কৃষ্ণপক্ষ

স্বপ্নলোক (অক্টোবর ২০২৩)

Jamal Uddin Ahmed
  • ১২
  • ৩০
কলি বু বিয়ের আগে পান খেতেন না, বিয়ের পরও অনেকদিন তাঁকে পান খেতে দেখা যায়নি। কেমন করে, কার সংস্পর্শে এসে তিনি পান ধরেছেন এখন তা নিজেই ভুলে গেছেন। আমেরিকা থেকে মেয়ের দেয়া নকশা করা স্টেইনলেস ষ্টীলের পানদানিতে কলি বু’র পান মশলা, সুগন্ধি জর্দা, ইত্যাদি সবসময় সুন্দরভাবে সাজানো থাকে। এ কাজের দায়িত্ব বিশেষভাবে মাখনের ওপর অর্পিত।

অন্যদিকে রহমান সাহেব শিক্ষকতা জীবনের লম্বা সময় এরিনমোর টোব্যাকো দিয়ে বিড়ি বানিয়ে খেয়েছেন, কিন্তু কোনোদিন পান খাননি। ডাক্তারের বারণ থাকায় কষ্ট করে ধূম্রসেবন বাদ দিয়েছেন। হলে কী হবে, কলি বু’র সাথে থাকতে থাকতে তিনিও একটু একটু করে এখন পানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

রাতের খাবারের পর সোফায় বসে আয়েশ করে এক খিলি পান মুখে পুরে টিভির রিমোট চাপতে চাপতে কলি বু রহমান সাহেবের দিকে পানদানি এগিয়ে দিয়ে বলেন, ‘নে।’

মশলা মেশানো পান মুখে দিয়ে রহমান সাহেব কলি বু’র নিয়ন্ত্রণাধীন চ্যানেলেই চোখ রাখেন। আসলে কলি বু’রও বিশেষ পছন্দের কোনো চ্যানেল নেই। দেশি চ্যানেলগুলোতে খবরের শিরোনাম দেখে বিরক্ত হলে ইন্ডিয়ার কোনো চ্যানেলে চলে যান নয়তো অ্যানিম্যাল বা জিওগ্রাফি চ্যানেলে গিয়ে জীবজন্তু অথবা পাহাড়-পর্বত দেখেন। রহমান সাহেবের টিভির নেশা না থাকলেও অ্যানিম্যাল বা ন্যাশনাল জিওগ্রাফির চমকপ্রদ ছবিগুলো দেখে তিনি আনন্দ পান।

রহমান সাহেব বলেন, ‘এই দেখ না, রয়েল বেঙ্গল টাইগার হয়তো সব জায়গায় নেই, কিন্তু আফ্রিকার লেপার্ড, চিতা তারপর জাগুয়ার এসব দেখলে আমার রক্ত গরম হয়ে যায়। চিতা নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী প্রাণী। এদের কাছে আমাদের সুন্দরবনের বাঘ আর পাহাড়ি অঞ্চলের চিতাবাঘ ইঁদুর-বিড়াল মনে হয়।’

‘কথা ঠিক। কিন্তু সিংহের কথা বললে না যে।’

‘সিংহ তো আমাদের দেশে নেই, তাই আর তুলনা করলাম না।’

কলি বু পানের রস গিলতে গিলতে হঠাৎ ভারতীয় কোন এক চ্যানেল গিয়ে ঢোকেন। ওখানে আমজাদ খানের ক্লাইম্যাক্স সিন দেখা যায় – ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর। রহমান সাহেব আর কলি বু দুজনই বুঝতে পারেন এটা ব্লকবাস্টার শ্যোলে ছবির দৃশ্য। পৃথিবীর সকল হিন্দি ছবির দর্শকই টেলিভিশনের কল্যাণে এই ছবি অনেকবার দেখেছেন।

রহমান সাহেব বলেন, ‘কলি বু, তোমার মনে আছে স্বাধীনতার পর আমরা সবাই মিলে হৈহুল্লোড় করে বলাকা সিনেমায় অশ্রু দিয়ে লেখা ছবিটি দেখেছিলাম?’

‘খুব মনে আছে। এসএসসি পরীক্ষার পরপর আম্মাই আমাদের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলেন।’

রহমান সাহেব যোগ করেন, ‘মামী চাইলেও মামা কিন্তু আমাদের সাথে যাননি।’

কলি বু বলেন, ‘তখন ছোটবড় সবাই মিলে একসাথে সিনেমা দেখা একটা চক্ষুলজ্জার ব্যাপার ছিল। তাছাড়া আব্বা তখন ব্যস্ত উকিল। সিনেমা দেখার সময় কোথায়?’

