স্বপ্নের সেই তুমি

স্বপ্ন (জানুয়ারী ২০২১)

মোঃ মাইদুল সরকার
  • ১১৫
এই মধু জোছনায়
এই মন শুধু চায়
এসো না দুজনে আজ গল্প করি
একটু আবেশে, এই মনটা ভরি
এই মধু জোছনায়
এই মন শুধু চায়
এসো না দুজনে আজ গল্প করি
একটু আবেশে, এই মনটা ভরি ------------------------------

সুন্দর এই গানের কথাগুলো শুনে মনের ভিতর আনন্দের ছোট ছোট ঢেউ তুলে সুখের ছন্দ হয়ে নৃত্য করছে ফরহানার বুকে। ফারহানা বিশ বছর বয়সের তরণী। পান পাতার মত মুখ। দুধ সাদা গায়ের রং। সবই আছে তার তবু যেন কিসের একটা অভাব সে গভীর গোপনে উপলদ্ধি করে। কি সেটা ? প্রেম না অন্য কিছু ?

সেই অভাব বোধের নাম প্রেম না হয়ে যায় না। ফেসবুক, মেসেঞ্জারের যুগে তার একটা প্রেমিক হলনা, হলনা কেউ মনের মানুষ ইদানিং এটাই তার একমাত্র দু:খ। এ দু:খের কথা কাউকে বলাও যায় না আবার সয্য করাও যায় না।

তার নিজের একটা মোবাইল নেই। উচ্চমাধ্যমিকের পর অখন্ড অবসর। সময় যেন আর কাটেনা। আগে তবু কলেজ ছিল, পড়া-লেখার চাপ ছিল কিন্তু এখন নেই কাজ তো খই ভাজ এর মতো অবস্থা। টুকটাক কাজ করেও অফুরন্ত সময় পড়ে থাকে। তাই কয়েকটা টিউশনি নিয়েছে সময় নামক ঘোড়াটার একঘেয়েমির লাগাম টানতে।

কয়েক মাসেই তার চাহিদা তুঙ্গে। অনেকগুলো টিউশনি হাতে। টাকাও জমতে শুরু করেছে। এবার মোবাইল কিনতে কোন বাধা নেই। টিউশনিতে না গেলে বা শরীর খারাপ থাকলে না যেতে পারলে তার বাবা বা বড় ভাইয়ের নাম্বারে ফোন আসে-ম্যাডাম কেন আজ আসলনা। এসব প্যারা থেকে বাঁচতে সে জানায় একটা মোবাইল ছাড়া তার আর চলছেনা। এবার আর পরিবার থেকে কেউ না করেনা।

বড় ভাইকে নিয়ে সে নিজেই পছন্দ সই একটা এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট কিনে নিয়ে আসে। শুরু হয় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের সাথে যোগাযোগ। পাশের বাড়ির বান্ধবীদের ওয়াইফাই-এ ফ্রি কানেক্ট হতে দেরি হয়না। বান্ধবীর সাথে মিলে ভোরের শিশির নামক আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনের সাথে তেমন কোন যোগাযোগই হয়না।

বাবা দোকানদারি করেন। ফিরেন রাত বিরাতে। তিনি খেয়াল করেন মেয়ে তার না ঘুমিয়ে জেগে জেগে মোবাইল টিপছে প্রায় রাতে। প্রথম প্রথম বকা ঝকা করতেন। রাগ দেখাতেন। মা বলতেন মেয়েটা একটু মোবাইলইতো দেখে তা এত রাগ দেখান কেন আপনে ? আজকালকার পোলাপান মোবাইল ছাড়া থাকে নাকি ? মোবাইল এখন কামের জিনিষ। দেহেন আপনার মাইয়া মোবাইল দেইখ্যা আজকা নাস্তা বানাইছে, খাইয়া দেহেন বহুত মজা অইছে।





সব্জির রোল খেয়ে আমিরউদ্দিন বুঝতে পারেনা এটা কি দোকান থেকে কেনা নাকি তার মেয়ের হাতের বানানো। তবুও রাতে শুয়ে বৌকে বলেন। মোবাইল এর যেমন উপকার তেমনি ক্ষতিও আছে। বেশি মোবাইল টিপন ভালা না।

বড় ভাই ব্যস্ত একটা সরকারী চাকরি বাগতে। তার দিন রাতের পরিশ্রম স্বার্থক হয়। জুটে যায় সরকারি চাকরি নামক সোনার হরিন। বাড়ির সবাই খুশি। চাকরিতে যোগদান করেই সে তার বুড়ো বাবাকে নিষেধ করে দোকান চালাতে। তবুও আমির উদ্দি দোকানদারি করে, সে দোকানের মায়া ছাড়তে পারেনা।

