি যে?'

'কত বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছি দেখতেই পাচ্ছেন। ওখানে টেক কেয়ার করার মানুষের অভাব নেই। আমি শেষের দিকে যাব।'

'ভাল কথা, আমাকে তুমি করে ডাকবেন। অনেক ছোট হব যে।'

'আচ্ছা আচ্ছা। তা তুমি কি বাড়িতে কম আসো?'

'হ্যাঁ।' এক ভদ্রমহিলা এসে দাঁড়ালেন। সে দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, 'এই যে মা আসো। ইনিই ইভান ভাইয়া।'

মা মেয়ের চেহারায় অদ্ভুত রকম মিল। বরং মায়ের চোখে মায়ার আধিক্য খুব করে চোখে লাগল। ঘরোয়া শাড়িই পড়েছেন তবে সেটা যথেষ্টই দামী। মাথা ঢাকা শাড়ির আঁচল দেখে নিজের অজান্তেই মীরার দিকে আর একবার তাকাল। ইভান হাত তুলে সদ্য ঘরে ঢোকা ভদ্রমহিলাকে সালাম দিল।

'বোসো বাবা। খুব মিষ্টি তো ছেলেটা। তোমার কথা অনেক শুনেছি। দেখতে পেয়ে খুব ভাল লাগল।'

ইভান লজ্জা পেয়ে বলল, 'বলেন কি চাচি। আমি খুব সাধারণ একটা ছেলে।'

'না বাবা। তুমি সাধারণ না। যাক এসব বলে তোমাকে আর লজ্জা দেব না। আজ তো বাড়ি চিনে গেলে। আমি জানি তোমার মা নাই। এরপর যখন মন চাইবে তোমার এই মায়ের কাছে চলে আসবে।'

কিঞ্চিত লজ্জামিশ্রিত অপ্রতিভ মুখে ইভান বলল, 'জী।'

চেয়ারম্যান সাহেব এসে ঢুকলেন এই সময়। 'আচ্ছা তোমরা এখন যাও। ওর সাথে একটু কথা বলি।'

ইভানের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে বিদায়ের হাসি দিয়ে চলে গেল দুজনই। ইভান প্রস্তুত হয়ে তার দিকে তাকাল।

'খাও। খেতে খেতে কথা বল।'

'জী', বলে কাটা আমের এক টুকরো মুখে দিতেই স্বাদে জিভ জড়িয়ে এলো।

'শোন বাবা, তুমি অনেক ভাল কিছু কাজ করছ গ্রামে এসে। আমাদের গ্রামের জন্য করছ। আমাদের কিন্তু ভালই লাগছে। কিন্তু মানুষ অনেক উল্টা পাল্টা কথা বলছে।'

'কি রকম, বলেন তো?'

'তোমার বাবা এলাকায় নির্বাচন করতে চান। তাই লোক দেখানো কলেজ হাসপাতাল বানানো, তোমাকে দিয়ে।'

ইভান হেসে ফেলে বলল, 'আপনাকে আমি এনশিওর করছি, বাবার এসব ব্যাপারে তিল পরিমাণে মাথাব্যথা নাই। এসব সম্পূর্ণই আমি আমার ব্যক্তিগত ইন্টারেস্টে করছি। মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকে।'

তার ঠোঁট অবিশ্বাসে বেঁকে গেল। দৃষ্টি এড়াল না ইভানের। বুঝল, কিছু মানুষ মানুষের নিঃস্বার্থ সেবার মনোবৃত্তি বোঝার মানসিকতা হারিয়ে ফেলে। একটু মৃদু হেসে বললেন, 'বুঝলাম। কিন্তু মানুষ কিন্তু বুঝবে না। মিনিস্টার সাহেব এ ব্যাপারে আমাকে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন, তোমাকে বোঝানোর জন্য।'

'কি ধরণের নির্দেশ বলেন তো?'