‘হ্যাঁ, তা ঠিক। মাঝে মাঝে মলি বু, আনিস ভাইয়ার কথাও মনে পড়ে।’ রহমান সাহেব বলেন, ‘আনিস ভাইয়া আমাদের সবার বড় হলেও আড্ডা-ফাড্ডায় কেমন শিশুদের মতো আমাদের সাথে মিশে যেতেন।’

কলি বু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘ওরা তো আমাদের ছেড়ে চলে গেল।’

মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে এসে আনিস ভাইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানে ভর্তি হলেও একসময় ফেরারি হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেকদিন পর জানা গিয়েছিল তিনি থাইল্যান্ড হয়ে কীভাবে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন। এর পর তো লম্বা ইতিহাস। ওখানে এক মেক্সিকান সুন্দরীকে বিয়ে করে থিতু হয়ে গেলেও পাঁচ বছর পূর্বে তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তিনি দেশে এসেছেন। ওখানে তাঁর দুই ছেলে থাকলেও এখন বাংলাদেশের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।

সত্তরের রাজনৈতিক ঘনঘটার সময় মলি বু কলেজে ভর্তি হলেও খুব বেশি ক্লাস করতে পারেননি। আর একাত্তরে লুকিয়ে পালিয়ে থাকতে গিয়ে তাঁর কলেজে যাওয়া হয়নি। যুদ্ধের পর অবশ্য এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই এক সদ্যপাশ ডাক্তারের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বেচারি নিঃসন্তান হওয়ার শোকে নাকি অন্য কোনো শারীরিক জটিলতায় চল্লিশ পেরোনোর আগেই ইহধাম ত্যাগ করেন।

মলি বু মারা যাওয়ার কিছুদিন পর মামীর ব্রেষ্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে। অনেক চেষ্টা চরিত্তির করেও মামীকে বাঁচানো যায়নি। এর পর থেকে গ্রামের দূরাত্মীয় মাখন এ বাড়িতে স্থায়ী হয়। এদিকে কলি বু তার মেয়ে দুটিকে পাত্রস্থ করার পর সরকারি কর্মকর্তা স্বামীকে নিয়ে নির্ঝঞ্ঝাট দিন কাটাচ্ছিলেন। রোগের সামান্য উপসর্গ নিয়ে তাঁর স্বামী যখন অবসরেরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই হঠাৎ ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে তিনি অক্কা পান। এর কিছুদিন পরই মামা স্বউদ্যোগে কলি বু’কে সরকারি কোয়ার্টার থেকে আজিমপুরের নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। কিন্তু বছর দেড়েক আগে উকিল মামাও পরলোক গমন করলে কলি বু একা হয়ে পড়েন।

দুই মেয়েই অনেক চেষ্টা করেছে মাকে তাদের একজনের কাছে নিয়ে যেতে। দুজনই স্বামীসহ বিদেশে থাকে – সুমী ফ্লোরিডায় আর মুন্নী সিডনীতে। কিন্তু কলি বু কিছুতেই দেশ ছেড়ে যাবেন না। তখন হঠাৎ করে মিঠু মামা মানে রহমান সাহেবের কথা তাদের মনে পড়ে। যেই ভাবা সেই কাজ। তারা জোর করে মিঠু মামাকে ধরে এনে মায়ের কাছে রেখেছে যাতে মা একাকীত্বে না ভোগেন। অবশ্য প্রায়ই সন্ধ্যার পর মেয়েরা ফোন করে মায়ের খোঁজ নেয়।

উকিল মামার পুরনো বাড়ির নিচতলা প্রথম থেকেই ভাড়া দেয়া । চার-কক্ষের দোতলাই সবাই মিলে স্বচ্ছন্দে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল। উপরন্তু, ছাদের চিলেকোঠা তো ছিলই। ওখানে প্রথমে কেউ থাকত না বলে ঘরের পুরনো আসবাব, বালতি, কোদাল, দা-বটি ফেলে রাখা হতো। তবে রহমান সাহেব গায়েগতরে বেড়ে উঠলে অর্থাৎ নবম শ্রেণিতে ওঠার পর মামীই একদিন চিলেকোঠা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বিছানা-বালিশ দিয়ে তাকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। প্রথম দিকে রাতের বেলা একটু ভয় করলেও অল্পদিনের মধ্যে চিলেকোঠাই রহমান সাহেবের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে পড়াশুনা করতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি উকিল মামার এই বাড়িতেই থেকেছেন।

