জীবনের সন্ধানে

অন্ধ (মার্চ ২০১৮)

শৈলেন রায়
মোট ভোট ২৯ প্রাপ্ত পয়েন্ট ৫.০৩
  • ২৫
  • ৩৬
পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে,সাধারনত এত ভোরে ওঠে না বিমলা।ও কেন এ বাড়ির ঘুম ভাঙ্গে একটু বেলায়।কাল অনেক রাত অবধি মেহফিল চলেছে।সারা শরীরে ক্লান্তি এবং ক্লেদ মাখামাখি।শরীরটাকে সাফসুতরো করে স্নানের পর একটু যেন তাজা মনে হচ্ছে।হারু ময়রার দোকান থেকে এক বাক্স কড়াপাকের সন্দেশ কিনলো ফেরার পথে।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচড়ালো,কপালে দিল বড় করে সিদুঁরের টিপ।আর কোন প্রসাধন নয়।পাটভাঙ্গা লালপাড় গরদের শাড়িতে মানিয়েছে চমৎকার। লাজুক মুখে ঘাঢ় ঘুরিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে বার কয়েক।ছায়া কায়ার মধ্যে একটু চোখ টেপাটিপি, একটু লাস্যময় হাসি বিনিময়–এ যেন অন্য বিমলা।
একটা রেকাবিতে সন্দেশগুলো সাজালো পরিপাটি।রাস্তায় শুরু হয়েছে লোকজনের চলাচল।রিক্সার ঠূং-ঠাং,হেড়ে গলার হাকডাক শোনা যায় ঘর হতে।এ বাড়ি আর ঘুমিয়ে নেই।কলতলা কোলাহল মুখর,স্নান করা বাসন মাজা অশ্লীল শব্দ বিনিময় নিত্যকার মত।কেবল ওদের মধ্যে আজ বিমলা নেই।
ওদের পাশ কাটিয়ে পুজো দিতে চলল বিমলা।সকলেরই নজর পড়ে সেদিকে।পরস্পর মুখ টিপে হাসে,চটুল চোখের ইঙ্গিতময় ইশারা,হয়তো বা একটু ঈর্ষা।
‘বিমলির নাগর আসবে আজ—তাইতো গুমরে পা পড়ছে না মাটিতে।’সঙ্গে খিল খিল হাসির ফোয়ারা।
সত্যি বিমলার মনটা আজ উড়ু উড়ু,আমল দেয় না ওদের কথায়।কথায় কথা বাড়ে,ব্যঙ্গ বিদ্রুপ গরদের শাড়িতে পিছলে যায়।কোন বচশায় জড়াতে চায় না আজ।সদরের চৌকাঠ পেরিয়ে পথে নামে বিমলা। কলতলা শান্ত হয় না।যমুনা বলে,সিঁদুর পরার ঘটা দেখেছিস–তাও যদি বিয়ে করা মাগ হত….।
কলতলা এবার ভেঙ্গে পড়ে না হাসিতে।অপ্রস্তুত বোধ করে যমুনা,খোলা পিঠে ছোবড়া ঘষতে ঘষতে নিজেকে সামলে নেয়।
‘পরের কথায় কি দরকার বাপু,নে নে তাড়াতাড়ি কর,পিণ্ডি সেদ্ধ করে আবার সেজে গুজে ধন্বা দিয়ে বসতে হবে।’প্রসঙ্গটা বদলাতে চায় বীনা।একটা দীর্ঘশ্বাস বাতাসে ঢেউ তোলে।
সুনসান রাস্তা,দোকানে সবে আগুণ দিয়েছে।
দরজা দিয়ে বেরোতে নজরে পড়ে গাড়ীটা,কাল রাত থেকে দাঁড়িয়ে আছে।মনে হয় কারো ঘরে বাবু রাত কাটিয়েছে। গাড়ীর মালিক নয় সম্ভবত ড্রাইভার হবে।রাস্তায় দাঁড়িয়ে একবার এদিক- ওদিক দেখে। তাও যদি বিয়ে করা মাগ হতো। কথাটা মনে হতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।বিয়ে করা মাগ নয় তাতেই হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে।আর বিয়ে করা হলে দেখতে হতনা।পুজো দিতে যাচ্ছে ঐসব নোংরা কথা মনে রাখা ঠিক নয়।
পুজো দিয়ে ফেরার পথে শাহজাদা হোটেলের কাছে দাঁড়ায় বিমলা।একমূহুর্ত ভাবে, তারপর বলে, ইয়াসিন ভাই,বিরিয়ানি আর মাটন দো-পিয়াজি দুটো পার্শেল রেডি কোরো।আমি এসে নিয়ে যাব।
–দুটো কেন রে?কোন খলিফা আসছে?ইয়াসিনের চটুল মন্তব্য।
মৃদু হেসে বাড়ির পথ ধরে বিমলা।ইয়াসিনের কথাটা নাড়াচাড়া করে মনে মনে।খলিফা নয় দিল কা কলিজা, কথাটা মনে এলেও ইয়াসিনকে বলেনা বিমলা।দশ বাই দশ ছোট খুপরি ঘর,পিছনের বারান্দায় রান্নার ব্যবস্থা।ঘরের একদিকে দেওয়াল আলমারি,থাক থাক শাড়ি সাজানো।উপরের তাকে কিছু টুকিটাকি একটা আধ খালি মদের বোতল। গত রাতে মেহফিলে ব্যবহার হয়েছিল,কিছুটা তলানি পড়ে আছে।উল্টো দিকে কুলুঙ্গিতে লক্ষির পট,মেলা থেকে কিনে আনা শিব লিঙ্গ।সন্দেশের থালাটা নামিয়ে রাখে তার পাশে।বারান্দার ধারে বসে বাথরুম সেরে নেয়।
তারপর চা করতে বসে।নীরাপদর ভীষণ চায়ের নেশা।ধুমপান আর চা অন্য কোন নেশা নেই।মদ্যপান পছন্দ নয় কিন্তু এ লাইনে এত ছুৎমার্গ হলে চলে না।টাকা পয়সা মদ মেয়েমানুষ সবই মাল।বিমলার এসব ভাল লাগে তা নয় অবশ্য এখন অভ্যেস হয়ে গেছে।নীরাপদর দৃষ্টিতে নিঃশ্বাসে স্পর্শে অন্য এক মাদকতা, নেশার জন্য মদ লাগে না।মানুষটা বড় উদাসীন ,ঠিক আসবে তো?অলক্ষুনে চিন্তাটা মনে উকি দিতে শিউরে ওঠে বিমলা। যমুনা বীনা মলিনা-দিরা তাহলে হাসাহাসি করবে।সে বড় লজ্জার, অপমানের। ইতি মধ্যে বাড়িউলি মাসী মঙ্গলা উকি দিয়ে গেছে।
–ও তুই উঠিছিস?
