এক.
রিমকির সাথে পিয়ালের সম্পর্কটা খানিকটা সাপে-নেউলে। ঝগড়া-ঝাটি লেগেই থাকে। হয়ত পিয়াল কোন কাজের জন্য বলল- অমনি মুখ ঝামটা দিয়ে বলবে, ‘তোমার চাকর নাকি আমি?’ তবে ওপরে যাই হোক আড়ালে পরস্পরের প্রতি টান অন্যরকম। মুখ ঝামটা দিলেও কাজটা যথেষ্ট আগ্রহের সংগেই করে দেয়। শুধু তাই নয়- পিয়ালের বলতেও হয়না, কাপড়-চোপড় ধোয়া-কাচা থেকে শুরু করে আয়রন করা কিংবা সাংঘাতিক রকমের অগোছালো পিয়ালের টেবিল বই-পত্র ম্যায় বিছানা বালিশ পর্যন্ত গুছিয়ে রাখার দায় দায়িত্ব নিজেই নিজের কাঁধে গছিয়ে নিয়েছে। এসব কাজের কোন কোনটার ব্যাপারে পিয়াল এমনকি পুরোপুরি সচেতনও নয়। ও যে কিছু কিছু ব্যাপারে ভীষণ রকম উদাসীন তার জন্য ওর নিজের বোনদের পাশাপাশি এই কাজিনটাও কম দায়ী নয়।
ক্লাস সিক্স থেকেই পিয়াল ওর কাকার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করে। ভাল ছাত্র বলে ওদের গোটা পরিবারেই পিয়ালের আলাদা একটা ইমেজ আছে। ক্লাস ফাইভ এবং এইট দুবারই ট্যালেন্ট পুলে বৃত্তি পেয়েছিল। এমনকি রিমকির মা যে অনেকটাই স্বার্থপর এবং কুচুটে স্বভাবের জন্য ওদের পরিবারে পরিচিত তিনি পর্যন্ত ওর ব্যাপারে সাংঘাতিক রকম সফট। এসএসসিতে স্ট্যান্ড করার পর- সেই ইমেজ আরও নিরেট হয়েছে। ওর অনেক রকম জ্বালাতনকে তিনি শুধু যে সহ্য করেন তাই না, খানিকটা প্রশ্রয়ের চোখেই দেখেন। মায়ের এই দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে রিমকি পিয়ালের হাত খরচের ব্যাপারটাও সামলে নেয় অনায়াসে। ভীষণ মুখচোরা পিয়াল কখনোই মুখ ফুটে টাকা-পয়সা চাইতে পারে না। অথচ বাস ভাড়া রিকসা ভাড়াসহ প্রতিদিনই বেশ কিছু খরচ প্রয়োজন হয়। পিয়ালের বাবা স্কুল শিক্ষক। খুব ধনী না হলেও তার পক্ষে ম্যানেজ করা কঠিন নয়, কিন্তু এমনিতেই বাবাকে যমের মত ভয় পায় ও। চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতেই গড়বড় হয়ে যায় সব কিছু। মা নিজে থেকেই টাকা-পয়সা দিয়ে দেন, কিন্তু তার পক্ষেও সব ব্যয় আন্দাজ করা সম্ভব না। পিয়াল ছোটবেলা থেকেই বাবা মায়ের সংগ্রাম দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাই নিজে থেকে কখনোই চায় না।
পড়াশোনাটা পিয়ালের একবারে সহজাত স্বভাবের অংশ। যে রকম আগ্রহ নিয়ে ও গল্প-উপন্যাস পড়ে একই রকম আগ্রহ নিয়ে ক্লাসের বই কিংবা লাইব্রেরী থেকে আনা স্যারদের রেফার করা বইগুলো পড়ে ফেলে। বলা যায় পরীক্ষা বা রেজাল্টের জন্য কোন রকম এক্সট্রা এফোর্ট ওকে দিতে হয়নি কখনোই। তারপরও প্রতিটা পরীক্ষায় অনায়াসে ফার্স্ট হয়ে এসেছে। কাকার বাসায় আসার পর ওর স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও খুব একটা বিঘ্নিত হবার সুযোগ পায়নি। বরং আরও একটু বেশী স্বাধীন হয়েছে বলেই মনে হয় ওর। রাত জেগে পড়ার অভ্যেস- এজন্য মায়ের বকুনি খেতে খেতে কান পচে গেছে। কিন্তু এখানে কেউ কিছু বলেনা- না কাকা, না কাকী। একটাই সমস্যা কলেজে ভর্তি হবার পর থেকে ওকে বিব্রত করে রেখেছিল, সেটা প্রিয়া- রিমকির প্রাণের বান্ধবী। প্রায়ই হুট-হাট ওর রুমে ঢুকে পড়ত- যেটা এমনকি রিমকিও করে না কখনো। পড়ার সময়ে নানান রকম প্রশ্ন করে বিরক্ত করে মারত। সত্যিকারের রূপবতী- সন্দেহ নেই। লাল হলুদ ঘেঁষা রং, মাখন কোমল ত্বক। মুখের ডোলটা দারুণ আকর্ষণীয়। ঠোঁটের ওপর একটা তিল গোটা মুখে ভিন্ন একটা মাত্রা দিয়েছে। সব মিলিয়ে এক্সট্রা অর্ডিনারী, ইউনিক একেবারে। তবু মেয়েটাকে উপদ্রব হিসেবেই বিবেচনা করত ও- এইসব ঝামেলার কারণে। ওর বই-খাতার মধ্যে মাঝে মাঝেই বেনামা কিছু চিঠি পাওয়া যেত। সেসব চিঠির ভাব-ভাষা একবারে মন্দ নয়। একদিন রিমকিকে ডেকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই ধুমসি, আমার বইয়ের মধ্যে চিঠি দেয় কেরে?’
যথারীতি মুখ ঝামটা দিয়ে রিমকি বলল, ‘আমি কি জানি, নিজে খুঁজে দেখতে পারো না?’
‘এই টেবিলের সব কিছুই তো তোর আওতায়, আর এই সামান্য জিনিসটা জানিস না।’ বলে বিরক্তি প্রকাশ করে পিয়াল।
‘জানলেই কি তোমাকে বলতে হবে নাকি?’
বলে উল্টো ঘুরে চলে গেল রিমকি। সন্দেহটা পিয়ালের হয়নি এমন নয়, কিন্তু কোন প্রমাণ নেই যে। হাতের লেখা পরীক্ষা করবে সে সুযোগ ওর ছিল না। আর এমন একটা সুযোগ তৈরি করে নেয়ার জন্য যা করতে হত সেটা করার মত মানসিকতা আর সময় দুটোরই বেশ অভাব ছিল। কাজেই যেমন চলার চলছিল সব। কিন্তু চোর তো ওকে ছেড়ে দিতে নারাজ। পরীক্ষার মাঝে এক দিন ওর রুমে ঢুকে পড়ে ওর সামনে থেকে বই খাতা টান দিয়ে সরিয়ে নেয়ার মত দুঃসাহসী কাজটা খুব অনায়াস ভঙ্গীতে করে ফেলল। ওর বিরক্তিকে একটুও পাত্তা না দিয়ে বলল, ‘হাই মি. গুড বয়- খালি পড়াশোনা করলেই হবে?’
একটু বিরক্ত মুখে পিয়াল বলল, ‘আর কি করতে পারি- বল?’
প্রিয়ার মুখ দেখে মনে হল সাংঘাতিক অপমান বোধ করেছে। সুন্দরী মেয়েদের মান-অপমান জ্ঞান একটু বেশীই টনটনে হয়। ওর চোখে চোখ রেখে তারিয়ে তারিয়ে বলল, ‘আপনি কি কিছুই বোঝেন না?’