প্রতি রাতে রহমান সাহেব কিছুক্ষণের জন্য ছাদে ওঠেন। তাঁর ধারণা নির্জনে আকাশের তারা গুনতে গুনতে সিগ্রেটে একটা সুখটান দিলে মনে একটা ধ্রুপদী ভাবের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখন তো ইচ্ছে করলেও তিনি ধূমপান করতে পারবেন না। তাই পানের অবশিষ্টাংশ জাবর কাটতে কাটতেই তাঁকে কল্পলোকে বিচরণ করতে হয়। মাখন রহমান সাহেবকে খুব সম্মান করে। সে জানে, এই মামা অনেক বড় একজন মাস্টার। পারতপক্ষে সে আগ বাড়িয়ে কথা বলে না। রহমান সাহেব নেমে গেলেই তবে সে ছাদের দরজা বন্ধ করে চিলেকোঠায় ঘুমাতে যায়।

মাখনের ধারণা অমূলক নয়। রহমান সাহেব বড় মাপের মানুষ বটে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি কলেজে তিনি শিক্ষকতা করে অধ্যক্ষ হয়ে অবসরে গিয়েছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি অল্পবিস্তর লেখালেখিও করেছেন। পত্র-পত্রিকায় ফরমায়েশি প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা ছাড়াও তিনি দুটি উপন্যাস ও একটি গল্পের বই বের করেছেন। লেখালেখির কোনো গোষ্ঠীর সাথে গাঁটছড়া বাঁধলে হয়তো সুপরিচিত হয়ে উঠতে পারতেন। কিন্তু তিনি ওই পদ্ধতি অনুসরণ করেননি। অবসরে আসার আগে অনেক পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবতার সাথে আপস করতে পারেননি বলে সবকিছু হযবরল হয়ে যায়।

সেদিন পেনশনের টাকা তুলে রহমান সাহেব কলি বু’র জন্য গোলাপি রঙের একটি জামদানি শাড়ি কিনে আনেন। মাখনের হাতেও দুই হাজার টাকা তুলে দিয়ে বলেন, ‘মাখন, তুমি নিজের পছন্দমতো তোমার বউ-বাচ্চার জন্য কিছু কিনে নিয়ো।’

সেই উচ্ছল দিনগুলোতে গোলাপি রঙের জামা পরলে উজ্জ্বল ফরসা কলি বু’কে কী যে সুন্দর লাগত! বিয়ের পরও তিনি গোলাপিপ্রধান রঙের শাড়ি বেশি পরেছেন। তবে এই বয়সে এসে রঙের প্রতি তাঁর তেমন মোহ দেখা যায় না। তিনি রহমান সাহেবের উপহার হাতে নিয়ে একটু মুচকি হাসেন। বলেন, ‘আমার পছন্দের রঙের কথা ভুলিসনি! তো এটা আনতে গেলি কেন? আমার যা আছে তা-ই তো পরে শেষ করতে পারব না।’

রহমান সাহেব কিছু বলতে গিয়েও বলেন না। একটু স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ায় তার গলার স্বর ভারী শোনাবে সে আশঙ্কায় তিনি চুপ করে থাকেন।

পেনশনের টাকা রহমান সাহেব যা পান তা দিয়ে তিনি হেসেখেলে বাকি জীবন দিব্যি কাটিয়ে দিনে পারবেন। এবং সে ভরসায় তিনি পরিকল্পনামাফিক সরিষাবাড়ির পৈত্রিক ভিটায় আধাপাকা ঢেউটিনের একটি ঘর বানিয়েছিলেন। ভাই-বোন কেউ না থাকলেও বাড়িতে থাকা দুই ভাতিজার পরিবার আছে। ওরাই বলেছিল, ‘কোনো চিন্তা নাই চাচা, আমরার লগে থাকেন, আফনার নাতি-নাতনিরাই আফনার দেখাশোনা করব।’ তাদের কথায় খুশি হয়ে রহমান সাহেব ভেবেছিলেন টাটকা ফলমূল, শাকসবজি খেয়ে সুস্থ-সবল থাকবেন; ঝুম বৃষ্টি হলে টিনের চালের নূপুরধ্বনি শুনতে শুনতে জানালা খুলে দিয়ে দূরের ব্রহ্মপুত্রের দিকে তাকিয়ে নতুন কোনো গল্প-উপন্যাসের প্লট খুঁজবেন; সন্ধ্যায় মালজোড়া গানের আসরে বসে গান শুনবেন; রাতের নিঝুমতায় না-পড়া বইগুলো পড়বেন এবং দু’চার পাতা লেখালেখির পর নাক ডাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন।

সুমী আর মুন্নী তাঁদের মিঠু মামাকে সরিষাবাড়ি থেকেই খুঁজে বের করে। ততদিনে তিনি সেখানে পুরনো নতুন অনেকের সাথেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন। প্রথম দিকে ভাতিজাদের যত্ন-আত্তিতে তিনি আপ্লুত হয়ে কল্পলোকে সেই ছোটবেলার আনন্দময় দিনগুলিতে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে পুরনো হয়ে যাবার পর পারিবারিক বিষয়-সম্পত্তি নিয়ে কিছু কথা আলোচনায় উঠে আসলে তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হয়। ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে সাহায্য করতে ছুটে এলেও তিনি এব্যাপারে কথা বলতে চাননি। আপন ভাতিজারা চাচার পৈত্রিক ভূসম্পত্তি তাদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে একথা চিন্তা করলে রহমান সাহেব নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়েন, অন্যের কাছে বলা দূরে থাক। ঠিক সে সময়েই সুমী আর মুন্নী আবদার জানালে রহমান সাহেব জোরালো আপত্তি না জানিয়েই তাদের কথায় রাজি হয়ে যান এবং চরম মর্মপীড়া ও অস্বস্তি থেকে উদ্ধার পান।

রহমান সাহেব মাঝে মাঝে বিকেল বেলা নীলক্ষেতের দিকে ঘুরতে যান। উদ্দেশ্য পুরনো বই কেনা। বোনাস হিসেবে হাঁটাও হয়। আজকেও গিয়েছিলেন। সন্ধ্যার পর ফিরে এসে কলি বু’র সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি মাখনের কাছে খোঁজ নেন। মাখন জানায়, ‘খালাম্মা শুইয়া আছেন, মনে অয় শরিলটা ভাল না।’

রহমান সাহেব অস্থির হয়ে কলি বু’র কক্ষের দিকে ছুটে যান। তাঁরা দুপুরেও একসাথে খাওয়া-দাওয়া করেছেন; তখন তো কলি বু কিছু বলেননি। ওষুধ ঠিকমতোই খাচ্ছেন। ব্লাডসুগার কিংবা প্রেশার বাড়ল কিনা কে জানে। রহমান সাহেব আস্তে করে ডাক দেন, ‘কলি বু, তোমার শরীর কি খারাপ? শুয়ে আছ কেন?’

কলি বু পাশ ফিরে শুয়ে দুর্বল কণ্ঠে বলেন, ‘না রে, মাথাটা ধরেছে।’টেবিল ল্যাম্পের আলোয় তাঁর মুখটাও ভালভাবে দেখা যাচ্ছে না।

রহমান সাহেব কলি বু’র মাথায় হাত রেখেই আঁতকে ওঠেন। প্রচণ্ড গরম। তিনি দ্রুত থার্মোমিটার এনে কলি বু’র জিভের নিচে পুরেন। থার্মোমিটার মুখ থেকে বের করে যখন দেখেন জ্বর ১০৫ ডিগ্রি রহমান সাহেবের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। তিনি মাখনকে বলেন, ‘আকলিমাকে ফোন কর।’ আকলিমা প্রতিদিন সকালে এসে তিন ঘণ্টা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে আরম্ভ করে মাছ-মাংস, তরি-তরকারি কাটাকুটি, রুটি বানানো, কাপড় কাঁচা ইত্যাদি কাজ করে। দিনের বাকি সময় সব দায়িত্ব মাখনের ওপরই থাকে।

মাখন ফোন ধরিয়ে দিলে রহমান সাহেব আকলিমাকে অনুনয় করে বলেন, ‘তোমার সবকিছু ফেলে আজকের জন্য দৌড়ে আস; তোমার খালাম্মার শরীর খুব খারাপ।’

আকলিমা আসার আগেই রহমান সাহেব কলি বু’র প্রেশার এবং ব্লাডসুগার মেপে ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান ড. মাহতাবকে ফোন করেন। ড. মাহতাব সব শুনে বলেন, ‘রহমান ভাই, এখন তো সময় খারাপ, চতুর্দিকে ডেঙ্গু বেড়েই চলেছে। একটা কাজ করেন, ঘরে তো প্যারাসিটামল আছে – সেটা তিন বেলা একটা করে খাওয়ান, তবে খালি পেটে না। আর জ্বর যেহেতু অনেক বেশি আপনি ভল্টারিন সাপোজিটরি নিয়ে আসেন – জ্বর একশো দুই তিন হলেই সাপোজিটরি দিতে হবে। আরেকটা কাজ করতে পারলে খুব ভাল হয়, ভাবীর সারা গা যদি স্পঞ্জিং করানো যেত। আপাতত এইটুকুই, আমি কালকে খোঁজ নেব।’

আকলিমা এসে পৌঁছালে রহমান সাহেব তাকে বুঝিয়ে দেন কীভাবে ছোট তোয়ালে ভিজিয়ে কলি বু’র সারা গা মুছে দিতে হবে। তারপর তিনি দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যান এবং কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকটি সাপোজিটরি এবং একহালি ডাব নিয়ে ফিরে আসেন।

মাখন ডাব কাটতে নিয়ে গেলে রহমান সাহেব কলি বু’কে বুঝিয়ে বলেন যে সাপোজিটরি এখুনি দিতে হবে – দরকার হলে আকলিমা সাহায্য করবে।

রাতে কলি বু’কে ডাবের পানি ছাড়া আর কিছুই খাওয়ানো যায়নি। তবে ভল্টারিন সাপোজিটরি নিয়েছেন । কিছুক্ষণের মধ্যে জ্বর একশো’র নিচে নেমে এলে তিনি বিছানা ছেড়ে বাথরুমে যান এবং ফিরে এসে কিছুক্ষণ বিছানায় বসেন। সামনের চেয়ারে বসা উদ্বিগ্ন রহমান সাহেবকে দেখে কলি বু বলেন, ‘তুই এত হুলস্থূল করছিস কেন, জ্বর হয়েছে, ছেড়ে যাবে।’

উদ্বিগ্ন হওয়া আর হুলস্থূল করার জন্য কলি বু ছাড়া রহমান সাহেবের আর আছে কে? সেই স্কুল-কলেজের দিনগুলো বাদ দিলে জীবনের বাকি দিনগুলোতে কলি বু’র জন্য তাঁর কিছু করার সুযোগ হয়নি।

পরদিনও যখন কলি বু’র জ্বরের মাত্রা আগের মতোই থাকে এবং প্রচণ্ড মাথাধরা ও বমিভাব নতুনভাবে যোগ হয় তখন ডাক্তার বললেন, ডেঙ্গুর লক্ষণ মনে হচ্ছে। NS1 টেস্টটা করানো দরকার। তবে একথাও বললেন যে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই, শুধু জ্বরটা সামাল দিতে হবে এবং প্রচুর তরল যেমন ডাবের পানি, ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি খেতে হবে এবং বিশ্রাম নিতে হবে। রাতে সুমী ফোন করলে কলি বু এবং রহমান সাহেব রাখঢাক করে জানিয়েছেন, এটা তেমন কিছু না – সর্দিগর্মিজনিত জ্বর, সেরে যাবে।

তার ছোট বাচ্চাকে সাথে নিয়ে আসবে এই শর্তে আকলিমাকে শেষপর্যন্ত আরও দু’চারদিন রাতে থাকার জন্য রাজি করানো গেছে। রহমান সাহেবও দু’রাত ধরে আর ছাদে উঠছেন না। তিনি অনেক রাত পর্যন্ত না ঘুমিয়ে ড্রয়িং রুমে বই নিয়ে বসে থাকেন। বইয়ের বিষয়বস্তুর চেয়ে কলি বু’র ভাবনা তাঁর মাথা বেশি দখল করে রাখে। দীর্ঘ সময়ের কর্মব্যস্ততা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে রহমান সাহেবের ঝিমিয়ে পড়া অনুভূতিতে কলি বু প্রায় অনুজ্জ্বল হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তাঁর এই আকস্মিক অসুস্থতা রহমান সাহেবকে কৈশোরের মায়াজালে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

যেমন আশঙ্কা করা হয়েছিল, কলি বু’র ডেঙ্গু ধরা পড়েছে, তবে রক্তের প্ল্যাটিলেট ভাল অবস্থানে আছে। রহমান সাহেব ডেঙ্গুর রিপোর্ট আনার পথে বাজার থেকে ডাব, ডালিম, আপেল, আনারস তো নিয়ে এসেছেনই সাথে প্রায় এক থলে থানকুনি পাতা নিয়ে এসেছেন। তিনি নিজে দেখেছেন এবং ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রমাণও পেয়েছেন, ডাক্তাররা নিরুৎসাহিত করলেও থানকুনি ও পেঁপে পাতার রস প্ল্যাটিলেটের পতন থামিয়ে রাখতে দারুণ কার্যকর। জ্যুসারে ফলের রস বের করার পর রহমান সাহেব থানকুনি পাতাগুলো নিজহাতে পরিষ্কার করে ব্লেন্ডারের সাহায্যে দুই বোতল রস তৈরি করেন। কলি বু বারণ করলেও ফ্রুটজ্যুসের সাথে জোর করে তাকে অর্ধেক কাপ থানকুনির রস খাইয়ে দেন তিনি।

আরও দুটি নেয়ার পর সাপোজিটরি বন্ধ করে দিয়েছেন কলি বু। রাতে ও সকালে আকলিমা ভাল করে স্পঞ্জিং করে দেয় এবং দিনের বেলা রহমান সাহেব কয়েকবার হাল্কা বরফমেশানো পানিতে ভেজানো জলপট্টি দেন। অল্প স্যুপ বা ডাবের পানি খাইয়ে প্যারাসিটামল ট্যাবলেটও খাওয়ানো হয়।

রাতে জ্বর একটু কমে এলে কলি বু ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসেন। রহমান সাহেব উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘এখন কেমন লাগছে, কলি বু?’

কলি বু নিমীলিত চোখে মুচকি হেসে আকলিমাকে বলেন, ‘আকলিমা, তুমি গ্রিন টি বানাতে পার?’

মাখন দৌড় দিয়ে এসে বলে, ‘খালাম্মা, আমি বানাইয়া আনি।’তারপর রহমান সাহেবের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করে, ‘কফি দিব, মামা?’

রহমান সাহেব কলি বু’র দিকে তাকিয়ে থেকেই হ্যাঁসূচক মাথা নাড়েন।

কলি বু এবার চোখ খুলে বলেন, ‘তুই এত অস্থির হয়েছিস কেন বল? এই পাতালতা কীসব খাওয়াচ্ছিস, তুই ডাক্তার নাকি?’

রহমান সাহেবের মুখে হাসি ফোটে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাল করে জেনেই তবে তোমাকে খাওয়াচ্ছি। দেখবে জ্বর কমে গেলে ডেঙ্গুর কোনো কমপ্লিকেশন থাকবে না।’এক মুহূর্ত থেমে তিনি আবার বলেন, ‘ন্যাচারাল চিকিৎসাই আসল চিকিৎসা। গেন্দা ফুলের পাতার রসের কথা তোমার মনে নেই?’

রহমান সাহেবের কথা শুনে কলি বু যেন দপ করে নিভে গেলেন। স্মৃতি হাতড়ে কি তিনি গেন্দা ফুলের সন্ধান পাচ্ছেন না, নাকি সেই কথা মনে পড়তেই তিনি বিব্রতবোধ করছেন? উত্তরে তিনি কিছুই বললেন না।

দুদিন পর কলি বু’র জ্বর পড়ে গেলে ড. মাহতাবের পরামর্শে আবার রক্ত পরীক্ষা করা হলে দেখা গেল অন্যান্য কাউন্টগুলোর মধ্যে একটু কমবেশি হলেও প্ল্যাটিলেট এক লাখ পঁচিশ হাজার আছে। ডাক্তারকে বেশ চাঙ্গা মনে হলো। তিনি বললেন, ‘ভাবী, আপনার তেমন সমস্যা নেই; ব্লাডপ্রেশার ঠিক থাকলে আর শ্বাসকষ্ট না হলে আপনাকে কিছুই করতে হবে না। দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সব খাবার খান, তবে লিকুইড বেশি খাবেন আর রেস্ট নিন, ব্যস।’

পরবর্তী দুদিনে কলি বু’র দুর্বলতা ছাড়া আর কোনো জটিলতা দেখা গেল না। তবুও ডাক্তারের পরামর্শে আবার রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেল প্ল্যাটিলেট দুই লক্ষের কাছাকাছি। অল্প হলেও স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন। সন্ধ্যায় আগের মতো টিভির সামনে বসতে পারছেন। পানের নেশাও ফিরে এসেছে। রহমান সাহেব মনে মনে খুশি হন যে তাঁর থানকুনি থেরাপি তাহলে সফল।

পরদিন সকালে নাশতা শেষ করে কলি বু হঠাৎ করে রহমান সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আচ্ছা মিঠু, তুই নাকি প্রতিদিন রাতে ছাদে উঠিস, কথাটা কি সত্য?’

প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে রহমান সাহেব যে একবার ছাদে ওঠেন, কিছুক্ষণ মামার পরিত্যক্ত আরাম কেদারায় বসে আশেপাশের উঁচু দালানের ফাঁক দিয়ে যতটুকু আকাশ দেখা যায় ততটুকু দেখেন, হালকা মেজাজে থাকলে মাখনের সাথে দু’চার কথা বলেন এসব কলি বু জানতেন না। তিনি বলেন, ‘যাই, মাঝে মাঝে, রাতের আকাশ দেখতে ভাল লাগে।’

‘ওঃ, তুই তো আবার সাহিত্যিক মানুষ।’ কলি বু বলেন, ‘না, সেদিন রাতে তোকে খুঁজে পাইনি তো। পরদিন মাখনের কাছ থেকে তোর ছাদে যাওয়ার কথা শুনলাম।’ একটা পান মুখে দিয়ে তিনি আবার বললেন, ‘আমাকে বলিসনি কেন, আমিও যেতাম।’

রহমান সাহেব শিশুদের মতো সোৎসাহে চিৎকার করে বলেন, ‘সত্যি তুমি যাবে?’

কলি বু বলেন, ‘যাব, তবে গভীর রাতে যেতে পারব না; সন্ধ্যার পর চা খেয়ে যাব।’

ছাদে দুটি চেয়ার রাখাই ছিল। সন্ধ্যার পর ঠিকই কলি বু রহমান সাহেবকে নিয়ে ছাদে ওঠেন। তাঁর পিতার লাগানো নারকেল আর দেবদারু গাছগুলি ছাদ পেরিয়ে অনেক উঁচুতে উঠে গেছে। সেদিকে তাকিয়ে কলি বু রহমান সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এখান থেকে আকাশও তো ভাল করে দেখা যায় না; তুই কী দেখিস?’

রহমান সাহেব কিছুটা দার্শনিকের মতো বলেন, ‘কলি বু, পৃথিবীর সবকিছু পুরনো হয়ে গেলেও আকাশ চিরনবীন?’

কলি বু হয়তো কিছু না বুঝেই বলে ফেলেন, ‘তোর মতো?’ পরে কথা ঘুরাতে গিয়ে আবার গুবলেট করে ফেলেন, ‘তোর না হাতটা কেটেই ফেলেছিলাম।’বলে, হা হা করে হেসে ওঠেন।

রহমান সাহেবের স্মৃতিকাতর হবার অনেক বিষয়ই আছে। কলি বু’র সাথে তাঁর বয়সের ফারাক ছয় মাসের হলেও তাঁরা একে অপরের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। উকিল মামা উন্নত শিক্ষার জন্য ভাগ্নেকে নিজের কাছে নিয়ে এলে কিশোর রহমান সাহেব এবং কলি বু একসাথে লেখাপড়া, খেলাধুলা, মারামারি করেই বড় হয়েছেন। কলেজে ভর্তি হবার পর তাদের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। এই চিলেকোঠায়ই একদিন বিকেলে যখন রহমান সাহেব কলি বু’র গোলাপি গালে তর্জনী ছুঁইয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে বলেছিলেন, ‘কলি বু, তুমি এত সুন্দর কেন?’ তখনই কলি বু তাঁর তর্জনীতে জোরে একটি কামড় বসিয়ে দেন। রহমান সাহেবের আঙুল কেটে রক্ত ছুটলে কলি বু পাগলের মতো ছুটে গিয়ে গেন্দাফুলের পাতা এনে নিজের দাঁত দিয়ে চিবিয়ে তাঁর ক্ষতস্থান বেঁধে দেন। শুধু এই ঘটনাই নয়, আকাশের তারার মতো আরও আরও অনেক বিচ্ছিন্ন কিন্তু জ্বলজ্বলে মুহূর্ত তাদের উদ্ভিন্ন সময়ের পটে আঁকা রয়েছে।

রহমান সাহেব কিঞ্চিৎ দ্বিধান্বিত হয়ে বলেন, ‘থাক না কলি বু, শুকিয়ে যাওয়া ক্ষত খুঁচিয়ে আবার রক্তাক্ত করছ কেন। তার চেয়ে চল আমরা আকাশের তারা গুনি।’

কলি বু এবার খিলখিল করে হেসে ওঠেন, ‘তারা তুই গোন, তোর লেখালেখির কাজে লাগবে। আমার জীবনের সব তারাই তো খসে পড়েছে।’বলে, কলি বু একটু আনমনা হয়ে যান।

রহমান সাহেব ভাবেন, হয়তো প্রয়াত স্বামীর কথা মনে পড়ে যাওয়ায় কলি বু একটু দমে গিয়েছেন। তিনি প্রসঙ্গ পাল্টাতে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘সুমী-মুন্নী ফোন করেছিল? তুমি যে সুস্থ হয়েছ তারা কি জেনেছে?’

কলি বু খুবই নির্বিকারভাবে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বলেছি।’একটু থেমে আলো-আঁধারিতে রহমান সাহেবের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি আবার বলেন, ‘একটা কথা বল তো মিঠু, আমার সাথে অনেক ফাজলামো হয়তো করেছিস, আমিও করেছি; কিন্তু তুই বিয়ে করলি না কেন? তোর সংসার করার ইচ্ছা হয়নি?’

এসব কথা এখন অবান্তর। জীবন এখন অস্তগামী সূর্য। প্রশান্ত এবং নিস্তেজ। কলি বু’র এ প্রশ্নে রহমান সাহেব কিছুটা বিব্রত হন। পঞ্চাশ বছর আগের সময় আর এখনকার সময় এক নয়। তখনকার ঝড়ো সময়ে কলি বু আবিষ্ট চোখে বলতে পেরেছিলেন, ‘তুই আমার চেয়ে একটু বড় হলে না কেন মিঠু?’ রহমান সাহেব পাগলামি করে হোক আর জেদেই হোক বলেছিলেন, ‘তোমাকে না পেলে আমি বিয়েই করব না, কলি বু।’ কিন্তু এ দুটি প্রাণের হার্দিক মিতস্ক্রিয়া সমাজ আমলেই নেয়নি। তারপর সময় তার আপন গতিতে এগিয়ে গিয়েছে। রহমান সাহেব কলি বু’র জিজ্ঞাসার সদুত্তর খুঁজে না পেয়ে উড়িয়ে দেয়ার মতো হালকা করে বললেন, ‘ব্যস্ততা তো ছিলই, আর ইচ্ছাও হয়নি।’ তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, কলি বু নিজেই এ প্রশ্নের প্রকৃত উত্তর জানেন।

কলি বু আর কোনো কথা না বলে চুপ করে থাকেন। রহমান সাহেবও চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে আকাশের দিকে তাকান। পূব আকাশে একটি ঘোলা চাঁদের মুখ দেখা যাচ্ছে।

কলি বু একটু পর চেয়ার থেকে উঠে রহমান সাহেবের পাশে গিয়ে বলেন, ‘আজ পূর্ণিমা নাকি রে?’

রহমান সাহেব চাঁদের দিকে চেয়ে থেকেই উত্তর দেন, ‘না, কিছুদিন আগে পূর্ণিমা ছিল। এখন কৃষ্ণপক্ষ চলছে।’
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী চমৎকার লিখেছেন গুণী ।
অনেক ধন্যবাদ।
Faisal Bipu বৃক্ষরাজি আজ আগের মতো নেই। নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন। অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিক আজ আর নেই তবে ভাই আপনার লেখায় প্রাণ আছে প্রচুর। বিশেষ কিছু পড়ার আনন্দ পাই
একেবারে ডুবিয়ে দিলেন ভাই। পড়েছেন, এতেই আমি খুশি। ধন্যবাদ।
কি যে বলেন ভাই। হয়তো বোঝাতে পারিনি। আপনার লেখা অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ লাগে আমার কাছে। মনে হয় কোন বিখ্যাত সাহিত্যিকের লেখা পড়ছি
আপনার প্রশংসায় অত্যন্ত পুলকিত বোধ করছি। কিন্তু আমি তার উপযুক্ত নই।
আমিও তাই বলি। আপনি আসলে জাত লেখক। এবারও প্রথম হলে অবাক হবোনা।
ভাই, অতি সুস্বাদু তবে হজম হচ্ছে না। আর পুরস্কার, স্বীকৃতি? ওতে আগ্রহ হারিয়েছি। জানেন তো, করোনাকাল থেকে জমানো পুরস্কারের কথা গক'কে জিজ্ঞেস করাই যায় না। মেইল ফেরত আসে। ভাল লাগে তাই লিখি। সবচেয়ে বড় পুরস্কার, আপনারা সাথে আছেন।
Tarun Chowdhury খুবই ভালো লেগেছে।
অনেক ধন্যবাদ।
বিষণ্ন সুমন আপনার মত কথা শিল্পীর লিখা সানেই গল্পে বুঁদ হয়ে থাকা। সে কারণেই লিখা বড় হলেও পড়ে আনন্দ পাওয়া যায়। শুভ কামনা ও ভালোবাসা সতত।
অনেক ধন্যবাদ। কলেবর ছোট করার চেষ্টা করব।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

অন্যদিকে রহমান সাহেব শিক্ষকতা জীবনের লম্বা সময় এরিনমোর টোব্যাকো দিয়ে বিড়ি বানিয়ে খেয়েছেন, কিন্তু কোনোদিন পান খাননি।

১৯ নভেম্বর - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৫৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