–মাসী ভিতরে আসবে?
–না রে বাপু।অনেক কাজ,বসে গল্প করার সময় কোথা?
নিতান্ত নিরীহ হাবাগোবা ধরনের দেখতে মঙ্গলা।স্থুল দেহ,শাড়ির বাঁধন উপচে ব্যালকনির মত বেরিয়ে এসেছে ভুড়ি।পিছন দিকে হেলে চলতে হয় ভুড়ির জন্য।দুই গাল ঝুলে পড়েছে,মুখে সব সময় গুণ্ডি পান।এক সময় নাকি মহিলার রমরমা অন্য মাগিদের ঈর্ষার কারন। উনুনে আঁচ পড়েছে,শুরু হয়ে গেছে রান্না ঘরে ঘরে।বিমলার খাবার আসবে আজ হোটেল হতে,রান্নার তাড়া নেই ।চা খেয়ে একটু গড়িয়ে নেয়।বিছানায় আধ-শোয়া হয়ে ছেঁড়া ছেঁড়া স্মৃতি নিয়ে নাড়াচাড়া করে।
মনে হয় কেউ দরজার কড়া নাড়ছে?দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে,ভুল শুনলো নাকি? আরো জোরে কড়া নাড়ার শব্দ হয়। দরজা ভেঙ্গে ফেলবে নাকি?বিমলা বিছানা হতে উঠে বসে,কোথায় হারিয়ে গেছিল সে?ঘড়ির দিকে চোখ যায়,বারোটা বেজে গেছে।দরজার ফুটোয় চোখ লাগাতে এক চিলতে হাসি ফোটে মুখে।উদাসীন ভাবে দরজা খোলে।এলোমেলো চুল,ঘাম ঝরছে জুলফি চুইয়ে, প্যাণ্টের উপর পাঞ্জাবি খোচাখোচা দাঁড়ি-গোঁফের ফাকে হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে নীরাপদ।
–অঃ তুমি?বিমলার গলায় নিস্পৃহতা।
–কখন থেকে কড়া নাড়ছি, তুমি কি ভাবলে ডাকাত?
মনে মনে বলে,ডাকাত ছাড়া কি?একচিলতে হাসি দিয়ে বলে,বাইরে দাঁড়িয়ে আর রঙ্গ করতে হবে না।এবার দয়া করে ভিতরে এস।
দরজা হতে সরে পাশ দেয় বিমলা।নীরাপদ ঘরে ঢুকতে দরজা বন্ধ করে ঘুরতেই নীরাপদ দুহাতে বিমলাকে জড়িয়ে ধরে মুখে মুখ ঘষে,লালায় সিঁদুরে মাখামাখি।
–আঃ কি হচ্ছে কি ছাড়।গায়ে ঘেমো গন্ধ,আসতে না আসতে শুরু হয়ে গেল দৌরাত্মি–।
আঁচল দিয়ে নীরাপদর মুখে লেপটে থাকা সিঁদুরের দাগ মুছে দেয়।মুখে বলে,খুব হয়েছে এতদিন পরে এসে সোহাগ জানানো হচ্ছে।স্থির হয়ে বস তো।অবাক হয়ে বিমলাকে লক্ষ্য করে নীরাপদ।মনে মনে ভাবে নারীকে যেখানেই রাখো যত কালিমা লাগুক তার মমতাময়ী রূপ কিছুতেই মলিন হবার নয়।বিধাতার বিস্ময়কর সৃষ্টি এই নারী।অথচ
এই সমাজ নারীর মর্যাদা বুঝলো না।যেদিন বুঝবে তার মর্যাদা সেদিন সমাজ আরো সমৃদ্ধ হবে তা নিশ্চয়ই করে বলা যায়।
একটা প্লেটে দুটো সন্দেশ আর এক গেলাস জল এগিয়ে দেয় বিমলা।ভ্রু কুচকে তাকিয়ে নীরাপদ বলে,একি সন্দেশ! চা হবে না?
–দিচ্ছি,আগে পুজোর প্রসাদটা খেয়ে নেও।
–আজ আবার কি পুজো?
