এক. সবাই একসাথে মাঠে ক্রিকেট খেলছিলাম ।জমে উঠেছিল বেশ খেলাটা ।কিন্তু সেসময় ঘটল একটা ঘটনা ।হঠাত্ করেই একটা নীল ছায়া আমাদের সবাইকে ঘিরে ধরল ।আমি ভাল করে দেখার চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না ।দু তিনবার চোখ কচলালাম ।এক রাশ নীলের ভেতর দিয়ে ঝাপসা ভাবে প্রকৃতিটাকে দেখা গেল ।হঠাত্ করেই নীল ছায়াটা চলে যেতে থাকল ।হুট করেই ।ঠিক যেমন ভাবে এসেছিল ঠিক তেমন করেই চলে যেতে থাকল ।একসময় ওটা চলে গেল ।ঠিক সূর্যটা বরাবর । আমি তন্বয় হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ।সম্বিত্ ফিরে পেলাম শিলুর চিত্কারে । ¤এই উলু কয় ? আমি দ্রুত তাকালাম চারদিক ।সত্যিই তো উলু গেল কয় ? ও তো আমার পাশে দাড়িয়ে থাকা শিলুর পাশেই ছিল । দুই উলুর বাড়ির কান্নাকাটি দু তিন সপ্তাহ পর্যন্ত চলল ।তারপর সবাই প্রায় ভুলে গেল উলুর নিখোজ হবারকাহিনী ।তবে আমাদের সাত আটজন বাদে উলুর নিখোজ হবার সঠিক খবর কেউ জানেনি।আমরা আমাদের ছোট খেলার মাঠটা রাখতে বলেছিলাম যে উলু বাড়ি ফিরে আসছিল এরপরআর কিছু আমরা জানি না । মিথ্যা কথাটা এমন ভাবে বললাম যে কেউ না বিশ্বাস করে পারল না । উলু নিখোজ হবার চার সপ্তাহ পর আমরা খেলতে এলাম মাঠে ।তুমুল খেলা হলসেদিন ।ছ সাতটা ছয় হাকালাম আমি ।নিজের প্রতিভায় নিজেই অভিভূত হয়ে গেলাম ।আবার বল শুরু করল মিতুল ।বলটা স্টেম্পের অনেকে বাইরে ।দিলাম বারি । বলটা সাত আট হাত দূরে গিয়ে পড়ল ।মিতুল ছুটল বলটা আনতে ।আর এদিকে আমরাদৌড় দিলাম রান নিতে ।তৃতীয় রান নিয়ে থামলাম ।আর থেমেই থ হয়ে গেলাম ।শুধু আমি না ।সবাই ।সবারসামনে নীলছায়াটা বলসহ মিতুল কে উড়িয়ে সূর্যের দিকে নিয়ে গেল ।এমন সময় এখান দিয়ে যাচ্ছিল মিতুলের আকবর চাচা ।আমরা গিয়ে তাকে সব খুলে বলল ।চাচা গালে হাত দিয়ে কি যেন চিন্তা করতে লাগলেন । তিন . বিরাট জেরার মুখে পড়ে গেলাম আমরা ।সেকি জেরা!সকালের দাদুর কাছে দুপুরে মামার কাছে বিকেলে কাকুর কাছে আবার রাতের বেলায় ইয়া বড় পেট অলা পুলিশের কাছে ।সারাটা দিন কাটাল আমার এই করে করেই ।এরপর আবার ধমক তো দশ বারোটা খেলাম ই। সেদিন কেন বলিস নি হে ? এ মস্ত বড় হয়ে গেছিস না?কি জাদরেল ছেলেরে পেটফুট কথা বেরোয় না । শেষমেষ ঘরকাপানো ধমকটা দিলেন পেট বড় পুলিশ টা , মিথ্যা কথার আর জায়গা পাসনা ?পোলাপান গুলা হুদ বেততমিজ ইত্যাদী ইত্যাদী...... । পুলিশ চলে যাবার পর হাফ ছেড়ে বাচলাম ওরে বাবারে মস্ত বড় একটা ফাড়া গেল । কিন্তু খাওয়ার টেবিলে খেতে গিয়ে বুঝলাম ফাড়া এখনো কাটেনি ।খেতে খেতে বাবার কড়া কড়া পুলিশের জেড়ার চেয়েও শক্ত কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হল ।বাবা হয়তো আমাকে আজ সারারাতই প্রশ্ন করতেন ।কিন্তু দেয়াল ঘড়িটা ঢঙ ঢঙ করে যখন জানান দিল রাতবারোটা তখন মা চেচিয়ে বললেন ,ওক এবার ছাড় !আজ সারটাদিন খুব কষ্টে গেছে ওর । এরপর বাবা খুব সহজ আর ছন্নছাড়া প্রশ্ন করলেন একটা ।বুঝলাম বাবা মাকে ভয় পান না এটা আমাকে বুঝাতে এই প্রশ্নটা করেছেন । চার . হঠাত্ রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল ।আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম ।এখন তো ঘুম ভাঙ্গার কথা না ।এমনিতেই আমার ঘুম বেশ গাঢ় ।তাছাড়াসারাদিনের পরিশ্রম ।ঘুম তো ভাঙ্গার কথা না । লেপের নিচ থেকে হাত টেনে বের করলাম ।হাত ঘড়িটায় রেডিয়ামের আলোয় দেখে নিলাম তিনটা বাজে প্রায় ।আমি হাতটা লেপের ভিতর ঢুকিয়ে দিলাম ।