ময়মনসিংহের ছেলে আসিফ।তার বাড়ি মুক্তাগাছা থানায়।সে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।কিন্তু তার চেহারা ও পোশাকে এমন একটি ভাব আছে যা দেখে বুঝার উপায় নাই যে তার পরিবারের অবস্থা কেমন!সে নিয়মিত পরিষ্কার পোষাক পরিধান করে।
সে পড়াশুনা করে স্থানীয় কলেজে।তার একটি ইচ্ছে হল সে আমেরিকা পড়াশুনা করবে।
কিন্তু সে পড়াশুনা করে সাধারণ কলেজে।আবার ছাত্র হিসেবেও তেমন মেধাবী নয়।আবার তার পরিবারের যে অবস্থা তাকে টিউশনি করে চলতে হয়।
তাই তার এদিক দিয়ে বিধি বাম।
তার কলেজে সুজাতা নামে একজন পুলিশকন্যা আছে।সেই মেয়েটি সব দিকেই ফিট।
আসিফ আবার কবিতা আবৃত্তিতে একেবারে সবার উপরে অবস্থান করে।তাই সুজাতা মনে মনে তাকে পছন্দ করে।আবার ভালো স্বভাবের জন্য সুজাতার প্রতিও আসিফের কিছুটা দূর্বলতা আছে।কিন্তু সুজাতার বাবা যেমন কড়া মানুষ তাতে আসিফ সুজাতার কোনদিন যে মিলন হবেনা তা আসিফ ভালো করেই জানে।তাই সে ওদিকে মন না দিয়ে তার বাবা মায়ের আশা পূরণ করতে চায়।সুজাতাও তার বাবার ভয়ে আসিফকে জীবন সাথী বানাতে ভয় পায়।
একবার শেরপুরে শিক্ষা সফরে গেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা।আসিফের এক স্কুল বন্ধু শাহেদ এই কলেজে পড়ত।সে নিজের ক্ষমতা সবাইকে দেখানো পছন্দ করত।সে ছিল আবার কাউন্সিলর এর সন্তান।আসিফের উপর ছোটবেলা থেকেই তার রাগ ছিল।সে চাইলো তাকে শিক্ষা দিবে।তাই একটি ফন্দি আটল।আসিফের একটি বড় ক্ষতি সে করতে চাইলো।
বনভোজন এর পর একদিন টিউশনি সেরে আসিফ বাড়ি যাচ্ছিল।শাহেদ দলবল নিয়ে একটি নির্জন স্থানে আসিফকে প্রেতাত্মা সেজে ভয় দেখাল।
আসিফকে সে বললো যে আসিফ যদি আমেরিকা যাবার চেষ্টা করে তবে তার ও তার পরিবারের মরণ নিশ্চিত।
তারপর থেকে আসিফ তার জীবনের বড় স্বপ্নটা বিসর্জন দিল।
একসময় আসিফের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা শেষ হয়ে গেল।
সুজাতার বিয়ে হয়ে গেল এক ডাক্তারের সাথে।
ওদিকে আসিফের মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়েছে ততোদিনে।আসিফ এখন ক্লায়কেশে জীবনযাপন করে।তার একটি অবিবাহিত বোন আছে।তার বিয়ে দিতে হবে।বাবা তেমন কিছু করে না।তাই সেই জলসামুখর ছেলেটা এখন জলসাহীন হয়ে গেছে।একদিন আসিফের মা মারা গেল।বড় কষ্ট পেল সে।কোন চাকুরী সে পাইনি এখনো।তার রাস্তায় একদা দেখা হল সেই শাহেদের সাথে।
শাহেদ তাকে ডাকল।অনিচ্ছা সত্ত্বেও আসিফ থেমে গেল।শাহেদ বললো,"জীবনে প্রতিহিংসার বশে বড় পাপ করেছি আমি।সেদিন আমিই তোকে দলবল নিয়ে ভূত সেজে ভয় দেখিয়েছি।বছর খানেক হল আমার বাবা মারা গেছে।আমি এখনো বেকার আছি রে।তোর মা মারা গেছে আমি শুনেছি।আমাকে ক্ষমা করে দিস।"আসিফ বললো "নিয়তির উপর কারো হাত থাকে না।ক্ষমতার দম্ভ যদি তুই ভুলে যাস তাতেই আমি খুশি।শিক্ষা জীবনে কখনোই দম্ভ করা ঠিক নয়।"এসব বলে আসিফ বাড়ি চলে এল।আসিফ প্রতিজ্ঞা করল সে নিজের পায়ে দাঁড়াবেই।এভাবে সে একদিন একটি কলেজের শিক্ষক হয়ে গেল।
সেখানে সহসা আসিফের দেখা হল সুজাতার সাথে।সুজাতা তার
মেয়েকে ভর্তি করাতে এসেছে।দূরে কলেজ হওয়ায় সে মেয়ের সাথে এসেছে।
সুজাতা আসিফের সাথে কথা বলে জানতে পারল আসিফ এখনো অবিবাহিত।সে নিজের ক্ষনিকের পছন্দটিকে সারা জীবন জিইয়ে রাখতে চায়।
তখন সুজাতা বললো," কারো জন্য এই দুনিয়ায় কিচ্ছু পড়ে থাকে না।তাই তুমি নিজের জীবন সাথী বেছে নাও।এতে আমি অনেক খুশি হব।"
আসিফ তখনি তার কট্টর সিদ্ধান্ত
বদল করল।সে ভাবল জীবনে এর চেয়েও বড় স্বপ্ন সে একদিন ফেলে দিয়েছিল।তার মাও চেয়েছিল আসিফের সুন্দর সংসার হোক।তাই সে তার সিদ্ধান্ত বদলিয়েছিল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
অনেকের জীবনে অনেক স্বপ্ন থাকে।তেমন আসিফের জীবনে আমেরিকা যাওয়া হল একটা স্বপ্ন।তার আরো স্বপ্ন আছে।তবে মূল স্বপ্ন আমেরিকা।
০৩ ডিসেম্বর - ২০২০
গল্প/কবিতা:
১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।