–লক্ষিছাড়ার পুজো।চা দিচ্ছি,চা খেয়ে স্নান সেরে নেও।
–ঢুকতে না ঢুকতে শুরু হল শাসন।নীরাপদ চায়ে চুমুক দেয়।
–আমি একটু আসছি।এসে যেন দেখি স্নান সারা,বিমলা বলে।
–বাইরে যাচ্ছো?দাড়াও আমার জন্য –।নীরাপদ দেওয়ালে ঝোলানো পাঞ্জাবির পকেট হতে টাকা বের করতে যায়।
–সিগারেট? ঠিক আছে টাকা দিতে হবে না।ওসব পয়সার গরম অন্য জায়গায় দেখাবে।
নীরাপদ অনর্থক কথা বাড়িয়ে ভর দুপুরে অশান্তি করতে চায় না।নীরাপদর কপালে চুমু দিয়ে বিমলা বেরিয়ে যায়।
রাস্তায় দুপুরের নির্জনতা।লোক চলাচল নেই বললেই চলে। কে বলবে সন্ধ্যে নামতে এই রাস্তা হবে কোলাহল মুখর। বিমলাকে দেখে ইয়াসিন বলে,ও খলিফা এসে গেছে?কিন্তু হাঁড়ি নামতে আরো মিনিট দশেক লাগবে বইন।একটু দাড়াতে হবে।
এক পাশে ছায়া আশ্রয় করে দাঁড়ায় বিমলা।গলিটা সোজা গিয়ে দূরে বড় রাস্তায় মিলেছে।এই গলিতে সাধারনের চলাচল কম।বড় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অনেক দূর অতীতে হারিয়ে যায় মনটা।সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল,দিনটা ছিল আর পাঁচটা দিনের মত।অন্যদের মত কাস্টোমার ধরতে রাস্তায় দাঁড়ায় না বিমলা।ঘরেই থাকে,কখনো বা চাতালে বসে গল্প-গুজব করে।চাতাল পেরিয়ে সদর দরজা।কমিশনের বিনিময়ে ঝণ্টেরা কাস্টমার ধরে আনে।ভদ্রগোছের কাস্টোমার ছাড়া ঘরে ঢোকায় না বিমলা।সবাই জানে বিমলি-দি আর পাচজনের মত না।টাকা পেলেই হল মুচি মেথর রিক্সাওলা বাছবিচার কোন বাছবিচার নেই।স্নান সেরে পরিপাটি বসে ছিল বিমলা।উগ্র প্রসাধন ওর অপছন্দ।রুপোসী না হলেও চোখে পড়ার মত একটা আলগা শ্রী অন্যদের চেয়ে আলাদা করে চিনিয়ে দিত।এমন সময় পরেশ কাকা হাজির।অনেকদিন দেখা হয় নি কাকার সঙ্গে,দেখে ভাল লাগে।পরেশ কাকাকে কেমন গম্ভীর মনে হল।
–কাকা কেমন আছেন?
–তুই কোনো খবর পাসনি? থমথমে মুখ পরেশ কাকার।
–কি খবর? কি হয়েছে কাকা?
–ঠাকুর মশাই নেই।বিমলা বুঝতে পারছে না সে ঠিক শুনেছে তো?
–কাকা কি হয়েছে আমাকে বলুন?চুপ করে থাকবেন না।কাকা–।
–গত সপ্তাহে ঠাকুর মশাই চলে গেল।তোকে কেউ বলেনি?নিজের মনে বলে,কেন বলবে? ওদের কাছে তো তুই মরা। আজ আসি রে।পরেশ চলে যায়।
বাবা নেই ওকে কেউ একবার জানালো না?বড় অভিমান হয়–একবারও কি তার কথা কারো মনে এলনা? নাকি ইচ্ছে করেই তাকে খবর দেয় নি?
ঘরে এসে বালিশে মুখ গুজে ফুফিয়ে কাঁদতে থাকে বিমলা।পৃথিবীতে বাবা নেই ভেবে নিজেকে ভীষণ একাকী মনে হতে থাকে।বাবার মুখটা ভেসে ওঠে চোখের সামনে।অসহায় মানুষটার শেষ জীবন কেটেছে বড় কষ্টে।মেয়েটা নিরুদ্দেশ হলে বাড়ির বাইরে বের হত না লজ্জায়।এভাবে পড়ে আছে কতক্ষন, খেয়াল নেই।
–বিমলি-দি কাস্টোমার।বাইরে ঝণ্টের গলা শুনে উঠে বসে।অবিন্যস্ত বেশবাস সামলে চোখ মেলে তাকাতে দেখল, সামনে দাঁড়িয়ে মানুষটা।নীরাপদ একটা একশো টাকার নোট এগিয়ে দেয়।বিমলা টাকাটা নিয়ে কুলুঙ্গিতে গুজে রাখে।
–আপনি কাঁদছিলেন কেন? নীরাপদর কৌতুহলি প্রশ্ন।
আগে কাস্টমারদের মুখে ‘আপনি’ সম্বোধন শোনেনি।বিমলা অবাক হয়ে নীরাপদকে দেখে বলে,ও কিছু না।আপনি আসেন।
নীরাপদ এগিয়ে আসে,পাশে বসে বলে,আমাকে বলুন কাঁদছিলেন কেন?
নীরাপদর স্বরে মমতার স্পর্শ পেয়ে বিমলা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।দু-হাতে মুখ ঢেকে হাউ-হাউ করে কেঁদে ফেলে।
নীরাপদ বলে,আজ থাক।
বিমলা হতাশ হয়ে কুলুঙ্গি হতে টাকাটা এনে ফেরৎ দিতে যায়।নীরাপদ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে বিমলার দিকে।
মৃদু হেসে নীরাপদ বলে,টাকা তুমি রাখো।আমি আবার আসবো।
বিমলা অবাক হয়।চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে মানুষটাকে।লাইনে কম দিন হল না কাস্টোমার দেখেছে নানা রকম।আজ দেখছে এক অন্যরকম মানুষ অচেনা মানুষ। বিমলার ঠোট কাপে।
–আজ তোমার মন ভাল নেই।একটা কথা বলবো?নীরাপদ বলে।
বিমলা সপ্রশ্ন দৃষ্টি মেলে তাকায়।
–চলো কোথাও নিরবিলিতে বসে কথা বলি,তোমার ভাল লাগবে।অবশ্য তোমার যদি–।ইতস্তত করে নীরাপদ।
মানুষটা কি মনের কথা বুঝতে পারে? বিমলার মনটাও খুজছিল একটু নির্জনতা,পুরানো দিন গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে তার মধ্যে হারিয়ে যেতে।
অনেক রাত অবধি ওরা বসেছিল তিস্তার ধারে। একটু দূরে শ্মশান,মৃতদেহ দাহ হচ্ছে।কুণ্ডলি পাকিয়ে ধোঁয়া উঠছে। সেদিকে তাকিয়ে উদাস হয়ে বসে নীরাপদ।বিমলা ছেড়া ছেড়া ভাবে বলে যায় তার নিজের কথা।পয়সার জন্য পড়াশোনা বেশিদুর হয়নি।পয়সা উপার্জনের জন্য কি ভাবে প্রতারিত হয়ে ঘর ছেড়েছিল।পাঁচ ঘাটের জল খেয়ে অপর্না এখন বিমলা।
–তুমি বাবার শ্রাদ্ধ করবে না? নীরাপদ জিজ্ঞেস করে।
কি উত্তর দেবে বিমলা বুঝতে পারে না।চোখের জলে দৃষ্টি ঝাপসা,বিমলা বলে,ওরা তো আমায় স্বীকার করে না।
–চল উঠি,অনেক রাত হল।তোমাকে বাসায় ফিরে আবার রান্না করতে হবে,তাই না?