'তুমি তোমার কলেজের নাম তার মায়ের নামে করে দাও। তিনি অত্যন্ত নামী ভদ্রমহিলা ছিলেন। তোমার কলেজের যাবতীয় দায়ভার মিনিস্টার সাহেব নিয়ে নেবেন।'

'কিছু মনে করবেন না। এটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে।'

'ভাবো। তোমার বাবার সাথেও আলোচনা কর। তিনি বুদ্ধিমান মানুষ বুঝবেন।'

'চাচা, বাবা এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। আর যদি তাকে জানাই, তিনি আমার মত ভাবার সময় নিতেন না। আগেই না করে দিতেন।'

'দেখ বাবা, তুমি ছেলেমানুষ। মিনিস্টার সাহেবের ক্ষমতা সম্বন্ধে তোমার কোন ধারণা নাই।'

'চাচা কিছু মনে করবেন না। বাবা আর আমার একটা মিল আছে। একজনও হুমকির কাছে মাথা নোয়াই না।'

'এটাকে হুমকি হিসেবে দেখো না। একজন সম্মানী মানুষ তোমাকে সাহায্য করার বিনিময়ে সামান্য ফ্যাভার চাইছেন।

'ঠিক আছে ভেবে দেখি। আজ আসি চাচা।'

'আচ্ছা বাবা।'

দুই.
'ভালবাসি, ভালবাসি..'- রিংটোনটা মিথিলার পছন্দে সেট করেছে ইভান। মিথিলার যে কোন ভালোলাগাই ওর নিজস্ব ভালোলাগা হয়ে গেছে। মেজাজ ফুরফুরে হয়ে যায় এটা শুনলে। কিন্তু আজ সকালে রিংটোন শুনে ঘুম ভেঙে রিসিভ করার পর মেজাজ চড়ে গেল ওর। কলেজের স্থানীয় পাহারাদার নাজিম জানাল রাতে কারা যেন কলেজের বাউন্ডারি ওয়াল এক পাশ থেকে ভেঙে দিয়ে গেছে। তড়িঘড়ি করে কোনমতে প্যান্ট শার্ট গলিয়ে কলেজে গেল ও। রাতে ফাঁকা কলেজে ছিল না নাজিম। সকালে এসে এ অবস্থা দেখে সংগে সংগে ফোন করে ইভানকে।

মজবুত দেয়াল ভাঙতে যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়েছে। বিল্ডিং ভাঙার হেভি হেভি সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। নিজের অজান্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেল ইভানের। কালকের মিটিংটার কথা মনে পড়ল। নিঃসন্দেহে স্বীকার করবে না চেয়ারম্যান চাচা। এপাশে ঘুরে আসতেই সামনে পড়ে গেল মীরা। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল ইভান, 'এত সকালে তুমি এখানে?'

'বাড়িতে থাকলে সকালে হাঁটতে বেরোই। খুব ভাল লাগে। আপনি?'

'কাল রাতে কে যেন কলেজের বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে দিয়ে গেছে।'

মীরার মুখ কালো হয়ে গেল। 'বলেন কি?'

'হুম। চা খাবে নাকি একটু?'

'চা পাবেন কোথায়?'

'প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কলেজে আনিয়ে রেখেছি আগেই। নাজিমকে বললেই হবে। তুমি খাবে কিনা বল?'

'খুব একটা খাই না। তবে আপনার সাথে সময় কাটানো হবে। এজন্যই খাব?'

হাসল ইভান। 'আচ্ছা চল।' গলা চড়িয়ে ডাকল- 'নাজিম, অফিস রুমটা খুলে দিয়ে চা বানাও।'

'নাজিম ওয়ালের কাছে ছিল। ছুটে এসে মীরাকে দেখে হাত তুলে সালাম দিল। 'আফামনি কেমন আছেন?'

'ভাল। আপনি ভাল আছেন নাজিম ভাই?'

হড়বড় করে কিছু বলতে যাচ্ছিল নাজিম। থামিয়ে দিয়ে ইভান বলল, 'তুমি যাও, ফ্রিজ খুলে কেক, বিস্কিট যা আছে নিয়ে আস। তারপর চা বানাও।'

'আচ্ছা ভাইজান।'

অফিস রুমের সোফায় বসে আছে ইভান আর মীরা। নতুন একটা ওভালটিন কেক ভেঙে খাচ্ছে। নাজিম কেক দিয়ে চা বানাতে গেল।'

'রাঙ্গা দাদি প্রায়ই আপনার কথা বলতেন।'

'তাই নাকি? কি বলতেন?'

