নিশুতি খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে। উঠেই পুজো অর্চনা শেষ করে। রঞ্জন একটু দেরিতে। দেরিতে উঠার কারণও আছে। কারণটা হল দিনভর হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম। তাও সময়মত কারখানায় হাজির। সুখী দম্পতিই বলা যায়। এক বছরের কিছু বেশি হয়েছে সংসারে দু’জন মানুষ দিনাতিপাত করছে। ঘরে এখনও সন্তান আসেনি। নিশুতি আর রঞ্জনের প্রেম করে বিয়ে হয়েছে। একই গ্রামের মানুষ, তাই তাদের পরিবারও সায় দিয়েছে। সরস্বতী পুজোতে নিশুতি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছে, তাদের সন্তান যেন উপযুক্ত বিদ্যার্থী আর বিদ্যাবান হয়। সব বাবা-মা’র একটি চাওয়া তাদের সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে। রঞ্জন গার্মেন্টসে কর্মরত। লেখাপড়া তেমন করতে পারেনি। ইদানিং চিন্তা করছে নিশুতিকেও নিজের কাজের সাথী করবে। গার্মেন্টসের বড়বাবুকে বিষয়টি সে জানাবে বলে ভাবছে আগামীকাল।
রঞ্জনের চেয়ে পাঁচ বছরের ছোট নিশুতি। লোকে বলে অনেক সময় সমবয়সি বিয়ে করলে নাকি বোঝা-পড়াটা ভালো হয়। কিন্তু তাদের দু’জনের মাঝে বোঝা-পড়ার কমতি নেই বললেই চলে। খুব সুন্দর শ্রদ্ধাবোধ একে অপরের প্রতি। এটা সম্ভব হয় যখন সত্যিই মনের অনুভূতি-প্রবন ভালোবাসা কাজ করে। সম্মান করাটাও এখান থেকেই আসে।
রঞ্জন পড়ালেখা তেমন একটা না করলেও পড়ালেখার মর্ম ঠিকই বোঝে। নিশুতি আজ ঘর-দোর পরিষ্কার করায় ব্যস্ত। ঘর গোচাচ্ছে সে। দুপুর হতে বেশি আর বাকি নেই বেলার। কাপড়-চোপড় ধুয়ে রোদে শুঁকাতে দেবে বলে। নিশুতির মনে অনেক স্বপ্ন। ছোট ঘরের মেয়ের এমন বিলাসী স্বপ্ন মানায়না। তারপরও সৃষ্টিকর্তা পারেনা এমন কিছুই যে নেই। সৃষ্টিকর্তার কাছে মনে-প্রাণে চাইলে সৃষ্টিকর্তা দু’হাত ভরে দেয়। তাঁর কাছে কি নেই? এই যে পৃথিবীতে এতো এতো বড়লোক, টাকার কুমির, এমপি, মন্ত্রী সবকিছুর আর সবার ত্রাতা তো তিনিই। কিছু বড়লোক আছে যারা কিনা ছোটলোক। আবার আর কিছু আছে যারা মন থেকেই বড়লোক। বড়লোক হলেই যে ক্ষমতা দেখাতে হবে এর কোন মানে নেই। ক্ষমতা না দেখানোর মানেই ক্ষমতা।
রঞ্জন মাস শেষে আজ বেতন পেয়েছে। রঞ্জনের একটা অভ্যাস খুব দারুণ। বলা চলে সে কিছুটা রোম্যান্টিক। মাস শেষে তিনশো টাকা দিয়ে হলেও একটা শাড়ি নিশুতির জন্য সে ঠিকই আনবে। সত্যিই কি দারুণ মানসিকতা। সবাই এমনটা নয়। নিশুতি না করে, তাও সে আনে। মাঝে মাঝে থ্রি-পিছও নিয়ে আসে।