–আজ আর কিছু খাব না।
–না না,তা কি করে হয়।কিছু না খেলে শরীর খারাপ হবে।ব্যস্ত হয়ে বলে,চলো হোটেলে গিয়ে বরং কিছু খেয়ে নিই।
চলো ওঠো।হাত ধরে বিমলাকে টেনে তোলে।
তিস্তার পাড় ধরে হাটতে থাকে দুজনে।বিমলা আড় চোখে দেখে পাশের মানুষটাকে।তার শরীর খারাপের জন্য কেউ চিন্তা করে? একজন বেবুশ্যে মেয়েছেলের এত মূল্য আছে এমন করে তার মনে হয় নি।গঙ্গার হাওয়া এসে যেন মমতার স্পর্শ বুলিয়ে দিচ্ছে।
দোকান-পাট সব বন্ধ হতে চলেছে।এত রাতে হোটেল খোলা থাকলে হয়।অনেকটা সময় একসঙ্গে আছে অথচ সেভাবে তাকে স্পর্শ করে নি।
–আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?সত্যি করে বলবেন?বিমলা জিজ্ঞেস করে।
–অকারন মিথ্যে আমি বলিনা।কি কথা?
–আমাকে আপনার ভাল লাগেনি ,তাই না?
–কি করে বুঝলে?হেসে তাকায় নীরাপদ।
–সব সময় দুরত্ব বাচিয়ে চলছেন,একবার ছুয়ে দেখতেও ইচ্ছে হল না।
–কি করব,তুমি যেভাবে ‘আপনি-আজ্ঞে’করছো তাতে ভরসা হয় নি।
বিমলার মুখ লাল হয়।নীরাপদর দিকে তাকাতে পারে না।কি করে বোঝাবে তার ইচ্ছের কথা।তুমি বলতে গিয়েও অনায়াসে বলতে পারছে না।এমন আগে হয় নি।আমতা আমতা করে বলে,না আসলে কেমন যেন–।
–বলো ‘তুমি।’নীরাপদ ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে।
–চলো,আস্তে আস্তে হয়ে যাবে।লাজুক গলায় বলে বিমলা।
একটা হোটেল নজরে পড়ে,প্রায় ফাকা।একটী লোক বেঞ্চ মুছে পরিস্কার করছে। নীরাপদ জিজ্ঞেস করে,কিছু পাওয়া যাবে?
লোকটি তাকিয়ে দুজনের সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করে তারপর অবজ্ঞার স্বরে বলে,রুটি তড়কাহতে পারে।ভাত হবে না, মাছ-মাংস শেষ।
দুজনে হোটেলে ঢুকে একটী কেবিনে বসে।বেয়ারা দু গ্লাস জল দিয়ে যায়।আর পাত্তা নেই।নীরাপদ উঠে খোজ নিতে গেল।তড়কা হয়ে গেছে রুটি হচ্ছে।ফিরে এসে অন্যমনস্কভাবে একটা গেলাস তুলে চুমুক দিতে গেলে বিমলা শশব্যস্ত হয়ে বলে,ওমা ওটা আমার জল।
–তোমার মানে?
–না মানে, আমি এটো করে খেয়েছি।বিমলা অপ্রস্তুত বোধ করে,চোখ নামিয়ে নেয়। এরপর যা ঘটল তার জন্য বিমলা মোটেই প্রস্তুত ছিল না।নীরাপদ দু-হাতে তার গাল চেপে ধরে ঠোটজোড়া সজোরে চুম্বন করে।
–উম-হু-উম।বাধা দেবার ইচ্ছে শক্তি হারিয়ে ফেলে বিমলা।
–তোমার মুখে মুখ দিয়ে এটো করে দিলাম।
–কি যে পাগলামি করো–।লজ্জায় রাঙ্গা হল বিমলা,সারা শরীরে অনাস্বাদিত সুখের শিহরন খেলে যায়।
–রাগ করলে?
–না তা নয়,কেউ যদি এসে পড়তো?লজ্জায় মাথা তুলতে পারে না বিমলা।অবাক হয়ে ভাবেএই লাইনে আসার পর লজ্জা সঙ্কোচ সেই কবে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে।ভেবে পায় না এত লজ্জা এখন কোথা হতে এল?
ঝণ্টের কথায় হুঁশ ফেরে।কোথায় খোয়া গেছিল মনটা।একটু লজ্জা পায় বিমলা।
–এখানে দাঁড়িয়ে আছো? ঝণ্টে বলে।
–বিমলির ঘরে আজ বাবু এসেছে,বিরিয়ানি চাই।ইয়াসিন বলে।
–বিমলি-দি সেই বাবুটা? আমি যাকে এনে দিয়েছিলাম? বখশিস দিতে হবে কিন্তু। একগাল হেসে ঝণ্টে বলে।
–এ্যাই বাবু বলবি না।
–তবে কি বলবো? কাস্টোমার?