এদিকে ফারহানার বিয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সমন্ধ আসে। কিন্তু সে যতটা সুন্দরী ও গুণবতী সে তুলনা সমন্ধগুলো ভাল নয়। তাই তার মা বলে- কইত্থে আইয়ে এসব অজাইত্তা কাজ। অহন পর্যন্ত একটা ভালা কাম আইলনা আমার মাইয়ার। আহা! দু:খে পরাণ যায়। কত বেডইক্কা মাইয়াগে বিয়া অইয়া যাইতেছে। হায়! কপাল।

মোটামোটি কয়েকজনের সামনে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফারহানা এবং একটা সময় এসব দেখে বিরক্ত হয়ে বলে দিল- আগে থেকে খোঁজ খবর নিয়ে তার পর পাত্র পক্ষকে আসতে বলবে। বারবার এই সং সেজে ওদের সামনে যেতে আর ভাললাগেনা। যত সব নাটক।

ফেসবুকে কয়েকজন ছেলের সাথে তার ভাল বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। কথা হয়। আলাপ জমে উঠে দিনে দিনে। কি যে কথা বলে সে জানেনা ঘরের অন্য কেউ। তার বান্ধবী হেলেনা এক যুবকের প্রেমে পড়ে সেটা ফেসবুকের মাধ্যমেই ঘটে। প্রেমের নৌকা যখন মাঝ নদীতে তখন একদিন ফারহানাকে নিয়ে হেলেনা সেই যুবকের সাথে দেখা করে রেস্টুরেন্টে।

সারাটা বিকাল কাটিয়ে দুই বান্ধবী ফিরে গ্রামে। হেলেনা বার বার জানতে চায় তার প্রেমিককে ফারহানার পছন্দ হয়েছে কিনা ? ফারহানার তেমন পছন্দ হয়নি তবু বান্ধবী কষ্ট পাবে বলে সে জানায়-যুবকটিকে তার এক প্রকার ভালই লেগেছে। বান্ধবীর সর্থন পেয়ে হেলেনা একেবারে ডুবে যায় হায়দার নামক যুবকটির প্রেমে।

ফারহানা বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বললেও একজনকেই তার বেশ মনে ধরে। মেসেঞ্জারে ফারহানের ছবি দেখেই সে ক্রাশ খায়। যেমন স্মার্ট তেমনি তার পৌরষদীপ্ত কন্ঠ। মেসেঞ্জারের নীল জগতে বার্তা আদান-প্রদান হতে থাকে ঘন ঘন।

ময়মনসিংহ থেকে মুন্সীগঞ্জ দূতত্বটা কম নয়। ফারহান দেখা করতে চায়। ফারহানা প্রথমে সম্মতি দেয়না। বলে আমি সময় সুযোগ করে তোমাকে জানাবো।

মাস দুইয়েক পরে তার এক বান্ধবীর বিয়ের দাওয়াতে উপস্থিত না হয়ে সোনারগাঁয়ে দেখা করে ফারহানের সাথে। ফারহানের ফেসবুক আইডির নাম স্বেপ্নের সেই তুমি । ভোরের শিশির যখন স্বেপ্নের সেই তুমির সামনে দাড়িয়ে তখন মনে হল স্বপ্ন বুঝি বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছে।



গোলাপের তোড়া প্রথম উপহার পেয়ে উচ্ছাসিত ফারহানা। সেও একটা নীল রুমাল উপহার দিয়েছে ফারহানকে। কথায় কথায় কখন যে সময় গিয়েছে গড়িয়ে বিকালের মরা রোদে কফির মগে শেষ চুমুক দিয়ে বিদায় নিয়েছে দুজন।

সেদিনের পর থেকে দিনে দিনে প্রেম যেন আর গভীর হয়ে উঠে দুজনার। কথা যেন আর শেষ হয়না চলতে থাকে রাতভর। যেন আকাশে দুটি তারা কথা কয় পাশাপাশি চিরকালীন নক্ষত্রের আলোয়।

বিয়ের জন্য চাপ আসতে থাকে ফারহানার কিন্তু সে কিছুতেই রাজি নয় এখন বিয়ে করতে। সে স্বেপ্নের সেই তুমিকে জানায় বাস্তবে একটা চাকরি জুটাতে। যদি চাকরি না হয় তবে ঙেঙ্গে যাবে সম্পর্ক। পর হয়ে যাবে দুজন দুজনার জীবন থেকে। বেকার ছেলের কাছে তো আর কেউ মেয়ে তুলে দেবেনা। কিন্তু চাকরিতো আর ছেলের হাতের মোয়া নয় চাইলেই পাওয়া যায়। টাকা কিংবা মামা খালুর জোড় না থাকলে কেবল সার্টিফিকেটে যে কোন কাজ হয়না ফারহান তা হারে হারে টের পেয়েছে।

আরও কয়েকবার দেখা হয়েছে স্বেপ্নের সেই তুমি ও ভোরের শিশিরের। এবার তারা স্বপ্ন নয় বাস্তব নিয়েই কথা বলেছে বেশি। তবুও আবেগের কোন কমতি ছিলনা। ফারহান ফারহানার হাত ধরে বলেছে-তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে আমি ভাবতেও পারিনা। যে করেই হোক আমি তোমাকে আমার করে নেবই।

নামকাওয়াস্তে যে চাকরিটা ফারহান করছে তা দিয়ে যে দুজন মানুষের শহরে থাকা খাওয়া, চাওয়া-পাওয়া পূরণ হবে না তা বলে ফারহানাকে । ফারহানা জানায় আমিও টিউশনি করে, সেলাই করে সহযোগিতা করবো। তবুও আমরা এক সাথে থাকবো।

অনেক ঝড় ঝাপটার পর ফারহানা ফারহান সম্পর্কে তার পরিবারকে জানায়। পরিবার খোঁজ খবর শুরু করে- একেতো দূরের জাগয়গা তার উপর ছেলের চাকরি বা পারিবারিক অবস্থা ভাল নয়। কিন্তু ফারহানার জেদের জন্য ফারহানের সাথেই বিয়ে দিতে মনস্থ করে পরিবার।

সময় যত ঘনিয়ে আসে ততই উড়ো খবর পেতে থাকে ফারহানা ও তার পরিবার। ফারহানকে জিজ্ঞেস করলে বলে- মানুষ তার নামে বানোয়াট কথা বলছে। এলাকার কিছু লোক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

ফারহানার ভাই সায়মন বসে থাকার পাত্র নয়। সে গোপনে ময়মনসিংহ গিয়ে সব ব্যাপারে জেনে এসেছে। সে এসে যা জানালো তার মূল কথা হচ্ছে-সবই আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু ছেলে যে আগেও প্রেম করেছে এবং সেই মেয়েকে বিয়ে করেছে এ কথা কেন লুকালো ? ওই এলাকার মানুষ বলছে মেয়েটা নাকি খুন হয়েছে ? অনেকের ধারণা খুনটা সে নিজেই করেছে। অতএব একজন খুনীর সাথে কি করে তার বোনকে সে বিয়ে দিতে পারে!

ফারহানা সব শুনে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ফারহানকে ফোনে বলে-তোমার আগের বউ কোথায় ?

সে মারা গেছে।

মারা গেছে নাকি মেরে ফেলেছো?

মানে ?

মানেতো তুমিই ভাল জান।


আমাকে কেন তুমি তোমার জীবনের এই ঘটনা জানাওনি ?

এটা জানানোর মত ঘটনা নয়।

তাহলে কোনটা জানানোর মত ঘটনা। আমাকে বিয়ে করে একদিন প্রথম স্ত্রীর মত মেরে ফেলে আমার পরিবারকে জানাতে । সেটাই কি জানানোর মত ঘটনা হতো ?

কি যা তা বলছো ?

ও আমি যা তা বলছি আর তুমি ভাল মানুষ কিছু জানোনা না।

ছি: তুমি এতটা খারাপ। আমার সাথে প্রতারণা করলে……………….

না বিশ্বাস করো আমি কোন প্রতারণা করিনি। আমি তোমাকে মন থেকে অনেক অনেক ভালবাসি।

ফারহানের এই ভালবাসি কথাটা শুনে যেন বুকের মধ্য অগ্নিগিরির আগুন ছড়িয়ে জড়লো। সে বলল- আর কোন দিন ভালবাসার কথা বলবেনা। প্রতারক। ভন্ড।

ফোনটা কেটে দিয়ে মনের দু:খে কেদে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে ফারহানা বলতেও পারবেনা। মায়ের ডাকে ঘুম থেকে জেগে দেখে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে আবার সেই দু:খ-কষ্টের বোধটা প্রবল হতে শুরু করে। হায় প্রেম, হায় যন্ত্রনা।

রাতে ঘুম হয়না। আবোল – তাবোল ভাবে। কি ভুলটা না সে করতে যাচিছল। পালিয়ে গিয়ে সে ওই খুনীটাকে বিয়ে করতে যাচ্ছিল। যাক পরিবারকে জানানোয় এ যাত্রা বেঁচে গেছে। যদি ফারহান সম্পর্কে সব তথ্য লুকিয়ে রেখে একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে যেত সেই ভন্ডটার সাথে তবে তার পরিবার তার আর কোন চিহ্ন কোনদিন পেতনা। কবে কোথায় কখন সে লাশ হয়ে পড়ে থাকতো তা কে জানতো?

