আতঙ্কের সাথে বসবাস

আতঙ্ক (নভেম্বর ২০২৫)

মাহাবুব হাসান
  • 0
  • ১৭
আতঙ্ক লাগে, আতঙ্ক!
বনের হায়েনার চেয়ে বেশি সমাজের পচে যাওয়া মানুষগুলোর কারণে।
আগে অন্ধকারে ভয় লাগত; এখন আলোতেই বেশি ভয়!
একজনে মারলে খুন,
আর অনেকজনে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারলে সেটা ‘মব ভায়োলেন্স’-
মানে সাত খুন মাফ!
নিয়ম তো বলে অভিযোগের পর শুনানী;
কিন্তু রাস্তার 'নিয়ম', অভিযোগ পেলে আগে দুচার ঘা দাও,
তারপর জিজ্ঞেস করো- দোষ করেছিস কিনা বল!

আতঙ্ক লাগে খুব!
রাস্তায় চলা মানে জানটাকে হাতে নিয়ে চলা।
গরু-ছাগল চিনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া ড্রাইভার নামের যমদূত
কখন গাড়ি উঠিয়ে দেবে গায়!
না না, ওটা কিন্তু ইচ্ছাকৃত খুন না;
ওটা র‍্যাশ ড্রাইভিং- কিতাবে আছে!

মা হিসেবে সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি
শিশুসন্তান বাইরে যাওয়ার পর যতক্ষণ না ফেরে।
শ্বাপদেরও কিছু বাছবিচার আছে;
কিন্তু মানুষরূপী শ্বাপদেরা নির্বিচারে খায়!
দেহে যৌবনের ঢেউ আসার বহু আগেই
ওদের দেহের ক্ষুধার বলী হয় যারা
তারা তো যৌনতা-ই বোঝে না!
আদর করে তোমরা ওদের ডাকো- ‘পেডোফাইল’!

আর যদি শুধু আমার কথা বলি-
আমার আতঙ্কের শেষ আছে?
তোমরা শুধু জীবন বাঁচাতে তটস্থ থাকো,
আর আমাকে তটস্থ থাকতে হয় আরো কিছু নিয়ে- বিশেষ কিছু!
আজ দুচারজন ধর্ষিত হলেই তবে ফণা তুলি,
রাস্তায় নামি, তোমরা দেখো…
অথচ সেই রাস্তায় কামুক দৃষ্টিগুলো কতশতবার আমাদের ধর্ষণ করে- রোজ!
সেটা তো দেখবে না।
তারপরও দোষ কিন্তু আমাদেরই!
কেন মুখ ঢাকলাম না?
কেন কপালে টিপ পড়েছি?
কেন বাইক চালালাম?
পর্দা কি শুধুই নারীর ভূষণ?
পুরুষের কি 'চোখের পর্দা' বলে কিছু থাকতে নেই?

আচ্ছা, যারা প্রকাশ্য দিবালোকে আমাকে পর্দা নিয়ে রোজ নসিহত করে
তারাই কি আঁধারে-আবডালে আমাকে একলা পেলে
সুযোগ নিতে ছাড়বে? না তো!
তারপর দোষ দেবে আমার বেপর্দা হওয়ার,
যেন ধর্ষণের চাইতে ওইটাই বেশি দোষণীয়!

ধর্ষিত হওয়ার পরও কিন্তু আতঙ্ক পিছু ছাড়বে না!
এরপর সালিশের নামে হবে গণধর্ষণ।
দিনশেষে ক্লান্ত সমাজপতিরা আমার হাতে তুলে দেবে ‘মহাবিচার’-
ধর্ষককে দুচার থাপ্পড়, সর্বোচ্চ কিছু বেত্রাঘাত,
আর আমাকে কয়েক তাড়া নোট-
যেন আমি ধর্ষকের কাছে দেহ বেচেছি ওই টাকায়!

ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে গরুকে হাটে তোলার মতো
আদালতে তোলা হবে আমাকে।
সেখানেও কালো পোশাকধারী একজন কথা দিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করবে
একজন বিচারককে সাক্ষী রেখে!
অজস্র সাক্ষ্যপ্রমাণ আমার হাতে থাকলেও
যিনি ক্রমাগত ঢাক পিটিয়ে বলবেন, এই ‘লীলাখেলায়’ আমার ‘সম্মতি’ ছিল!
মীমাংসার নামে বিচারের কোর্ট থেকে বল ছুঁড়ে দেয়া হবে
আমার ব্যক্তিগত কোর্টে।
সবচেয়ে সহজ অপশনটা বেছে নিয়ে
অপরাধীকেই আমার জীবনে জুড়ে নিতে হবে।
যে বিনা লাইসেন্সে একবার সঙ্গমের ‘পুরস্কার’ হিসেবে
ইচ্ছামত সঙ্গমের লাইসেন্স পাবে- তাও যদি সুমতি হয়, তো!
সেটাও না হলে সংসার নামের বোঝাটা একা আমাকেই টানতে হবে জীবনভর।
আর আরেকটা ধর্ষণ যদি সে করে বসে কখনো
তো তার দায়ভারও নিতে হবে আমাকেই!
কারণ পতিদেবকে আঁচলে বেঁধে রাখতে পারি নি আমি!

আচ্ছা, নারী হয়ে জন্মানোটাই কি তাহলে এখন সবচেয়ে বড় আতঙ্কের ব্যাপার?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মেহেদী মারুফ দেশের বর্তমান বাস্তব প্রেক্ষাপট ফুটে উঠেছে আপনার কবিতার ভেতরে। মানুষ জেনে বুঝেও অবুঝ। চোখ থেকেও অন্ধ। সাধারণ মানুষ যেন বলির পাঠা। প্রতিনিয়ত আতঙ্কের ভয়ংকর ধাওয়া চারিদিকে। সুন্দর কবিতা লিখেছেন প্রিয় ভাই। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
মোঃ মোখলেছুর রহমান সমাজের পচে যাওয়া মানুষগুলোর কারনে আজ আমরা না আতঙ্কে থাকি। শুভকামনা কবির প্রতি।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

যাপিত জীবনের কিছু আতঙ্কের বিষয় নিয়ে কবিতাটি লেখা হয়েছে।

৩০ সেপ্টেম্বর - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ৪৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "মুক্তিযুদ্ধ”
কবিতার বিষয় "মুক্তিযুদ্ধ”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৫