ঠিক তখনই পট করে জানালার গরাদ টা খুলে গেল ।নীল রঙের একটা আলো মত ছায়া আমার রুম প্রবেশ করল ।আমি আবেশিত হয়ে তাকিয়ে রইলাম ।ছায়াটা আমার চারদিকে ঘিরে ফেলল ।তারপর আমাকে ভাসিয়ে তুলল উপরে ।একদম উপরে ক্রমশ শুন্যের দিকে । মহাশুন্যের দিকে ।আমি নিচে আমার বাড়িটার দিকে তাকালাম ।ওটা আসতে আসতে ছোট হয়ে যাচ্ছে ।কিছুখন পর হাজারো বাড়ির ভিতর ওটাহারিয়ে গেল । উপরে চাঁদটার দিকে তাকালাম ।ওটা ক্রমশ বড় হচ্ছে ।প্রচন্ড বড় দেখা যাচ্ছে চাঁদটা ।কিছুখন আমি চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইলাম ।তারপর হঠাত্ চাঁদটাকে আর দেখতে পেলাম না ।কেমন একটা ঠান্ডা আবেশ আমাকে জড়িয়ে ধরল ।যাএই শীতের মাঝেও আরামদায়ক ।আমি ঘুম চোখে শেষ বারে মত দেখে নিলাম সামনের দিকে ।দেখলাম সূর্যটা খুব দ্রুত বড় হচ্ছে ।তারপর তলিয়ে গেলাম গভির ঘুমের ঘোরে । কতখন ঘুমালাম ঠিক আমার মনে নেই ।আমার ঘুম ভাঙল একটা মিষ্টি গানের সুরে ।অদ্ভুত মন পাগল করা সুর ।আমি তখনো মহাশূন্য দিয়ে উড়ে চলেছি ।পিছনের দিকে তাকিয়ে কে গান গাইছে দেখার চেষ্টা করলাম ।কিন্তু দূরে একটা ছোট তার আর একরাশ কালো কালো শূন্য ছাড়া আর কিছুই দেখলাম ।গানটা তখনো চলছে ।অপরিচিত কিন্তু খুব পরিচিত সুর ।এ সুর যেন আমার জন্ম জন্মান্তরের চেনা ।সুরটা ক্রমশ আমার শরিরে আরামের পরশ ভুলিয়ে যাচ্ছিল । এ গান আমাকে সব ভুলিয়ে দিচ্ছিল খনে খনে ।বার কি একটা সাদাকালো দৃশ্যপট ভেসে উঠছিল চোখের সামনে ।তারপর হারিয়ে গেল ।আমি বারবার হাতরাতে থাকি দৃশ্যগুলো পুনরায় দেখার জন্য ।এরজন্য আমি ভুলতে পারি সবকিছু ।এমন কি আমারবাসস্থান আমার পৃথীবিকেও।হঠাত্ করেই গানটা বন্ধ হয়ে গেল ।আরে ! আরে !গানটাবন্ধ করল কে ?কে করল বন্ধ?আমি প্রায় চেচিয়েই উঠলাম ।আমার মনে হচ্ছিল এই গান যদি এক মিনিটও না বাজে তবে আমি পাগল হয়ে যাব একদম বদ্ধ পাগল ।আমি ছটফট শুরু করতে লাগলাম গানটা শুনার জন্য ।এমন সময় অদৃশ্য থেকে কে যেন বলল ,ভাল লাগছে গানটা ? কে কথা বলে কে ?কাওকে তো দেখছি না ।আমি ভয়ে জমে গেলাম ।এত ভয় পেলাম যে গানের কথাও ভূলে গেল । ¤কে আপনি ? ভয়ের উপর কিছুটা সাহস ভর করে বললামআমি । ¤আমি তোমাদের বন্ধু!অদৃশ্য থেকে আবার স্বরটা । স্বরটা আমার খুব চেনাচেনা লাগল ।আবার খুব অচেনাও মনে হল ? আমি আর একটি প্রশ্ন করতে চাইলাম ঠিক সেসময় গানটা আবার বেজে উঠল ।আমার মুখের কথা মুখেই বিলিন হয়ে গেল ।ওটা আর বাইরে আসার ফুরসুত পেলনা ।গানের মাঝে আর নতুন কলি যোগ হল ।আশ্চর্য এই কলিটাগাওয়ার পর আমার প্রচন্ড ঘুম পেতে লাগল ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
খন্দকার নাহিদ হোসেন
আমার কাছে তো গল্পটা খুব ভালো লাগলো। পরিণতি দিতেই হবে তার মানে কি? গল্পকার একটা রহস্যের কথা বলতে চেয়েছে আর তা সুন্দর করেই বলতে পেরেছে। এরপর কি হল তা পাঠক ভেবে নিক না! ছোটরা কিন্তু ঠিকই ভেবে নিবে আর সেই সাথে ভয়ও পাবে। আমরা বড়রাই শুধু ভাববো পরিণতি নেই এটা কেমন গল্প?! যাইহোক, দোয়া রইলো অনেক।
sakil
জাবেদ ছেলেটা বেশ ভালো লিখে বলতেই হচ্ছে . অন্যদিকে মোবাইলের মাধমে হরর গল্পের একটা সিরিজ করেছে দেখতে পেলাম . এই গল্পটি নাটকীয় তবে গর্ব কিসের বুঝলামনা . তবে তোমার লেখার হাত অনেক ভালো . আমার দোয়া রইলো তোমার জন্য . গল্পের শেষে পাঠককে বুঝতে দিতে হবে তুমি কি বিষয়ের উপর লিখেছ সেদিকে আগামীতে খেয়াল রাখবে .
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।