ট্রেনে উঠেই শাওন সিট ফাঁকা পেয়ে ও বসলো না। মনে হয় কাউকে খুঁজছে এক বগি হতে আরেক বগি। একটা বগিতে বোরকা পরিহিত দু' জন নারীকে দেখলো ও আশেপাশে ছিট আছে কিনা এক নজরে দেখে নিয়ে অন্য বগিতে চলে গেলো। মহিলার সামনেই ছিট ফাঁকা আছে কিন্তু শাওন অন্য বগিতে যেয়ে পরের স্টেশনের অপেক্ষা করছে,কেননা চলন্ত ট্রেনে বসলে লোকে বলবে মেয়ে দেখে বসে পড়লো।শাওন সান্তাহার জংশন হতে রাজশাহী যায় ট্রেনে করে। রাজশাহী পলিটেকনিক থেকে ইলেক্ট্রিক এর ওপর ডিপ্লোমা করতেছে। সবে দ্বিতীয় বছর চলছে তার । এই দুই বছর ধরে ট্রেনে যাতায়াত করলেও আজ অন্য রকম লাগছে তার। ট্রেন পরের স্টেশনে থামা মাত্রই সে সবার আগে এসে ওই মহিলা দুইজনের সামনের ছিটে বসে পড়লো, ভাবখানা এমন যে মাত্র এই প্লাটফর্ম হতে উঠে এলো।
দেখে মনে হলো একজন বয়স্ক ও অন্যজন অল্পবয়সী নারী হবে। দুইজনের ই বোরকা পড়া নেকাব অবস্থায় শুধু চোখ দুটা দেখা যাচ্ছে। অনেক ক্ষণ ধরে মেয়েটিকে আকর্ষণ করাতে চাচ্ছে যে তাকে একটা কাগজ দিবে শাওন।কিন্তু পাশের জনকে মা ভেবে কিছু বলছেনা। দুই জনের চোখে চোখ হতে চোখ সরিয়ে নিতে নিতে, মেয়েটিও ক্লান্ত। মেয়েটি বুঝলো ছেলেটি তার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে। এমন করতে করতে ট্রেন নাটোরে এসে পড়েছে, মহিলা দুইজন নেমে যাওয়ার জন্য দরজার দিকে যাচ্ছে। ভীর ঠেলে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে এরই ফাঁকে সাদা কাগজে শাওন নাম্বার লিখে পিছনে যেতে থাকে মনে হয় সেও এই স্টেশনে নামবে। পিছন হতে অল্প বয়স্ক মেয়েটির কুনুই ধরে টান দিয়ে হাতে কাগজ গুজে দিয়ে কানে কানে বলে কথা আছে।
শাওন রাজশাহী চলে গেলো আর ট্রেনের ঘটনা সে প্রায় ই ভুলে গেলো। অচেনা একজনকে নাম্বার দিয়েছে সে কি আর কল দিবে! এই ভেবে সে এসব একবারে ভুলে গেলো। হঠাৎ এক সপ্তাহ পড়ে একটা কল আসলো, রিসিভ করতেই ও পার হতে নারী কন্ঠ। ট্রেনে যাকে নাম্বার দিয়েছিলেন সেই , ও ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ। এই যে শুরু হলো কথা প্রণয় পর্যন্ত গড়ালো। মেয়েটি ক্লাস সেভেনের ছাত্রী। বাবা নাটোর সুগার মিলের বড় কর্মকর্তা। দুই বোন, সেই বড়। মেয়েটির প্রথম যৌবনের ভালো লাগা, ভালোবাসা, জীবনের প্রথম প্রেম সবসময় শিশুর মতো নিস্পাপ ও সত্য হয়। মেয়েটি শাওন কে দেহ - মন উজার করে ভালোবাসতে থাকে। মেয়েদের একটা বয়সে সব বোঝে যখন, তখন আর ছোট থাকে না। বিয়ের পরে কি করতে হয় বাসর ঘরে সব জানা থাকে তখন। শাওন ধীরে ধীরে যৌবনের ঝড়ের সাথে মেয়েটিকে পরিচয় করাতে থাকে । প্রথম যৌবনের প্রেম তাই মেয়েটিও তাকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে। দুইজনে ডেট করবে। মেয়েটি স্কুলের কথা বলে বাড়ি হতে বাহির হয় আর শাওন চলে আসে নাটোরে। নাটোরে নেমে রিক্সা নিতে হবে কিন্তু যেখানে যাবে সেখানে রিক্সা যেতে চায়না। কিছু দূর হেঁটে একটা রিক্সা পেলো তবে ভাড়া বেশি।ওখানে রিক্সা নিয়ে গেলে যাত্রী পাওয়া যায় না, তাই ওই দিকে নাকি রিক্সা কম পাওয়া যায়। হঠাৎ পিছন হতে এক মহিলা রিক্সা কে থামতে বলে। মহিলা কিছুটা জোরে হাঁটতে থাকে। বলে ওই দিকে আমাকেও নিয়ে যায়, আমি রিক্সা পাচ্ছিনা। রিক্সা ওয়ালা না করলেও শাওন বলে চলেন আন্টি৷ বেশ মধ্যবয়স্কা নারী তবে স্লিম। সাদা রঙের শাড়ি পরেছেন। সুন্দরী ও কথাবার্তায় বেশ স্মার্ট মনে হলো শাওনের কাছে। চলতে চলতেই দুই জনে বেশ আড্ডা হলো। কেনো রাজশাহী হতে নাটোরে তুমি বাবা? শাওন