–তোকে কিছু বলতে হবে না।পরে আসিস বখশিস দেব।
বাবু কথার অনুসঙ্গে বেশ্যা শব্দটি জড়িয়ে বিমলার ভাল লাগেনা।কিন্তু নিরাপদ তার কে?এই প্রশ্নের উত্তর সে নিজেই কি জানে ?মানুষটা পাগল।সে রাতে হোটেলে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘরে ফিরে আসে।নাম নিরাপদ কিন্তু কোথায় থাকে জিজ্ঞেস করা হয় নি।রাতের আঁধারে যেন মিলিয়ে গেল।বিছানায় শুয়ে সারা রাত কেবল ভেবেছে যতক্ষন সঙ্গে ছিল মন ভরেছিল অপুর্ব রোমাঞ্চে।
স্বপ্নের মত কেটে গেল দিনটা।লোকে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে,বিমলা স্বপ্ন দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ল।ঘুম ভাঙ্গলো কড়ানাড়ার শব্দে,দরজা যেন ভেঙ্গে ফেলছে।এই ভোর রাতে কে এল?
তন্দ্রা জড়িত চোখে দরজা খুলে ঘুম ছুটে গেল,চোখ কপালে ওঠার যোগাড়।কাকে দেখছে সে? স্বপ্ন দেখছে না তো?
নিরাপদ দাঁড়িয়ে আছে। কোন পাগলের পাল্লায় পড়লো বিমলা।
–নেও ,একটা গামছা নিয়ে তাড়াতাড়ি চলো।
–কোথায়?
– তিস্তায় ।দেরী করলে ভীড় বেড়ে যাবে।
এখনো সবার ঘুম ভাঙ্গে নি।সবাই জেগে উঠলে জবাব দিহির শেষ থাকবে না।বাধ্য হয়ে একটা গামছা নিয়ে অনুসরন করে নিরাপদকে।একটু মজা যে পাচ্ছে না তা নয়। তিস্তার ঘাটে যেতে একটা কাল পাড় কোরা শাড়ি কাধের ঝোলানো ব্যাগ হতে বের করে হাতে দিয়ে বলে,স্নান করে শাড়িটা পরে নেও।আমি আসছি।
শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে এক মূহুর্ত মনে মনে নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করে,বিমলা তোমার আর কি চাই?নিরাপদ হন হন করে শ্মশানের দিকে চলে যায়।সেদিকে বিমলা চেয়ে থাকে অপলক।হায় বিধাতা তুমি যেমন সৃষ্টি করেছো গরল,তেমনি অমৃতও তোমার সৃষ্টি।
তিস্তার ডুব দেয় বিমলা।চোখের জল গঙ্গার জল একাকার।কেঁদেও এত সুখ আগে কে তা জানতো?শাড়ি বদলে নতুন শাড়ি পরে।দুর হতে আসতে দেখে নিরাপদকে,সঙ্গে একজন পুরোহিত।
গঙ্গার ধারে একটা পরিস্কার জায়গা দেখে শুরু হল শ্রাদ্ধ।আসন করে বসে বিমলা।
পুরোহিত জিজ্ঞেস করে,কি নাম মা?
–পশুপতি ভট্টাচার্য।
–তোমার নাম?
–বিমলা দেবী।
–না না অপর্না ভট্টাচার্য।নিরাপদ পাশ থেকে বলে।
পুরোহিতের ধন্দ্ব লাগে,আড়চোখে নিরাপদকে দেখে।নিরাপদ বলে,বিমলা ডাক নাম। বিমলাকে ধমক দেয়,নিজের নামটাও ঠিক মত বলতে পার না?
বিমলার বুকের কাছে কফের মত জমে থাকে এক দলা কান্না।এরকম একজন ধমক দেবার মানুষ কোন মেয়ে না চায়?
শ্রাদ্ধ শেষ হতে বেলা হয়ে গেল।নিরাপদকে সঙ্গে নিয়ে ফিরছে।পথে মদনের সঙ্গে দেখা। দালালি করে।
–তোমায় দারুন দেখতে লাগছে মাইরি।
বিমলা লজ্জা পায়।কিছু বলে না।একবার চোখ তুলে নিরাপদকে দেখে।
–বিশ্বাস কর একেবারে মা-মা মনে হচ্ছে।মদন বলে।
–ঠিক আছে এখন যা।
–তুমি বাড়ি যাচ্ছো? দেখবে কেমন ঝামেলা।ফ্যাক ফ্যাক করে হাসতে থাকে মদন।
চলে যেতে স্বস্তি বোধ করে বিমলা।কি বলতে কি বলে নিরাপদ কি মনে করে খালি ভয় হচ্ছিল।বাড়ি ফিরে দেখল সত্যি ঝামেলা।নিরাপদ বিদায় নিয়েছে পথ হতে ভাগ্যিস। মঙ্গলামাসীও নেমে এসেছে নীচে। একজন কাস্টমার আর রেনুর মধ্যে গোলমাল। কাস্টোমার বলছে,ডিসচার্জ হবার আগে ঠেলে উঠিয়ে দিয়েছে।রেনু সেটা মানবে না,সে স্পষ্ট অনুভব করেছে গরম ফোটা ফোটা ভিতরে পড়েছে তখন তুলে দিয়েছে।এখন হাত মেরে ফেলে দিতে বলছে।দুবার করলে আলাদা চার্জ দিতে হবে।
মঙ্গলামাসী বিচারকরে বলে,আচ্ছা ফুল চার্জ না অল্প কিছু নিয়ে ওর ঝরিয়ে দে।যান ভাই কিছু দিয়ে খালাস করে নিন। কিন্তু কাস্টোমারের কাছে পয়সা ছিল না অগত্যা সে গালমন্দ শুরু করে,গরীবের টাকা মেরে বড়লোক হবি? মাগি
–থেমে থাকার পাত্রী নয়।
