পান পাতার বাঁশি

ঝড় (এপ্রিল ২০১৯)

মুহম্মদ মাসুদ
  • ১১২
হায় হায় হায়! আমার একি হয়ে গেল? হায় ভগবান ! তুমি আমাকে এভাবে নিঃস্ব করে দিলে। আমার কপালে এই লিখে রেখেছিলে? আমার কি অপরাধ ছিলো? আমি কি দোষ করেছিলাম? এরকম শত কথা বলতে আর কাঁদতে কাঁদতে একজন মহিলাকে মাঠের দিকে যেতে দেখলাম। গলার আওয়াজটা পরিচিত বলে মনে হলো। কিন্তু কিছুতেই ঠাউর করতে পারলাম না তিনি কে? আগ্রহটা প্রবলভাবে অনুভব করতে লাগলাম। ততক্ষণে একের পর এক এক লোকজন মাঠের দিকে যেতে দেখে আরও বেশি চমকে গেলাম। তাদের কথা শুনে গলাটা শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম। গলায় গামছা জড়িয়ে, ব্রাশ হাতে নিয়েই মাঠের দিকে এগুতে শুরু করলাম।
উকিল বাবু বেহুশ হয়ে পরে আছে। দুই-তিন জন মিলে পানি ঢালছে অবিরত। অপরিচিত এক মহিলা উকিল বাবুর মাথায় পাখা দিয়ে বাতাস দিচ্ছে। আমি জিঙ্গেস করলাম - কি হয়েছে? কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। সবাই যেন সবার মতো ব্যস্ত। কিন্তু কিছুতেই ব্যাপারটা আমার কাছে খোলাসা হচ্ছে না। উকিল বাবুর এরকম হওয়ার কোন কারণও খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ, তার মতো এতো শক্ত মনের এবং জেদি মানুষ আমি আগে কখনো দেখিনি। গেলবছর যখন অমল খুব বায়না ধরেছিল গ্রামের কলেজে ভর্তি হবে কিন্তু তিনি মেনে নেয়নি। তার কথামতোই অমল শহরের কলেজে ভর্তি হয়েছিল। সেই থেকেই অমলের সাথে যোগাযোগটা কমে গেছে আমার। একজন প্রকৃত বন্ধু এভাবেই হারিয়েছি। মনে মনে ভাবছিলাম, অমল আসলে এই বিষয় নিয়ে ওর সাথে একটু হাসাহাসি করবো। তবে উকিল বাবুকে এরকম দেখে মনের মধ্যে কেমন যেন ভয় কাজ করছিল। আগে কখনো এরকম অনুভূতি হয়নি। বুকের ভিতরটা ধুকপুক করছিল। ধড়ফড় করে কেমন যেন ঘেমে যাচ্ছিলাম।
পিচ্চি কয়েকজন ছেলেমেয়ে দৌড়াদৌড়ি করে মাঠের দিকেই যাচ্ছিলো। আর বলাবলি করছিলো কার যেন লাশ শিমুল গাছের সাথে ঝোলানো রয়েছে। কথাগুলো শুনে আমার দুপায়ে তালা লেগে গেল। কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলাম। চলার পথে যেন বেতের কাটা সহস্র। হাঁটলেই পায়ে কাটা লেগে রক্ত চুইয়ে চুইয়ে পরবে। আগে কখনো নিতাইগঞ্জে এরকম ঘটনা ঘটেনি। হঠাৎ এরকম শুনে দেহের ভিতর......।

এবার আরও দ্রুত হাটতে শুরু করলাম। আজ কেন যেন পথটা অনেক বেশি দূর বহুদূর মনে হচ্ছে। আঁকাবাঁকা পথঘাট কেমন যেন অচেনা মনে হচ্ছে। গতরাতে ঝড় বৃষ্টি হওয়া সত্বেও পথের মাটিগুলো আজকে বেশ শক্ত মনে হচ্ছে। পায়ের তালুতে বেশ লাগছে। তবুও মনের জোরেই দ্রুত হাটতে শুরু করেছি। বেশ কিছুক্ষন হাঁটার পর যখন মাঠের কাছাকাছি এসে পৌছেছি তখনই চোখের এতো মানুষের জটলা দেখে হঠাৎই পায়ে শক্তি বেড়ে গেল। প্রচন্ড আগ্রহ হচ্ছিল ঘটনা সামনে গিয়ে দেখার। এতো মানুষের ভিড় উপেক্ষা করে কিছুতেই সামনে যেতে পারছিলাম না। সবাইকে বললেও কেউ একটুখানিও সরে দাড়াচ্ছে না। মনের মধ্যে তখন রাগ গুলো টগবগিয়ে দাউদাউ করে জ্বলছিল। কিন্তু প্রকাশ করতে পারছিলাম না। যাইহোক, অনেক কষ্টে ভিড় পার করে সামনে যেতেই হঠাৎই মাথাটা ঘুরপাক খাচ্ছিলো। দলিয়ে মাটিতে লুটে পরেছিলাম বেশকিছু সময়।
জ্ঞান ফিরে দেখি বড় ভাবি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মা মাথায় পানি ঢালছে আর কাঁদছে। আর আমার ছোট পিচ্চি বোনটা বারবার টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে আসছে।
মা - তুমি কাঁদছো কেন? আমার কিছুই হয়নি। কয়েকবার বলা সত্বেও মা শুধু কেঁদেই যাচ্ছিলো।
বড় ভাবি বললো, তোর যদি কিছু হয়ে যেতো। আশেপাশে যেসব ঘটছে। ততক্ষণে বুঝলাম ঘটনাটি গ্রামের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরেছে।
নাক-মুখ দিয়ে রক্তের ছাপে শার্ট এখনো ভিজে আছে। গতরাতে প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় ধুয়েমুছে গিয়েছে মাটিতে লুটে পরা রক্তের পাহাড়। চোখদুটো বড়সড় হয়ে গেছে। যেন ফ্যালফ্যাল করে এখনো তাকিয়ে আছে। তাকালেই ভয়ে শরীরটা শুকিয়ে যাচ্ছে। নিশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। হালকা গন্ধে তখনও কিছু মাছি ঘুরপাক খাচ্ছিলো। লম্বা চুলগুলো এলোমেলো নাক অবধি এসে পৌছেছে। বাম হাতের আঙুলগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে। ঘাড়ের মাঝখানে মাংসগুলো যেন আলাদা আলাদা ভাগ হয়ে আছে। রক্তশূন্য হয়ে সমস্ত শরীর হলুদরঙে পরিনত হয়েছে। গাছের সাথে ঝোলানো দেহটি পরিচিত মানুষের। প্রিয় মানুষের দেহ এভাবে এই অবস্থায় দেখে কি টিকে থাকা সম্ভব? কোনক্রমেই না। উড়ন্ত শামুকভাঙার গন্ধের মতো কিছু বাতাস এসে বুকে লেগেছিল হয়তো বিয়োগব্যথা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।
মায়ের কোল থেকে ঝটপট উঠেই আবার দৌড়াতে শুরু করলাম। মা বারবার নিষেধ করা সত্বেও দ্রুত হাটতে শুরু করলাম। মনে হচ্ছিল মায়ের সাথে আমার কতো অভিমান! কতো রাগ অনুরাগ! পিছনে এক নজর তাকানোর সময় অব্ধি ছিলো না। হয়তো তখন ঘটনার জালে জড়িয়ে, রহস্যের বাক্সে বন্দী হয়ে, বন্ধুত্বের খাঁচায় আটকিয়ে সবকিছু ভুলে গিয়েছি। এরূপ বিরূপ মোহে কষ্টটা শুধু বেড়েছ, হারানোর আহুতি এই প্রথমবার। তারপর থেকে চোখ শুধু কাঁদে.....।
ইতিমধ্যে পুলিশ এসে জড়োসড়ো। কান্নার শব্দে আশেপাশটা যেন নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সবার মুখগুলো গম্ভীর। কেউ কেউ কানাকানি করছে। সময় যতই পার হচ্ছে ততই কান্নার লেলিহান শব্দে চারদিক থেকে ছুটে আসছে। হাউমাউ করে শুধু কান্নার শব্দ। লাশের উপর পুরানো বস্তা দিয়ে ডেকে দেওয়া হয়েছে। পায়ের অংশটুকু শুধু দেখা যাচ্ছে। পায়ের গোড়ালি থেকে যে রগ কেটে দেওয়া হয়েছে সেটাও তখন স্পষ্ট।
এতো উৎসুক জনতার হাহাকার আগে কখনো দেখিনি। মিছিল মিটিংয়েও মনে হয় এতো মানুষের ভিড় জমে না। জমে না নানা রকম মন্তব্য। কেউ কেউ খুব আফসোস করছে, আবার কেউ কেউ বলতে শুরু করেছে মানুষের বিবেক বুদ্ধি বলতে কিছু নেই, আবার কেউ কেউ বলছে এতো নিষ্ঠুর, এতো জঘন্য কাজ কিভাবে করতে পারে? মায়া বলেও তো একটা জিনিস আছে পৃথিবীতে, মানুষের মধ্যে।
আত্মীয়রা ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে। সকলের মাঝে যেন বিষন্নতার ছায়া। অনেকেই কেঁদে কেঁদে হৃদয় পুড়ে ফেলেছে। এজন্য বুঝি চোখের কিনারাগুলো শুকিয়ে চৌচির। পরিত্যক্ত ধুধু বালির চর। নিস্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে দেখা, আর বোবা কান্নার মতো নিজেকে আঘাতের জালে ফাঁসানো ছাড়া কোন উপায় নেই।
