বাইরে যেন যেও না নীর, এই বৃষ্টির পানি মাথায় পড়লে ঠান্ডা জ্বর। কে শোনে কার কথা, মার কথা শুনতে শনতেই বেরিয়ে পরে নীর। এক দৌড়ে একেবারে মনুদের বাড়ী চলে গেছে। কিরে মনু, তুই এখনো ভিতরে। দেখ কতো বৃষ্টি। আয় তাড়াতাড়ি। মনু আর নীর মিলে পাড়ার বাকি ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে আসে। ঝুম বৃষ্টি কাঁদামাটিতে লাফালাফি করে ভিজছে আর সবাই একসাথে হাত ধরে গোল হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে নেচে নেচে গাইছে-
"আয় বৃষ্টি ঝেঁপে,
ধান দিবো মেপে"
হঠাৎ গান থামিয়ে নীর বলল এই শোন বৃষ্টিতে এখন বড়বাড়ির পুকুরে কেও থাকবে না। অনেক মজা হবে চল সবাই। যেমন কথা তেমন কাজ। সবাই মিলে বড়বাড়ির পুকুরে, সিঁড়ি বাঁধা পুকুর সাথে বৃষ্টির কারনে পুকুরের মাছগুলো উপরে উঠে আসছে। মনে হচ্ছে আজ ওদের ও বাঁধ ভাঙা খুশি। সবাই পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে এপার থেকে ওপার যাচ্ছে। পানিতে দম দিয়ে খেলছে কে কতক্ষণ দম দিয়ে থাকতে পারে।
নীর বলল, সবাই শোন আমরা এখন চোখ বন্ধ করে ১ মিনিট আকাশের দিকে মুখ করে রাখব। এটা ওদের নিয়মিত খেলা বৃষ্টি হলেই নীর এমন করে, পানিতে গা ডুবিয়ে চোখ বন্ধ করে আকাশে তাকিয়ে নিজেকে বৃষ্টির কাছে সপে দেয় সারা শরীর তখন কাঁটা দিয়ে ওঠে। এই কাজটা নীরের সাথে বাকি সবাই উপভোগ করে সে যে কি একটা অনুভূতি!
ঠিক কত সময় হল ওরা ভিজছে কারো মাথায় নেই হঠাৎ দুপুরের আযানের শব্দে ওদের মনে পরে বাড়ি যেতে হবে, না হলে মা বকা দিবে। সবাই দ্রুত উঠে পরে তবে তার আগে সবাই মিলে একটা আলোচনা করে দুপুরের খাওয়ার পর তারা নীরদের বাসায় যাবে লুডু খেলার জন্য কারন আজকে বৃষ্টির দিন এইভাবে তো আর শেষ করা যাবে না।
বাড়িতে গিয়েই ঝোল সবজির সাথে ঘি উফফ সে কি সুস্বাদু! বলে বোঝানো যাবে না। খাওয়া দাওয়া শেষে মা বলল নীর এখন আর কোথাও যাবে না বৃষ্টি হচ্ছে সুন্দর করে কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়। সে কথা শুনলে কি আর নীরদের চলবে? তাদের তো অন্য প্লান আছে।
কিছুক্ষণ পরেই মা ঘুমিয়ে পরছে কিন্তু নীরের ঘুম আসছে না, সে চুপটি করে কাঁথার বিতর থেকে বেরিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে চলে গেলো মনুদের বাড়ি। মনুদের বাড়ি গিয়ে দেখে মনু সরিষার তেল, কাঁচা মরিচ আর পেঁয়াজ দিয়ে চালভাজা মেখে বসে আছে, সাথে হেলা আসছে কাঁঠালের বিচি ভেজে নিয়। আর কি চাই, তাড়াতাড়ি লুডু বের করে শুরু হয়ে গেলো গল্প আড্ডা আর খেলা। গল্পের কোন আগা মাথা নেই কি গল্প যে করছে আর সবাই হো হো করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এদিকে নীর যে লুডুর কাঁটা গুটি ঘরে না রেখে একেবারে উঠাই দিচ্ছে সেই দিকে কারো খেয়ালই নাই।
ভাবতে ভাবতে মনের অজান্তে হাসছে নীর, হঠাৎ পেছন থেকে কারো ডাকে ঘোর কাটলো। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে অফিসের ঠান্ডা ঘরে বসে আজ আনমনে হঠাৎ ছোটবেলাতে ফিরে গিয়েছিলাম। আচ্ছা, এখনকার বাচ্চারাও কি এমন করে মজা করে, নাকি ভারি ভারি বই নিয়ে এই বৃষ্টিতে পড়তে বসে নাকি মোবাইল হাতে নিয়ে ভিডিও গেম খেলে। জানিনা, আবার কখনো কোনদিন সেই ছেলেবেলায় যেতে পারব কিনা তবে বৃষ্টির দিনের সেই স্মৃতিগুলো হয়তো মন থেকে মুছে যাবে না কখনো কোনদিন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী
অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি করে সাজানো লেখাটি।ভীষণ মুগ্ধ হলাম পাঠে।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
সেই ছোটবেলার বৃষ্টির দিন
২৪ জুন - ২০২৩
গল্প/কবিতা:
১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।