বলেই ক্লাস নাইনে পড়া নওল কিশোরী ভীষণ রেগে দুদ্দাড় বেরিয়ে গেল। সেদিকে তাকিয়ে আপনমনেই কিছুক্ষণ মাথা নেড়েছিল ও। তারপর আবার ডুবে গেছে বইয়ের মধ্যে। অপমানটা মনে হয় প্রিয়ার একটু বেশীই লেগেছিল। গোটা পরীক্ষার মধ্যে আর ওর কোন সাড়া শব্দ পায়নি। আসলে পরীক্ষার পড়াশোনায় পিয়াল বেশ সিরিয়াস ছিল। মায়ের একটা আবেগপ্রবণ কথা ওর মনে দাগ কেটে যায়। তবে হঠাৎ এই উপদ্রব বন্ধ হয়ে যাওয়াটা ওকে যে একটু ভাবনায় ফেলেনি তা নয়। সত্যি বলতে কি বেশ খারাপও লেগেছিল। কিন্তু সেই সংগে স্বস্তিও বোধ করেছে কম না। বিশেষ করে পড়ায় মন দেয়াটা সহজ হয়ে ওঠে অনেক।
দুই.
যে কারণে এই উপদ্রবের সূত্রপাত সেটা ওর নিস্তরঙ্গ জীবনে একটু ব্যতিক্রমই। প্রিয়ার বড় বোন রিয়ার একটা ছেলে আছে। নানা বাড়ি থাকলে ওদের বাড়িতে প্রায়ই আসত। ভীষণ দূরন্ত ছেলে। এমনিতেই সবার আদর কেড়ে নেয়। সেই ছেলে একদিন হঠাৎ পিয়ালের চোখের সামনে গাড়ির সংগে ধাক্কা লেগে সাংঘাতিক একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। দৌড়ে গিয়ে ছেলেটাকে কোলে তুলে নিয়ে রক্তে মাখামাখি অবস্থায় কাছের একটা ক্লিনিকে নিয়ে যায় ও। ওর গ্রুপের সংগে মিলে যাওয়ায় জীবনে প্রথমবারের মত রক্ত দেয়।
খবর পেয়ে ওরা যখন ক্লিনিকে পৌছায় ততক্ষণে ছেলেকে ওটি থেকে বেডে নিয়ে আসা হয়েছে। রক্তমাখা শার্ট প্যান্ট নিয়ে সারারাত ক্লিনিকেই ছিল পিয়াল। বলেও কেউ নড়াতে পারেনি। সকালে ছেলে সংজ্ঞা ফিরে পাবার পর স্বস্তিতে সেখানেই জ্ঞান হারায়। চোখ মেলার পর ওর মুখের ওপর উদ্বিগ্ন দুই জোড়া চোখ দেখতে পায়। একটা রিমকি, আর একটা প্রিয়া। রিমকির প্রায় কাঁদো কাঁদো মুখ ছাপিয়ে প্রিয়ার চোখ দুটো ওর ভেতর আলাদা একটা অনুভূতি সৃষ্টি করে। বিষণ্নতার যে একটা ভিন্নরকম সৌন্দর্য আছে সেটা যেন প্রথমবারের মত উপলব্ধি করে ও। কি গভীর বিষাদ নিয়ে তাকিয়েছিল মেয়েটা। চোখ মেলার একটু পরেই যেন সেই চোখে বিষাদের মেঘ ভেদ করে প্রত্যাশার সূর্য উঁকিঝুকি দিতে শুরু করে। মুগ্ধ হয়ে যায় পিয়াল। তবে সেই পর্যন্তই। এ নিয়ে আর কখনো মাথা ঘামায়নি।
তিন.