কি জানি কি কারণে লজ্জায় লাল হয়ে গেল মীরা। 'আপনার ছবি দেখাতেন। চাচা প্রায়ই তার নামে ছবি, টাকা আরো টুকিটাকি জিনিস পাঠাতেন। আমাকে সব দেখাতেন কিন্তু দাদি দাদাজানকে জানাতে নিষেধ করতেন।'

'তুমি জানাও নিতো?'

'না। তবে দাদাজান জানতেন।'

'কীভাবে বুঝলে?'

'গেল শীতে ভীষণ দামী একটা ওভারঅল পাঠিয়েছিলেন। গায়ে দিয়ে রাঙ্গা দাদি ঘুরে বেড়াতেন। দাদাজান কি অন্ধ নাকি?'

'হা হা হা। তা যা বলেছ। দাদার জন্য পাঠাতেন না।'

'হুম। মজার ব্যাপার হয়েছিল সেটা নিয়ে।'

'কি রকম?'

'চাচা দাদাজানের জন্যও একই জিনিস পাঠাতেন। কিন্তু তিনি পড়তেন না। একদিন দেখি রাতে দাদাজান নিজের রুমে ওভারঅল পড়ে বসে আছেন। দিনের বেলা দেখি নাই, খুলে রেখেছেন।'

ওড়নার আঁচল চাপা দিয়ে খুট খুট করে হাসতে লাগল মীরা। তারপর হঠাৎ ইভানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, 'আপনি ছবির চাইতেও অনেক অনেক সুন্দর।' লজ্জা মেশানো সে দৃষ্টি দেখে অবাক হল ইভান। এ দৃশ্য জীবনে বহুবার দেখেছে ও। মেয়েটার চোখের গভীর থেকে চুয়ে চুয়ে ঠিকরে আসছে নগ্ন প্রেম।

ইভান কল্পনা করার চেষ্টা করল, নিঃসঙ্গ এক বৃদ্ধাকে সময় দিচ্ছে গ্রামের এক তরুণী। বৃদ্ধা তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে আর নাতির গল্প করে তার সাথে। মেয়েটি অসম্ভব রকম রূপবতী। গ্রামের বনেদি এক পরিবারের মেয়ে। একজন বৃদ্ধাকে সে কিসের টানে সময় দিত। বৃদ্ধাও বা তাকে কি শোনাত? কিছু খুচরো খুচরো অনুভূতি ইভানকে আচ্ছন্ন করে ফেলতে শুরু করে। অলৌকিক কিছু অনুভূতি। যেন তার অনেকগুলো জীবন। কোন একটা জীবনের সাথে এই মেয়েটার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

নাজিম চা নিয়ে ঢুকল। ওরা চা খেতে খেতে আরো কিছুক্ষণ টুকটাক গল্প করে। যাবার সময়ে মীরা বলে, 'বাসায় যাবেন কিন্তু ভাইয়া।'

'আচ্ছা তুমি যাও।'

মিস্ত্রি ডেকে দেয়াল ঠিক করার আদেশ দেয় ইভান। ও আরো কিছুদিন দেখতে চায় তারপর অ্যাকশনে যাবে মনস্থ করল। দুপুরে ওর মোবাইলে কল করল মীরা। 'ভাইয়া মা আপনাকে দুপুরে খেতে বলেছে।' কিছুক্ষণ ভাবল ইভান। তারপর বলল, 'ঠিক আছে।'

তিন.
মীরা খুব যত্ন করে খাবার তুলে দিল। মীরার মা কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চাইল বারবার। পুরো সময়টা চুপচাপ খাওয়া শেষ করলেন বাবুল মৃধা। ড্রয়িং রুমে বসে বললেন। সকালে মীরার মুখে শুনলাম তোমার কলেজের ঘটনাটা। গ্রামে নানান কিসিমের মানুষ থাকে বাবা। এইজন্যই তোমারে হাত মিলাইতে বলছিলাম। পা থেকে মাথা অব্দি জ্বলে গেল ইভানের। তবু উত্তর দিল ঠাণ্ডা মাথায়।

'অসুবিধা নেই চাচা। আরো কয়েকদিন ভদ্র থাকবো। তারপর অসভ্য হয়ে যাব। ওরা যদি বুঝতে পেরে আগেই নিজেদের সামলে নেয় তো ভাল। নয়ত কৃতকর্মের ফল তাদের ভোগ করতে হবে।'

