অন্তিম উপলব্ধি

উপলব্ধি (এপ্রিল ২০২২)

সজল কুমার মাইতি
  • 0
  • ৪২
শোনা যায় রসিক লাল নাকি পড়াশোনায় সাংঘাতিক রকমের দড় ছিল, শেষের দিক থেকে সব সময় প্রথম l অথচ ধরা করার ব্যাপারে সব সময়ই কিন্তু প্রথমের দিক থেকে প্রথম l নিন্দুকরা বলে বেড়াচ্ছে রসিক নিজে শুধু সর্বদা রসে লিপ্ত থাকে তা নয়, অন্যকে এই রস দানে কোন কার্পণ্য নেই তার। তবে এই অন্যরা তারাই যারা রসিক এর উন্নতি তে কাজে লাগবে l রসিক ছাত্র বেলা থেকেই রস প্রেমিক, এই প্রেমের ঠেলায় রাস্তা ঘাট থেকে তুলে বন্ধু বান্ধবরা অনেক বারই ধরাধরি করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেছে তাকে l স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে গিয়ে ও রসিকের রসাস্বাদন সমানে চলেছে, সুরা ও বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সতীর্থ ছাত্রীদের কারুর কারুর কাছে প্রেম নিবেদন করে চড় থাপ্পড় ও কপালে নেহাত কম জোটে নি l অদম্য রসিক এর জন্য তার সুরা প্রেমে কোন খামতি দেয় নি l রসিকের কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার গল্পেও রসের কোন কমতি নেই l শোনা যায় একবার রসিক লাল রস ভর্তি আভরন মন্ডিত বোতল সামগ্রী (সুরা) পর্যাপ্ত পরিমাণে তার পরীক্ষকদের কাছে সঠিক সময়ে পৌঁছে দিয়েছিল l অবশ্যই রসিক তার বিশেষ গুণের কার্যকারিতার সুনিপুণ ও সফল প্রয়োগ কোরে এ জিনিস সম্ভব করে তুলেছে l তারপরের বিষয় তো মার্ক্সশীট এ ' ফলেন পরিচিয়তে' l

তালেবর রসিক লালের সুপ্ত ইচ্ছে প্রশাসক হওয়ার l সর্বভারতীয় পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতির জন্য কঠোর পরিশ্রমের ফাঁকে ফাঁকে রসিকের সুরালাপে কোন ত্রুটি ছিল না l রসিকের সুরা প্রয়োগ নীতির সুদক্ষ রূপায়ণের ফল স্বরূপ রসিকের প্রশাসক হিসেবে রাজ্য প্রশাসনে আবির্ভাব l সুরারসিক রসিক লাল প্রশাসনের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে ও রাজনৈতিক প্রশাসকদের নজরে আসতে ব্যর্থ হয়েছে l এই ব্যাপারে তার সুরা প্রয়োগ নীতি হয়তো তাকে আশানুরুপ ফল এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে l কুচ পরোয়া নেই l সুরাবাদী রসিক তার জীবন উচ্চাশা থেকে কখনো বিচ্যুত হয় নি l শুধু সময়ের অপেক্ষা l অপেক্ষার ফল বরাবরই মিষ্টি হয় l তাই হল, মেঘ না চাইতে জল l সুরাবাদী রসিক আজ সর্বোচ্চ রাজ্য প্রশাসক l শোনা যায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সুরালাপি আত্মীয়দের কল্যাণে এই পদ প্রাপ্তি l কেউ কেউ ওই আত্মীয়দের সঙ্গে রসিক লালকে বসে একসঙ্গে সুরাপানের আসরে সপরিবারে দেখার সৌভাগ্যলাভ করেছে l 'সুরায় বসতে লক্ষ্মী' l সহকর্মীরা আবার জনান্তিকে বলাবলি করে যে কোন অনুষ্ঠানে রসিককে আমন্ত্রন করলে রসরাজ রসিক আগেভাগেই জেনে নেন সুরার বন্দোবস্ত আছে কিনা, সুরার সুবন্দোবস্তের ব্যাপারে নিশ্চিত না হলে সুরসিক রসিক লাল তৎক্ষণাৎ তার অপারগতা জানাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না l
মর্দন শিল্পী রসিক হল আদতে HMV (His Master's Voice) l রসিকের মূর্খতা বিষয়ে যত কম বলা যায় ততই ভাল l একবার তো কোন এক 'মিট দ্য প্রেস' এ বলতে গিয়ে প্যান্ডেমিক ও এপিডেমিকের মধ্যে গন্ডগোল পাকিয়ে ফেলে জনমানসে নিজের পুরনো পরিচয়টা আবার ও পাকা করে নেয় l হাঁ এই রকম বোকা বোকা ভুল করাটা রসিক লালের পক্ষেই সম্ভব l

রসিক একদিন রাজনৈতিক প্রভুর কাছ থেকে নোট নিচ্ছিলেন, বাংলা ঠিক না বুঝতে পারার জন্য নাকি প্রচন্ড ধমকও চাটির বাড়ি খেতে হয়েছিল l রসিক জানে পেটে খেলে পিঠে সয় l না হলে কি এই পদে আজ বসতে পারে! প্রভুর অনুপস্থিতিতে রসিকের ওপর দায়িত্ব যখন বর্তায় কোন প্রেস কনফারেন্স সামলানোর, তখন তো তার ভূমিকা হল 'বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়' l রসিককে দেখলে মনে হতো প্রশাসক নয় রাজনৈতিক নেতা তথ্য পরিবেশন করছেন l প্রভুভক্ত রসিক প্রভুর প্রভাবে কখনও কখনও দাদাগিরি করে ও বসে l হায় কপাল !

রসিক একদিন অফিসের প্রচণ্ড কাজের চাপের পর বাড়ি ফিরে রসসামগ্রী নিয়ে একটু মৌতাতের আনন্দে বুঁদ হয়ে আছে l রসসিক্ত রসিক মাত্রাধিক রসের প্রভাবে আত্মস্থিতি বিস্মরন ঘটেছে এমন অবস্থায় প্রভুর ফোন l রাজ্যের কোথাও অকস্মাৎ কোন কিছু সাংঘাতিক ব্যাপার ঘটেছে সেজন্য তাৎক্ষণিক তলব l তাহলে কি হবে! প্রভুভক্ত রসিকের মৌতাতের প্রভাবে আত্মবিস্মরণ ঘটেছে যে ! কে ফোন করেছে তা বোঝার ক্ষমতা তার তখন নেই l আর যা হবার তাই হোল l রসিক সুরাবিলাসে যারপরনাই বিরক্তিতে বলে উঠল 'কে বে? এখন ফোন করার সময়? রাখ' l বলেই দড়াম শব্দে ফোন রেখে দেয় l পরের দিন সকালে সব নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ
' রসিক অপসারিত, কম্পালসারি ওয়েটিং এ 'l
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

এক রম্য রচনা র মাধ্যমে এক অসৎ, লোভী, পানাসক্ত, তোষামোদকারি ব্যক্তির কাহিনি বর্ণিত হয়েছে এই গল্পে। কেবল তোষামোদ ফা তৈলমর্দন ও এই ব্যক্তির কর্মজীবনৃর অবনমন ঠেকাতে ব্যর্থ। অন্তিম উপলব্ধি এই ব্যক্তির জীবনের শেষ সত্য উপলব্ধি।

১৯ জুন - ২০২১ গল্প/কবিতা: ২৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