এক এক বয়সের প্রেমের এক এক রকম ধর্ম। কিশোর বয়সের প্রেমের ধর্ম আবেগ। সুনামীর মত, আয়লা কিংবা সিডরের মত ভাংচুর আর ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া আবেগ। পরিণাম চিন্তাহীন অন্ধ আবেগ। তেমন এক আবেগ ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রিয়াকে। পিয়ালকে পাবেনা এই ভয়ে সারাক্ষণ তটস্থ। পিয়ালের নিস্পৃহ ঔদাসীন্য, শান্ত নির্লিপ্ততা ওকে ভীষণ রকম কষ্ট দিচ্ছে। শ্যামলা ধরনের ছেলেটার দারুণ মোহন একটা মুখ। অথচ একদম রোবটের মত। কি শান্ত সমাহিত। মনে হচ্ছে ওর মনের দূর্গ কোন কিছু দিয়েই ভাঙা যাবেনা। সেই দুর্গম জগতটার প্রতি কি অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণই না বোধ করছে ও। কিন্তু হচ্ছে না, কিছুই হচ্ছে না। আয়নার সামনে ইদানিং বড্ড বেশী সময় দিচ্ছে। কি নেই ওর। কেন এমন হচ্ছে?
ছোটবেলা থেকেই প্রিয়া ছেলেদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কত চিঠি-প্রেমপত্র, অশ্লীল ইংগিত ওর ছোট্ট জীবনটাকে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করে রেখেছে। কত মহাপুরুষদের মুখোশ খুলে গেছে- ওর সামনে এসে। আর এই ছেলেটা কি নিষ্ঠুর ঔদাসীন্যে এতকালের সঞ্চিত গর্বগুলোকে পায়ের তলায় পিষে পিষে মারছে। যার একটু চোখের ইশারায় পৃথিবী পায়ের তলায় এসে লুটিয়ে পড়ে- তাকেই কিনা অপমানের চূড়ান্ত করে ছাড়ছে পিয়াল। জেদ চেপে যাচ্ছে, তবু মনে হয় হাল ছেড়েই দিতে হবে।
মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় রিমকির সংগেই ওর কোন...। কিন্তু সেসব অলক্ষুণে চিন্তা খানিক বাদেই উবে যায় মন থেকে। যেটুকু সুযোগ পাচ্ছে রিমকির জন্যই। আড়ালে আবডালে ওকে ভাবি ডেকে খ্যাপায়। আবার পিয়ালের নামে নানারকম সম্ভব অসম্ভব গল্প ফেঁদে ওই তো প্রিয়াকে আরো বেপরোয়া করে তুলেছে।
চার.
পরীক্ষার পর কিছুদিনের জন্য নিজেদের বাড়িতে বেড়াতে গেল পিয়াল। জেদ ধরায়- সংগে রিমকিকেও। ওর বাবা প্রায় অজপাড়াগাঁয়ে একটা স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বাড়ি-টাড়ি সেখানেই করেছেন। অনেকদিন পরে ভাইবোনেরা ওকে পেয়ে খুব খুশী। কাকাও সবার জন্য নানান উপহার পাঠিয়েছেন। সেগুলো পেয়ে সবাই আনন্দে ঝলমল করছিল। রিমকি তো একেবারে মধ্যমনি হয়ে উঠল। পিয়ালও অনেকদিন পর পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে গ্রামময় বেড়াতে শুরু করল।
কিন্তু সাতদিন যেতেই খবর এলো ওদের বাড়ি থেকে। রিমকির স্কুল খোলা, পিয়ালকেও ভর্তি কোচিং করতে হবে- তাই বাধ্য হয়ে ঝুমকিকে সহ পিয়ালকে কাকার বাড়িতে চলে আসতে হয়। পড়াশোনার জন্য সিমকি আর মৃদুল আসতে পারেনি বলে খুব মন খারাপ করল। এতদিন পড়াশোনার চাপ, শেষদিকে বাড়ির আনন্দ মিলে মিশে অনেক কিছুই ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু ফেরার পর থেকে একটা অদ্ভুত সমস্যায় আক্রান্ত হল পিয়াল-কেন