দূরদ্বীপবাসিনী

একটি বিয়ে (আগষ্ট ২০১৯)

কাজী প্রিয়াংকা সিলমী
  • ১২
  • ৩৯
শেষমেষ এবার কি কিছু একটা হবে? ভেবেই সিয়াম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কিন্তু মেয়েটা পেঁয়াজ খায় না। বাংলাদেশী কোন রান্নাই তো পেঁয়াজ ছাড়া করা যায় না। তারপর দুশ্চিন্তার উৎসটা চিন্তা করে নিজ মনেই হেসে উঠে। সত্যিই যদি মেয়েটার সাথে কিছু হয়, তাহলে এই পেঁয়াজ সমস্যার চাইতেও অনেক বড় সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। সে যে কেন এই তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছে, কে জানে!
আচ্ছা, বাবা-মা এটাকে কিভাবে নেবে? সিয়ামকে বিয়ে দেবার জন্য মা যতটা মরিয়া হয়ে উঠেছেন, হয়তো খুব একটা বাধা দেবেন না। বয়স তো কম হয়নি সিয়ামের! কি ভাবে যে জীবনের পঁয়ত্রিশটা বসন্ত পার হয়ে গিয়েছে, ভাবতে গেলে নিজেরই অবাক লাগে।
সেদিন মা কথায় কথায় বলছিলেন, ‘তোর ভার্সিটিতে কোন মেয়ের সাথে পছন্দ-টছন্দ ছিল নাকি? তাদের বুঝি বিয়ে হয়ে গিয়েছে?
এমন ভাব, যেন সিয়াম প্রেম না করে বিশাল ভুল করে ফেলেছে! সারাজীবন বাবা-মা প্রেম করা ব্যাপারটাকে নিরুৎসাহিত করেছেন। আর এখন খোঁজ নিচ্ছেন, পছন্দের মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে কি না! বাংলাদেশের বাবা-মায়ের পক্ষেই এমনটা করা সম্ভব!
ভার্সিটিদিনের কথা চিন্তা করে আরও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিয়াম। বুয়েটে পড়ার দিনগুলো নিয়ে অনেক মধুর স্মৃতি আছে। কিন্তু এখন মনে হয় প্রেম করার অভিজ্ঞতাটা সঞ্চয় না করা ভুল হয়ে গিয়েছে। ভার্সিটি জীবনটাই মনে হয় চুটিয়ে প্রেম করার শ্রেষ্ঠ সময়-- এর পরে ভালো করে প্রেম করার সুযোগ পাওয়াটা একটু মুশকিল।
তবে নিজেকে খুব বেশি দোষও দিতে পারে না। এমনিতেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া মেয়ের সংখ্যা কম, তার উপর সিয়াম ছিল মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে- সেটার অবস্থা ছিল ছেলেদের মাদ্রাসার চেয়ে অল্প কয়েক ধাপ উপরে-- ওদের ব্যাচে একশ বিশ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে মেয়ে ছিল মাত্র আটজন। তার মধ্যে একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল ফার্স্ট ইয়ারে। চারজনের ভার্সিটি শুরু হবার আগে থেকেই প্রেম ছিল। একজনকে এক বন্ধু বুয়েটের প্রথম সপ্তাহেই পটিয়ে ফেলল। আর বাকি দুজন ছিল ছিল মরুভূমিতে দু'ফোটা জলের মতন। তাদের পেছনে ক্লাসমেট-সিনিয়ার মিলে এত ছেলে ঘুরঘুর করত যে তাদের সাথে প্রেম করার চিন্তা কখনও মাথায় আসেনি সিয়ামের।
কিউবিকেলের দেয়ালে টোকার শব্দে মাথা তুলে তাকায় সিয়াম। দাঁড়িয়ে আছে ওর মারাঠী সহকর্মী-বন্ধু। ‘কি খবর রাশমী, কেমন আছ?
