যুদ্ধ তো দেখিনি, যুদ্ধ তো করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত সংসারের সঙ্গে, কর্মক্ষেত্রে এবং সর্বত্রই পুরুষশাসিত সমাজে দেখছি, দেখে যাচ্ছি
মেয়েদের কত সম্মান আর জীবনের কত দাম ... চলতে চলতে, দেখতে দেখতে তা-ই জানলাম ।
আমি তো যুদ্ধ দেখিনি, যুদ্ধ করতে দেখছি আমার দেশের নারীদের মাঝে মাঝে মনে হয়, মেয়েরা বুঝি এ্যাকোরিয়ামের মাছ......যা স্বযতনে সাজিয়ে রাখার জন্য...রঙ-বেরঙের মাছগুলি যেমন বন্দিত্ব থেকে তাদের সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়ে বন্দিত্ব জীবন যাপনে হয় অভ্যস্ত,
তেমনি, মেয়েরাও শুধু সংসারের ঘানি টানতে এবং চার দেয়ালে বন্দি থেকে শুধু বাচ্চা কাচ্চা পালনে থাকে ন্যস্ত ।
বস্তাপঁচা সিরিয়াল দেখে নিজেকে সুখী রাখা .....তাদের স্বপ্নে রংগুলোকে হয়না আর তুলিতে আঁকা ।
অথবা ......... নীল আকাশে রঙ্গীন ঘুড়ি, যেন নাটাইটা অন্যের হাতে ছেড়ে দেয়া....নাটাইওয়ালা তার খুশি মত উড়াচ্ছে ... যেমন খুশি তাকে নাচাচ্ছে, ঘুরাচ্ছে ।
সুতো কেটে দিলে, অনিশ্চিতভাবে...এ ডালে ও ডালে অথবা পাতায় পাতায়.... আটকিয়ে নাম লিখায় নির্ভরহীনতার খাতায় ।
ঘুড়ি হয়েও পারে না তার ইচ্ছেমত ঘুরতে...স্বাধীনভাবে পারে না সে তার রঙ্গীন আকাশে উড়তে ।
শুধু যে গৃহিনীরা তা তো নয়.কর্মজীবি মেয়েদেরও স্বাধীনতা নিয়ে ভয় । দিনভর খাটুনি, সংসার, বাচ্চা সব কিছুর পরও.মাস শেষে তার হাত ফাঁকা.. তার হাতে রাখা হয় না কিছু টাকা ।
স্বামী বেচারা বেতনের টাকা নেয় হাতিয়ে..... তুই মেয়ে টাকা নিয়া করবি কি, সংসার চালাব আমি কি দিয়ে । প্রয়োজন হলে তুই চেয়ে নিবি ........ প্রয়োজন মত সবই পাবি ।
হ্যা, মেয়েরা তো টাকা কামাতে পারে , টাকা খরচ করার অধিকার তাকে হয় নি দেয়া...এভাবেই পার হবে জীবন, পাড়ি দিবে শেষ খেয়া ।
সারাদিন খাটুনির পর সংসারের ছোটখাট হয় যদি ভুল ....কথায় আর অপমানের জ্বালায় নিজেই ছিঁড়ে নিজের চুল । সবই রাখতে হবে ঠিক, টাকা কামানো সংসার দেখা ..কাক ডাকা ভোরে উঠে সারাদিনের রান্নায় মন দেয়া ।
তদুপরি বাচ্চার দেখাশুনা পড়াশুনায় যেন না থাকে কোন খুঁত । এসব কে আমি কি বলব? যুদ্ধই তো বলা চলে । ৭১ এর যুদ্ধ আমি দেখিনি । যুদ্ধ দেখছি মেয়েদের স্বাধীনতার যুদ্ধ, দেশ স্বাধীন হয়েছে আমাদের কিন্তু সমাজে পুরুষদের মনে স্বাধীনতার অর্থ দুবোর্ধ্য লাগে আমার কাছে ।
এসব কিছুরই নিরব সাক্ষী তুমি..দেখে যাচ্ছ হে আমার স্বদেশ ভুমি । অন্তরের ঘোমরে মরে বেদনা, মুখে যেন হাত চাপা...এই কষ্টের পরিমাণ যাবে না তো মাপা ।
বিদ্রোহী মনে চরম বিদ্রোহ ধারণ করে ..দেই প্রেম, ভালবাসায় অন্যের জীবন ভরে । কুয়াশার ধুম্রজাল কাটবে কি আজ অথবা কাল ? ..ধুয়ে যাবে কি? পুরুষের মনে হরণকারীতার জঞ্জাল ।
বন্দিত্ব জীবন থেকে যেতে চাই মুক্তির কোলাহলে ...নীল আকাশে ইচ্ছেমত উড়তে যে চাই দলে দলে । নীচু করতে চাইনা আমাদের স্বামী বাবা ভাইদের ..যে জায়গায় আছে সম্মানের সাথে শ্রদ্ধার সাথে রাখতে চাই তাদের ।
রাখতে চাই না তাদের থেকে বড় হবার লোভ..নারীর মুক্তির এই পয়গামই আমার আজকের বিক্ষোভ ।।
আমার বাবা করেছিলেন ৭১ এ যুদ্ধ ...বাবা বলেন মারে, যুদ্ধ করে কে দেশ পেলাম বল?
যা দেখছি যা শুনছি যা করছি .......সবকিছুতে কণ্ঠ যে হয়ে যায় রুদ্ধ । যে স্বাধীন দেশের আশা নিয়ে ..ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম হানাদারদের উপর ...সেতো আশায় হলো গুঁড়ে বালি হলো .........
দিতে পারিনি তোদেরকে একটা সুন্দর দেশ ..ধুঁকে ধুঁকে জ্বলি যেন, মনেতে জমা এই ক্লেশ । দেশ স্বাধীন করেছি, দিতে পারিনি স্বাধীনতা ...আধুনিকায়ন হয়েছে, কিন্তু পাল্টাতে পারিনি পুরানো প্রথা ।
ক্ষমা করিছ মা, তোর বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে ..সঙ্গি করে নিস তোদের নিত্য দিনের লড়ে যাওয়া যুদ্ধকে । সত্যিই আমি যুদ্ধ দেখিনি .দেখেছি ৭১এ লড়ে যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধার করুণ চাহনি....... আর তার সন্তানদের কাছে নত হওয়া ।
=============================================
অনেক বড় হয়ে গেল । কি হাবিজাবি লিখলাম...... ক্ষমাপ্রার্থী
২০ লাইনের সীমাবদ্ধতায় কবিতাটি ঠিকমত উপস্থাপন করতে পারিনি
কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
০১ মার্চ - ২০১১
গল্প/কবিতা:
১৫৮ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