গ্রামের নাম ইছামতী। ছোট্ট একটি গ্রাম।অতীতকাল থেকেই এই গ্রামটি একটি আদর্শ গ্রাম হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। গ্রামে হিন্দু মুসলমান মিলে প্রায় তিন হাজার লোকের বাস। ভিন্নধর্মের হলেও সবাই মিলেমিশে এই গ্রামে বসবাস করে আসছে সেই আমল থেকে।
গ্রামের যে কোন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে হিন্দু পাড়ার ননীগোপাল ভদ্র, মুসলমান পাড়ার আজিজল খাঁ, আবু সাইদ খাঁ, হাজী আজাহার আলী খাঁ,কাসেম খাঁ, আব্দুর রহমান খাঁ, মতিয়ার রহমান খাঁ গ্রামের মানুষের শান্তির লক্ষে নি:স্বার্থভাবে কাজ করতেন।
ওনাদের ভাবনা দেশের প্রত্যেক গ্রামে শান্তি থাকলে পুরো দেশেই শান্তি আসবে।
ওনারা ছাড়াও আরও কিছু বয়োজেষ্ঠ্য লোক ছিলেন, তাদের অবদানও কম ছিল না।যেমন মধ্যপাড়ার খোকা সরকার, চন্দ বাড়ীর অক্ষয় চন্দ, বাদু চন্দ,প্রমোদ চন্দ, কাইঞ্চা চন্দ তাছাড়া অমৃত দত্ত, মনীন্দ্র নাথ সরকার, দীনেশ সরকার, কিনু সরকার, গোবিন্দ সরকার,যোগেন ভদ্র,নারায়ণ ভদ্র,দীগেন ভদ্র সাহাপাড়ার কানাই লাল সাহা, সুবোল সাহা, শ্রীধর সাহা, রাধা নাথ সাহা, টোনা সেন ছাড়াও আরও অনেকে ।এনারা সব সময় গ্রামের তথা দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতেন।
অনেকেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ইংরেজদের শাসনামল এবং পকিস্তানীদের শাসন ব্যবস্থা দেখেছেন।
ইংরেজ নীলকরদের বাঙালীর উপর অত্যাচার, নির্যাতন, পাক হানাদের নির্যাতন দেখেছেন।
ঐ সময় গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে দেশের সকল বেহাল অবস্থার মোকাবেলার কথা আলোচনা করতেন। তাঁদের প্রত্যাশা ছিল একদিন আমাদের দেশ স্বাধীন হবে।
মাঝে মাঝে কৌতহল বসত অনেকেই দেশ পরাধীন থাকাবস্থায় শাসন কেমন ছিল, কিভাবে ব্রিটিশদের থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন হল, পাকিস্তান হতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেল এগুলো শোনার জন্য বয়োজেষ্ঠ্যদের কাছে ভীড় করত।
সে আমলে গ্রামে কোন রাস্তাঘাট ছিল না। পায়ে চলা সরু পথ ছিল।গরুরগাড়ী,ঘোড়ার গাড়ী ছিল চলাফেরার জন্য একমাত্র যানবাহন। মানুষের এতো ব্যস্ততা ছিল না। মাঠে বছরে একবার ফসল করতো এতেই সবার ভাল ভাবে চলে যেত।বিকেলে নদীর ধারে বা বড় গাছের তলায় ছোট বড় সবাই একত্রিত হয়ে কেও কেও মজার মজার গল্প শুনতো বয়োজেষ্ঠ্যদের কাছ থেকে। কেও কেও তাস খেলতেন। আবার ছোট ছোট ছেলেরা গোল্লাসুট,হা-ডু-ডু, বাতামিলেবু দিয়ে ফুটবল খেলতো।
ইংরেজ আমলে বা পাকিস্তান আমলে সবার মনে এতো আনন্দ ছিল না। তবে সবাই মনের আনন্দে মাঠে কাজ করা ছাড়াও অন্যান্য কাজ স্বতস্ফূর্ত ভাবে করতো দেশ স্বাধীন হওয়ার আশায়।কিন্তু কিভাবে কবে দেশ স্বাধীন হবে, তা কারো জানা ছিল না।তবে সবাই সব সময় প্রত্যেক উন্নয়নমূলক কাজে ঐক্যমত পোষন করতেন। তখন মুরুব্বীদের কথা সবাই মাণ্য করতো।
দেশের সকল উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি সবার আন্তরিকতার অভাব ছিল না। পরাধীনতার গ্লানি সবাইকে সব সময় কুড়ে কুড়ে খেত।
এতে জনগণ সাময়িক ভাবে বিচলিত হলেও কেও হাল ছাড়ত না দেশের স্বাধীনতা পাবার আশা থেকে।মনে মনেই দেশকে ভালবাসত এবং স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতো অনেকেই। আবার অনেকেই স্বাধীনতা পাবার আশা ছেড়েই দিয়েছিলো ।
ইংরেজ আমলে তো পাকিস্তানের নাম গন্ধও ছিল না। আগে ইংরেজদের কাছ থেকে ভারতবর্ষ ভাগ হয়েছে। তারপর.......। শুধু বুদ্ধিমান লোকেরা এগুলো নিয়ে ভাবতো।
১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দ, পূর্ব পাকিস্তানে জনগণের মধ্যে খুব অস্থিরতা চলছিলো। এদেশের জনগণকে খুব অত্যাচার করতো খোদ পাকিস্তানিরা।উর্দ্ধ রাষ্ট্রভাষা করার মধ্য দিয়ে এদেশের জনগণকে নানানভাবে হেনেস্তা করার মধ্য দিয়ে সামরিক কায়দায় ইয়াহিয়া খান একচ্ছত্র শাসন ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে বাঙ্গালিকদের কোনঠাসা করে রেখেছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় একদিন ননীগোপাল ভদ্র এবং আজিজল খাঁ যৌথভাবে এক নোটিসের মাধ্যমে বিকালে ভদ্রবাড়ীতে গ্রামের সবাইকে সমবেত হবার জন্য আহবান করলেন।
ভদ্রবাড়ীতে গ্রামের ছোটবড় সকলেই উপস্থিত হলেন। তারপর উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, দেশের অবস্থা তো ভাল মনে হচ্ছে না, তোমরা সবাই যেকোন অশুভশক্তিকে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
”কেন এরকম কথা বলছেন, ভদ্র মহাশয় ?“আবু সাইদ খাঁ বললেন।
কতদিন আর অত্যাচার সহ্য করবে জনগণ? পরাধীনতা আর মানা যাবে না। খবরে শুনছো না? দেশের স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন বলে শেখ মুজিবর রহমানকে ইয়াহিয়া খান আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়াছে।এর পরও কি আমরা আর বসে থাকতে পারি?
“আপনারা সবাই মানসিকভাবে যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুত থাকেন।“বললেন ননীগোপাল ভদ্র।
কানাই লাল সাহা বললেন, “তোমরা শুনো, আমরা পূর্ব পকিস্তানে আছি ।যদি আমাদের মধ্যে ঐক্য বজায় থাকে তবে এই পূর্ব পাকিস্তানও একদিন নতুন নামে স্বাধীনতা লাভ করবে।আমার কথাটা মনে রেখো।“
শুনে সবাই হো হো করে হেসে উঠল। অনেকেও বলল ইংরেজদের কাছ থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন করতেই অনেক কষ্ট করতে হয়েছে বাঙ্গালীদের। তারপর আবার ভারতবর্ষ হতে ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান আলাদা হল। এখন আবার পাকিস্তান ভাগ হবে ? স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পাব?
“আমরা কি পারব বৃহৎ পাকিস্তান হতে পূর্ব পাকিস্তানকে আলাদা করতে ?“বললেন আবু সাইদ খাঁ।
“হাঁ অবশ্যই পারব।আমরা তো নীলকরদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছি। এবার পূর্ব পাকিস্তানও আলাদা করতে পারব। যদি আমাদের সবার মধ্যে দেশ প্রেম থাকে। বললেন, হাজী আজাহার আলী খাঁ।
“হাঁ অবশ্যই আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম আছে। শুধু আমাদের মধ্যেই নয় সারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যেই দেশপ্রেম আছে। “বললেন, বংশীলাল সাহা।
“আমাদের দৃঢ় মনোবল এবং কঠোর ত্যাগের বিনিময়ে দেশ একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসাবে পরিগনিত হবে ।এ দেশ হবে আমাদের গর্ব এবং আমাদের অহংকার।“বললেন ননীগোপাল ভদ্র ।
এরপর আবুসাইদ খান বললেন,“ আমরা এই দেশকে ভালবাসি।দেশের সবাই যদি এক হয়ে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই তবে অবশ্যই এ দেশকে পাকিস্তানীদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো ইনশাআল্লা এবং নতূন গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে দেখতে পারব।“
একথাগুলো শুনে অনেকেই খুব আনন্দিত হলো।আবার উপস্থিত কিছু কিছু লোক......................।
“কি করে সবাই এক হয়ে কাজ করবে? সবাইতো একমনের নাও হতে পারে?” নিতাই চাঁদ সরকার বললেন।
“ঠিকই বলেছে নিতাই।“ বললেন দেবী লাল সাহা।
“কেন সবাই এক থাকবে না।“ ধমক দিয়ে বললেন আজিজল খাঁ।
“এদেশকে ভালবাসলে অবশ্যই সবাই দেশের জন্য প্রাণ দিতেও দ্বিধা করা উচিত না।“সুবল সাহা বললেন।
সবাই মনে মনে ভাবতে লাগলেন, এই দেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে হলে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।এর জন্য দেশে একজন সাহসী নেতৃত্বের দরকার।
মতিয়ার রহমান খাঁ বললেন, নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শেখ মুজিবর রহমান,আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ আরও অনেকেই আছেন। তাদের নেতৃত্বে জনগণের সহযোগীতায়ই এই দেশ একদিন স্বাধীন হবে ইনশাআল্লাহ।
“এ দেশ বিশ্ব দরবারে গর্ব করার মত হবে একদিন।“বললেন আব্দুর রহমান খাঁ।তিনি আরও বললেন, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্টীয় ভাষা করার জন্য দেশের অনেকেই শহীদ হয়েছেন। মহান নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মজিবুর রহমান ছাড়াও আরো বড় বড় নেতাদের নির্ভিক নেতৃত্বের কারনে আজ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন গড়ে উঠেছিল শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে।এইভাবে আন্দলোন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ১৯৬৯ খ্রী.এ গণ অভূত্থান হয়।এ বিষয়গুলো সভায় উত্থাপন করেন মো: আলমাহমুদ খাঁ।
সভায় সকলকে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ঐক্যব্দ্ধভাবে রুখে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ শেখ মুজিবর রহমান ঐতিহাসিক ভাষনের পর তাঁকে আটক করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।
২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বাঙ্গালীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
হিন্দু মসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান অনেকেই পাকবাহিনীর হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রামে গ্রামে শান্তি বাহিনী গঠন করা হয়।
সবাই নিজেদের বিবেকের টানেই দেশের জন্য একত্রিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় ইছামতী গ্রাম ছাড়াও আশেপাশের গ্রমের হিন্দু মুসলমান মিলে এক দল গঠন করেছিল।যার নেতৃত্বে ছিলেন ননীগোপাল ভদ্র। তবে মো: আবুসাইদ খাঁন সার্বক্ষনিক ওনার সংঙ্গে থাকতেন।
গ্রামের অনেকেই মুক্তি বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন যাদের মধ্যে মো: আল মাহমুদ খাঁ অন্যতম। এসময় আব্দুল হাই তালুকদার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার ছিলেন।তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন দেশকে স্বাধীন করার জন্য।
পাশের গ্রামের মো: মমতাজ উদ্দিন, মো: আবুমোল্লা সহ আরও অনেকেই ইছামতী গ্রামের গ্রাম প্রধান ননীগোপাল ভদ্র-র এহেন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে একত্রে দেশের স্বার্থে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত করেছিলেন।
ননীগোপাল ভদ্র শুধু ইছামতী গ্রামেরই নয় আশেপাশের গ্রামগুলোরও নেতৃত্ব দিতেন।তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত করতেন এবং সব সময় সাহস যোগাতেন।তাঁদের সার্বিক সহযোগীতায় সদা প্রস্তুত থাকতেন।
তিনি হিন্দুদের বলতেন, কেও এদেশ ছেড়ে চলে যাবেন না। এদেশ আমাদের জম্মভূমি,এদেশে জম্মগ্রহণ করে আমরা ধন্য। কারন এদেশের মাটিতে সোনার ফসল ফলে ।তাছাড়া এদেশে সবার মধ্যেই একধরনের সম্প্রীতিভাব বজায় আছে। যা অন্য কোন দেশে আছে কি না তা আমার নাই।একদিন এদেশ স্বাধীন হবেই হবে। একথা শুধু আমার নয় এটা আমাদের দেশের আপামর জনগণের কথা।এখন স্বাধীনতা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ননীগোপাল ভদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহযোগীতাও করতেন।গোপনে তাঁদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন তা ইতিহাসে বিরল। দেশের প্রতি তাঁর আনুগত্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।তিনি এ দেশকে নিয়ে খুব গর্ব করতেন।
তারপর দেশ স্বাধীন হল। পাকিস্তান থেকে নাম হল বাংলাদেশ। লাল সবুজের পতাকাতলে সবাই জাতীয় সংঙ্গীত গেয়ে নতুন দেশকে স্বাগত জানাল।
দেশ স্বাধীন হবার পর বিভিন্ন দেশ থেকে স্বীকৃতিও পেল বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার ছেড়ে দিতে বাধ্য হল।
বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে বাংলাদেশকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেছেন।তাঁর উদার মনমানসিকতার কারনে অনেক রাজাকারদের শাস্তি মাফ করে দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ এখন সয়ংসম্পূর্ন রাষ্ট্র। এদেশের জনগণের আত্মত্যাগের মাধ্যমে, ত্রিশলক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে এবং মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এক স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র যার নাম গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।এ আমাদের গর্বের বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ননীগোপাল ভদ্র আবারো এলাকাবাসীকে স্মরণ করলেন।সবাই স্বত:স্ফূত ভাবে তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন।
“কি,কেমন লাগছে এখন। বলেছিলাম না? এদেশ একদিন স্বাধীন হবে ? এ দেশের আমরা উন্নয়ন করব,যদিও আমাদের এগুলো একার কাজ নয়। সবাই মিলেমেশে দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের সাথে কাজ করতে হবে।তাহলেই এদেশ বিশ্বের মধ্যে একটা উন্নত দেশ হিসাবে পরিগণিত হবে।“বললেন, ননীগোপাল ভদ্র।
দেশের সবার মধ্যে দেশপ্রেম ছিলো বলেই এই দেশ আজ স্বাধীন হয়েছে।নিজেদের কঠোর পরিশ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে দেশের বেহাল অবস্থা থেকে এক সমৃদ্ধশীল দেশে পরিনত করতে পেরে বাংলাদেশের মানুষ আজ গর্বিত।তাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা হচ্ছে অহংকার।
স্বাধীনতার অনেক বছর কেটে গেল। গ্রামের রাস্তাঘাঠ পাকা হয়েছে। যানবাহন সুবিধাও অনেক হয়েছে।সর্বদাই উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু নির্মান করা হয়েছে,দেশের উত্তরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার জন্য। দেশে যাতায়াত ব্যবস্থার সার্বিক উন্নতি সাধন করা হয়েছে।।খেলাধূলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের মধ্যে সেরা দেশ হিসাবে গণ্য হয়েছে।
বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তিতে অস্বাভাবিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আজ আর সেই অগোছাল অবস্থা বাংলাদেশের নাই।
গ্রামের চিত্র পাল্টে গিয়াছে।ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
অতীতের সেই ইছামতী গ্রামসহ দেশের আটষট্টিহাজার গ্রমের বেহাল অবস্থা আজ আর নাই।দেশের গ্রামগুলো এখন ছোট্ট ছোট্ট শহরে পরিণত হয়েছে।শুধু একটি গ্রাম নয় প্রত্যেক গ্রামই শহরের মত সব সুবিধাই পাচ্ছে।গ্রামের সবাই এখন ইন্টারনেটের সুবিধা ভোগ করছে।
আজ ইছামতী গ্রাম দেশের মধ্যে একটি মডেল গ্রাম হিসাবে পরিচিত। এমন গ্রামের উন্নতি বাংলাদেশের অনেক গ্রামই এখন হয়েছে।বাংলাদেশে আটষট্টি হাজার গ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।এই কথাটি অস্বীকার করার উপায় নাই। গ্রামের উন্নয়নই বাংলাদেশের উন্নয়ন।একদিন এই স্বাধীন সার্বোভৌমত্ব বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে একটি মডেল দেশ হিসাবে পরিচিতি পাবে।
বাংলাদেশের পোষাকশিল্প বিশ্বের দরবারে একচ্ছত্র স্থান করে নিয়েছে।
বাংলাদেশের গার্মেন্স সেক্টরে র্গ্রামের অসহায় মানুষদের কর্মসংস্থান হয়েছে। চারিদিকে আনন্দের জোয়ার বইছে।
বাংলাদেশের মানুষ এখন খুবই সুখ স্বাচ্ছন্দে বসবাস করছে।নিজেরা জমিতে ফসল ফলাচ্ছে,শাকশব্জি আবাদ করছে। পুকুরে মাছ চাষ করছে।
সবাই এখন স্বাধীন মত চলাফেরা করছে এবং চাকুরী অথবা ব্যবসা করে সরলভাবে জীবনযাপন করছে।
পরাধীনতার গ্লানি থেকে আজ বাংলাদেশীরা মুক্ত।তাছাড়া উন্নয়নের জোয়ারে বাংলাদেশ ভাসছে।
বাংলাদেশে উৎপাদিত অনেক পণ্যই এখন বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে।
তাই বাংলাদেশীরা মনে করে স্বাধীন বাংলাদেশ আমাদের গর্ব ,আমাদের অহংকার।অনেক কষ্টে আমরা অর্জন করেছি এই মহান স্বাধীনতা।স্বাধীনতার মর্যাদা আমরা চিরদিন অটুট রাখব।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
বাংলাদেশের মানুষ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জন করেছে মহান স্বাধীনতা।বিশেষ করে গ্রামবাংলার নিগৃহীত নিযাতিত মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এই দেশের স্বাধীনতা। যা অর্জিত হয়েছে দীর্ঘ ন’মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।। স্বাধীনতার জন্যই দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বহিবিশ্বে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।দেশের জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম থাকার কারণেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি।স্বাধীনতা পেয়ে আমরা ধন্য।স্বাধীনতা বআমাদের অহংকার। বাংলাদেশ আমাদের গর্বের দেশ।
২০ মে - ২০২০
গল্প/কবিতা:
৪৪ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