অগত্যা গঙ্গা প্রসাদ এসে অবস্থা সামাল দেয়।সুন্দর মনটায় যেন এক রাশ আবর্জনা ঢেলে দিল।কবে যে মঙ্গলা মাসীর খুলি থেকে বেরোতে পারবে বিমলা,ভেবে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।
ইয়াসিনের ডাকে চমক ভাঙ্গে,বিমলি-দি তোমার পার্শেল রেডি।
কত বেলা হয়ে গেল।কি করছে পাগলটা একা-একা কে জানে।পলি প্যাকে মুড়ে ইয়াসিন বিরিয়ানি এগিয়ে দেয়।সুন্দর গন্ধ ছেড়েছে।রেনুটা ছ্যাচড়া ধরনের,খুব পয়সা চিনেছে।এসব করেও কি পারলি অবস্থা বদলাতে?প্রায়ই ধার চাইতে আসে বিমলার কাছে। বুঝলেও সে কিছু বলেনি তাহলে তার সঙ্গে লেগে যাবে।মুখ খুললে পচা ডিমের গন্ধে ভরে যাবে সারা বাড়ি।লেখাপড়া কতদুর কে জানে কিন্তু কাচা খিস্তির অভিধান। বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
দরজা ঠেলে ঘরের মধ্যে ঢুকে ঝিমঝিম করে ওঠে বিমলার মাথাটা। খুশির রেশ দপ করে মিলিয়ে গেল। মেঝেতে পা ছড়িয়ে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে নিরাপদ। লুঙ্গিটাও ঠিকমত বাধতে পারেনি কোমরে। মাথাটা সামনের দিকে ঝুকে।পাশে গড়াগড়ি খাচ্ছে মদের বোতল।গতদিনের অবশিষ্টটুকু বাবু গিলেছেন বুঝতে অসুবিধে হবার কথা নয়।এতদিন পরে এল কোথায় দুজনে দু-দণ্ড সুখ-দুঃখের কথা বলবে–মনে মনে হতাশ হয় বিমলা।
–ভর দুপুরে খালি পেটে মাল গিলে বসে আছো?বিমলা উষ্মাভরা গলায় বলে।
যাকে বলা তার হেলদোল নেই,চোখ বুজে ঝিমোচ্ছে।
–আমাকে না জ্বালালে তোমার শান্তি হবে কেন?গজগজ করতে করতে বিমলা একটা প্লেটে বিরিয়ানি সাজিয়ে নিরাপদর সামনে এগিয়ে দিয়ে বলে,নেও এগুলোর সদ্গতি করে আমাকে উদ্ধার করো।
–আমি এখন খাবো না।তোমার কোলে শোবো।নিরাপদর কথা জড়িয়ে যায়।
এই অবস্থাতেও বিমলার হাসি পায়,কোলে শোবে?এক মূহুর্ত ভাবে বিমলা।এসব খাবার বাসি হলে খাওয়া যাবে না।তা বলে অভুক্ত মানুষটাকে রেখে একা একা খাওয়া যায়? থালাটা নিয়ে নিরাপদর পাশে বসে বলে, এসো আমার সঙ্গে একটু খাও।নেশার মুখে ভাল লাগবে।
এক টুকরো মাংস এগিয়ে দিল।মাংসের টুকরো মুখে নিয়ে নিরাপদ চিবোতে থাকে। বিমলার দিকে হেলে পড়েছে নিরাপদ।তার ভার সামলে বিমলা নিজে খায় আবার নিরাপদর মুখে গুজে দেয়।যেন মা তার অবাধ্য শিশুকে খাওয়াচ্ছে।আর একটা পার্শেল ওবেলা গরম করে খাওয়া যাবে।কতদিন পরে এল দুজনে সারাদিন শুয়ে শুয়ে গল্প করবে ভেবে রেখেছিল।কার সঙ্গে গল্প করবে,বাবু এখন ভোলেনাথ।ও যখন কথা বলে শুনতে শুনতে ক্ষিধে তৃষ্ণা ভুলে যায়।সব কথার অর্থ না বুঝলেও ভাল লাগে শুনতে। কঠিন কঠিন কথা বলে যায় কত সহজে।একদিন জিজ্ঞেস করেছিল বিমলা,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?রাগ করবে না তো?
–কি ভাবে রাগ করে আমি জানি না।হেসে বলেছিল নিরাপদ।
–আচ্ছা তুমি যে এখানে আসো তোমার বউ জানে?
–বউ পালিয়েছে।এমন ভাবে বলল যেন কিছুই না।
–আহা! কথার কি ছিরি! এভাবে কেউ বলে? যেন সাদামাটা অতি সাধারন ব্যাপার।
–তোমার ইচ্ছে হলে অসাধারন ভাবতে পারো।আমি আপত্তি করছি না।
–কেন চলে গেল? তোমার বা তোমার বউ–কারো নিশ্চয়ই দোষ ছিল?
–না,দোষ তোমার ভাবনার দোষ।দেখো অপু সে খুব ভাল মেয়ে আমি তার দোষ দেবো না।কিন্তু আমরা পরস্পর খাপ খাওয়াতে পারিনি।
–মানে?
–মানে দুধ পুষ্টিকর তাতে কোনো সন্দেহ নেই।কিন্তু দুধ সবার সহ্য নাও হতে পারে। তার জন্য তুমি দুধ বা সেই ব্যক্তিকে দোষ দিতে পারো না।
–তোমার কথা আমি বুঝি না।
বিমলা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে কি চনমনে তাজা মানুষ,বুকের উপর নেতিয়ে পড়েছে। একগ্রাস তুলে বলে,একটু হা-করো নিরু,একটু হা-করো-।
–আমার ঘুম পাচ্ছে–আমি ঘুমাবো।জড়িয়ে যাচ্ছে নিরাপদর কথা।
বিমলা ভাবে অনেকটা খেয়েছে,আর দরকার নেই।আস্তে করে কোলের উপর নামিয়ে দেয়।বা হাত দিয়ে মাথার চুলে বিলি কেটে দেয়।কি মায়ালু মুখটা এই মানুষকে কি ভাবে বউটা ফেলে চলে গেল?
বিমলা বাকি খাবারের সদগতি করতে থাকে। ইয়াসিনের রান্নার হাত চমৎকার। ভদ্রপাড়া হতে মানুষ আসে শাহাজাদা থেকে বিরিয়ানি নিতে।এখাকার বিরিয়ানির খুব সুখ্যাতি।ইয়াসিন বলছিল খলিফা,আপন মনে হাসে বিমলা,তাকিয়ে দেখে খলিফার কি দশা!চোখ বুজে পড়ে আছে নিশ্চিন্তে।
খাওয়া প্রায় শেষ হয়ে এল।নিরাপদ চোখ মেলে তাকায়,ঝিমুনির ভাব একটু কমেছে। হঠাৎ হঢ়হড় করে বমি করে দিল।অবশিষ্ট বিরিয়ানি গরদের শাড়িতে মাখামাখি। অপরাধির মত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে নিরাপদ।
–সহ্য করতে পারো না,ছাইপাশ খাও কেন?বিরক্ত হয়ে বলে বিমলা।
–তুমি যে খাও–।
বাবুর জ্ঞান টনটনে।অবাক চোখে দেখে বিমলা বলে,বেশ করি খাই। একটু ওদিকে সরে বোসো।
গামছা এনে নিরাপদর মুখ মুছতে মুছতে বলে,ইস দাড়ি রাখা হয়েছে!
–দাড়ি হল show.নিরাপদ বলে।
কি আমার শো! মুখে জল দিয়ে কুলকুচি করতে বলে।পরিস্কার করে সারা ঘর।বারান্দায় শাড়ি খুলে রেখে আসে,সদ্য আজ ভেঙ্গেছে শাড়িটা।জামা খুলে দড়িতে ঝুলিয়ে দেয়। নিরাপদ চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকে একদৃষ্টে বিমলার নিরাভরন শরীরের দিকে।
–কি দেখছ,যেন আগে দেখোনি?
–তোমাকে দেবীর মত মনে হচ্ছে।
শিরদাড়ার মধ্যে শীতল প্রবাহ অনুভব করে বিমলা। অনেক না-পাওয়ার স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত মন। এই মূহুর্তে সব তুচ্ছ হয়ে যায়।
নিরাপদ বোকার মত হাসে।মানুষটাকে যত দেখছে অবাক লাগছে। কতবার এসেছে বিমলা মনে মনে প্রস্তুত হয়েছে নিজেকে সম্পুর্ণভাবে সমর্পণের জন্য আদর করেছে কিন্তু আজও কিছু করেনি। ভেবে অবাক হয় তাহলে কেন আসে?
বিমলার মাথাটা ধরে চুমু খায় নিরাপদ।
–মুখে এখনো বমির গন্ধ।বিমলা ডেওডোরণ্ট এনে সারা গায়ে স্প্রে করে দিল।
বিমলা জিজ্ঞেস করে,বমিটা হয়ে ভাল হয়েছে।এখন একটু চাঙ্গা লাগছে না? ক্ষিধে পেয়েছে?
–তোমার রুপসুধা পানে ক্ষিধে নেই এখন।নিরাপদ হেসে বলে।
–খুব হয়েছে।আমার যা রূপ–অত বানিয়ে বলতে হবে না।বিমলা অভিমান করে।
–ফুলের মধুর খবর ফুলের চেয়ে মৌমাছি বেশি জানে।
– তুমি কি বলবে তোমার বয়স কতো?
মুচকি হেসে বিমলা আবার কাধে মাথা রাখে।কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,সামনের পুজোয় আমি ছত্রিশে পড়বো।
–আমার কত জানো?
–অতো খোজে আমার দরকার নেই।নিরাপদর ঘাড়ে মৃদু দংশন করে।
–আমার এখন উনপঞ্চাশ।
–আচ্ছা তোমার ছাত্ররা যদি আমাদের এভাবে দেখে তা হলে কি হবে?
–আমার ছাত্ররা?আজকাল শুনেছি ছাত্ররাও এ অঞ্চলে যাতায়াত করা শুরু করেছে। দেখতে পারে।
–শোনো অপু একটা কথা জিজ্ঞেস করি,তুমি বিয়ে করবে?
–এসব কথা আমার ভাল লাগেনা।বিমলা বিরক্তি প্রকাশ করে।
–কেন ভাল লাগে না কেন?
–শোন আমরা বেশ্যা,ও সব কথা আমাদের শুনতে নেই–। কথা শেষ করার আগেই নিরাপদ ধাক্কায় বিমলাকে ।আচমকা ধাক্কা সামলাতে না পেরে বিমলা মেঝেতেধপাস করে কাৎ হয়ে পড়ে।
মেঝেতে আচমকা আছড়ে পড়ে কোমরে ব্যথা পায় বিমলা।দুহাতে ভর দিয়ে উঠে বসে অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করে। ভোলানাথ ক্ষেপেছে।টলতে টলতে নিরাপদ চলেছে,নেশার রেশ রয়ে গেছে তখনো।বিমলার চোখ ছাপিয়ে জল চলে আসে।ঝাপসা চোখেও বুঝতে অসুবিধে হয় না কি হতে চলেছে।নিজেকে ঘেষটাতে ঘেষটাতে নিয়ে দ্রুত নিরাপদর কোমর জড়িয়ে ধরে বিমলা বলে,অন্যায় করলে শাস্তি দেও।দোহাই আমাকে ছেড়ে যেও না।
দুহাতে বিমলাকে টেনে তোলার চেষ্টা করে।নিরাপদর নরম ব্যবহার বিমলার নিরুদ্ধ কান্নার বাঁধ ভেঙ্গে দেয়।নিরাপদকে অবলম্বন করে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায় বিমলা।বিমলার চোখের জলে বুক ভিজে যায় নিরাপদর।পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে নিরাপদ জিজ্ঞেস করে, অপু,আর কখনো ওরকম বলবে না।
বুকের মধ্যে মুখ গুজে বিমলা বলে,হু-উ-ম।
নিরাপদ সজোরে বুকে চেপে ধরে বিমলাকে।তর্জনি দিয়ে নিরাপদর বুকে আঁক কাটতে কাটতে বলে বিমলা,আচ্ছা আমি তো বেশ্যাই —-।সারা জীবন আমি ফালাফালা হয়েছি মনা।
দ্রুত মুখ চেপে ধরে বলে নিরাপদ, না তুমি বেশ্যা নও,তুমি আমার বউ।
–আস্তে! ফিস ফিস করে বলে বিমলা, মঙ্গলা মাসী শুনতে পেলে গঙ্গাপ্রসাদের হাতে তুমি খুন হয়ে যাবে।এখানে আসা সোজা বেরনো অত সোজা নয়।
–ওসব আমার উপর ছেড়ে দাও এই নরক হতে কি ভাবে বের হতে হয় আমার জানা আছে।
–হুউম, তুমি একটা ডাকাত, ঐভাবে কেউ ফেলে? কোমরটা এখনো টনটন করছে।
আচ্ছা একটা কথা বলবো?