'রাত বিরাতে একা একা ঘোরাফেরা কর। সাবধানে থাইকো। আবার বইল না সাবধান করি নাই।'

'টেনশন নেবেন না। আমার গায়ে হাত দেয়ার পরিণতি কত ভয়ংকর হতে পারে ওরা জানে না।'

আরো কিছুক্ষণ মিঠেকড়া বাক্যবিনিময় হল। বাবুল মৃধাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবেই উত্তরগুলো দিয়ে এসেছে ইভান। ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি আরো কত শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হয়েছে ও।

ছেলেটার ঘাড়ত্যাড়া ভাবটা দেখে আপনমনেই মাথা নাড়লেন তিনি। এই ছেলেকে বোঝানো তার কাজ না। নিজেকে সান্ত্বনা দিলেন, তিনি অন্তত চেষ্টা করেছেন। ঠিক তিনদিনের মাথায় ঘটনাটা ঘটল। একদল লোক এসে সন্ধ্যার পরে কলেজের সামনে পাকড়াও করল ওকে। লিডারকে অন্ধকারে চেনা যাচ্ছে না। 'ইভান সাব?'

'হ্যাঁ, কে আপনি?'

'আমি কেউ না, এত বড় একটা কলেজ দিলেন। আপনার পরিবারের নামডাক ছড়াইয়া পড়ব চাইরদিকে। খাওন দিবেন না?'

মাথা ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করল ইভান। 'অবশ্যই। কলেজ শুরু হোক। বিশাল আয়োজন করা হবে ইনশা আল্লাহ্‌।'

'আরে ধুর হেইডা তো গ্রামবাসী খাইব। আমাগো খাওন কই?'

'মানে?'

'কচি খোকা নাহি? কাম করলে চান্দাপাতি লাগে জানেন না?'

ঝামেলা এড়ানোর জন্য জিজ্ঞেস করল ইভান। 'তাই নাকি, কত?'

'বেশী লাগব না। লাখ পঞ্চাশেক দিলেই হবে।'

'বলেন কি? কলেজ বানাতেও তো এত খরচ হয় নি?'

'মুহে মুহে কতা কবি না। যা চাইছি, সময়মত দিয়া দিবি।'

মাথার মধ্যে আগুন ধরে গেল ইভানের। 'সাট আপ ইউ বাস্টার্ড। কার সাথে কথা বলছ জানো?'

'ওস্তাদ হালায় দেহি ইংরাজী ফুডায়। দিমু নাহি এহনি।'

চড়ের শব্দটা রাত্তিরে অনেক দূর থেকে শোনা গেল বোধ হয়। হাতের সাথে সাথে গমগম করে উঠল ইভানের গলা। 'সব সময় মনে রাখবি, কুকুর কখনো বাঘের সাথে লড়াইতে নামে না।'

লিডার লোকটা হকচকিয়ে গেল। 'আপনার সাহস অনেক বাড়ছে দেহা যায়। ঠিক আছে ঐ মধু আয়, দেহা যাইবোনে।' কিন্তু চড় খাওয়া লোকটা তার আগেই হাতের লাঠিটা ইভানের মাথায় মেরে বসেছে।

'কি করলি হারামজাদা। জানোস গায় এহনি হাত দিতে মানা করছে বসে। কি করণ যায়?'

মাথা চুলকাতে চুলকাতে মধু বলল, 'গায়ের ঝালে মাইরা বসছি ওস্তাদ। হালায় গায় হাত দিল। কতপর কইলজা দেখছেন?'

একটু ভেবে লিডার মাখন সন্যামত বলল, 'বাবুল মৃধার বাড়িত রাইখা আহি ল। বুজাইয়া কমুনে।'

চার.
হুন্ডা পাঠিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলা হাসপাতাল থেকে বড় ডাক্তারকে প্রায় ধরে আনল বাবুল মৃধা। ড্রেসিং করে ইভানের চোখ মেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন। তারপর নিরাপদ ঘোষণা করে যাওয়ার অনুমতি পেলেন। সারারাত মা মেয়ে জেগে থেকে সেবা করল ইভানের। সকাল দশটার সময় গ্রামের অনভ্যস্ত পথে নাভিদ সারওয়ারের গাড়ি ঢুকল বহু কসরত করতে করতে। নাজিমের ফোন পেয়ে দেরী করেননি আর। আসতে আসতেই ফোনে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সেরে রাখলেন। ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পেরে মাকে বা মিথিলাকে কিছুই জানাননি তিনি।

অনেকদিন পর মুখোমুখি হল দুই বন্ধু। সেই যে কাসেম মাস্টারের মেয়ে সামিনাকে বিয়ে করে দেশ ছেড়েছে নাভিদ, আর আজ। নেমেই আন্তরিক উষ্ণতায় বন্ধুকে জড়িয়ে ধরতে কার্পণ্য করেনি নাভিদ সারোয়ার। বন্ধুর চার কোটি টাকা দামের গাড়িটার দিকে চোখ মিটমিট করে তাকাচ্ছে বাবুল চেয়ারম্যান। ঘটনা দেখতে গ্রামের অনেক লোক জমা হয়েছে চেয়ারম্যান বাড়ি। দরজা খুলে বেরিয়ে এলো আজিজ আর কলিম। গ্রামে ওরা পরিচিত তাই কেউ আশ্চর্য হল না। কিন্তু যদি জানত কখন ওদেরকে নিয়ে আসার প্রয়োজন হয় নাভিদ সারোয়ারের তাহলে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারত না। বন্ধুকে পথ দেখিয়ে ড্রয়িংরুমে নিয়ে এলো সে।

ড্রয়িং রুমে বসেই নাভিদ সারোয়ার মৃদু কণ্ঠে বললেন, 'ছেলেটাকে মারলি?'

'বিশ্বাস করবি না বুঝতেছি। কিন্তু দোস্ত, অনেক খারাপ হইয়া গেছি জানি, তবু ছোডবেলার দোস্তের পোলার গায়ে হাত দিমু- এমন পাষণ্ড এহনো অইতে পারি নাই।'

নাভিদ তা জানেন। শুধু চাপ প্রয়োগ করে ওর মুখ থেকেই বের করে নিতে চান আসল ঘটনা। বাবুল মৃধাকে ইতস্তত করতে দেখে বললেন, 'তোর দোস্তের উপর বিশ্বাস রাখ। যত বড় কুতুব হউক না কেন, অর ছাড়ন নাই। মনে কর ও শ্যাষ। তোর তো ভাল, আর কারো কোন ক্ষতি করার সুযোগ ইহজীবনে আর ও পাইবে না।' তারপরও ভাঙলেন না ধুরন্ধর বাবুল মৃধা। বাবুল মৃধার নিজস্ব রুমে একসঙ্গে নাশতা করলেন দুই বন্ধু। পকেট থেকে প্যাকেট বের করে অফার করলেন বাবুল মৃধাকে। ফ্লাইং ডাচম্যানের মিষ্টি সুবাসে ঘর ভরে গেল। আস্তে ধীরে আলোচনা শুরু করলেন নাভিদ সারোয়ার। ইচ্ছা করেই নিজের সম্পর্কে দুই একটা তথ্য ছাড়লেন। অবশেষে মুখ খুললেন বাবুল মৃধা। ষড়যন্ত্রের পুরোটা উন্মোচন করলেন সময় নিয়ে।

পাঁচ.
একের পর এক আকাশের টুকরো টাকরা ভেঙে পড়ছে স্থানীয় সর্বহারা নেতা মাখন সন্যামতের মাথায়। ঠিক দুপুর বেলা পাঁচজন অপরিচিত লোক এসে ওর বাসায় উঠেছে। বস পাঠাইছে বলে ওর বাড়িতে ভাত খেয়েছে। তবু অস্বস্তি যাচ্ছে না ওর। বসের নাম্বারে কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা করে দেখেছে, কাজ হচ্ছে না। নেটওয়ার্ক খুব ঝামেলা করছে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে ওদেরকে ব্যাগের চেইন খুলতে দেখে কেন যেন ধক করে উঠল বুকের ভেতরটা। ওর লাইনে খাওয়ার পর ব্যাগ খোলার আলাদা অর্থ আছে। কিন্তু না কোন অস্ত্র না। ছোট্ট একটা মেশিনের মত বের করে সেটার একটা বাটন টিপল লোকটা। তারপর বলল, 'এইবার তুমি বসের লগে যোগাযোগ করতে পার মাখন ভাই।'

কি আশ্চর্য একদম ক্লিয়ার নেটওয়ার্ক। ওপাশ থেকে বসের এপিএস বলল, 'আর ফোন দিওনা মাখন ভাই। বস বিশাল ঝামেলায় ফাইস্যা গেছে। প্রয়োজন পড়লে আমরা তোমার লগে যোগাযোগ করমু।'

চাপা অস্বস্তি নিয়ে অতিথিদের দিকে তাকাল সে। মুচকি হেসে তারা বলল, 'বাড়ি যাইয়া ভাত খাইয়া মেজবানের দিকে অস্ত্র তাক করার রেকর্ড তোমার অনেক আছে মাখন ভাই।' মাখনের চোখ দুটো রসগোল্লার মত হয়ে গেল। 'না না ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আমরা অত পাষণ্ড না যে খুন করুম। তয় একটু চিকিৎসা তো করতেই হয়।' তিনজন এগিয়ে এসে মাখনকে দাঁড় করাল। মরিয়া হয়ে মাখন ফোনের বাটন টেপা শুরু করল। লিডার ইশারা দিল, 'আচ্ছা ফোন করতে দে। আফসোস থাকনডা ঠিক না।'

'হ্যালো ভাইজান পায় ধরছি বসেরে এট্টু দেন।'

'ওপাশ দিয়ে ধমকের শব্দ ভেসে এলো। ধুর মিয়া কানে যায় না, বস বিশাল ঝামেলায় ফাইস্যা গেছে। দেন দরবার চলতেছে। রাইতে ফোন দেন। বলে ঝট করে ফোন কেটে দিল।'

'লাভ নাই মাখন। আজীবন তুমি যা কইর‍্যা বেড়াইছ আইজ নিজেই তার স্বীকার হইতেছ। কিচ্ছু করার নাই।'

আতঙ্কিত চোখে দুইপাশে তাকাল মাখন। হাত তুলে থামতে বলে মাখনকে বলল, 'ঠিক আছে কাইল রাইতে ছোড সাবের গায় যেইডায় হাত দিছে হ্যার ঠিকানা কও। তোমারে বাচান যায় কিনা দেহি।'

ঝটপট নাম ঠিকানা বলে দিল মাখন। ফোন করে কাকে যেন কি নির্দেশ দিল লিডার। তারপর ইংগিত করল চোখ দিয়ে। সন্ধ্যায় যখন ওরা বাবুল মৃধার বাড়িতে পৌঁছাল, তখন মাখনের চেহারা ঠিকঠাক চেনা যাচ্ছে না। তবে মধুর অবস্থা আরো জটিল। ধুকতে ধুকতে মৃধার ঘরে ঢুকেই সামনে ইভানকে বসা দেখে হাউমাউ করে পায়ের ওপর পড়ে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে লাগল দু'জনই। হাতের উদারতায় ওদেরকে ছেড়ে দিতে বলল ইভান। চোখের ইশারায় বসের অনুমতি চাইল কলিম। হাল্কা করে ঘাড় কাত করলেন তিনি।

সেদিন রাতেই মৃধার ঘরে বসে তারা দু'বন্ধু খবর দেখছিলেন। অবৈধ অস্ত্রের চালানসহ মন্ত্রীর গাড়ী আটক। খবরে প্রকাশ আজ দুপুরে ..................... মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ............ ......... নিজের গাড়ীতে অবৈধ অস্ত্রের চালানসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন। প্রাণপণে অস্ত্রের সংগে তার যোগাযোগ অস্বীকার করেন এবং তিনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার বলে জানান। কিন্তু সংগে সংগে বিপুল সাংবাদিকদের উপস্থিতি এবং এক্সপার্ট আনিয়ে অস্ত্রের বস্তার গায়ে তার নিজের হাতের ছাপ পাওয়া যাওয়ার পর ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা লুকোতে পারেননি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবী করছিলেন। অর্থপূর্ণ চোখে বন্ধুর দিকে চাইল বাবুল মৃধা। সে দৃষ্টিতে পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখা গেল। ছোট্ট করে বললেন, 'এটা কি তোর ষড়যন্ত্র?'

