পাঁচ পাঁচটি বছর হাতে হাত রেখে ইউনিভার্সিটি লাইফ পার করা স্মৃতি ও সজলের বাকি জীবনটা একসাথে কাটিয়ে দেয়া আর হলো না।
ক্ষোভ ও হতাশার সাথে বুক ভরা অভিমান আর পরিবারের অভিবাবকরা 'সুযোগ্য পাত্র' হাতছাড়া করতে না চাওয়ায় স্মৃতি সজলকে দেয়া তার 'কমিটমেন্ট' রক্ষা করতে পারেনি, ফলে পিছনে পড়ে থাকে শুধু 'সজল-স্মৃতি'র যৌথভাবে স্বপ্ন দেখার মধুময় স্মৃতি।
জীবনের প্রথম চাকরী পেয়ে সজল স্মৃতিকে জানাতে ভুল করেনি, যে চাকরী পরবর্তী স্বপ্ন-সুখে এক সময় বিভোর ছিল তারা।
- ভালো স্যালারিতে আমি এইচ আর গ্রুপে চাকরি পেয়েছি, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং), আগামীকাল জয়েনিং।
- কোন গ্রুপ?
- এইচ আর গ্রুপ।
- 'কংগ্রাচুলেশন্স' বলে স্মৃতি ফোন রেখে দিলো।
বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর সজলের সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখেনি স্মৃতি, মোবাইল নম্বরটাও বদলে ফেলেছিলো সে। সজলও রাগে, ক্ষোভে আর অভিমানে স্মৃতির সাথে পরবর্তীতে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেনি।
এজন্যই পরদিন উভয়ের জন্যই অপেক্ষা করছিল বড় চমক।
কারণ সজল জানে না যে, এইচ আর গ্রুপের মালিক হারুনুর রশীদ সাহেব স্মৃতির শশুর, তার হাজব্যান্ড ঐ গ্রুপের ডি এম ডি আর শশুর ও হাসব্যান্ডের পীড়াপীড়িতে সেও আগামীকাল ডিরেক্টর (ইঞ্জিনিয়ারিং) হিসেবে সেখানে জয়েন করতে যাচ্ছে।
সজলকে তো সে জানে, যে ধরনের অভিমানী আর একরোখা, এইচ আর গ্রুপের এ বিষয়টি জানলে হয়ত সে চাকরির ইন্টারভিউ-ই দিত না। কাল সব জানার পর 'কন্টিনিউ' করবে কি - না, তা নিয়েও স্মৃতির সন্দেহ ছিল।
কিন্তু না, ব্যতিক্রমধর্মী কিছুই ঘটেনি পরেরদিন। সজল চাকরিটা ছেড়ে দেয়নি; বলা যায়, দিতে পারেনি। কারণ পরিবার তার উপার্জনের দিকে পথ চেয়ে থাকে। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা আর ছোটবোনেৱ পড়াশোনাৱ দায়িত্বও যে তার কাঁধে, যে দায়িত্ববোধের জন্য সে হুট করে স্মৃতিকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি, চাকরী পেয়ে একটু গুছিয়ে নিতে চেয়েছিলো সে। তার এই 'গুছিয়ে নিতে চাওয়া' কাল হয়ে দাঁড়ায় তাদের ভালোবাসার জন্যে, রাগে-অভিমানে পরিবারের পক্ষ থেকে পছন্দ করা 'পাত্র'কেই বিয়ে করে ফেলে স্মৃতি।
এখন দেখা হলে সজল আর আগের মত স্মৃতির সাথে চোখে চোখে তাকায় না - যে চোখে তাকিয়ে সে অনেকক্ষণ ধরে ভালোবাসার গভীরতা খুঁজতো। সালাম দিয়ে কোন মতে তাকে এড়িয়ে যেতে পারলেই সে বাঁচে। জীবনের প্রয়োজনে বাস্তবতার সাথে অভিযোজনের চেষ্টায় আছে সে। জীবনের প্রয়োজনীয়তা যেখানে মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়, ভালোবাসা সেখানে অনেক সময়ই পথ হারিয়ে ফেলে, কাজেই রাগ আর অভিমান সেখানে মূল্যহীন হয়ে যায়।
তাকে নিয়ে স্মৃতি কী ভাবছে, তা সে জানতেও চায়না। তার কাছে এখন স্মৃতির একটাই পরিচয় - 'ম্যাডাম', যে এখন ডিরেক্টর (ইঞ্জিনিয়ারিং)।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী
সুন্দর সাবলীল উপস্থাপন।
অনেক ভালো লাগলো প্রিয়
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
পাঁচ পাঁচটি বছর হাতে হাত রেখে ইউনিভার্সিটি লাইফ পার করা স্মৃতি ও সজলের বাকি জীবনটা একসাথে কাটিয়ে দেয়া আর হলো না।
১৬ জুলাই - ২০১৯
গল্প/কবিতা:
১৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।