স্বপ্নলোকে, এক অপার্থিব বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। এই দেশে গাছেরা কথা বলে, নদী গান গায়, আর মানবতা সবার ধর্ম। এখানে কোনো দমন নেই, কোনো জুলুম নেই — কিন্তু এই স্বপ্নলোকে পৌঁছাতে অনেক রক্ত ঝরাতে হয়েছে, অনেক আত্মা পাড়ি দিয়েছে জীবন থেকে মৃত্যুর ওপারে।
আজ সেই স্বপ্নলোকের আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণ, নাম তার জলিল। তাকে সবাই চিনে একটি বাক্যে — “পানি লাগবে, পানি।”
২০২৪ সালে পৃথিবীর ছোট একটি দেশ- বাংলাদেশের স্বৈরাচারী শাসক আর তার লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনী মানুষকে নিঃশেষ করার পণ করেছিল। শহরের রাজপথে যখন লাখো মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলেছিল, তখন জলিল এক বোতল পানি হাতে ছুটে বেড়াচ্ছিল আহতদের মাঝে। কারো চোখে গ্যাসের জ্বালা, কারো পায়ে গুলির ছোঁয়া, কেউ পড়ে আছে নিস্তেজ।
জলিল ছুটে গিয়ে বলত,
— “পানি লাগবে, পানি।”
কারো ঠোঁটে পানি ছোঁয়াতেই যেন তারা একটু বেঁচে উঠত। তৃষ্ণার মাঝে এই সামান্য পানি যেন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সে জানত না কাকে কাকে বাঁচাতে পারবে, জানত না তার পরিণতি কী হবে।
তবুও ছুটছিল।
হঠাৎই পুলিশ একে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মানুষের জন্য ছুটে চলা জলিল মুহূর্তেই পড়ে যায় রক্তাক্ত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মাটিতে পড়েও তার ঠোঁট থেকে শেষ শব্দটি ফসকে বলে যায়:
— “পানি…”
তার মৃত্যুতে আন্দোলন থেমে যায়নি। বরং সেই একটি শব্দ, সেই একটি তৃষ্ণা— মানবতার তৃষ্ণা, হয়ে ওঠে হাজারো কণ্ঠের স্লোগান।
এবং তখনই, স্বপ্নলোকে তার জন্য দরজা খুলে যায়।
স্বপ্নলোকের বাংলাদেশ
জলিল চোখ খুলে দেখে সে এক অপরূপ দেশে এসে পৌঁছেছে। নদীগুলো সেখানে রূপালি, শিশুরা হাসে ফুলের মতো, বৃদ্ধরাও তরুণের মতো চঞ্চল। এখানে কেউ কাউকে মারে না, কারো কণ্ঠরোধ হয় না। এক বিশাল বটগাছের নিচে শত শত মানুষ অপেক্ষা করছে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে।
তারা বলে,
— “তুমি সেই জলিল, যে গুলি খেয়েও মানুষের জন্য পানি পৌঁছে দিতে চেয়েছিলে। স্বাগতম, তোমার স্বপ্নের বাংলাদেশে।”
স্বপ্নলোকে জলিল এখন এক জলচিকিৎসক। তার ছোঁয়ায় বিষাক্ত নদীও আবার বিশুদ্ধ হয়। সে শিশুদের শেখায় কীভাবে দয়াকে নিজের অস্ত্র বানাতে হয়, কীভাবে ভালোবাসা দিয়ে শাসনকে জবাব দিতে হয়।
তার মুখে আজও একই কথা, তবে এক নতুন অর্থে:
— “পানি লাগবে, ভালোবাসার পানি… স্বাধীনতার পানি… মানবতার পানি…”
আর সেই স্বপ্নলোকে, এক কোণে বসে থাকা একটি নদী হাসে — কারণ জানে, এ জলিলেরা কখনও মরে না।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
জলিল ছুটে গিয়ে বলত,
— “পানি লাগবে, পানি।”
কারো ঠোঁটে পানি ছোঁয়াতেই যেন তারা একটু বেঁচে উঠত। তৃষ্ণার মাঝে এই সামান্য পানি যেন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সে জানত না কাকে কাকে বাঁচাতে পারবে, জানত না তার পরিণতি কী হবে।
তবুও ছুটছিল।
হঠাৎই পুলিশ একে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মানুষের জন্য ছুটে চলা জলিল মুহূর্তেই পড়ে যায় রক্তাক্ত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মাটিতে পড়েও তার ঠোঁট থেকে শেষ শব্দটি ফসকে বলে যায়:
— “পানি…”
২২ জুলাই - ২০২৩
গল্প/কবিতা:
২৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুন,২০২৫