নিশুতি ওকে দিতে পারেনা, কিন্তু ইচ্ছে তো করেই। মনের ভেতর কিছু ভালোবাসা লুকিয়ে হাসে, মাঝে মাঝে কাঁদেও। শতভাগ ভালোবাসা কেউ দিতে পারেনা এই পৃথিবীতে। ভালোবাসা বা ভালোবাসার প্রাপ্তি এক ধরনের স্বাধীনতার নাম। যে যেখান থেকে যেভাবেও হোক ভালবাসতে পারে তার নামই স্বাধীনতা। মনের স্বাধীনতা যেখানে গিয়ে মেশে সেখানে কখনো ভালোবাসা লাশ হয়ে যায় অথবা রক্তিম লাল গোলাপের পাপড়ি ছিটানোর মতো মুহূর্তটুকু স্থান পায়। ভালোবাসার ব্যাখ্যা একেক জনের কাছে একেক রকম। রাতে ঘুমনোর আগে দু’জন মিলে কতো কি ভাবে, কতো কি চিন্তা করে। ভালো চিন্তা মনকেও আনন্দে ভাসায়। দুশ্চিন্তার চেয়ে চিতার আগুন ভালো।
দুঃখের রঙ বিভিন্ন রঙের। কেউ কেউ আছে দুঃখ-বিলাসী। কিন্তু দুঃখের যন্ত্রণাকে যদি সুখের আশায় পুড়িয়ে দেয়া যায়, সুখের দিব্য হাসির নমুনা চোখে মুখে ভাসে তখন। রঞ্জন ছোটবেলা থেকে বাবা-হারা। তাই সে জনকের মূল্য বুঝে। মা-কে নিয়েই তার সব। সাথে অর্ধাঙ্গিনী স্ত্রী। এটাই তার পৃথিবী। গতমাসে নিশুতির শরীরটা একটু খারাপ ছিল বলে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যায় তার। ভাবছে কারখানার হোসেনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেবে। ধার নিয়ে চলার অভ্যাস ভালো নয়, কিন্তু নিরুপায় হলে কি আর করার আছে।
নিশুতির হঠাৎ জ্বর পেয়ে বসেছে। নিশুতির জ্বরটা যেন কমতেই চাইছেনা। গরীব ঘরে যদি অসুখ-বিসুখ লেগে যায় তখন তো ঝামেলার বিষয়ই বলা চলে। রঞ্জন কারখানা থেকে দু’দিনের ছুটি নিয়েছে। জ্বর হলে যা অবস্থা। দুপুরে বাড়ে, রাতে তো আর ঘুমে টের পায়না। রঞ্জন বুঝতে পারে পরাধীনতার শৃঙ্খল মানে কি। নারী-পুরুষ একসাথে কাজ করছে একই দমে এটারও একটা মর্ম আছে। নিশুতিও সেটা বোঝে। দু’একদিনের মাঝে জ্বরটা কমে গেলো নিশুতির। যেন শ্রান্তি পেলো সে। বুকের গভীর থেকে হাঁফ ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো সে। ফেব্রুয়ারী মাসের এক তারিখে নিশুতি কারখানায় কাজে লেগে গেলো।
দিন চলে যাচ্ছে। এদিকে একুশে বইমেলা শুরু হয়েছে। সবাই যায় তাই তাদেরও যেতে মন চায় আর কি। যাবার আর সময় কই। ভাবছে শুক্রবারে যাবে। নিশুতি তার প্রথম মাসের বেতন থেকে রঞ্জনের জন্য একটা চাইনিজ মোবাইল আর টি-শার্ট কিনে দিলো। রঞ্জনের আগের একটা মোবাইল ছিল। পুরনোটা নিশুতি ব্যবহার করবে। নিশুতি খুব আবেগি। স্বামীকে সত্যিকারের ভালোবাসার ক্ষেত্রে তার কোন ঘাটতি নেই।
দিন চলে যাচ্ছে দিনের মতো। সকালে নিশুতি বমি করেছে ঘুম থেকে উঠেই। পরে আরও একবার। রঞ্জন চিন্তায় পড়ে গেলো। কারখানা থেকে বেরিয়ে রঞ্জন নিশুতিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো। পাড়ার ডাক্তার, তাই ভিজিটও কম। ডাক্তার বললো নিশুতি গর্ভধারণ করেছে। রঞ্জনের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। ডাক্তার নিশুতিকে খেয়ালে সাবধানে কাজ করতে বললো।
একুশে বইমেলা থেকে রঞ্জন একশো টাকা দিয়ে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা একটা বই কিনে সংগ্রহে রাখলো। রঞ্জনের ছেলে বা মেয়ে যাই হোক এই বইটা তার সন্তান বড় হয়ে পড়বে বলেই কিনে রেখে দিলো। নিশুতিও বেশ খুশি হলো।
রঞ্জনদের কারখানার সামনে নতুন করে খুব ভালো করে রাস্তা হয়েছে। রিক্সা আর মোটরযান খুব দ্রুতবেগে চলাফেরা করে। নিশুতি গর্ভবতী বলে ওকে সাবধানে চলতে হয়। এটা একটা তিন রাস্তার মোড়। রঞ্জন এখান থেকেই বাজার করে আর সবার মতো।
মার্চ মাস। তাদের ঘরে এখন নতুন টেলিভিশন। রঞ্জন টাকা জমিয়ে কম-দামী একটা কিনলো সেদিন। যাক অবসরে মনটা ফুরফুরে করার ফুরসৎ তো হলো। সাতই মার্চ, টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনছে রঞ্জন আর নিশুতি। রাতের দশটার খবরে। শুতে একটু দেরি হলো আজ। শুয়ে শুয়ে দু’জন কথা বলছে। রঞ্জন নিশুতিকে বঙ্গবন্ধুর তেজদীপ্ত সাহসী ভাষণের কথা বলছিলো সে রাতে। নিশুতিও মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো। হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়লো স্বামীর কোলে মাথা রেখে।
হায়রে, মানুষের মনে কতো আশা থাকে, কতো স্বপ্ন বাসা বাঁধে। মানুষের মানবিকতাটাই আসল। মূল্যবোধের যে ভাসমান প্রকাশ, এটাই তো স্বাধীনতা। দু’টি প্রাণ একসাথে মিলেমিশে চলার নামই তো স্বাধীনতা। পরাধীনতা কেউ চায় না। সময়ের হাত ধরে তবুও মানুষ শৃঙ্খল ভেঙে এক দৌড়ে যেন স্বাধীনতার মানে খুঁজতে চায়। যার মনে যেমন খুশি তেমনভাবে স্বাধীনতার মানে বিরাজ করে। সবার মন আর মানসিকতা এক নয়। মনের ছোট্ট কুটিরটাতে একটা প্রদীপ থাকে। মোমবাতির আলোর মতো অন্ধকারকে বশ মানিয়ে একসময় ফুরিয়ে যাবার নামও কি তবে স্বাধীনতা? মৃত্যু খুব কঠিন এক বিব্রত সময়। সবাই বাঁচতে চায়, আর এটার নামও যে স্বাধীনতা। সময় যখন কথা বলে এটার মাঝেও আছে স্বাধীনতার ঘ্রাণ।
রঞ্জন খুব খেয়াল রাখছে নিশুতির উপর। কারখানার বড়বাবুও খুব ভালো। যদি একটু আগে ছুটি নিতে চায়, নিশুতির মায়াভরা মুখের দিকে তাকিয়ে ছুটি দিয়ে দেয়। মানুষের ব্যবহারটাই সত্যিকারের মানুষের পরিচয়। কর্কশ ভাষা বা আচরণ কিন্তু কেউই পছন্দ করেনা। অহংকারও না। সময়ে বুঝি মানুষ বদলায়। খুব কম, হাতে গোনা কয়েক জন এরকম। বাদবাকি সবাই যেমন আছে তেমনি চলে। এটাও যে ব্যাক্তিতান্ত্রিক স্বাধীনতা। তাই কে কি বললো, কি করছে এসব না শুনে না দেখে চুপচাপ নিজের মতো করে চলাফেরা করা এটাও আরেক ধরনের স্বাধীনতা। বিভিন্ন রকমের মানুষ সমাজে একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে। একজন মুচি ছাড়াও কিন্তু সমাজে অসহায় আমরা।
রঞ্জন আর নিশুতি মুখোমুখি বসে কাজ করে। গার্মেন্টস কারখানায় খাটনি অনেক। মাঝে মাঝে কেউ কেউ অতিরিক্ত সময় নিয়েও কাজ করে। সবাই করেনা। সেদিন কারখানায় হঠাৎ প্লাস্টিক পোড়ার মতো একটা গন্ধ একজন কর্মীর নাকে লাগলো। প্রথমে পাত্তা দেয়নি। পরে বুঝতে পারলো কিছু একটা গণ্ডগোল। সাথেসাথে হুলস্থূল কাণ্ড। পুরো কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। দায়িত্বরত সবাই ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলো। এর মাঝে নিজেরাও হুড়োহুড়ি করে নামতে লাগলো যে যেমন পারে।
কারখানাটা ধুঁয়ায় আর আগুনের লেলিহান শিখায় ভরে গেলো কিছুক্ষনের মাঝেই। এরই মাঝে ফায়ার সার্ভিস এসে গেছে। দমকল বাহিনীর তিনটা দল একসাথে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছে। বেশ কয়েকজন কৌশলী ভেতরে ঢুকে ভেতরে আটকে থাকা কর্মীদের উদ্ধার অভিযানে নেমে গেলো। এমনিতেই নিশুতি গর্ভবতী তাই দৌড় যে দেবে তার আর তাল পেলোনা। রঞ্জন হঠাৎ দেখে নিশুতির কাপড়ে মাথার উড়নায় আগুন লেগে গেছে। আগুনে নিশুতির চুল আর মুখের ডান পাশটা পুড়ে যাবার উপক্রম। যা হবার তাই হলো। রঞ্জন ওকে জাপটিয়ে ধরে নিজের শার্ট খুলে আগুন নেভাতে চেষ্টা করছে বারবার। কিন্তু এরই মাঝে যে নিশুতির মুখটা পুড়ে গেলো। নিশুতি চিৎকার করছে ঝলসে যাওয়া মুখটা আঁকড়ে ধরে। রঞ্জন ওকে দমকল বাহিনীর হাতে তুলে দিলো। ভাগ্য ভালো খুব দ্রুতই নিশুতিকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে গেলো দায়িত্বরত এ্যাম্বুলেন্স। যেহেতু গর্ভবতী তাই স্পেশাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হলো নিশুতিকে। আল্লাহ্ মহান। নিশুতির ভ্রুনের কিছু হয়নি। রঞ্জনও টুকটাক আহত। ওকেও অন্যদের মতো সেবা দেয়া হচ্ছে। রঞ্জন অপেক্ষা করছে। ভালোবাসার মানুষটা, যে মানুষটা তার জীবন-সাথী তার কথা চিন্তা করে মুখবুজে কাঁদছে রঞ্জন। একটু পরে ডাক্তার রঞ্জনকে ভেতরে যেতে বললো। নিশুতি যেন আর আগেরটি নেই। ডুকরে থেমে থেমে কাঁদছে। মনের ভেতর একজনের প্রতি আরেকজনের কতোটুকু ভালোবাসা থাকলে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়?
কারখানা তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। ঝলসানো মুখটার চারপাশ ব্যান্ডেজ করা। চোখটা কোনক্রমে বেঁচে গেছে। আল্লাহ্ সহায়। ডাক্তারদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সাত দিন পর নিশুতির ব্যান্ডেজ খুলে দেয়া হলো। ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিট খুব যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সতর্কবার্তা দেয়া থাকে প্রতিটি গার্মেন্টস বা অন্যান্য উৎপাদনশীল কারখানায়। কিন্তু কিসের কি! সচেতনতা মনের বাহ্যিক বহিঃপ্রকাশের একটি বাস্তবায়নের ধারাপাত। এটা কি বুঝার নয়?
