রক্তস্বাক্ষর

মুক্তিযুদ্ধ (ডিসেম্বর ২০২৫)

এস এফ শামীম হাসান
  • 0
  • 0
  • 0
আমি জন্মাইনি—আমাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে,
রক্তের বিনিময়ে, আগুনের শপথে, মৃত্যুর বুক চিরে।

আমার নাম ছিল না বাংলাদেশ,
আমার নাম ছিল অপেক্ষা, অশ্রু, দমিত ক্রোধ, গোপন আগ্নেয়গিরি।

যেদিন ভাষার রক্ত মাটিতে পড়ল,
সেদিনই সূর্যের নিচে নতুন জাতি গর্ভে নিল বিদ্রোহকে।

শোষণের শীত এসে জমাট বেঁধেছিল বুকের পাঁজরে,
ভাত ছিল কম, ক্ষোভ ছিল বেশি—এদেশ তখন আগ্নেয় মাটি।

২৫ মার্চের রাত ছিল রাত নয়—
সেটা ছিল অন্ধকারের ডানা মেলে নামা হত্যাযজ্ঞের ঈগল।

ঢাকা পুড়ল, বিশ্ববিদ্যালয় চিৎকার করল,
আর আমি—মাতৃভূমি—নিজের সন্তানের দেহে শেকল ভাঙার আগুন দেখলাম।

যুবকেরা বই ছিঁড়ে বন্দুক তুলল,
নারীরা আঁচল ছিঁড়ে ব্যান্ডেজ বানাল—দেশ তখন রক্তাক্ত মায়ের রূপ নিল।

ভয়ে ফুল একবার ঝরে যায়—
কিন্তু স্বাধীনতা নামের ফুল ঝরে না, তা ফেটে বেরিয়ে আসে আগুন হয়ে।

শরণার্থী নদী বয়ে গেল সীমান্তে—
এক কোটি প্রাণ ছাই হয়ে দাঁড়াল আকাশের নিচে, ক্ষুধার মুখে মর্যাদা আঁকড়ে।

একজন মা মৃত শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন—
কারণ মায়ের চোখে মৃত্যু নেই, আছে শুধু অসমাপ্ত অস্তিত্ব।

আমার নদী মাছের চেয়েও বেশি বহন করেছে—
বারুদ, শপথ, প্রতিশোধের গোপন অক্ষর।

গেরিলারা ছিল ছায়া নয়—
তারা ছিল বজ্রপাত, কে কোথা থেকে আঘাত করল কেউ জানত না।

“আমার সোনার বাংলা” তখন সঙ্গীত নয়—
এটি ছিল যুদ্ধের পাসওয়ার্ড, রক্তে লেখা রাষ্ট্রঘোষণা।

রাতগুলো ছিল খাঁজকাটা অন্ধকার,
ভোরগুলো ছিল দাঁত বের করে উঠা প্রতিজ্ঞা।

ডিসেম্বর এল—
যেন মৃতদেহের ওপর আছড়ে পড়া দেবদূতের ডানা।

ট্যাংকের শব্দ ঢেকে গেল—
জয় বাংলা! জয় বাংলা! জয় বাংলা!—আকাশ তখন বিদ্রোহে গর্জন করল।

১৬ ডিসেম্বর, অস্ত্র নামল, মাথা নত হলো,
আর আমি—রক্তমাখা নামহীন মাটি—হয়ে উঠলাম বাংলাদেশ।

এই নাম লেখা নয়—
এই নাম পাকাপোক্তভাবে জন্মানো, শোকগর্ভে ফাটা, রক্ত-সম্পৃক্ত।

যোদ্ধারা ফিরল, কিন্তু সবাই না—
যারা ফিরল না, তারাই পতাকার মাটির নিচে প্রথম শাশ্বত নাগরিক।

স্বাধীনতা মানে উৎসব না—
সে মানে ঋণ, যে ঋণ শোধ হয় না স্লোগানে, শোধ হয় পরবর্তী প্রজন্মের আচরণে।

আমি আজও জ্বলছি—
কারণ শহীদের মৃত্যু থামেনি, আর মুক্তির গল্প এখনো শেষ হয়নি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

রক্তস্বাক্ষর কবিতাটি ব্যক্তিগত বেদনা ও জাতীয় ইতিহাস—দুই স্তরকে একসূত্রে গেঁথে মুক্তিযুদ্ধকে নতুন ভাষায় তুলে ধরেছে। এটি শুধু একটি লড়াই নয়—একটি জাতির জন্ম, একটি যন্ত্রণা, একটি চূড়ান্ত শপথ।

৩১ মে - ২০২৫ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“ ” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ , থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী