প্রত্যাশার কুলখানি

প্রত্যাশা (আগষ্ট ২০২২)

সাদিকুল ইসলাম
মোট ভোট প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.৩৩
  • 0
  • ২৯০
ঘুমন্ত সাগরে হাবুডুবু খেয়ে আজ প্রায় ক্লান্ত,
আর কত? এই উত্তাল সাগরের কিনারের দৌড় আর কত দূর।
অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে,
আশ্বাসের নিশ্বাস আজ বন্ধ হবার উপক্রম।
তবুও
রাঙা ভোরে পূব আকাশের সোনালী আভায়,
প্রত্যাশা পূরণের স্বপ্ন বুনি।
বেলা গড়িয়ে স্নিগ্ধ বিকেল,
রংমহলের রঙিন ধূলা গায়ে মেখে ,
সীমাহীন সীমান্তের চরকিতে আজও ডিগবাজি খাই।
সোনালী সূর্যের কোমলতায় গাঁ দুলিয়ে ,
আনমনে চলতে চলতে ,
মনোবাসনার চরক গাছে উঠে গেছি মোহের নেশায়,
চৈত্রের খরতাপে চরক গাছ আজ ছানাবড়া,
প্রত্যাশার এভারেস্টে দাড়িয়ে হিমবাহের ঘূর্ণিতে,
উড়ে যাবার ভয়ে মনের মন্দিরে পূজার্চনায় মশগুল।
সাথে থাকে প্রাণপণে টিকে থাকার লড়াই।
রক্তিম হলিখেলায়,
হঠাৎ যখন প্রশান্তির আবরন ছেড়ে,
ইচ্ছার মানসপুত্র রেগে আগুন হয়ে স্ফুলিঙ্গ ছড়াচ্ছে ,
তখন অবারিত মাঠের বুক ফাঁটা কান্নার অন্তর্দহন,
চিরসবুজ তকমা পাওয়ার আশায়,
চিরকুমার সমিতির খাতায় নতুন করে নাম লেখাতে ব্যস্ত।

উদাস বনের বানর হয়ে নাচতে নাচতে আজ প্রায় ক্লান্ত,
আর কত? এ বনের শেষ কোথায়?
অভিজ্ঞতার রশি ধরে ঝুলতে ঝুলতে
আজ আমি সার্কাসের সেরা পাত্র।
লোক হাঁসাই, মজা দেই কিন্তু মজা পাইনা।
সুদিনের প্রত্যাশার চিরকুটটি,
প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির মোহের ছুরির কষাঘাতে হয়ে গেছে ছিন্নভিন্ন।
শত বন দাবানলের ছোঁয়ায় জ্বলে পুড়ে হয়ে গেছে ছাঁই।
কিন্তু আজ,
উদাস বনে দাবানলের পরাজয় দেখে,
অগত্যা অপমানের জ্বালায়,
অভিমানের টিকেট কেটে,
দীর্ঘশ্বাসের দমকা হাওয়ায় পাল তুলে,
মহাকালের অভিমুখে যাত্রার আগাম প্রস্তুতি।

কর্তব্যের পায়ে পা মিলিয়ে চলতে চলতে,
আজ আমি আমড়া কাঠের ঢেঁকি।
এতকাল ধরে সুবধ বালকের টুপি পড়ে ,
ভেবেছিলাম খ্যাতির ঝুড়ি মেলা ভার,
অন্ততঃ কয়েক যুগ সম্মানের খড়ম পায়ে ঘুরে বেড়াবো।
কিন্তু নিয়তির মাল্য আপাদমস্তক,
যা আজ অনেকটাই শুকিয়ে শুকনো পাতার মত মরমরে,
নিষ্ঠুরতার পায়ে পিষ্ট হয়ে ভেঙ্গেচুরে চুরমার।
আর বাকি ফুলে নেত্রকুলের নোনা জলে,
অবিরাম ভিজে তিক্ততায় পচন ধরেছে।

যাপিত জীবন নদীর মোহনায়,
খরস্রোতার ঘূর্ণিতে,
স্বপ্ন নামের তরীটি ঘোরপাক খাচ্ছে।
শিশুকালে স্বপ্নবাজ হয়ে হৃদয়ের অংকুরে
মানুষের মত মনুষ হওয়ার যে বীজ বুনেছিলাম,
আজ তা বিশাল বটছায়ে পরিনত,
যার তলে হাজার প্রাণের আলিঙ্গন।
কিন্তু আফসোস মানুষ হয়েছি বটে
সুচতুর বুদ্ধিও রয়েছে ঘটে,
তবে মনুষত্বের পরশ পাথর অনুপস্থিত ।
যার চিত্র খুঁজে পাই বিদ্ধাশ্রমে,
যেখানে শুধু পরাজিত স্বপ্ন পোড়ার গন্ধ,
যেখানে প্রতিনিয়ত দীর্ঘশ্বাসের বাতাস,
চার দেয়ালে আচরে পরে করুন আকুতি নিয়ে,
যেখানের নিরব কান্নার বজ্রসম শব্দ,
বধির বিবেকী কর্ণে আজও আঘাত হানতে পারে নি।

স্বপ্নপঁচা মাংসের স্তুপে দাড়িয়ে,
গায়ে পারফিউম মাখার অপচেষ্টা,
যার প্রতিচ্ছবি শ্রীঘরের প্রতিটি কর্ণিশে।
নিষ্ঠুরতার দমকল হাকিয়ে,
স্বার্থপরতা চাবুক দাপিয়ে,
যারা অন্যের প্রত্যাশার কুলখানি রচে দিল,
তাদের স্বপ্নজাল চৌদ্দ শিকের ভিতরে,
আজ মেঘযুক্ত আকাশে সূর্যের আলো খুঁজে বেড়ায়।

কর্মফল ভোগের চরম স্বাক্ষী আজ নির্বাক,
এই নিরবতা আর কত?
কিসের আঘাতে ভাঙ্গবে এই কাপুরুষোচিত নিরবতা?
যেখানে পেট্রোল বোমায় নিরীহ প্রাণের সকট সমাধী,
যেখানে ক্ষমতা নামের লজেন্স চুষতে গিয়ে
রক্ত পঁচা গন্ধ শুকছে শকুনির দল,
মানবতার শীতলপাটি পেতে দেয়ার লোভ দেখিয়ে
গনকবরের পথে টেনে নিচ্ছে দুপায়ী হায়নারা,
দেশমাতার কোলে নিষ্প্রান শিশু,
মায়ের আখিতে শক্রু হননের অগ্নি জল।

স্বাধীনতার বাক যখন নির্বাক,
তখন প্রত্যাশার কুলখানি অনিবার্য।
এসো হে জাগরুক, ঘুমিওনা আর, ঘুমিওনা আর,
আর কত রাত যাবে ঘন কালো অমাবস্যায়,
আর কত রবো অমানুষের ভিড়ে,
যেতে চাই সুদিনের মমতার তীরে,
তোমায় ডাকিছে প্রত্যাশী দল,
সময় এসেছে, হাতে তুলে ধরো প্রত্যাশার আলো,
মরে গিয়ে রহিবে অমর, সকলে বাসিবে ভালো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মাইদুল সরকার অভিনন্দন।
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ফয়জুল মহী অনবদ্য প্রকাশ মুগ্ধতা রেখে গেলাম

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

মানুষের আশা অসীম তাই সমীমতা গ্রাস করে মনোকষ্টের কারন।

০৬ আগষ্ট - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.৩৩

বিচারক স্কোরঃ ২.৩৩ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ৩ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“এপ্রিল ২০২৪” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী