আশা ভরসায় জীবন

প্রত্যাশা (আগষ্ট ২০২২)

মামুন ইকবাল
  • 0
  • ৪৩
মানব মানবীর হৃদয়ে-
চিরকাল জিঘাংসা রয়,
কেউ কোনদিন তার প্রতি উত্তর পাই নয়।
মহিয়ান গরিয়ান 'রব' যখন একাকী ছিলেন,
অকল্পনীয় অবর্ণনীয়-
অসীম শূন্যতা তখন কি 'রবের নূরের' প্রভায় দেদীপ্যমান ছিল-?
না-কি বিরাজমান করছিল-
নিস্তব্ধ, গম্ভীর নীরবতা-
নিকষ অন্ধকার, অসীম শূন্যতা।
কোন সৃষ্টি নেই আছেন শুধু সর্বত্র- বিরাজমান
'নুরের বর্তিকা' মহান স্রষ্টা।
স্রষ্টা (রব) যখন নিজেরে-
প্রকাশ করিতে প্রত্যাশা করিলেন,
সর্বপ্রথম 'নুরে মোহাম্মদীকে' সৃজন করিলেন।

এই নূরকে বারংবার বিভক্ত করে,
সমগ্র মাখলুক সৃষ্টি করিলেন ছয়দিন ধরে। (তথ্য)
{সূরা আল-সেজদা। আয়াত: ৪}
ফেরেশতা জিন ইনসান সৃষ্টির মাঝে মহান,
নিজের 'রব' বলে তৌহিদের-
বাণীতে করিলেন আহবান।
লক্ষ লক্ষ নবী-রাসূল পাঠাইলেন,
তাদের সাথে তাওরাত, ইঞ্জিল, যাবুর, কুরআন।
আসমানী কিতাব সহীফা দিলেন,
অন্য কোন উদ্দেশ্যে জিন-ইনসান সৃষ্টি করেন নাই,
'রব' চেয়েছিলেন তার ইবাদত বন্দেগি করে-
জিন-ইনসান তার 'আশিকে-এলাহী-'
মাহবুব বান্দা হয়ে যায়।

লক্ষ লক্ষ নবী রাসুল পৃথিবীতে এলেন,
কলেমার দাওয়াত দিয়ে বিধি-বিধান শিক্ষা দিলেন।
জিন-ইনসান দের দীকবিভ্রান্ত পথে
আধারের মাঝে দেননি ছেড়ে,
সমগ্র সৃষ্টির মাঝে তার সুনিপন দিক নির্দেশনা-
ও রহমত আছে ঘিরে।

মহান স্রষ্টার প্রত্যাশা ছিল একটাই,
জিন-ইনসান তার ইবাদত বন্দেগি করে-
জাহান্নামের আগুন থেকে সে যেন নিজেরে বাঁচায়।
আশেকের ত্বরে অফুরন্ত নিয়ামত-
সাজিয়ে রেখেছেন জান্নাতের বাগিচায়।

অফুরন্ত নিয়ামতের ভান্ডার জান্নাত থাকে আশায়,
আল্লাহর মাহবুব মুমিন বান্দারা
কখন আসবে বালাখানায়।
তেমনি জাহান্নামও থাকে প্রত্যাশায়,
কখন আসবে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ-
পাপী বান্দারা হাবিয়ায়।

মক্কার মরুর বুকে আখেরী পয়গম্বর পাঠাইলেন,
শত বাধা-বিপত্তি দুঃখ কষ্ট সহ্য করেও অন্ধকার, জাহিলিয়াতের আরবে ইসলামের আলো জালিলেন-
সুদূর প্রসারী কল্যাণে আশায়,
চির জাহান্নামিরা যেন দ্বীনের-
আলো পেয়ে জান্নাতি হয়।

জিহাদের ময়দানে সাহাবারা দিয়েছেন প্রান,
ঝিকমিক করে উঠেছে তাদের শানিত কৃপাণ।
ইসলামের দ্বীনের জন্য কুরবান হয়ে যায়,
চির সৌভাগ্যবান হতে শাহাদাৎ আশায়।

মুসলিম নামাজ রোজা হজ যাকাত কায়েম করে যাই,
মোয়াজ্জিন মসজিদে আজান দিতে যাই,
সুদূরপ্রসারী পারলৌকিক অফুরন্ত সুখের আশায়,
যেতে যেন সে পারে আল্লাহর-
রহমতের জান্নাতের বালাখানায়।

পরাধীন রাজ্যের মানব সকল-
গোলামীর দাসত্ব থেকে মুক্তি চাই,
মুক্তিযোদ্ধা সেনারা যুদ্ধ করেছিল-
স্বাধীনতার আশায়।
বাংলার জমিন ভেসেছিল
৩০ লক্ষ নর-নারীর রক্তের বন্যায়।

তামাম পৃথিবী ধরে হাজার কোটি নর-নারী মিলে,
অবিশ্রানতো পরিশ্রম করে তিলে তিলে।
বাঁচার মতো বাঁচতে চাই,
সুখ পাখিটারে ধরতে চাই
শুধু এই প্রত্যাশায়।

দুঃখ কষ্ট করে মাতা পিতা সন্তানের-
মানুষ করিয়া যায়,
ভবিষ্যতে একটু সুখের প্রত্যাশায়।
পিতা মাতার যেমন বট বৃক্ষসরুপ
সন্তান জন্য এমনই হয়-
বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেই আশ্রয়।

প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরের পাওয়ার ইচ্ছায়,
ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ভুলে ছুটে আসে মিলনের আশায়,
পারিবারিক সামাজিক বাধা পেলে কেঁদে বুক ভাষায়।
বিরহ বেদনা অন্তর জ্বালায় একদিন-
আত্মঘাতী হয়ে পৃথিবী থেকে চলে যায়।

যুবতী নারী তার প্রবাসী স্বামীর আশায়,
একাকী ঘরে বিনিদ্র রজনী কাটাই।
কবে আসবে ফিরে কোন সে শুভক্ষণে,
মধুর মিলন কবে হবে দিনগুলি যায় আশা ভরসায়।

নদ-নদী মরু -সাগর- পাহাড়-পর্বত-ঝর্ণাধারা,
স্রষ্টার অপরূপ সৃষ্টি 'রহমত' দ্বারা,
অচেনা অজানাকে দেখার প্রত্যাশায়,
দর্শন করে মানবের আত্মার তৃপ্তি মিটাই।

শ্রমিকেরা কাজ করে খনিতে,
পাহাড়-পর্বতে নদী সাগরে,
কত শ্রমিক অকালে জীবন হারায়,
ইন্দ্রনীলা, হীরা, পান্না, ওপাল-
রত্ন পাথরের আশায়।

ভিখারি ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বেড়ায়,
ক্ষুধার্ত পেটে অন্ন দেবার আশায়।
অনাহারী সে প্রায়ই না খেয়ে থাকে,
ঘুরে চলে শুধু পথের বাঁকে বাঁকে।

রুক্ষ` শুষ্ক` তপ্ত` রৌদ্র` দগ্ধ` পৃথিবী রয় প্রত্যাশায়,
মেঘের স্বচ্ছ বারিধারা তার কখন ভিজায়।
বৃক্ষাদি তীর্ণলতা ঘাস ফুল ফল,
অনাবিল মেঘের বারিধারায় হয় পরিমল।

দুরন্তঝড়ে উড়ন্ত বলাকা পথ হারায়,
অবিরত সে ডেকে যায়।
সাথীরে তার ফেলেছে হারায়,
তারি ফিরে পাওয়ার আশায়।

বহুদিন ধরে চাতক পাখি- আকাশের পানে-
চেয়ে থাকে আশায় আশায়,
কখন মেঘ থেকে বৃষ্টি হবে-
সেই বৃষ্টির পানিতে যে তার কন্ঠের পিপাসা মিটাই।

পুষ্প কাননে মৌমাছিরা ছুটে যায়,
পুষ্পরেনূ থেকে মধু আহরণের আশায়।
নীল ভ্রমরা গুনগুন করে গান গায়,
সাথীরে নিয়ে নীড় বাধার আশায়।

যে জীবনের মাঝে আশার প্রদীপ জ্বলে না
তিলে তিলে সে ক্ষয়ে যায়‌-
স্বপ্নের রঙিন প্রজাপতি ডানা মেলে না।
আশা প্রত্যাশার মাঝে বেঁচে থাকে-
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রাণীকুল
নির্বাক, অচল, নিস্তব্ধ, মূঢ় আশাহীন প্রাণ-
হারায়‌ একূল ওকূল।

মানবের প্রত্যাশা অফুরন্ত,
আশা ভরসা মিটে গেলেও সে হইনা শান্ত।
আশা ভরসার রথ ছুটে চলে অবিরাম-
জীবন ধরে শুধু সংগ্রাম,
তার নেই কোন বিশ্রাম।

এভাবেই জীবন তরী বয়ে চলে যায়,
সহসা মৃত্যু দূত হাজির হয়।
পড়ে রয় তোমার সুখের নীড়,
স্বজনরা আখেরী দর্শনের ত্বরে করে ভীড়,
ধরণীতে রয়ে যায় তোমার-
ফুলে ফলে সাজানো বাগান।
একদিন ধরাধাম থেকে তুমি-
হয়ে যাও চিরতরে মহাপ্রস্তান।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জয় শর্মা (আকিঞ্চন) জন্মমৃত্যু "আমৃত্যু" ভালো লাগা রইলো।
ফয়জুল মহী ভীষণ ভালো লাগলো লেখাটি । মুগ্ধ হলাম পাঠে পড়ে ।

১১ এপ্রিল - ২০২২ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