‘আমার কথা কি তোমার আর মনে আছে? অন্তত রাইমার জন্য হলেও তো আমাদের বাড়িতে আসতে পার। রাশমী অনুযোগের সুরে বলে। কয়েক মাস হল রাশমীর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ কম হয়, আড্ডাবাজিও।
‘হুম, রাইমাকে অনেকদিন দেখি না। একদিন আসব তোমাদের বাসায়। একসময় রাশমীর চার বছরের মেয়ে রাইমার সাথে অনেক সময় কাটানো হত। বাচ্চাটা সিয়ামের মহাভক্ত, সিয়ামও রাইমার পাকা পাকা কথা শোনার লোভে সঙ্গ চাইত। ইদানিং রাশমী অন্য বিল্ডিংয়ে বসে বলে একসাথে বেড়ানোর পরিকল্পনা আর করা হয়ে ওঠে না।
‘পরশু আমরা তিনজন বীচে যাব। ভাবলাম তুমিও যাবে কি না, তা-ই বলে যাই। রাশমী বলে।
‘হ্যা, যাওয়া যায়। সিয়াম সায় দেয়।
‘ওকে! ডান! লাস্ট মিনিটে আবার ক্যান্সেল করোনা। রাইমা তাহলে আমার লাইফ হেল করে দেবে। আমি রেগে গেলে কিন্তু তোমার সাথে আমার যে সুইমস্যুট পরা ছবিটা আছে তা ফেসবুকে পোস্ট করে দেব! রাশমী মিথ্যা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
সিয়াম রাশমীকে গল্প করেছিল যে একবার এক পাত্রীর বাবা ফেসবুকে অফিসের বারবিকিউ পার্টির ছবি দেখে কিভাবে ওকে বাতিল করে দিয়েছিল। তারপর থেকে শাসানোর প্রয়োজন পড়লেই রাশমী খালি ভয় দেখায় যে সে সিয়ামের কোন একটা ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেবে। ভারতেও এরেঞ্জড ম্যারেজের নিয়মগুলো একই রকম, তাই পাত্রীর বাবার কাছে বাতিল হওয়ার আয়রনি বুঝতে রাশমীর কষ্ট হয় নি। বোঝাতে কষ্ট হয়েছিল মাকে।
‘তুই ওসব ছবি সরিয়ে রাখতে পারিস না? মা খুব বিরক্ত হয়ে বলেছিল।
‘মা, আমি তো বিয়ার খাচ্ছিলাম না। সামনে টেবিলে রাখা ছিল। আমি কি এখন অফিসের সবাইকে বলবভাইসব, আমার বিয়ে আটকে যাচ্ছে, তোমরা কেউ দয়া করে মদ খেও না?’ সিয়ামের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে ফেসবুকে ট্যাগড ছবির জন্য এই বুড়ো বয়সে তাকে মায়ের কাছে কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে।
‘আমি সেটা বললাম কোথায়?’ সিয়াম যে ব্যঙ্গ করে কৌতুক করছিল মা যেন ধরতেই পারেন নি। আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে ওরকম ছবি তুই তোর ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দিস।
আদেশটা বেশ অপমানজনক মনে হয়েছিল। আমি কোন লুকোচুরি করে বিয়ে করতে চাই না। তুমি এরকম ঘ্যানঘ্যান করলে, আমি ফেসবুকই বন্ধ করে দেব। বুলেছিল সিয়াম।
‘না, না! অমন করিস না!' মা প্রায় আঁতকে উঠেছিলেন, একেবারে ফেসবুক না থাকলে লোকে আরও সন্দেহ করবে!’।
পুরানো কথা ভেবে নিজের মনেই হাসছিল। মাথা উঁচু করে সামনে তাকাতেই মেয়েটার সাথে আবার । চোখাচোখি হয়। সিয়ামের হাসিমুখ দেখে মেয়েটাও হাসে। এ নিয়ে কতবার এমন চোখাচোখি, মুখ টিপে হাসাহাসি হল?
মেয়েটাকে মা মনে হয় পছন্দ করবেন - মায়ের ফরসা নাতি-নাতনির শখ। পাত্রী খোঁজার সময় মেয়ের গায়ের রং একটু চাপার দিকে হলেই মা তাদের বাতিলের খাতায় ফেলার চেষ্টা করেন। আর বাবা হয়তো ধর্ম নিয়ে ঝামেলা করবেন। নির্ঘাত বলবেন যে মেয়েটাকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হতে হবে।
মাথার এলোমেলো চিন্তা তাড়াতে কিউবিকেল থেকে উঠে খামোখাই রেস্টরুমে যায় সিয়াম। হাত ধুতে ধুতে আয়নায় তাকায়-- মাথায় কিছু সাদা চুল এসেছে, পাঁচ বছর আগের চেয়ে গালে কিছুটা মাংস লেগেছে। হালকা একটা ভুড়িও হয়েছে। কিন্তু তাও নিজেকে সুদর্শনই মনে হয়। মেয়েটা কি প্রথম দর্শনেই ওর প্রেমে পড়ে গেল?
ম্যানেজার যখন সিয়ামের কিউবিকেলে এসে সিয়ামের নামটা বলে পরিচয় করিয়ে দিল, তখনই অন্যরকম চোখে তাকিয়েছিল মেয়েটি। আর তারপর যতবারই মাথা তুলে তাকিয়েছে মেয়েটার চোখে চোখ পড়েছে। সিয়াম সেটা প্রথমে গোনায় ধরেনি । ওদের প্রায় মুখোমুখি কিউবিকেল। অজান্তে চোখাচোখি হতেই পারে।
কিন্তু লাঞ্চে যখন মেয়েটা টিমের আর সবাইকে বাদ দিয়ে ওর পাশে বসে গল্প করা শুরু করল, তখন একটু রোমাঞ্চ অনুভব করেছিল।
‘তোমার নাম সিয়াম, তাই না? তুমি কোথাকার? মেয়েটা আগ্রহভরে জিজ্ঞাসা করেছিল।
মেয়েটা তাকে অন্যদের মতন ভারতীয় ভাবে নি। সেটা সিয়ামের ভাল লেগেছিল। সিয়াম হাসিমুখে বলেছিল, অনুমান করতে চাও?
মেয়েটা মাথা নেড়ে না জানিয়েছিল। একদম না, আমি এসব অনুমান করতে পছন্দ করি না। সবাই ভাবে যে আমি চাইনিজ। আমার তখন খুব রাগ লাগে!

‘কিছু মনে না করলে জানতে পারি কি, তুমি কোথাকার?
‘আমি থাই, বাড়ি ফুকেতে। গ্র্যাডস্কুলের জন্য আমেরিকাতে আসা। নিউ ইয়র্কে মাস্টার্স করেছি। পাশ করে আমেরিকান ড্রিমের খোঁজে এই সিলিকন ভ্যালিতে চাকরী করতে আসা। মেয়েটা যেন ধরেই নিয়েছিল যে সিয়াম ফুকেত চেনে। আসলে চেনেও।
‘ওহ! তোমার বাড়ি ফুকেতে! আমি কখনও যাইনি কিন্তু ফেসবুকে বাংলাদেশে থাকা বন্ধুদের ক্যামেরায় অনেক ছবি দেখেছি। এটাও জানি যে ফুকেত থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় দ্বীপ!
‘ও তুমি বাংলাদেশের? তোমাদের দেশের মানুষ বুঝি অনেক থাইল্যান্ডে বেড়াতে যায়?
‘দেশের মানুষ ভাবলে যে খেটে-খাওয়া শ্রমিক-চাষীদের ছবি মনে ভাসে, তারা তো বেড়াতে যায় না থাইল্যান্ডে। তারা হয়তো সারাজীবনে একটা বার কক্সবাজারেও যায় না। শ্বশুরবাড়ী-বাবার বাড়ী বা কাজের প্রয়োজন ছাড়া হয়তো কোথাওই বেড়ায় না তারা। তবে সিয়ামের ফেসবুকে যারা আছে, তারা তো আর ‘দেশের মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে না। একটু ভেবে তাই সিয়াম বলেছিল, যাদের পয়সা আছে তারা অনেকে যায়। কিন্তু আমাদের দেশের ধনী-গরীবের ব্যবধানটা খুব প্রকট। যাদের টাকা আছে তাদের অনেক টাকা, যাদের নেই, তাদের কিছুই নেই।
‘হুম, আমার দেশেও একই অবস্থা। এই কিছুদিন আগে করা এক গবেষণায় বের হয়েছে যে আমাদের দেশের এক শতাংশ মানুষ থাইল্যান্ডের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অর্থ নিয়ন্ত্রণ করে।
‘সঠিক স্ট্যাটিস্টিক্স বলতে পারব না, তবে আমাদের দেশেরও একই রকম হওয়ার কথা। সিয়াম জানিয়েছিল। নিজের দেশের জিডিপি, ধনী-গরিব বৈষম্যের কোন পরিসংখ্যানের ব্যাপারে কোন ধারণা নেই বলে লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি কথা ঘোরানোর চেষ্টা করেছিল। 'বাই দ্যা ওয়ে, এজ ইউ নো অলরেডি, আমি বাংলাদেশী। প্রথম এসেছিলাম টেক্সাসে-- মাস্টার্স করতে। তারপর চাকরি নিয়ে এখানে এসেছি। অবসরপ্রাপ্ত মা-বাবা এখনও বাংলাদেশেই থাকেন, সিয়ামও অন্যসময় যা বলে তার চেয়ে যেন বিশদেই নিজের পরিচয় দিয়েছিল।
‘ওহ! বাংলাদেশ! তোমাদের দেশের জনসংখ্যা তো সবচেয়ে বেশি বা এরকম কিছু শুনেছিলাম। ওহ না, ওয়েট, চায়নার জনসংখ্যা সব চেয়ে বেশি পৃথিবীতে। তোমাদের দেশের জনসংখ্যা কত?
সিয়াম আবার লজ্জা পেয়েছিল। স্কুলে থাকতে তেরো কোটি শিখেছিল, বর্তমানে জনসংখ্যা কত তা কিছুতেই মনে করতে পারছিল না। স্কুলের পরে প্রায় বিশ বছর পার হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে তো প্রায় বিশপঁচিশ কোটি হবার কথা। আন্দাজে বলে দিল, ধরো, দুইশ পঞ্চাশ মিলিয়নের মতন হবে।
কিন্তু মেয়েটা ইতিমধ্যে চট করে গুগল করে বলেছিল, ইন্টারনেট বলছে, প্রায় একশ তেষট্টি মিলিয়ন।

সিয়ামের এবার লজ্জায় লাল হবার পালা, ইশ, একদম ভুল বলেছি। আসলে স্কুলের পর আর এ ব্যাপারে তেমন পড়া হয় নি। তবে হ্যা, পত্রিকায় পড়েছিলাম যে বাংলাদেশ খুব ভাল ভাবে পপুলেশন কন্ট্রোল করেছে। তা না হলে, এত দিনে আরো অনেক বেশি হয়ে যেত জনসংখ্যা।
‘মাই পেন রাই। থাই ভাষায় এটার মানে হল কোন ব্যাপার না। আমরা ইঞ্জিনিয়াররা আমাদের ফিল্ডের বাইরের খবর কম রাখি। আমি একটু এসব সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যাপারে পড়তে বেশি ভালবাসি। আমার কথা ধােরো না। মেয়েটা যেন সিয়ামের বিব্রতভাবটা দূর করার জন্যই বলেছিল। সিয়াম আর বলে নি যে ওর জন্য এ হেতু খাটে না। তার বুয়েটের দুজন ঘনিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু বিশাল ব্লগার-- রাজনৈতিকসামাজিক সব বিষয় নিয়ে তারা চুলচেরা লিখালিখি করে। সিয়ামও দেশে থাকতে ভালই খোঁজ-খবর রাখত। আমেরিকাতে যত দিন যাচ্ছে, খবর রাখার অভ্যাসটা চলে যাচ্ছে।
মেয়েটার সাথে এরপর অনেক কথা হয়েছিল। শুধু নিজেদের দেশ নয়, ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়েও। তখনই জেনেছিল যে কোন একটা হজম জাতীয় সমস্যার জন্য সে পেঁয়াজ খায় না, তাই থাই রেস্টুরেন্টের খাবার সে খেতে পারে না। ছুটির দিনে সে মাছ ধরে। সিয়ামও জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল যে সে অবিবাহিত। তাই একা একা ছুটির দিন কাটানোর চেয়ে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে যেতে ভালবাসে। আর আমেরিকাতে কোনদিন মাছ না ধরলেও, সে অভিজ্ঞতা নেয়ার ইচ্ছা আছে।
কথায় কথায় মেয়েটা জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘আচ্ছা, সিয়াম কি তোমাদের দেশে খুব প্রচলিত নাম? আমি এমন নাম আগে শুনিনি।
সিয়াম চিন্তা করে বলেছিল, “নাহ, অত প্রচলিত না। আবার একদম যে অপ্রচলিত, তাও না। মাঝামাঝি আর কি। মেয়েটার আগ্রহ দেখে মনে মনে খুশিই হয়েছিল। ভেবেছিল মেয়েটার নাম নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করা যায় কি না। ওর নাম পোশা। বানানটা একদম গাড়ির লাক্সারি ব্র্যান্ড পোশার বানানের মতন, ওকে স্বাগত জানিয়ে ম্যানেজার যে ইমেইল করেছে তাতে খেয়াল করেছিল সিয়াম। কিন্তু তারপর ভেবেছিল, কে জানে গাড়ির ব্র্যাণ্ডের সাথে একজনের নামের মিল বের করাটা যদি অভদ্রতা হয়ে যায়? তাই অন্যদিকে প্রসঙ্গ পাল্টেছিল।
পুরো লাঞ্চের সময় জুড়ে এমন অনেক কথোপকথন হয়েছিল। ওদের নব্য সখ্যতা যেন অন্য সহকর্মীদেরও চোখে পড়েছিল। আরেক ভারতীয় সহকর্মী সিধু একটা ফাজিল - পাশ দিয়ে হেঁটে যাবার সময় হিন্দিতে বলে বসেছিল, ‘সিয়াম ভাই! খুব ছক্কা মারা হচ্ছে।
পোশা প্রশ্নের চোখে তাকাতেই, সিয়াম বিব্রতভাবে হড়বড় করে বলেছিল, ও ক্রিকেট খেলার কথা বলছিল। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই ক্রিকেট খুব জনপ্রিয় তো।

‘হুম, ক্রিকেট আমাদের দেশেও আজকাল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আচ্ছা, তোমার লাস্টনেম কি ‘ভাই' এ অফিসে কি সবাই সবাইকে পুরো নাম ধরে ডাকে?
‘আরে না!সিয়াম হেসে ফেলেছিল, ‘ভাই মানে হল ‘ব্রাদার। সাধারণত পুরুষ কেউ বয়সে বড় হলে, আমরা তার নামের শেষে ‘ভাই’ যোগ করি। সিধু আর আমার বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটির এক জুনিয়র একই সময়ে এই কোম্পানিতে জয়েন করেছিল। ঐ ছেলেটা আমাকে সিয়াম ভাই ডাকত, তার দেখাদেখিও সিধুও মজা করে ডাকে।
‘ওহ, তাই! আমরাও অমন করি। থাই ভাষায় তুমি আমার ছোট হলে আমার তোমাকে ডাকার কথা নং সিয়াম আর বড় হলে পি সিয়াম।
সিয়াম নির্ঘাত এই মেয়ের চেয়ে বয়সে বড়। তার ‘পি সিয়াম’ হবার কোনই ইচ্ছা নেই, তাই তাড়াতাড়ি বলেছিল, আমেরিকাতে যে শুধু নাম ধরে ডাকে, আমার সেটাই ভাল লাগে।
‘হুম আমারও। পোশা একমত হয়েছিল। আমাদের দেশের মানুষ অল্প পরিচয় হলেই অন্যের বয়স আর ইনকামের ব্যাপারে প্রশ্ন করতে ভালবাসে। অন্য দেশের মানুষ সেটাতে মাঝে মাঝে খুব বিব্রত হয়।
সিয়ামের মনে হয়েছিল তার নিজের বাবার কথা। বাসায় কোন বন্ধু আসলেই তার বেতন জিজ্ঞাসা করত, কি যে লজ্জায় পড়তে হত। আমাদের দেশেও যখন-তখন বেতন জিজ্ঞাসা করে বসে বয়স্করা। তবে বয়সের ব্যাপারে প্রশ্ন ওঠে না, বিশেষ করে মেয়েদের বয়সের ব্যাপারে। তোমাদের ওখানে মেয়েদের বয়সও জিজ্ঞাসা করে নাকি? সিয়াম অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিল।
‘হুম মেয়েদেরও। কারণ যে ছোট হয়, তাকে প্রথমে ওয়াই করতে হয়, ওয়াই হল ধর অনেকটা হিন্দুদের নমস্কারের মতন। আর সাধারণত যে বেশি আয় করে একসাথে খেতে গেলে তাকে পুরো বিলটা দেয়ার নিয়ম।
সিয়াম বাংলাদেশের সালাম দেয়ার প্রথার ব্যাপারে বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তখনই খেয়াল হয়েছিল যে লাঞ্চে অনেক সময় নেয়া হয়ে গিয়েছে। আরো দেরি করলে পরে বাসায় গিয়ে উইকএন্ডেও কাজ নিয়ে বসতে হবে।
কিন্তু ডেস্কে এসে কিছুতেই ভালো করে মন বসাতে পারে নি কাজে। মেয়েটার সাথে কোন সম্ভাবনা আছে কি না এমন আকাশ-কুসুম চিন্তা মাথায় আসে খালি।
বিশ-বাইশ বছর বয়সে যখন বেশিরভাগ ছেলেই প্রেম করার জন্য মুখিয়ে থাকে, তখন সিয়াম পড়াশোনা ছাড়া আর কোনকিছুর দিকে মন দেয় নি। পাশ করার পর ঢাকা ইউনিভার্সিটির একটা মেয়ের সাথে কিছুদিন ফোনে কথা হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটা একটু বেশি বেশি ফোন করে খালি কথা বলত। সিয়াম তখন

আমেরিকা পড়তে আসার জন্য টোফেল আর জিআরই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত। তাই সেই মেয়ের সাথে কোন কিছু আর এগোয় নি। পাশের বাড়ির ক্লাস নাইনে পড়া মেয়েটাও প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। নিজের ছোটবোনটাও একই বয়সী বলে তাকে বোনের মতন মনে হত। পাঁচ-ছয় বছরের ছোট বাচ্চা মেয়েটার প্রেমে সাড়া দিতে মন চায় নি।
অথচ এখন যে মেয়েগুলোর সাথে বিয়ের প্রস্তাব আসে তাদের বেশির ভাগের বয়স বাইশ-তেইশ বছর। মাঝে মাঝে মনে হয় শেষ পর্যন্ত হয়তো দশ-বারো বছরের ছোট কোন মেয়েকেই বিয়ে করা লাগবে। যখন ভাবে যে, সিয়ামের আঠারো বছর বয়সে মেয়েটার বয়স ছিল ছয়, তখন কিছুটা অস্বস্তি হয়।
তারপর আবার ভাবে সমস্যা কোথায়? প্রিয় লেখিকা আগাথা ক্রিস্টি মনে হয় চোদ্দ-পনের বছরের ছোট এক লোককে বিয়ে করেছিলেন। সেলিব্রিটিদের মধ্যে জর্জ কুনি আর আমাল কুনির বয়সের ব্যবধান প্রায় ১৭ বছর। কিন্তু সাধারণ মানুষ এরকম করলে কানাঘুষা পড়ে যায়।
কখনও কখনও ভাবে বিয়ে না করলে কি হয়? অনেকে তো বিয়ে করে না। কিন্তু তারপর সারাটা জীবন। একা কাটানোর সাহস হয় না।
যেকোন মাপকাঠিতে সিয়ামের জীবনটাকে বেশির ভাগ মানুষ ‘সুখী’ হিসেবে মূল্যায়ন করবে। আমেরিকায় ডিগ্রি করার পর এদেশীয় বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানিতে চাকরী করছে। যা বেতন পায়, তা যে কোন মানুষের কাছে ঈর্ষনীয় । আমেরিকার কোম্পানিটিই ওর গ্রিনকার্ডের স্পন্সর করেছে, ক’বছরের মধ্যেই আমেরিকার নাগরিক হয়ে যাবে সে। যে টেসলা গাড়িটা চালায়, তা-ও খুব পোজ-পাজের। ভ্যাকেশনে প্রচুর ভ্রমণ করে -- এর মধ্যেই সুদূর হাওয়াই-আলাস্কাসহ আমেরিকার প্রায় সব দর্শনীয় স্থান দেখা হয়ে গিয়েছে। ছুটির দিনে বন্ধু বা কলিগদের সাথে প্রায়ই এদিক-ওদিক বেড়ানো, হাইকিং বা বারবিকিউ করা হয়।
কিন্তু সব কিছু থাকার পরও কি যেন নেই। তাছাড়া, সিয়াম পত্রিকায় পড়েছে যে গবেষণা অনুযায়ী অবিবাহিত লোকরা খুব অসুখী হয় জীবনে, বিবাহিতদের চেয়ে এরা বাঁচেও কম। বিবাহ সকল সূখের মূল হলেও তা সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক।
প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে তো কম খোঁজাখুঁজি করা হচ্ছে না। শুরুর দিকে এতটা নিরাশাগ্রস্ত ছিল না। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, আশা হারাচ্ছে সে। এখন মনে হয়, আরও আগে থেকে গুরুত্ব দিয়ে খোঁজা শুরু করা উচিত ছিল।
মাঝে মাঝে মনে হয়, হয়তো যত সমস্যা সব নিজেরই -- আর সবাই তো দিব্যি বিয়ে করে বউ আনে দেশ থেকে! দেশী বন্ধু-বান্ধবের বউরা ওকে নিয়ে মজা করে প্রায়ই, ভাইয়া, আপনার মতন পাত্র কিভাবে বউ। পায় না? আপনি কি মিস ওয়ার্ল্ড টাইপের কাউকে খুঁজছেন? কেমন মেয়ে চান বলেন। আমরা লিস্ট বানিয়ে আপনার জন্য মেয়ে খুঁজে আনি।

সিয়াম এ ধরণের প্রশ্নে প্রচন্ড বিরক্ত হয়, আজকাল তাই অনেক বাংলাদেশী দাওয়াতেই যায় না। তার মনে হয় না যে সে খুব একটা খুঁতখুতে। মেয়ে অনেক সুন্দরী হতে হবে এমন কোন বাধ্য-বাধকতা নেই তার। মোটামুটি চেহারা হলেই হবে। শিক্ষিত হতে হবে, অন্তত ব্যাচেলরস পাস। খুব ছোট না হলে ভাল, অন্তত পঁচিশ-ছাব্বিশ যেন হয়। আর, আর... মোটামুটি পছন্দ হলেই হল, মানে লাইফস্টাইল ও মনের মিল হবে সে ব্যাপারে কিছুটা আভাস পাওয়া দরকার। কিন্তু তেমন পাওয়া যায় না।
সিয়াম সব-সময় ভাবত এরেঞ্জড ম্যারেজ করলেও মেয়েটার সাথে একটু কথা-বার্তা বলে দুজনের মিল হবে কিনা তা যাচাই করে বিয়ে করবে। কিন্তু বাংলাদেশে থাকা বেশির ভাগ মেয়ের সাথে সেটা করা সম্ভব। হয় নি। দু-এক বার কথা বলার পরই সাধারণত মেয়েপক্ষ সিদ্ধান্ত চায়। সিয়ামের মনে তখন চলে। দোলাচল - সারা জীবনের একটা সিদ্ধান্ত কিভাবে দু’দফা ফোনে কথা বলার ভিত্তিতে নেয়া যায়? জানে যে অনেকেই নেয়। কিন্তু সিয়াম পারে না।
স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কিছু কাজ, কিছু স্মৃতি রোমন্থন করছিল সিয়াম। হঠাৎ কিউবিকেলের দেয়ালে টোকার শব্দে মাথা তুলে তাকায়। পোশা হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। ওকে হঠাৎ দেখে হৃৎপিন্ডটা যেন একটা লাফ দিয়ে ওঠে।
‘শুক্রবারেও এত কাজ করতে হয় এই অফিসে? আমি তো প্রথম দিন তোমাকে দেখে একটু ভয়ই পেয়ে যাচ্ছি ।
‘আরে নাহ। শুক্রবারে সবাই সাধারণত তাড়াতাড়ি অফিস ছেড়ে যায়। আমি আসলে শনি-রবিবারে কাজ করতে পছন্দ করি না। তাই শুক্রবার যত রাতই হোক না কেন চেষ্টা করি কাজ এগিয়ে রেখে যেতে।
‘তাহলে তুমি রবিবার সকালে ফ্রি আছ? তুমি মাছ ধরতে যেতে চেয়েছিলে। তাহলে আমরা সান ফ্রান্সিসকোর মুনি পিয়ারে যেতে পারি। ওখানে মাছ ধরতে লাইসেন্স নেয়া লাগবে না তোমার।
সিয়াম সানন্দে হ্যাঁ বলতে যাচ্ছিল। হঠাৎ মনে হল বন্ধু রাশমিকে দেয়া কথা, ওর পরিবারের সাথে সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে যাবে। তারপর ভাবল রাশমিকে বুঝিয়ে বললে নিশ্চয় বুঝবে। আসলে আমার এক ফ্রেণ্ডের সাথে বীচে যাওয়ার কথা। এখনও শিওর না। ওর সাথে কথা বলে জানাই আমি তোমাকে?
‘শিওর! ওকে, হ্যাপি ওয়ার্কিং অন ফ্রাইডে নাইট! পোশা বিদায় দিয়ে চলে গিয়েও আবার ফিরে আসে, ওহ, আমি অফিস ছাড়ার আগে তোমাকে সরি বলতে চাই একটু।
সিয়াম চোখ কপালে তুলে বলে, কেন? সরি কেন?
‘আমি খুব অভদ্রের মতন সারাদিন তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

সিয়াম ঢােক গেলে, তাহলে চোখাচোখির ব্যাপারটা নেহায়েত নিজের মনের কল্পনা নয়!
‘তোমার নামটা আমি কিছুতেই মাথা থেকে সরাতে পারছি না। একটু গুগল করে দেখলাম যে তোমার বাংলা ভাষা আর আমার থাই ভাষা দুটোতেই সংস্কৃত ও পালি ভাষার প্রভাব আছে। কিন্তু তাও কিছুতেই আমি অংকটা মেলাতে পারছি না। এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে বারবার তোমার দিকে চোখ পড়ে যাচ্ছিল। তুমি নিশ্চয় আমাকে খুব ক্রিপি ভেবেছ?
‘না, না, ক্রিপি ভাবব কেন?’ সিয়াম হেসে বলে। মনে মনে ভাবে, একটা সুন্দরী মেয়ে সারাদিন ধরে বারবার তাকালে সাধারণত ছেলেরা তাকে হ্যাংলা ভাবে না, খুশিমনে তাকে হবু-প্রেমিকা ভাবে।
‘তোমার বাবা-মা কেউ কি থাইল্যান্ডে গিয়েছিল? তাদের খুব পছন্দের জায়গা?’ পোশা প্রশ্ন করে।
ওর কথা এবার সিয়ামের কাছে আবোল-তাবোল মনে হয়। আমার বাবা-মা থাইল্যান্ডে যাবে কেন? কি বলছ?”
‘ওহ, সরি। পোশার চেহারায় সত্যিকারের দূঃখের ছাপ। সিয়ামের মনে হয় ও হয়তো একটু বেশি কড়া ভাবে প্রশ্নটা করেছে। প্রাচীনকালে থাইল্যান্ডের নাম ছিল সিয়াম। আমি ভাবলাম সেখান থেকেই তোমার নাম রাখা হয়েছে “সিয়াম”।
সিয়াম হো হো করে হেসে ফেলে। পোশা হতবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকায়।
‘আমার নাম সিয়াম এসেছে আরবী শব্দ থেকে। এটার মানে হল “ফ্যাস্টিং”, আমরা যে রামাদানে এক মাস না খেয়ে থাকি সেইটা, সিয়াম বলে। সিয়াম সাধনা’ যে স্রেফ উপোষ থাকার চেয়েও বেশি তা আর বোঝাতে ইচ্ছা করে না।
“সিয়াম” মানে কি জাস্ট ফ্যাস্টিং নাকি সব কিছু থেকে এবস্টিনেন্স’ করা। আমার মুসলিম বন্ধুরা বলত ওরা রামাদানে মিথ্যা কথা বা খারাপ শব্দ না বলারও চেষ্টা করে। পোশা যেন নিশ্চিত হতে চায়।
‘হ্যা, এস্টিনেন্স। সিয়াম খুশি হয়ে বলে। মেয়েটা কি আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করল! একটু আগে হলে এটাকেও সিয়াম প্রেমের নিশানা বলে মনে করত। ‘সরি, তোমাকে নিরাশ করলাম। থাইল্যান্ডের সাথে কোন সম্পর্ক নেই আমার বা আমার নামের।
‘মাই পেন রাই, পোশা বিড়বিড় করে। তারপর বলে, “আচ্ছা, রবিবারে কি প্ল্যান তা জানিও। বাই।
‘আসলে রবিবারে মনে হয় মাছ ধরতে যাওয়া হবে না। আমার বন্ধুর মেয়েটা আমার খুব ভক্ত। ওর সাথে ওশেন বীচে গিয়ে স্যান্ড-ক্যাসেল বানানোর প্ল্যান। বাচ্চাটাকে অনেক দিন দেখি না। সিয়াম জানিয়ে দেয়।
‘ওয়েল, আমি ওশেন বীচে যাইনি কখনো। তোমার বাচ্চা ফ্রেন্ড যদি আরেকটা হেল্পিং হ্যান্ড চায়, আমি জয়েন করতে পারি। জানিও আমাকে। বাই’ পোশা চলে যায়।
সিয়াম তাকিয়ে থাকে। একদিনের কথায় যেমন বিয়ে করতে মন চায় না, প্রেমও হয় না। বন্ধুত্বের শুরু হয়তো হয়। কে জানে এটা কোথায় গড়াবে-- একটা বন্ধুত্ব, একটা প্রেম, নাকি একটা বিয়েতে?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মাইনুল ইসলাম আলিফ সিম্পল একটা গল্পকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছেন সিলমী।ভাল লাগলো।ভোট রইল।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
Nur Arafat খুব ভালো লাগলো। প্রবাস জীবনে অনেকের কাছেই গল্পটা বাস্তব থেকে খুব আলাদা মনে হবে না.
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
রঙ পেন্সিল দারুন গল্প। শুভকামনা রেখে গেলাম।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
নাজমুল হুসাইন সুন্দর গল্প।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
Kazi Sakib অসাধারণ!
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
Martian Pirate Dost kisu kisu khetre nijeke dekhte paisi chotto ei golpo te. Open ended ending ta beshi bhalo lagse
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
ধুতরাফুল . আধুনিক যাপিত জীবনের গল্প.অস্থির সময়ের প্রেম ভালোবাসার গল্প ,ভালো লাগলো.....
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম।
কাজী প্রিয়াংকা সিলমী জানি না কেন, কিন্তু ওয়েবসাইটে পাবলিশ হবার সময় কিছু ফরমেটিং, কোটেশন মার্ক ও 'রেফ' বাদ পড়ে গিয়েছে। আমি যে ফরমেটে লেখা জমা দিয়েছি,
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত স্বাগতম গ-ক তে । গল্পটি পড়লাম , ভাল লাগল । অনেক শুভকামনা রইল ।
অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম।
T Pinky Ek kothay oshadhadharon.,.. Ami mugdho
অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

আমেরিকার প্রবাসী এক পুরুষ। সফল, সুযোগ্য পাত্র তিনি। কিন্তু তাও পছন্দের পাত্রী পাচ্ছেন না। একদিন অফিসে এক ভিনদেশী মেয়ের সাথে চোখাচোখি হতে থাকে। এই মেয়েই কি তার স্বপ্নের পাত্রী?

১৮ জুন - ২০১৯ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