ফেসবুক আসক্তি তার কমে এসেছে। মন ভাঙ্গা পাখিরমত সে সারাদিন নিজের বৃত্তেই ঘুরপাক খেতে থাকে। ধীরে ধীরে জীবন স্বাভাবিক হয়ে বহতা নদীর মতই বয়ে চলে। কিন্তু মনের ভিতরে যে নীল দাগ পড়েছে তা মুছা যায়না। তারপর আর প্রেম নামের অসুখে সুখের জন্য নিজেকে জড়ায়নি সে।

এদিকে তার বান্ধবী ঘটিয়েছে লংকাকান্ড। হেলেনাকে সকালের পর থেকে আর দেখা যাচ্ছেনা। অনেক খুঁজেও তার টিকিটির দেখা কেউ পেলনা। এর মধ্য ফারহানাকে কয়েকবার জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। হেলেনার পরিবারের সবার কথা-ফারহানা নিশ্চয় জানে হেলেনা কোথায় গেছে। কিন্তু হেলেনা এ ব্যাপারে তাকে কিছুই বলেনি, সে নিজেও জানেনা কি ঘটেছে। তবু কেন তাকে দায়ী করছে এর কারণ সে খুজে পায়না।

অবশেষে দিন কেটে গিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে একটু একটু করে এর ওর মুখ থেকে জানা যাচ্ছে হেলেনা এক যুবকের সাথে মোটর সাইকেটে করে কোথায় চলে গিয়েছে। কুকথা বাতাসের আগে ছড়ায়। মূহুর্তেই গ্রামে ছড়িয়ে গেল-হেলেনা এক যুবকের সাথে পালিয়ে গিয়েছে।

ব্যস শুরু হয়ে গেল জল্পনা-কল্পনা। রসিয়ে রসিয়ে কত জন কত কথা বলছে। রাতে যখন হেলেনা ফিরল তখন তাদের বাড়ির সামনে লোকে লোকারণ্য। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখো হবে জেনেই সে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কখন কি বলতে হবে।

রাতে যখন তার বাবা ও ভাই হুমকি দিল সেই ছেলের সাথে যদি আর কখনো তাকে দেখা যায় তবে দুজনকেই কঠিন মূল্য দিতে হবে। এ ব্যাপারে আরও কথা উঠলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বোমা ফাটালো হেলেনা।

হাবিবকে আমি বিয়ে করে ফেলেছি।

কি? কি বললি তুই শয়তান! আমরা এখন সমাজে মুখ দেখাবো কি করে। এই বলে ধুম ধুম করে পিঠে কিল বসিয়ে দিল তার বড় ভাই।

ও মাগো বলে ককিয়ে উঠতেই হেলেনার মা এসে ছেলের হাত হতে উদ্ধার করলেন মেয়েকে। সে রাতটা যেন অশান্তির ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ল হেলেনাদের ঘরে আর ঘরের মানুষগুলোর ভিতরে বাহিরে।

মেয়ে যেহেতু বিয়ে করেই ফেলেছে এটাতো আর চাপা থাকবেনা তাই পর দিনই সেই ছেলের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সারলো পরিবার। আর সে ঘটনার পর থেকে ফারহানা হয়ে গেলো হেলেনাদের চক্ষুশূল। তাদের মধ্যমূল ধারণা এহেন ঘটনার পিছনে ফারহানাই কলকাঠি নেড়েছে।

এমনি করেই কেটে গেল আরও অনেক দিন। অবশেষে ফারহানারও ফুটলো বিয়ের ফুল। ছেলে ঢাকায় থাকে, ব্যবসায় তার ভাল অবস্থান। দিন ক্ষণ ঠিক হলো। হেমন্তের বিকেলে বধূ সেজে ফারহানা চলে গেল গ্রাম ছেড়ে। পিছনে পড়ে রইল তার-ঘর, বাবা-মা, গ্রাম আর শত শত স্মৃতি। বরের সাথে গাড়িতে করে ঢাকা যেতে যেতে একেকটা স্মৃতি যেন জীবন্ত হয়ে দেখা দিল তার চোখে। আর অশ্রু ঝড়ে পড়তে লাগলো টপ টপ করে।

রাতে বাশর ঘরে তার জন্য অপেক্ষা করছিল চমক। ভোরের শিশির তোমার সামনে দাড়িয়ে আছে তোমার স্বপ্নের সেই তুমি। তুমি কি খুশি নও ?

বিস্ফারিত নয়নে চেয়ে থাকে সে তার বরের দিকে। ফারহান বলতে থাকে সব কিছু খোলসা করে। আসলে আমার ও আমার চাচতো ভাই দুজনের নামই ফারহান। তোমার আইডি দেখে আমার খুব পছন্দ হয় ভোরের শিশির নিকটি। কথা বলি মেসেঞ্জারে। প্রেম হয়ে যাওয়ার পর দেখা করতে পাঠাই আমার চাচতো ভাইকে আর দূর থেকে সেদিন সোনারগাঁয়ে প্রথম দেখি তোমাকে।

চাচতো ভাই ফারহানের জীবনে যা ঘটে গেছে তার যেন পুন:রাবৃত্তি না ঘটে আমার জীবনে তাই দুভাই মিলে পরিকল্পনা করি যাতে নাটকীয়তার পর মিলন ঘটে আমাদের দুজনার।

পরে আমি যোগাযোগ করি তোমার অগোচরে তোমার পরিবারের সাথে। তারাও তোমাকে সবকিছু খুলে বলেনি কিন্তু আমাদের ভালর জন্য সব মেনে নিয়েছেন।

ম্যাসেঞ্জারে লেখা- যে করেই হোক তোমাকে আমি আমার করে নেব সেই লেখাটি দেখায় ফারহানাকে। এবার বল তুমি কি আমাকে দেখে, আমাকে পেয়ে সুখী ?

সেই ফারহান ও এই ফারহানের চেহারাও বেশ মিল। মিল আছে কথা ও চলনে-বলনে।

প্রিয় মানুষ হারানোর দু:খ ভুলে প্রেমিককে সারা জীবনের জন্য আপন করে পেয়ে ফারহানার মুখে ফুটে উঠে বিজয়ে হাসি। কিন্তু পরক্ষনেই আবার অভিমানে ভরে যায় মন।

কেন তুমি আমার কাছ থেকে সব লুকালে? প্রথম থেকেই যদি সব সত্যি সামনে আসতো তবে তো আমাদের বিয়ে নিয়ে কোন সমস্যা হতো না ?

আসলে প্রেমের বিয়ে মেনে নিতে পারতো না তোমার পরিবার। আর আমার চাচতো ভাই ফারহানের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা ও পথ মারাতে চাইনি। প্রেমের বিয়ে যে সুখের হয়না তার নজির আমাদের আশে পাশে ভুরি ভুরি। ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। পারিবারিক বিয়েই আমাদের ঐহিয্য ও সামাজিক রীতি।

তা ঠিক । সময়ই বলে দেবে কে সুখী কে অসুখী। তবে মন থেকে তোমাকে চেয়েছি, তোমাকে পেয়ে পূর্ণতা পেল জীবনের। আবারও আনন্দ অশ্রু ঝড়ে পরে নববধূ ফারহানার চোখে।

এভাবে কথায়-আলাপে, সোহাগে-আদরে ভোরের শিশির যেন মিশে যায় স্বপ্নের সেই তুমির বুকে। শুরু হয় স্বপ্নের সেই তুমির নতুন জীবন। শুরু হয় ভোরের শিশিরের নতুন জীবন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত khub sundor , golpe shobdo babohar , bornona - valo legeche . valo thakben .
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০২১
আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে উৎসাহিত হলাম। আপনিও ভাল থাকবেন ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০২১
Lutful Bari Panna আপনি সহজ করে লেখেন কিন্তু হাতটি সমৃদ্ধ। গল্পেও বেশ বাঁক ছিলো। শেষে একটা চমকও। ভালো লেগেছে।
ভালো লাগেনি ৫ জানুয়ারী, ২০২১
আপনার সুন্দর মন্তব্যে মোহিত হলাম। ধন্যবাদ। শুভকামনা।
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০২১
Dipok Kumar Bhadra খুব সুন্দর লিখেছেন।
ভালো লাগেনি ৫ জানুয়ারী, ২০২১
ধন্যবাদ দাদা। ভাল থাকবেন।
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০২১
মোঃ মাইদুল সরকার ধন্যবাদ মাহী ভাই।
শিলা শিলা ভালো লাগল।
ভালো লাগেনি ৪ জানুয়ারী, ২০২১
পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ৪ জানুয়ারী, ২০২১

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেম নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাই তুলে ধরা হয়েছে গল্পে।

২৪ আগষ্ট - ২০২০ গল্প/কবিতা: ৮৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