যাক। প্রাণে বাঁচলেও ভালোবাসার মানুষটার মুখের দিকে তাকালে রঞ্জনের ভেতরটা কচি অনাথ শিশুর মতো ডুকরে কেঁদে উঠে। এ কান্না স্বাভাবিক কান্না নয়। এটা খুব গভীর বেদনার কান্না। এই দুঃসহ দুঃখ রঞ্জন কখনই নিশুতির সামনে প্রকাশ করেনা। তাকে সাহস রাখতে বলে মনে। মনের জোর যে অনেক বড় জোর। মহান আল্লাহ্ মানুষের বিবেকে যখন নাড়া দেন, তখন কল্পনাও কখনো কখনো হঠাৎ হঠাৎ বাস্তবে আগে বা পরে ভেসে উঠে। মানুষ যা কল্পনা করে সংকল্পবদ্ধ হয়ে তাই হয়ে যায়, হয়ে যেতে বাধ্য। মানুষের বিবেকের বাইরে পৃথিবীও নয়। এটাও ঐশ্বরিক ব্যাপার। আল্লাহ’র কাছে যাই চাওয়া যায় মনে প্রাণে, আল্লাহ্ তাঁর সমতুল্য বা তার বেশি দান করেন উজাড় হয়ে। আল্লাহ্ যে মহাবিশ্বটাকে খুব অপার ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। মাঝে মাঝে বিপরীত ফলাফল ঘটে ভালোর জন্যই। এটা অনেকে বুঝেনা। রঞ্জনের ধী-শক্তি আর স্ত্রীর জন্য সত্যিকারের আবেগ দু’টোই যেন পাশাপাশি বর্তমানের প্রতিচ্ছায়ায়।
পেটে সন্তান, আর এক চোখে জল। দুই মিলে এই আবেগের ধরনটা খুবই যে মর্মান্তিক কষ্টের।
ছোট্ট বাসাটায় নিয়ে গিয়ে রঞ্জন ছুটি পেয়ে স্ত্রীর সেবা করছে আজ। সময়মত ঔষধ খাওয়ানো, নিজেই যা পারে রেঁধে স্ত্রীকে মুখে তুলে খাওয়াচ্ছে সে। এটা মনের কতো বিষাদের স্বাধীনতা, তা কি ভাবা যায়? এটাই তো বেহেস্ত। মানুষ মরে গেলে পচে গেলেও কিছু মানুষ যেন অম্লান থাকে তাঁদের সত্যিকারের ভেতরের মুখরিত বা লিখিত বহিঃপ্রকাশে। স্বাধীনতা দিবসের মানে অন্য প্রকারের। এটা জাতিগত, অনেক বৃহৎ পরিসরের। আর বিশাল হৃদয়ের ছোট্ট এক-টুকরো ভালোবাসার শ্বাস-প্রশ্বাস যেন সততে সততে মানবিক স্বাধীনতা। নিশুতির আগত শিশুর প্রাণে যেন একটি দৃষ্টির কেঁড়ে নেয়া আহত পরশ তৃতীয় মাত্রায় কথা বলতে পারে, এটাই নিশুতির সৃষ্টিকর্তার কাছে জীবনের শেষ চাওয়া। স্বাধীনতা দিবসের মানে যেন কেন কি কারনে এই মাতৃছায়ার চেয়ে ছোট! একজন মা একটি শিশুর জন্মদাত্রী। আর একটা শিশু যখন বড় হয়ে একটি দেশ রচনা করে তা কোনটার চেয়ে কোনটা কোন পরিসরে ছোট-বড় তা অবশ্যই ভাবার বিষয়।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
আমি যতটুকুই চেষ্টা করেছি এই গল্পে তুলে ধরতে, সেটা হলো বিবেকের তাড়না। মানুষ মানুষের জন্যই এই প্রবাদ অক্ষরে অক্ষরে সত্য। প্রতিটি মানুষ স্বাধীনভাবে নিয়মের ভেতরেই বেঁচে থাকতে চায়। কেউ বেঁচে থেকেই সব পায়, কেউ পায় মৃত্যুর পর যখন তার অন্তরাত্মা লোকালয়ের আহত চোখের বাইরে লুকিয়ে পড়ে। একটি শিশু যখন একটা খোলা মাঠে সবুজ শিশির ভেজা ভোরের মাঠে একা অল্প করে দৌড় দিতে যায়, তখন সে যেন মনে করে এটাই তার পৃথিবী, তার অনন্তকালের বেঁচে থাকার আস্বাদ। আহা, স্বাধীনতা দিবস কতো বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে মুখরিত।
২৪ জুলাই - ২০১৮
গল্প/কবিতা:
২২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