ছেলেবেলা ****(একাল)
টেবিলের পাশে বিশাল রুটিন,মা রেখে দিয়েছে।
স্কুলের পর কোচিং, পরে প্রাইভেটে পড়া আছে। 
বিরতি তে কিছু টিফিন খেয়ে আবার ক্লাসে বসে
সারাদিন কাটে এভাবে, এক চক্রে ঘুরতে থাকে।
বই এর বোঝা কাঁধে নিয়ে কুঁজো হয়ে হাঁটে
বই শুধু নাম্বার পেতে,অর্জন নাই ওটা হতে। 
টেবিলের পাশে মা ছেলেকে মুখে তুলে খাওয়ায়
জেগে আছে মা যতক্ষণ হয়নি পড়া ছেলের।
ছেলে কেমন ঝিমিয়ে যাচ্ছে, করে মাথা ব্যথা 
ডাক্তার সব দেখিয়ে যাচ্ছি সারছে না সে ব্যথা 
কৌটার দুধ, হরলিক্স,ডিম সবই তো দিচ্ছি
তবুও কেন ছেলে রুগ্ন, ও বাড়ির রানা বেশ! 
গাইড বুক নিয়ে মা ব্যস্ত, ক'টা কিনে দিবে!
রানা যদি হয় ফার্রষ্ট দেখানো যাবে কি মুখ?
বাহিরেতে একা যাবে না ছেলে, অনেক বিপত্তি
মানুষ বেশে বিকৃতরা আছে ওত পেতে।
যেখানেই যাক মা যাবে সাথে নয় তো বাবা 
সন্তান একটু আড়ালে হলে দুঃচিন্তায় থাকা।
খেলাধুলা মানে ছেলে জানে শুধু কম্পিউটারে গেম্স
কখনও দেখে ইংলিশ কার্টুন, বাংলাতে নাই জ্ঞান। 
কম্পিউটার, ট্যাবে যুদ্ধ খেলে মনটা হয় যান্ত্রিক
খোলা মাঠ তারা দেখেনি কখনো, মনটা তাই বন্দী।
অল্প বয়সে হিংসা আর অহমিকা তারা শেখে। 
আমার আছে এটা সেটা, তোমার আছে কি হে? 
কাড়ি কাড়ি টাকা ছেলের পিছনে এ বয়সেই লাগে
মোটা অঙ্কের ডোনেশন দিয়ে স্কুল-কলেজ খোঁজে।
কখনো তারা বেড়াতে যায় মিনি চিড়িয়াখানা 
হাস-মুরগি দেখেই তারা আনন্দে আটখানা। 
বাবা-মা ভাবে ছেলে আমার খুব মজা পেল 
স্বাধীনতার গন্ডিটা খুবই ছোট হয়ে এলো।
ছেলেবেলা **** (সেকাল)
চোখ বন্ধ করলে চলে আসে ছেলেবেলা 
সহজ সুন্দর মুক্ত শৈশব। 
ভোরের আলোতে শিশির ভেজা ঘাসে 
খালি পায়ে হেঁটে বেড়ানো,
লজ্জাবতীর পাতা ছুঁয়ে লজ্জা জাগানো।
কখনো ঘাস ফড়িং এর পিছু ছুটতে ছুটতে
নদীর ধারে পৌঁছে যাওয়া। 
ছোট চাচা ছিল আমার প্রধান খেলার সাথী, 
রোজই নানা দুষ্টুমির নকশা। 
যেমন,চল আজ মৌচাক থেকে মধু খাবো।
কাঁচা মাটির উঁচু পথের দু'পাশে নীচু ক্ষেত 
ছুটতে যেয়ে মনে হত ছুঁয়ে ফেলব আকাশকে। 
মুক্ত হাওয়া কখনো আমার কানে কানে বলত 
সামনে আরও সামনে,ছুটে চলো।
পাখির সুরে সুর তুলে হাওয়ার তালে নেচে উঠা
নদীর তীরে এসে ওপারের দিকে চেয়ে চেয়ে 
ভাবতাম,ওপারটা কত না সুন্দর!
প্রজাপতি পাখা মেলে মিশে যেত রংধনুর সাথে। 
কি অদ্ভুত! আমি চেয়ে থাকতাম।
ঘাটে বাঁধা নৌকাটি নিয়ে একাই বেড়িয়ে যেতাম।
দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট খেলাতে কাটত সারাদিন। 
স্বাধীনতা মানে হয়ত ওটাই ছিল। 
এত সবের মাঝে স্কুলের পড়াটাও ঠিকই হয়ে যেত। 
রাতে দ্যা সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান বা নাইট্রাইডার 
সিরিয়াল গুলো না দেখলেই নয়।
সন্তানের দুরন্তপণায় মা দের কখনো হয়নি দুঃচিন্তা।
বাবা যায়নি স্কুলে আমাদের খোঁজ নিতে কখনও,
পড়াটা বোঝা ছিল না,ছিল না কোচিং এর রুটিন। 
তবু পড়েছি আমরা নিজের মতো করে। 
হয়ত বা বকেছে মা খাবার খাইনি বলে,
স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করেছে সকলে পূর্ণ রূপে।
            
                        
            
            
            
                        
            
            
                        
            
         
        
               
   
            
                
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
                ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
                ছেলেবেলার একটি অংশ কৈশোর। জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় হলো ছেলেবেলা। যেখানে মানুষের বারবার ফিরার আকুতি রয়ে যায়। একটা সময়ে তেমন ছেলেবেলা ছিল, স্বাধীন স্বপ্নময়ী কৈশোর। যা ছেলেবেলা (সেকাল) এ প্রকাশ ঘটেছে। কিন্তু এখনকার চিত্র আলাদা। ছেলেবেলাটা বাঁধা আছে রুটিনের বেড়াজালে। বেশ যান্ত্রিক। কৈশোরের এই যান্ত্রিকতার বহিঃপ্রকাশ ছেলেবেলা (একাল) এ ফুটে উঠেছে। তবে ছেলেবেলাটা মধুর স্বাধীনতাপূর্ণ হওয়াটাই কাম্য। 
            
    
    
                    
        
        
            
            
                 ২১ জুলাই  - ২০১৯ 
                                        
                            গল্প/কবিতা:
                            ১ টি
                        
                    
            
            
         
     
    
        
বিজ্ঞপ্তি
        এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
    
    
        প্রতি মাসেই পুরস্কার
        
            বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
        
        
            লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
            
                - 
                    
                    
                        প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
                        প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
                     
- 
                    
                    
                        দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
                        প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
                     
- 
                    
                    
                        তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
                     
 
     
    
        
        বিজ্ঞপ্তি
        “নভেম্বর ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
        প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী