দু’টি চোখের পাপড়ি ভিজে গেছে আমি নিস্পলক তোমার অবনত মুখের দিকে চেয়ে।
অবাক হয়েছি সব শুনে এতোদিন পর নগরীর নিথর বুকে আজ তোমার সাথে দেখা।
সময়ের উত্তরঙ্গ তপ্ততা ছুঁয়ে নীরব বিদগ্ধ বাঁকে মৌন পুড়ে হৃদয় ডানা।
কিছুটা ভিজে মন নড়ে যায় এমন ধরাশায়ী বিকেলে দু’টি চোখে রেখে চোখ।
আমি স্তব্ধ হয়ে শুনেছি তোমার প্রাণের সব বলা অনুভূতি।
আজ যেন এমন সময় কেন যেন আকাশটাও বিহ্বল হয়ে তোমাকে ছায়া দিচ্ছে।
বুকের সমস্ত ভালোবাসায় আগলে রেখে কষ্টের পুরাণটুকু নীল মেঘ শুষে নিয়ে-
দূরে বহুদূরে উড়ে চলে যেতে চাচ্ছে।
তুমি কি জানো নিরালা; পৃথিবীতে দু’টি মৃত্যু?
যন্ত্রণায় পুড়ে অসহ্য যখন জীবনের সীমানা তখন যেন মরে যেতে ইচ্ছে করে।
এও যে এক মৃত্যুর জোনাকি পোকা তোমাকে বারবার সতর্কে কুরে খেতে চায়।
জানো কি তুমি আমি দু’চোখ বুজে যন্ত্রণার তীব্র তেঁতো বিষ গ্রহণ করেছি?
শেষপর্যন্ত তারপরও দু’চোখ খুলে নিঃশ্বাস নিয়েছি যতোটা পেরেছি প্রাণভরে।
তুমি ভুলে যাও সবকিছু যেভাবে পাখির উড়ে চলা ডানা ভয়ে ভয়ে বাতাসে মিশেও-
কিছুটা সময়ের জন্যও ভুলতে পারে নীড়ে আড়ষ্ট আবদারে ভরা মিহি কিচিরমিচির।
সময়ের পূরণে পৃথিবীতে তাও কেউ অসহায় নয় নিরালা।
জীবনের নিয়মে দেখবে কতো পথ সামনে আসে; জানি দু’খের প্রবণে চোখ ভাসে।
তোমার মনের গভীর নীড়কে আশ্বস্ত করো।
মন যে মাটির মতো সেভাবেই হাসবে তুমি তা সে যেভাবেই গড়ো।
এই কবিতাটিতে আমি তুলে ধরেছি দু’টি মানুষের নিস্তরঙ্গ বেঁচে থাকায় মনের বিদিকে যে অনুভূতি খেলে যায় সেই স্রোতকে। যোগ করেছি প্রকৃতিকে। একাকীত্ব একসময় চোখেমুখে অসহায়ত্বের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলে। মানুষের দুর্ভাবনা যেন আরও বেড়ে যায় তখন। সময় সময়ের নিয়মে চলে যায়; কিন্তু জীবন জানালায় যদি অবিশ্রান্ত বাতাসের সুখময় এতটুকুও ছিটেফোঁটা না থাকে তখন তা যে বিষের মতোই ঠেকে। হয়তো এমন সময় আসে যখন সব ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু অভিজ্ঞতাটুকু ঠিকই মনে গেঁথে থাকে।