বিস্তারিত বলে প্রথম ডেট তার। মহিলা মুচকি হেসে দিলো। বলল এখন ত দুপুরের দিকে কই বসে কথা বলবে, এরচেয়ে বরং কিছু মনে না করলে যদি জায়গা না পাও তবে আমার বাসায় একা থাকি আসতে পারো। ওকে আন্টি ধন্যবাদ বলে আন্টিকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে রিক্সা নিয়ে মেয়েটির কাছে গেলো। দেরি না করে প্রথম দেখাতেই মেয়েটি বলল এইখানে তার পরিচিত কেহ থাকতে পারে অন্য কোথাও যাই। শাওন মেয়েকে বলে এক আন্টির বাসায় যাবে? মেয়েটি বলে তাড়াতাড়ি করেন কেহ দেখে ফেললে বাবার কানে যাবে।
কাছেই সেই আন্টির বাসা। আন্টি দেখে বলে অহ তোমারা আসছো । বসতে দিয়ে বিস্কুট পানি দিয়ে গেলেন আর বললেন কিছু লাগলে বলবে কিন্তু।
কিসের নাস্তা দুইজন দুইজনকে জড়ায়ে ধরলো।চোখে পানি, প্রেম আজ সামনে দাঁড়িয়ে। আন্টি চা নিয়ে আসেন, দুই জনে একে অপরকে ছেড়ে আলাদা দাড়ালো। আন্টি বললো সমস্যা নেই কেহ কিছু বলবে না, যাওয়ার সময় দরজাটা চাপিয়ে দিলেন।
শাওনের তর সইছেনা আর। ঠোঁট দুটা চুষতে চুষতে দুইজনে বসে পড়লো খাটে। দামাল প্রেম ভিতরে খেলছে। মেয়েটি চোখ বুঝে সায় দিলো। আস্তে আস্তে সদ্য ওঠা স্তনে চাপ দিতে দিতে ঠোটের চুম্বন গভীর করে। মেয়েটির কাছে আজ অন্যঅনুভূতি যা জীবনে সে ভুলতে চাইবেনা। নীচে খুলতে যেয়ে আর খুলনা শাওন,প্রথম দেখায় এতো কিছু করলে যদি ভয় পায়।তাই সে সময় দিলো। দুইজন যার যার গন্তব্যে চলে গেলো। এরপর আবার ডেট হয় তাদের সেটা রিক্সাতে। উপরের হাতের কাজ গুলো সেরে নেওয়া যায় আর কিছু নয়।
একদিন বিকেলে দেখা করতে যেয়ে রাস্তা ভুলে যায় শাওন। নাটোর সুগার মিলের ভিতরে মেয়েদের ফ্যামিলি কোয়ার্টার। শাওন ঘুরতে ঘুরতে ওদের বাসার দিকে আসে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে রাস্তা ভুলে গেছে। তিনজন মহিলা সামনে দাড়িয়ে আছে। মোবাইলের ছোট লাইট জালিয়ে এক ভদ্র মহিলা বলেন তুমি কি ট্রেনের সেই ছেলেটি। পরিচয় হলো, মেয়ের সাথে যে আরেক জন ছিলো সেটা আমি,ওর খালা। যেখানে সেখানে দেখা নয়,দেখতে ইচ্ছে হলে বাসায় আসবে। যাও বাসায় যাও, নাস্তা করে যাবে।
বেশ আধুনিক ফ্যামিলি। যদি কিছু করে এই ভয়ে শাওন কেটস না খুলেই ঢুকে পড়ে। রেডিমেড খাবার (চানাচুর -বিস্কুট) ছাড়া অন্য কিছু খাচ্ছেনা। যদি অজ্ঞান করে এই ভয়ে।
হঠাত এক খেয়ালি পনায় মেয়েটির বাবা সব জানতে পারে। মেয়েটি সাত ভরি স্বর্ণ ও তার বাবার পেনশনের ত্রিশ লাখ টাকা নিয়ে প্লাটফর্মে অপেক্ষা করে, শাওন আসেনা। বুঝায়ে বাড়ি পাঠায়ে দেয়,এটা আবেগ ছাড়া যে কিছুই নয়।মেয়ের বাবা কল দিয়ে বলেন পছন্দ যখন করো দুইজনে তখন বিয়ে করে ফেলো। শিক্ষার্থী এখানো , এই অযুহাত দেখিয়ে শাওন না করে। ওপার হতে প্রশ্ন আসে কত টাকা পণ চাও।পরে মেয়েটি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে মরার মত হয়ে যায়। হাসপাতালে ও বলে শাওন শাওন। ডাক্তার বলেন বড় মানসিক চাপ রেস্ট নিতে হবে প্রচুর।
মেয়ের বাবা আর শাওন কে বলেনা মেয়েটিকে বিয়ে করে নাও। ওর অবস্থা ভালো না। মেয়ের জন্য বাবা কত নির্লজ্জ হয়ে ভিক্ষা চায়,কিন্তু শাওনের মায়া হয় না। সে একটা ফুলে বসে মধু খেয়ে অন্য ফুলে উড়ে বসে।
শাওন প্রথম জানতে পারে পণ মানে যৌতুক।
আর সেটা সরাসরি মেয়ের বাবা বলেন।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
জীবনের শুরু ভালোবাসায়, পরে কি হবে কেহ জানেনা।
০১ জুলাই - ২০২২
গল্প/কবিতা:
১৩ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