সারাদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছে।সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি ছেড়েছে।কিন্তু যেই শুতে যাবে রানু অমনি আবার বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে।তার স্বামী কুতুব শুয়ে পড়েছে।কুপিটা নিবাতে গিয়েও নিবায় না রানু।টিনের চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ছে।ঘরের কোনে রাখা গামলাটা এনে যেখানটায় পানি পড়ছে সেখানকার মেঝেতে রেখে দেয়।টিনের চালে বৃষ্টির শব্দের সাথে আরেকটা শব্দ যোগ হয়।শুনতে বেশ ভালই লাগে রানুর। বিছানায় উঠে বসে কুতুব। -উঠলে যে--।জানতে চায় রানু্ রানুর হাতদুটো ধরে কাছে টেনে নেয় কুতুব। -কি হল?অবাক হয়ে প্রশ্ন করে রানু। -বৃষ্টি পড়ছে। -সেতো টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনেই বোঝা যাচ্ছে। -ভালো লাগছে না?জবাবের অপেক্ষায় থাকে কুতুব। কি? এই যে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। -আমাদের আবার ভাল মন্দ।চালের ফুটো দিয়ে পানি পড়ছে।ঘরের বাইরে পানি জমে গেছে।কাদা হবে। -বৃষ্টিতে ভিজবে? অবাক হয়ে প্রশ্ন করে রানু-কি হয়েছে তোমার? কি হয়েছে মানে! এই যে তুমি আবোল তাবোল বকছ।বৃষ্টিতে ভিজতে চাইছ। এটাকে আবোল তাবোল বলছ? তারপর রানুর হাতদুটো ধরে অনুনয়ের সুরে বলে-চলো না বৃষ্টিতে ভিজি। কুতুবের আচরণে হাসবে না কাঁদবে ভেবে পায়না রানু। যে লোকটিকে বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে হয় নিয়মিত আর সেই কিনা বৃষ্টিতে ভিজার বায়না ধরেছে। জোর করে হাতদুটো টেনে দরজার কাছে নিয়ে আসে কুতুব-তোমার কোন কথা শুনব না।আজ বৃষ্টিতে ভিজবই। তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?তুমি বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সা চালাও।আজও বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সা চালিয়েছ।আর সেই তুমি কিনা এখন এই রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে চাইছ। হ্যাঁ চাইছি।কারণ আমি এখন আমার বউকে কাছে পাইছি।সারাদিন রিক্সা চালাইছি।সেইজন্য বৃষ্টিতে ভিজতে হইছে।এখন আমি আমার বউকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজব দেখো বৃষ্টিতে ভিজতে কি মজা। আর বাধা দিতে পারেনা রানু।তবুও শেষবারের মত বলে,মা পাশের ঘরে শুয়ে আছে।হয়তো ঘুমায় নি এখনও।মা টের পাবে।রাগ করবে। টের পাবেনা।বলে উঠোনে এসে দাড়ায় দুজনে।বৃষ্টির পানি দুজনের শরীরকে ভিজিয়ে দিতে থাকে। খুশীতে লাফাতে থাকে কুতুব।অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে রানু।সে নিজেও অবাক হয়।বৃষ্টিতে ভিজতে আসলেই তো অনেক মজা।সেও তো অনেকসময়ই বৃষ্টিতে ভিজেছে।কাজ করতে গিয়ে ভিজতে হয়েছে।তখন তো এরকম মজা লাগেনি।এখন লাগছে।কারণ সাথে কুতুব আছে।তার প্রাণের প্রিয় স্বামী আছে।সেও খুশীতে লাফাতে থাকে। তুমি দাড়াও আমি আসছি,বলে ঘরের ভিতরে ঢোকে কুতুব।কুপিটা নিয়ে আসে।দরজার কাছে রাখে। রানুকে ধরে দরজার কাছে নিয়ে যায়।হাত ধরে বসায়। কি করছ তুমি অবাক হয়ে জানতে চায় রানু। তোমাকে দেখছি। মানে? বৃষ্টিতে ভিজলে তোমায় কেমন দেখায় তাই দেখছি। এই যা।অসভ্য। রানুর মুখ দুহাতে ধরে বলে উঠে কুতুব- এ যেন বৃষ্টির মধ্যে পূর্ণিমার চাঁদ,সেটাও আবার আমার হাতে। রানুকে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে পড়ে কুতুব।বাতাসে কুপিটা নিভে যায়। দুজনে ভিজতে থাকে বৃষ্টিতে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।