যেন বার বার প্রিয়ার মুখটা ভেসে আসছিল মনের মধ্যে। সৌন্দর্যের এমনিতেই আলাদা একটা আবেদন, আলাদা একটা আকর্ষণ আছে। আর সৌন্দর্য নিজেই উদ্যোগী হয়ে ছুঁতে চাইলে মুনি ঋষিরাই হার মেনে যায়। মেয়েটার উপর অনেক অবিচার করেছে ও নিঃসন্দেহে, ভাবল পিয়াল। মিষ্টি মুখটা এর মধ্যেই মনের কোথায় যেন আঁকা হয়ে গেছে, গেঁথে আছে রীতিমত। কেমন একটা অন্যরকম অনুভূতি ওকে খুব খোঁচাতে লাগল।
এমন একদিন দুপুরবেলা শুয়ে শুয়ে একটা গল্পের বই পড়ছিল- কোত্থেকে ধুপধাপ ঝুমকি এসে ওর মাথার কাছে বসে চুল টেনে দিতে শুরু করল। ঝুমকির এই স্বভাবটা পিয়াল খুব ভাল জানে। কোন আবদার থাকলে এভাবেই জানায় ও। এই ছোট বোনটার প্রতি ওর খুব টান। একটু দুরন্ত স্বভাবের হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই ভাংচুর করা ওর স্বভাবের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমন অনেকবার হয়েছে- ঝুমকি কিছু ভেঙেছে আর সব দোষ নিজের মাথায় নিয়ে পিয়াল মায়ের মার খেতে দাঁড়িয়ে গেছে। মা বুঝতে পেরে আর কাউকেই ঘাটায়নি।
‘কি বলবি বল?’
‘না মানে..’
‘কিছু কিনে দিতে হবে?’
‘না। তোমার কাছে..’
‘আমার কাছে? আমার কাছে কি?’
ঝুমকি এক নিঃশ্বাসে বলল,‘প্রিয়াপি লজ্জায় আসতে পারছেনা, নিয়ে আসব?’
প্রিয়া! পিয়ালের ইচ্ছে হল বলে, কই এখুনি নিয়ে আয়। কিন্তু সামলে নিলো। একটু উদাস ভাব দেখিয়ে বলল, ‘আসতে চাইলে আসবে, সমস্যা কি?’
‘কই আস। আরে লজ্জা কি?’ বলে ঝুমকি উঠে গিয়ে প্রিয়াকে হাত ধরে নিয়ে এলো। উজ্জ্বল মুখটা লজ্জায় বেগুনী হয়ে আছে। পিয়ালের মনে হল কোত্থেকে যেন এক ঝলক রক্ত এসে ওর নিজেরও নাক-মুখ রাঙিয়ে দিল। কোন মতে বলল, ‘বোসো।’
কিসের যেন একটা আনন্দ ওর সারা বুকে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে। কোথায় যেন কিছু একটা ভেঙে গেল। গলার মধ্য থেকে দলা পাকিয়ে পাকিয়ে কি যেন উঠে আসতে চাইছে। প্রিয়ার চোখ ভরা মুক্তো বিন্দুর মত জল চিকচিক করছে। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে আছে ওরা- হৃদয় ভরে দেখছে একজন আর একজনকে। দুই পাড়ে চার চোখে কত কি খেলা করছে- আনন্দ, বেদনা, স্বপ্ন...। ঝুমকি হঠাৎ- ‘একটু আসছি ।’ বলেই ঝট করে উঠে গেল। যাওয়ার আগে, পিয়ালকে লুকিয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে চোখের একটা ভঙ্গী করে গেল। পিয়াল হঠাৎ সচেতন হয়ে উঠল, হাত তুলে চোখে যেন কি পড়েছে বলে সামলে নেয়ার চেষ্টা করছে। ওড়নার আঁচল দিয়ে চোখ চাপা দিল প্রিয়া। তারপর কি এক অদম্য আবেগে মাথা নিচু করে ফেলল। সারা শরীর ঘন ঘন কেঁপে কেঁপে উঠছে। সেদিকে তাকিয়ে বুকের মধ্যটা সাংঘাতিক ভাবে দুমরে মুচড়ে গেল ওর।
কি কাজে রিমকি পিয়ালের রুমে এসে কোন কথা না বলেই নিঃশব্দে বেরিয়ে গেল।
০৩ মার্চ - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৫৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