না বললেন তিনি, 'উন্মোচন। অপেক্ষা কর। কোনভাবে ফসকে যেতে পারবে না। সবদিকের জাল গুটিয়ে এনেছি।' বাবুল মৃধাকে ওপরওয়ালার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখে বলল, 'আমি জানি তোকে কিভাবে উনি ভয় দেখিয়ে তার জালে ফাঁসিয়েছে।' চোখ কপালে উঠে গেল বাবুল মৃধার।

ছয়.
তিনি বসেছিলেন বারান্দায় তার ইজি চেয়ারে। ভীরু ভীরু পায়ে নাভিদ সারোয়ার চৌকাঠে পা রাখলেন। আস্তে করে ডাকলেন, 'বাবা।'

'কে?' চোখে আগের মত দেখতে পান না, কানেও ভাল শোনেন না তবু মনে হল তার কলজের কোন একটা অংশ থেকে ছেঁড়া, হারিয়ে যাওয়া একটা জমাট দুঃখের টুকরা অনেকদিন পর তার কাছে ফিরে এসেছে। 'বাবা, আমি ফিরে এসেছি। তাড়িয়ে দেবে?'

তিনি কাঁদছেন। ইভান এগিয়ে গিয়ে দাদুর হাত ধরে তুলে দাঁড় করাল। 'বাবা এসেছে দাদু।' দু'জন মানুষ সামনের দিকে এগোতে থাকেন। দু'জনারই চোখ ঝাপসা। তারা আলিঙ্গন করলেন পরস্পরকে। শুধু তারা দু'জনই নয়- ইভান, মীরা ও মীরার মা তো বটেই এমনকি পাষাণ বলে পরিচিত বাবুল মৃধাও চোখে কি যেন পড়েছে বলে ক্রমাগত চোখ মুছতে লাগলেন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সানাউল্লাহ নাদের জাল গুটিয়ে আনার প্রেরণা চমৎকার। সমাজে অনেক ইভান নিজেদের গুটিয়ে রাখা ভুলে এমনি সব অন্যায়কে জালে গুটিয়ে আনবে। প্রেরণা আসুক আপনার করমে। অনেক প্রত্যাশা ও শুভ কামনা।
মামুন ম. আজিজ ক্ষমতার উপর ক্ষমতার জোর......পান্না গল্প লেখার স্টাইলটাই এমন যা পড়তে পড়তে এক সময় মনোটোনাস ছাড়াই শেষ হয়....দারুন.......সুন্দর জাল বিছিয়ে মাছ ধরতে পরিপক্ক লেখক
শাহ্‌নাজ আক্তার দীর্ঘ গল্প পড়লাম, চমত্কার লাগলো | সত্যি আমাদের এই ঘুনে ধরা সমাজে ইভান এর মত চরিত্র খুব বেশি প্রয়োজন | যে কিনা অন্যায়ের কাছে মাথা কখনো নোআবেনা | ভালো লাগলো প্রচন্ড ................
sraboni ahmed বলিষ্ঠ উপস্থাপনা। দুর্নীতি গ্রস্থ বর্তমান সময়ের চিত্র খুব ভাল ভাবেই তুলে ধরেছেন। এই সময় এই দেশে ইভান , নাভিদ সারোয়ারের মত শক্ত মেরুদন্ডের মানুষ খুব বেশি প্রয়োজন। পান্না ভাইয়া ভাল লাগল গল্প।
নিলাঞ্জনা নীল বাপরে! নাটক দেখলাম না গল্প পড়লাম!!
এস.কে.দোয়েল চমৎকার লিখা। গল্প পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার লেখার হাত খুব সুন্দর। থেমে থাকে না যেন আপনার কলম। অভিনন্দন।
শফিক পান্না ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার লিখা গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়লাম, চমৎকার লিখেছেন, খুব ভলো লাগলো। গল্পটির প্রতেকটি চরিত্র সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। গল্পটি একটানে পড়ে শেষ করলাম............। সময়পেলে বারবার পড়ব............ভালোথাকবেন শুভকামনায় শফিক.......................................
Sisir kumar gain সুন্দর ঘটনার বর্ননা। ভালো লাগল।

০৩ মার্চ - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