ঘড়ির কাঁটা তখন প্রায় ১২টা ছুঁইছুঁই, লেখটা শেষ করে সবে মাত্র ভাত খেতে বসলেন তিনি ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখ নিয়ে পাশে স্ত্রী জেগে- প্রথম লোকমাটা মুখে পুড়বেন, ঠিক তখনই চারপাশ কাঁপিয়ে কর্কশ শব্দে দরজায় কড়া বেজে উঠল!
সেই রাতে কোন কারফিউ নেই নেই পাক মিলিটারির টহল দেশ প্রায় স্বাধীন হওয়ার পথে... তবুও চারপাশ খুব বেশি নিঃস্তব্ধ। রাতের নিঃস্তব্ধতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে একনাগারে বাজেই চলল কড়া। ভাতের প্লেটটা আলতো করে সরিয়ে তিনি এগিয়ে গেলেন দরজার দিকে, পেছন থেকে চাপা স্বরের নির্দেশ এলো “না দরজা খুলবে না” “আহ! দেখিই না কে এলো এত রাতে” স্ত্রীকে আশ্বস্ত করে ধীরপায়ে এগিয়ে তিনি দরজা খুলে দিলেন।
“স্লামাইলাকুম স্যার! আমি রফিক!” পরিচিত ছাত্রের কণ্ঠস্বরে স্বস্তি ফিরে এল তাঁর। “রফিক, তুমি এত রাতে? জরুরি কিছু?” “জি স্যার, খুব দরকার ছিল আপনাকে, যদি একটু আমার সাথে আসতেন?” “না, এতরাতে উনি কোথথাও যাবেন না!” আবারও আতঙ্কমিশ্রিত চাপা কণ্ঠের নির্দেশ। “ওহ! রানু তুমি এত ভয় পাচ্ছ কেন? আমি যাব আর আসবো”
স্ত্রীকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দ্রুত চোখ সরিয়ে নিয়ে, শীতের রাতে হাল্কা একটা শাল গায়ে জড়িয়ে বেড়িয়ে গেলেন প্রিয় ছাত্রের সাথে; পেছন ফিরে আর দেখলেন না ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টি নিয়ে কারও তাকিয়ে থাকা।
টেবিলে পড়ে রইলো ভাত, আর খাওয়া হলনা ব্রাশ ফায়ারে ঝাঁঝরা হল বুক স্বাধীন বাংলা দেখা হল না লাশ মিলল বধ্যভূমিতে চোখদুটো আর মেলা হলনা সন্তানের মুখে বাবা ডাক শোনা হল না স্ত্রীর মায়াময়ী চোখে আধফোটা স্বপ্ন বোনা হলনা সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশে আর নতুন করে বাঁচা হলনা জীবনের খাতায় অপ্রাপ্তির তালিকাটা শুধুই বেড়েই চলল। প্রাপ্তির খাতায় কী কিছুই নেই? না, ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই মিলল শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে সেই সাথে কোটি মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধা এক জীবনে এই বা কম কী?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রোদেলা শিশির (লাইজু মনি )
বাস্তব গল্পের ভয়ংকর সত্যতার চোখ রাঙানিতে কম্পিত আজ ও বাঙালি হৃদয় ...............! কেবল ঘৃণা তাদের তরে ভীষণ যাদের জন্য দিতে হয়েছে চরম মূল্য ...........! ঝাঝরা বাঙালির ক্রন্দিত চোখের প্রতিটি অশ্রু-কণা আজ ও তাদের কথা বলে ..........!
সূর্য
বুদ্ধিজীবিরা ছিল আমাদের অংহকার, স্বাধিন দেশে আমরা প্রবেশ করেছি অহংকারহীন ভাবে। আর তাই আজও আমরা একই বৃত্তে থেকে গেছি। সুন্দর একটা অনুগল্পের স্বাদ পেলাম।
প্রজাপতি মন
সন্তানের মুখে বাবা ডাক শোনা হল না
স্ত্রীর মায়াময়ী চোখে আধফোটা স্বপ্ন বোনা হলনা
সদ্য জন্ম নেয়া বাংলাদেশে আর নতুন করে বাঁচা হলনা
জীবনের খাতায় অপ্রাপ্তির তালিকাটা শুধুই বেড়েই চলল।
প্রাপ্তির খাতায় কী কিছুই নেই?
না, ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই মিলল শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে
সেই সাথে কোটি মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধা
এক জীবনে এই বা কম কী?
চোখের সামনে যেন একজন বুদ্ধিজীবির শেষ জীবনের ইতিহাস দেখতে পাচ্ছিলাম, অজান্তেই কষ্টে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো, ভিজে উঠলো চোখের পাতা ;( অনেক সুন্দর কবিতা। কিন্তু আমি কান্না সামলাতে পারছিনা কিছুতেই।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস তাই অরনী আমি অবাক না হয়ে পারছিনা যে টি ভি 'র কোন এক চ্যানেলে হুবহু এই ছবিটাই কোন এক শহীদ পরিবারের সন্তানের মুখে আমি শুনেছিলাম । আর এখন তোমার কবিতায় ও সেই ছবিটাই আবার..... দেখছি । অসম্ভব ভালো লাগলো তোমার প্রাপ্যটা দিলাম । তোমাকে প্রিয়তে রাখলাম...ধন্যবাদ....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।