এটা আমার বাবার কবর ওটা আমার ভাই রুদ্রসেন এখানে অনেকের ঘনিষ্ঠজন অনেক এটা বাংলার--সমস্ত বাঙালির শোকের তীর্থ বন্ধু! এটাই বঙ্গসন্তানদের গণকবর।
এখানে দাঁড়ালে রাখতে পারি না চোখের জল এখানে তাকালে পড়ে না পলক চোখের এখানে এলে আবেগাপ্লুতহৃদয় ফিরে যেতে পারে না বাড়ি এখানে দেখলে ভেসে ওঠে চোখের সামনে সেই বর্বরতার চিত্র ভেসে ওঠে বিধ্বস্তবাংলার করুণদৃশ্য-- এখানে কুকুরেরা করছে টানাটানি লাশ ওখানে দাউদাউ জ্বলছে বাড়িঘর নদীতে ভেসে যাচ্ছে লাশের সারি কতক গলিত মাথাহীন কোনেক অঙ্গহীন রক্তমাখা... শকুনে খেয়েছে কতক হয়তো পিতা আমার, ভাইটি আমার কিবা ধর্ষিতা বোনটি হয়তো ভেসে যাচ্ছে মা আমার কূলে বসে কাঁদছি আমি শিশুনির্বোধ--নিরুপায় কিবা করি আমি কিবা করতে পারি আমি শুধু চেয়ে আছি পলকহীন নৈঃশব্দ্যকান্নায়।
এসব দৃশ্য দেখার শক্তি কার?
ভাবলে রক্তে লেগে যাবে আগুন শিরাউপশিরা জ্বলবে চিতার মতো দাউদাউ
এ সমাধিস্থলে দাঁড়ালে বুক ফাটে আমার।
কী চেয়েছিল আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ শান্তি? এ দেশ? এর নাম কি স্বাধীন? একি তবে স্বাধীনতা? এ স্বাধীনতার জন্যে বুকপেতে দিয়েছিল আমার পিতা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল আমার ভাই আমার বোন আমাদের আপনজনেরা! এর নাম কি তবে স্বাধীনতা? এরাই কি স্বাধীনদেশের জনতা? যারা স্বাধীনের বিপক্ষে যুদ্ধঘোষণা করে ধর্মের দোহাই দিয়ে রক্তের হোলি খেলে অধর্মাচারী বলে ধর্মচারীকে ধিক্কৃত করে তারাই ধার্মিক? একমাত্র নাগরিক?
বন্ধু! হাসতে পারি না আর বিদ্রূপের হাসিতে বড়বেশি জ্বালা।
দৈত্য থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি ঠিক কিন্তু হায়েনা থেকে মুক্ত হতে পারি নি কখনো!
এদেশ এখনো রাক্ষসের হাতে জিম্মি।
মানবশত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে আরও এ যুদ্ধ হবে না ধ্বংসের--হবে শান্তি প্রতিষ্ঠার আমাদের সোচ্চারে হবে মৌনমিছিল আভাসের ভাষায় হবে তীব্র প্রতিবাদ তাতে জ্বলবে না কোনো লোকালয় হবে না কোনো ক্ষয়ক্ষতি।
এটাই তবে ইনসানিত--গণহত্যার দ্বিমত।
আমাদের রাজনীতি হবে--সন্ধি হবে রাজনীতি হবে অহিংস, সন্ধি হবে দৃষ্টান্ত আমাদের হতে পারে না হিংস্র আচরণ আমরা মানুষ--আমাদের বুদ্ধিবিবেক অতুলনীয়
আমরা হিংস্র হলে মানুষ কে আর।
ভাই আমার, বন্ধু আমার একবার ভেবে দেখ বিবেকবান যার বিরোধিতায় আজ নেমেছ নিচে--এতই নিচে তার অবদানের কথা তোমার একটুও পড়ে না মনে!
কোন্ দেশদ্রোহীর বিরুদ্ধে তোমার লড়াই আজ? কে আনছে তোমার ধর্মে আঘাত? ধর্মের চেয়ে মানবতা অনেক ঊর্ধ্বে বন্ধু! অনেক ঊর্ধ্বে নিরলে বসে ভেবে দেখো একবার।
আমরা আর কোনো গণকবর চাই না চাই না আর কোনো সর্বনাশা প্রলয়ঙ্করী আজাদ চাই না আর কোনো পিতার কাঁদন--মায়ের আহাজারি চাই না আর কোনো বোনের ধর্ষণ--ভাইয়ের মৃত্যু
আমরা স্বাধীন, স্বাধীনতায় বাঁচতে চাই।
অতঃপর?
অতঃপর আমরা গর্ব করতে পারি-- গর্ব করতে পারি, আমি বাঙালি বাংলা আমার ভাষা বাংলা আমার দেশ গর্ব করতে পারি-- আমি হিন্দু, আমি মুসলমান, আমি বৌদ্ধ, আমি খ্রিষ্টান গর্ব করতে পারি, আমি মহান পিতার পুত্র গর্ব করতে পারি, আমি ধৈর্যশীলা জননীর সন্তান গর্ব করতে পারি, আমি বীরাঙ্গনা বোন ও আত্মত্যাগী ভ্রাতার ভাই গর্ব করতে পারি-- আমরা তাঁদেরই সন্তান ভাইবেরাদর--স্বাধীনদেশের নাগরিক।
এস হাতে হাত রাখি--একসাথে পথ চলি ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মার কসম খাই তাঁদের কবরের পাশে দাঁড়াই। দেখুক বিশ্ব বিস্ময়ে আমরাও পারি শান্তির পতাকা উড়াতে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ইমরানুল হক বেলাল
আপনার কবিতা পড়ে মনে হলো আপনি একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক।
দেশমাতৃকার জন্য যে গভীর ভালোবাসা তা আপনার কবিতার মাঝেই ফুটে উঠেছে।
কবি আপনার জন্য রইল আজীবন সমমর্যাদা।
শুভকামনা।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
আমি হিন্দু, আমি মুসলমান, আমি বৌদ্ধ, আমি খ্রিষ্টান
গর্ব করতে পারি, আমি মহান পিতার পুত্র
গর্ব করতে পারি, আমি ধৈর্যশীলা জননীর সন্তান
গর্ব করতে পারি, আমি বীরাঙ্গনা বোন ও আত্মত্যাগী ভ্রাতার ভাই
গর্ব করতে পারি--
আমরা তাঁদেরই সন্তান ভাইবেরাদর--স্বাধীনদেশের নাগরিক.......// অসাধারণ অভিব্যক্তি ....দেশপ্রেমের আলেখ্য ....অনেক শুভকামনা রইলো.আযাহা.....
আখতারুজ্জামান সোহাগ
‘‘দৈত্য থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি ঠিক
কিন্তু হায়েনা থেকে মুক্ত হতে পারি নি কখনো!
এদেশ এখনো রাক্ষসের হাতে জিম্মি।’’
ভালো বলেছেন কবি। এই হায়েনা, এই রাক্ষসদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এক হতে হবে, সৎ হতে হবে, আর হতে হবে পরিশ্রমী।
শুভকামনা কবির জন্য।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।