পুরানো বস্তা দিয়ে পেচানো দেহটাকে ধরেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলো। সে কি কান্না! এতো মায়াময় কান্নায় আশপাশটা নিমেষেই এলোমেলো হয়ে গেল। এটাই মনে হয় প্রকৃত সম্পর্ক, এটাই মনে হয় আত্মার আত্মীয়। অনেকের চোখে তখন অশ্রু নামক রক্তগুলো খেলা করছে। পৃথিবীতে ভাইবোনের মধ্যে যে কি মধুর সম্পর্ক রয়েছে সেটা এই দৃশ্যতেই পরীক্ষীত। কান্নারত অবস্থায় সীতা দেবীকে জোর করে টেনেহিঁচড়ে অন্যত্রে নিয়ে যাওয়া হলো। মাটিও যেন স্বাক্ষী রয়ে গেল। এমন ঘনঘোর ঘনঘটা বিষাদ বিয়োগ বেদনাগুলো ছাইচাপা হয়ে লুকিয়ে রইলো।
এরকম একটি সাজগোজ দেহ ততক্ষণে লাশ হিসেবে পরিচয় নিয়েছে। লাশ বাহী একটি ভ্যান এসে পৌছেছে। পুলিশের এসআই'য়ের সামনে যেতেই বললেন লাশটাকে ভ্যানে তুলতে। আর থানার দিকে নিয়ে যেতে। ভ্যানওয়ালা জোর গলায় ডাকতে শুরু করলেন, লাশের আত্নীয় কেউ আছেন নাকি? আমার কাছে আসুন। লাশ ভ্যানে তুলতে হবে। আর দুই তিনজনকে থানায় যেতে হবে। অপরিচিত দু’তিনজন এসে হাজির। আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না। দুজন মিলে লাশটা ধরাধরি করে ভ্যানের উপর তুলতে যেন হাঁপাতে শুরু করলো। মানুষ মরার পর হয়তো তার ওজনটা বেড়ে যায় নইলে এরকম একটি চিকনচাকন দেহ তুলতে এতো হাউকাউ।
পুলিশের গাড়িতে অপরিচিত দু’তিনজন উঠে বসলো। আর লাশ বাহী ভ্যান তার পিছনে পিছনে ছুটে চললো। আর ভ্যান গাড়ির পিছনে লাশ দেখতে মানুষজনও হাঁটতে শুরু করলো। এ দৃশ্যটাকে যে কি বলে বর্ণনা করবো ভেবে উঠতে পারছিনা। এই দৃশ্যের আসলেই কি কোন বর্ণনা হয়?
বাংলাদেশ পুলিশের একটি ব্যাগ জড়িত লাশ এসে পৌছালে নতুন করে আবার লোকজনের ভিড় হতে থাকে। ততক্ষণে কান্নাকাটি করে সবাই বেহুশ হয়ে পরে আছে। আর কতোবার! এভাবে কাঁদতে পারা যায়। চোখের অশ্রুগুলো তো এমনিতেই শুকিয়ে যাবে। তখন চিৎকার করে কান্না ছাড়া কোন গতি নেই।
আবার নতুন করে কান্নার মিছিলে শামিল হলো সবাই। ঠিক যেন লুকোচুরির মতো। একটু পরপর শুধু কান্নার শব্দ নিয়ে খেলা। পরিবার থেকে শুরু করে আত্নীয় স্বজনেরাও এবার শামিল হয়েছে। অনেকে হয়তো কাঁদতে জানেনা। তবুও যেন কান্নার ভান করে নির্বোধের মতো দাড়িয়ে আছে।
ভানুমতী সেন ইতিমধ্যে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আত্নীয় স্বজন যারা এসেছে তারা সবাই একে একে শেষবারের মতো মুখটা দেখে নিচ্ছে। মুখটা দেখছে আর ধুধু করে কেঁদে উঠছে। সবাই যে একরম ভাবে প্রিয় মানুষকে দেখবে হয়তো কেউ মেনে নিতে পারেনি।
পোস্টমর্টেমের পর লাশ আর লাশ থাকে না। দেহ আর দেহ থাকে না। ঠিক যেন কাঠের বাক্সের মতো। ভেতরটা সম্পুর্ন খালি।
চোখদুটো তুলে নেওয়া হয়েছে। চোখের ভিতর চোখের মতো অন্য কিছু দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত মটবেল কিংবা গুটি হবে। আর সম্পুর্ণ কপালটা সেলাই দেওয়া হয়েছে। সেলাইটা খুব যে মজবুত তা কিন্তু নয়। কোনরকম করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে ভেতরের সবকিছু দেখাই যাচ্ছে। আর বুকটা সম্পুর্ন ফাড়ানো শরীরের যত গুরুত্বপূর্ণ কলকব্জা রয়েছে সবই রেখে দেওয়া হয়েছে। চামড়ার উপর দিয়ে শুধু সেলাই দেওয়া হয়েছে। বুক ফাড়ানোর কারনে বুকের হাড্ডিগুলোও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আল্লাহই জানে সিভিল সার্জনেরা কিভাবে একটা মরা দেহ কাটতে পারে? তারা কি একটুও ভয় পায় না? নাকি ভয় নামক শব্দটি তাদের ভিতরে নেই।
পাশের বাড়ির শফিক মিয়ার বাড়িতে কেউ নেই। সবগুলো ঘর তালা দেওয়া। কেউ যে নেই বাড়ির উঠান দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এমনকি রান্নাঘরের বেহাল দশা থেকে আরও বেশি পরিষ্কার হলো সবাই তারা কেউ নেই বাড়িতে। তবুও পুলিশ গুলো তন্নতন্ন করে খুঁজলো। যাতে কোন ক্লু পাওয়া যায় কি না? এদিকসেদিক খুঁজেও কোন সন্ধান পেলেন না তারা। বিষয়টি ততক্ষণে গ্রামের সবার কাছে ঘোলাটে হয়ে গেছে। এমন কেউ নেই যে বিষয়টি বুঝতে বাদ পরেছে। গ্রামের মধ্যে একধরনের বিষন্ন ছায়া পড়েছে। হয়তো কেউ ভাবেনি যে এরকম একটি ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে থাকবে তারা। পথঘাট থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে পর্যন্ত কানাঘুঁষা চলছে। চলছে দফায় দফায় ছোট ছোট মিটিং। হয়তো এ মিটিংয়ে শাস্তি পাওয়ার মতো কেউ নেই। শুধু আলোচনায় মুল বস্তু।
গ্রামের চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে বিষয়টি নিয়ে বসেছে পুলিশ সদস্য। তিনি তার মতো করে সবকিছু বুঝিয়ে বলছেন। তখন চেয়ারম্যান চাচা বললেন, আপনারা আইনের লোক। যেহেতু মামলা করেছে সেহেতু আপনি আপনার মতো করে কাজ চালিয়ে যান। যদি আমার কাছে কোন সাহায্যের দরকার হয় তবে আমাকে বলবেন দয়া করে। আমি আমার তরফ থেকে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করবো। আরও বিভিন্ন বিষয় আলোচনার পর পুলিশ সদস্যরা চলে গেলেন। গ্রামে তখন থেকে কেমন যেন থইথই ভাব। মানুষ প্রেমে ছ্যাঁকা খেলে যেমন গুমরো মুখো হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি।
এদিকে জোরকদমে আয়োজন চলছিল। বিয়ে বাড়ির আয়োজন নয়। আয়োজনটা কোন অনুষ্ঠান কিংবা শোভাযাত্রাও নয়। এই আয়োজনটা মৃতদেহ সৎকারের। হিন্দু রীতিনীতি ও সংস্কৃতি অনুসরণ করে এই আয়োজনটা করা হয়ে থাকে। পুরোহিত মশাই নিয়ম অনুযায়ী সকল কাজ সম্পুর্ন করছেন। চিতার আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে। আসলে ইচ্ছে করে নিজ প্রয়োজনে আগুন জ্বলালে যেমন হয়। দূর থেকে মনে হচ্ছিল কোথাও যেন আগুন লেগে সবকিছু ছারখার হয়ে যাচ্ছে। সবকিছু পুড়ে নিমেষেই ধুলাবালির সাথে মিশে যাচ্ছে। অবশিষ্ট থাকার মতো কিছুই নেই। আসলেই তো তেমন কিছুই ঘটছে সেখানে। প্রিয় মানুষটারে এভাবেই পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে তাদের। শুধু মায়াগুলো বোবা কান্না হয়ে বুকের মধ্যে জট পাকিয়ে বসে আছে। আর নিশ্বাস নিতে চাইলে শিকল দিয়ে টেনে রেখেছে।

সেঁজুতি এসেই দাদা দাদা বলে বলে কাঁদতে শুরু করলো। হয়তো কিছুক্ষণ বাড়িটা একটু নিস্তব্ধ হয়ে ছিলো কিন্তু নতুন করে আবার.........।
মাস দুয়েক হলো সেঁজুতির বিয়ে হয়েছে। অনেক দূরে, শুনেছি প্রথমে বাসে তারপর ট্রেনে আসতে হয়। বরটা নাকি সরকারি চাকুরীজীবি। বিশাল ধনসম্পদের মালিক। দেখতেও বেশ। রাজপুত্রের মতো। সেঁজুতিও তো কোন অংশে কম নয়। একদম রূপবতী রাজকন্যা। তা-না হলে কি?
সেঁজুতিকে নিয়েই তো যত গোলমাল। এতো রূপের জন্যই তো ছেলেরা লাইন ধরে থাকতো সবসময়। হিন্দু মুসলিম দুই ধর্মের অনেক ছেলেরা তার জন্য পাগল ছিলো। কিন্তু নিজের ধর্মের কারো সাথে তার মন দেওয়া নেওয়া হয়নি। মন দেওয়া নেওয়াটা অন্য জায়গায় এসে ধরা দিয়েছিলো। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
একদিন সকাল বেলায় শফিক সাহেবের বাড়ির উঠানে মানুষের ভিড় দেখে আমি নিজে গিয়েও হাজির হই। অবাক কান্ড! আমি দেখেইতো চমকে উঠেছিলাম। সেঁজুতি শফিক সাহেবের ঘরে বসে আছে। শুনেছি গতরাত থেকেই। সে নাকি শফিক সাহেবের ছেলে হাফিজকে......। এই নিয়ে উকিল বাবু আর শফিক সাহেবের মধ্যে অনেক কথা কাটাকাটি, মারামারিও হয়। এই ঘটনায় খুব ক্ষুব্ধ হয় উকিল বাবু (নিজে উকিল হওয়ায়) শফিক সাহেবসহ তার পরিবারের সদস্যদের নামেও মামলা করে। তারপর থেকেই তাদের মধ্যে নতুন করে শুরু হয় শত্রুতা, বিরোধ এবং শেষমেশ হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ।
অতল নেই, সত্যি ভাবতে খুব অবাক লাগে। একরকম একটি চাঁদমুখ অচিরেই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যাবে ভাবিনি কখনো।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মুহম্মদ মাসুদ ও তাই, আমি ঘেঁটে দেখবো।
প্রজ্ঞা মৌসুমী বাহ! অন্যৱকম একটি গল্প পড়লাম। লাশেৱ, পোস্টমর্ডার লাশের বৰ্ণনা বেশ হয়েছে। কি কৱে পাৱলেন? কোন অভিজ্ঞতা? নামের একটা কি কোন গোলমাল আছে এ গল্পে? একবার অমল, একবার অতল, একবার সীতা দেবী, একবার সেঁজুতি। কে যে ঠিক মরলো, কে যে কার ভাই একটু ঘোলাটে লাগছিল। তবে মানুষের নিষ্ঠুরতা সুন্দর উঠে এসেছে। শুভকামনা
মুহম্মদ মাসুদ অবশ্যই, আপনিও এভাবেই পাশে থাকুন।
বাসু দেব নাথ খুব ভালো লাগলো। শুভ কামনা রইল। পাশে থাকবেন।
রণতূর্য ২ ভালো প্রচেষ্টা।শুভকামনা। আমার কবিতায় আমন্ত্রন রইল।মতামত দিয়ে অনুপ্রানিত করবেন।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

ঝড় শুধু প্রাকৃতিক নয়। মানুষের জীবন ঘিরেও নানামুখী ঝড় রয়েছে। প্রিয় মানুষকে হারানো, পরাজয়, নানান দূর্ঘটনা ঝড়ের মতোই অগোছালো। ঝড় যেমন সবকিছু ছিন্নভিন্ন করে দেয়, ধ্বংস করে দেয় চারপাশ ঠিক তেমনি জীবনে এমন কিছু অসঙ্গতি রয়েছে যা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে নিমিষেই প্লাবিত করে ফেলে। আমার গল্পে এরকমই ভাবগত সামঞ্জস্যতা রয়েছে। যা পাঠক হৃদয় ছুঁয়ে যাবে আশাকরি।

৩০ মে - ২০১৮ গল্প/কবিতা: ৪৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