১.১ বৃষ্টিটা হচ্ছিল বেখাপ্পা ধরনের। ঝরছে তো ঝরেই যাচ্ছে, থামার নাম নেই। প্রতিদিনের মত ওরা তিন বন্ধু প্রাকটিস করতে এসেছিল। শিহাব ও আসাদ এই মুহূর্তে শহরের সেরা দুই কন্ঠশিল্পী। বাবুল নামে ওদের সমান না হলেও ভরাট কন্ঠে আলাদা সুর-মাধূর্য। তবে ওদের সংগ দিতে আসে মূলত তবলায়। সচরাচর প্রাকটিসে এলে সময়ের লুকোচুরি ওদের অগোচরেই বয়ে চলে। সুরের তরঙ্গে ডুবে গিয়ে কেটে যায় বিভোর প্রহর। ফাঁকে ফাঁকে আড্ডাবাজী। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে আকাশের দুঃখের বহর দেখে তিনজনই উদ্বিগ্ন। এ এলাকা প্রায় নির্জন এখন। এই বৃষ্টিতে রিকসা পাবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। হেঁটে যেতে হবে- অথচ কেউ ছাতা আনেনি। কোন পথ না পেয়ে সবাই আসাদের বাসায় যাবে ঠিক করল। ওটাই সবচাইতে কাছে। যেহেতু ভিজতেই হবে...। মাঝামাঝি আসার পর ওদের চোখ পড়ল রাস্তার পাশে...। কি ওটা? ২. বাসায় ফিরতে ফিরতে তিনজনই ভিজে একসা। দুপুর হয়ে যাচ্ছে প্রায়। তার মধ্যেই ওটাকে জবাই করে কেটে বেছে- রান্নাঘরে নিয়ে তেল মসলা মেখে রেঁধে ফেলল- বাসার কাউকে বিরক্ত না করে। বৃষ্টির দিনে আসাদদের বাসায় রান্না হয় ঘরের মধ্যে। তাই কেউ ওদের দেখতে পেল না। বাবুলের রান্নার হাত খুবই ভালো। মাঝে মাঝে বাইরে খ্যাপে গেলে রেঁধে খাওয়ায়। এরা খেতে খেতে প্রশংসার সুরে বলে- "তোর বউটা যা হবেনা।" বাবুল তখন হাসে, "আশীর্বাদ করছিস?" ওরাও হাসে, হাসতে হাসতে বলে, "আশীর্বাদ মানে, পাক্কা আশীর্বাদ। তোর বউ হবে একটা কুঁড়ের বাদশাহ।" বাবুল গম্ভীর হয়ে যায়, "লিঙ্গ ভুল করেছিস.. বাদশাহ নয়.." তো এমত বাবুল সাহেব রান্না-বান্না সারার পর ঘ্রাণেই জীভে জল এসে যাচ্ছিল। একটু হলেই খেয়ে ফেলত শিহাব। ওদের টার্গেট ছিল- ঠিক খাওয়ার আগে আগে বাসায় একটা সারপ্রাইজ দেয়া। যথাসময়ে যথারীতি ঘটল সেটা। মসলার ঘ্রাণে মাংসটা ম ম করছিল। খাবার টেবিলে ওদের প্রশংসার আর অন্ত নেই। বেশ নরম মাংস। আসাদের বোন যে মাংস তেমন একটা খায়না, সেও তিন চার টুকরো খেয়ে ফেলল। কি পাখী এটা? "চিনলে না"- বলল আসাদ, "পানকৌড়ি।" সবাই মজা করে পানকৌড়ি খেল, আবশ্য ওরা বাদে। তিনজনের কেউ এক টুকরোও মুখে দেয়নি। সচরাচর ভাই-বোনদের হাতে হেনস্তা হওয়া আসাদের পারিবারিক অবস্থান রীতিমত তুঙ্গে। "তোরা খাচ্ছিস না যে।" "এত কম- তোরা খা।" "বেশ মজা হয়েছে বুঝলে, এক টুকরো খেলে পারতে", বলল আসাদের পিঠেপিঠি ভাইটা।"শুধু নামই শুনেছি, কখনো পানকৌড়ি খাওয়া হয়নি আগে।" একমাত্র আসাদের মাই খেলনা। মাংসে তার অরুচী। আসাদের বাবা নেই। ভাই-বোন পাঁচজন। ৩. খাওয়া-দাওয়া শেষ হল, সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। "এমন মজার মাংস অনেকদিন খাইনি। কোথায় পানকৌড়ি পাওয়া যায় আমাকে বল, ঝাঁক বেঁধে ধরে নিয়ে আসবো, তখন তোরাও খাবি। খুব টেষ্ট, খুব মিস করলি।"- বলল আসাদের বড় ভাই। ওদের তখন বেশ আফসোস হল। খেলেই পারতো, সবাই এত মজা করে খেয়েছে। ওরা তখন বের হবার প্রস্তুতি নিচ্ছে- সবাই শিহাবের মেসে যাবে, গান-বাজনা, আড্ডা হবে। একটু তাস পেটানোও হবে। তিন-চারদিন ওখানেই থাকবে ঠিক করে কাপড়-চোপড় গোছালো। এর আগে বাসায় ফেরা নিরাপদ হবেনা। ৪. রেডী হয়ে রিকসা ঠিক করল একটা। রিকসায় উঠে ভাইবোনদেরকে বলল, কি খাইয়েছিল। ওরা বিশ্বাস করল না। তাহলে যেখানে কাটাকুটি করেছি সেখানে গিয়ে মাটির নীচে খুড়ে দেখ। তারা দেখতে গেল, ওরাও রিকসায় উঠে বলল, টান দে। যাবার আগে আড় চোখে দেখল আসাদের বোন মুখ চেপে বাথরুমে দৌড়ুচ্ছে। ...... ...... ...... ১.২ .....কোন পথ না পেয়ে সবাই আসাদের বাসায় যাবে ঠিক করল। ওটাই সবচাইতে কাছে। যেহেতু ভিজতেই হবে...। মাঝামাঝি আসার পর ওদের চোখ পড়ল রাস্তার পাশে...। কি ওটা?...... কাছে গিয়ে দেখল বিশাল সাইজের এক কোলা ব্যাঙ। আসাদের মাথায় খেলল বিষয়টা। বাসায় আমারে কেউ দামই দেয়নারে। আইজ সবাইরে একটু সাইজ করন লাগবো...
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার নাহিদ হোসেন
পান্না ভাই, আপনার গল্প বলার এই নতুনত্ব সত্যি খুব ভালো লাগলো। রহস্য উপন্যাস ছাড়াও ছোট গল্পেও যে এভাবে লেখা যায় ব্যাপারটা আগে ভেবে দেখিনি। তো একটা বাহবা আপনার প্রাপ্য। আর গল্পটা মোটামুটি লাগলো। ভালো থাকুন।
ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইফতেখার
ব্যতিক্রমী একটি গল্প। আপনি বলেছেন সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত। এখানে একটু কল্পনার রং মেশালে বোধহয় ভালো হতো, যেমন পরিবারের সদস্যদের সায়েস্তা করার পরিবর্তে অন্য কোনো দুষ্টু বন্ধুকে শিক্ষা দেওয়া।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।