কই তুমি ? -নিসার বিয়েতে,তোমার কলের রিং পড়ছে কিন্তু শুনতে পাই নি। -ফিরবে কখন ? -এই তো একটু পরে। -হুম,তাহলে তুমি ফিরলে কল দিয়ো ,আমি ঘুমাতে গেলাম । -আচ্ছা ,বাবা,রাখলাম তা হলে । -ওক্কে।
সালেহ ফোনটা রাখল । রাতে তুলির সাথে কথা বলা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে ।এখন, তুলি বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরতে ফিরতে একটা ভাল ঘুম হবে মনে হচ্ছে । সারাদিন আজ বহুত ঝামেলা গিয়েছে । এখন ভেবেছিল তুলির সাথে একটু কথা বলে ঘুমাবে । তুলির সাথে ওর মোবাইলে পরিচয় । অপরিচিত মিস কল দেখে কথা বলা ,আস্তে আস্তে পরিচয় ,একসময় দেখা হওয়া,তারপর সম্পর্ক হওয়া ।
এই সব ভাবতে ভাবতে সালেহ ঘুমাতে গেল ।
হঠাৎ সালেহের ঘুম ভেঙ্গে গেল । ঘরটা দুলছে, মনে হচ্ছে জাহাজের ভেতর আছে । সালেহের মাথায় আসল, এটা ভূমিকম্প । সে মশরী থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজল,কিন্তু পেল না । মাথার মধ্যে তালগোল পাকিয়ে গেছে । সারা বিছানা অন্ধর মত হাতড়াতে লাগল বের হওয়ার জন্য। কিন্তু পেল না । এমন সময় আরেকটা বড় ধাক্কা আসল ।সে ছিটকে মশরীর বাইরে পড়ল। মাথায় কিছুই আসছে না ।
সমস্ত পৃথিবীকে যেন কেয়ামত পেয়েছে । প্রতিটা বিল্ডিং দুলছে আর একটার পর একটা ভেঙ্গে পড়ছে । ঘুমন্ত মানুষগুলোর কিছু বুঝার আগেই বড় বড় পাথরের নিচে চাপা পড়ছে । আর্ত চিৎকার গুলো একবার ঝাপটা দিয়েই মিলিয়ে যাচ্ছে ।
সালেহ ভাবল কমপক্ষে একটা পিলার এর নিচে দাঁড়ানো দরকার । প্রতিটা সেকেন্ড মনে হচ্ছে কয়েক যুগ । চারদিক অন্ধকার আর অন্ধকার ।সমস্ত ঘর কাঁপছে , তারসাথে আসবাবপত্র গুলো । পিলার এর কাছাকাছি আসতেই আবার বড় একটা ধাক্কা লাগল । সালেহ পিলার জড়িয়ে ধরল ।প্রচণ্ড শব্দে প্রতিটা পাথর ভেঙ্গে পড়ছে । পিছন ফিরেই দেখল বিল্ডিং এর অর্ধেক ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। ছাদ সহ সব মাটির সাথে গুড়িয়ে গেছে । সালেহ যেখানটায় দাড়িয়ে আছে কেবল মাত্র সেখানটার কিছু অংশ অক্ষত আছে । আশেপাশে কোন কিছু নেই । ভাঙ্গা জায়গাগুলো থেকে বাতাসের ঝাপটা গায়ে লাগছে । আশে পাশে কিছুই নেই । ঘুমন্ত মানুষগুলোর আর্ত চিৎকার বড় বড় পাথর পড়ার শব্দের সাথে একবার রেশতুলেই মিলিয়ে যাচ্ছে ।যারা পারছে চিৎকার করে বাইরে বেরিয়ে আসছে । আশেপাশের সবগুলো বিল্ডিংগুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে পড়ছে,মনে হচ্ছে কেউ মাটির চাদর ধরে কেউ টান দিচ্ছে। সালেহ তার বাবা মা এর কথা মনে পড়ল। তূলির কথা মনে পড়ল । সে হাউমাউ করে কান্না করে উঠল। হঠ্যাৎ আরও একটা জোড়ে ধাক্কা আসল । সালেহ অনুভব করল তার পায়ের নিচ থেকে সব সরে গেছে । সে পড়ছে।
- - - -- - - -
-চাচা বি -২২১ নং বাড়িটা কোনটা ? -বি-২২১ ?? ওইটা ভাইঙ্গা গেছে ,এখনকার বেবাক বাড়ি ভাইঙ্গা গেছে। শুধু আমার এই পান দোকান টা দাড়ায় আছে ।
-ওই বাড়িতে সালেহ নামের কাউকে চিনতেন ??? -হ ,বাইচা নাই ,বেবাক মানুষ মইরা গেছে ।
তূলি আস্তে আস্তে ফিরতে লাগল । একা একা । ২সরা সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প হয় । বিশেষ করে ঢাকা চট্টগ্রাম এর ৮০% ঘর বাড়ি ভেঙ্গে গেছে ।বেচে গেছে কেবল গাছতলা ও ফুটপাতের লোকগুলো।তূলি ওই দিন একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিল । অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার পথে প্রত্যক্ষ করে ভূমিকম্পের ভয়াবহতা । তার সামনেই বিরাট বিরাট বিল্ডিং গুলো ভেঙ্গে পড়ে ।মানুষগুলো চাপা পড়ে তাদের প্রিয় বাসার নিচে ।তুলির কেউ বেচে নেই । মা বাবা আপুনি সবাই বড় বড় পাথরের নিচে চাপা পড়েছে ।গত কয়েকদিন শুধু তাদের খুঁজে বেড়িয়েছে । কাউকে পায়নি ।
এখানে এসেছিল যদি সালেহকে পাওয়া যায় । সেও নেই ।পরিচিত সব মানুষগুলো একসাথে হারিয়ে গেছে।তাকে একা রেখে ।তূলি আস্তে আস্তে পিছ ঢালা পথ ধরে হাটতে লাগল । একা ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আশা
ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারলে অন্যরকম একটা গল্প হতে পারত। আপনার বিষয়ব্স্তুটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রকাশ ভঙ্গিতে আপনার দুর্বলতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে- প্রয়োজনে সময় বেশি ব্যয় করে মনোযোগ সহকারে লিখবেন। আপনার প্রতি শুভ কামনা রইল ভাইয়া।
সেলিনা ইসলাম
গল্পটি অবাস্তব হলেও ভবিষ্যতের একটা কাল ম্যাপ তৈরী করেছেন আপনি যা এখন সত্যিই একটা আতঙ্কের বিষয় । এই আশংকা থেকে প্ররিত্রানের রাস্তা এখন থেকেই ভাবতে হবে । আল্লাহ না করুন এমন যেন না হয় । ধন্যবাদ ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।