–কেন বলবে না? কি কথা?
— ধরো যদি আমার পেটে বাচ্চা এসে যায়?
–এই বয়সে বাচ্চা? নিরাপদ গুরুত্ব দেয় না।
–আহা! পয়ত্রিশ বছর খুব বেশি?
কোথায় যেন শাঁখ বাজে।বিমলা তড়াক করে লাফিয়ে ওঠে।নীচে নেমে লাইট জ্বালে।
–আমি ঠাকুরকে জল-মিষ্টি দিয়ে আসি।
একটি গামছা পরে বাথরুমে যায় গা ধুতে।শিবলিঙ্গের সামনে আসন করে বসে প্রদীপ জ্বালে,ধুপজ্বেলে আরতি করে।তারপর বসে হাত জোড় করে চোখ বুজে মৃদু স্বরে গান গায়।
–অপু একটু জোরে গাইবে? নিরাপদ বলে।
বিমলা ফিরে তাকিয়ে মুচকি হেসে আবার গান শুরু করে, ‘আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে/থাকো তুমি হৃদয় জুড়ে…..।’চোখ দিয়ে অবিরল ধারায় জল গড়িয়ে পড়ে।মুগ্ধ হয়ে বসে বসে দেখে নিরাপদ। গান শেষ হতে মেঝেতে শুয়ে সাষ্টাঙ্গে প্রনাম করে বিমলা।বিস্মিত নিরাপদও খাটে বসে প্রনাম করে।
আজ সে প্রত্যক্ষ করলো এক অনন্য নারীরূপ।গামছা দড়িতে ঝুলিয়ে রেখে নিরাপদকে প্রসাদ দেয়।তারপর স্টোভ জ্বেলে চা করে পরিপাটি।দুপুরের খাবার গরম করে। যেন নিষ্কলঙ্ক পবিত্র এক গৃহ বধু।’ বঙ্গের বধু বুক ভরা মধু ‘…কবির পংক্তিটা মনে পড়ে যায়।
–তোমার গানের গলা চমৎকার।তুমি কি আগে গান শিখেছো?
–ছোট বেলায় শিখেছিলাম।এখন শুনে শুনে শেখা হিন্দি গান কখনো কাস্টোমারদের শোনাই,ওদের ভাল লাগে।
–তোমাকে আবার গান শেখাবো।
–এই বয়সে? হেসে ফেলে বিমলা।
–শেখার কোন বয়স হয় না।
— তা ঠিক।বিমলা চা এগিয়ে দেয়।
আটটা বেজে গেছে। সময় কিভাবে পেরিয়ে যাচ্ছে তার কোন হিসেব নেই।বাড়ির মেয়েরাএতক্ষনে সেজেগুজে বেরিয়ে পড়েছে ধান্দায়।বদ্ধ ঘরে থেকে বুঝতেই পারেনি কখন সূর্য অস্ত গেছে।
।অনেক ঘাট পেরিয়ে আশ্রয় জুটেছে মংলামাসীর খুপরিতে।নিরাপদকে অবিশ্বাস করে না।কিন্তু কতটুকু জানে মানুষটাকে,যা জেনেছে ওর মুখে শুনে।কলেজে অধ্যাপনা করে,বউ চলে গেছে।কি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারে না।সব হারানো জীবনের আর কি ক্ষতি হতে পারে? একদিকে একটা নতুন জীবনের হাতছানির লোভ আর অন্যদিকে যন্ত্রনাময় নারকীয় জীবন,নিত্য নারীত্বের অবমাননা–এই দুইয়ের মাঝে পড়ে বিমলা দিশাহারা বোধ করে। চাকরির আশায় একদিন ঝর্না-দির হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছিল।আবার যদি—?
–কি ভাবছো? জিজ্ঞেস করে নিরাপদ।
–না,মানে আমরা এখান হতে কোথায় যাবো? বিমলা জানতে চায়।
–কোথায় আবার আমার ফ্লাটে।
নিরাপদ কি কিছু অনুমান করতে পারছে?বিমলা ভাবে।ঢিপঢিপ করে বুকের ভিতর।
–সত্যি করে বলতো,তুমি কি ভাবছো?তোমার মনে যদি কোনো সংশয় থাকে আমাকে বলো।
–ঠিক আছে,চলো এখন খেয়ে নিই।বিমলা বলে।
–না। কিছুই ঠিক নেই।শোন অপু আমি বড় নিঃসঙ্গ বড় একা। তোমার অতীত আমি জানি সে ব্যাপারে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই।শরীরকে সহজে নষ্ট করা যায় কিন্তু মনকে নিজে নষ্ট না করলে কারো সাধ্য নেই কিছু করে। আমার মনে হয়েছে তোমার সাহচর্য আমাকে নতুন জীবন দেবে।তোমার শরীর নয় তোমার ভালবাসার প্রতি আমার আকর্ষন, বলতে পারো লোভ। আমরা আবার পরস্পর আমাদের মনকে সজীব করে তুলে নতুন জীবনের পথে যাত্রা করতে পারি।তুমি ভাল করেই জানো, আমি ইতিপুর্বে একাধিক বার এসেছি কিন্তু তোমাকে সেভাবে স্পর্শ করিনি।তোমার মনকে বুঝতে চেয়েছি।আজ সেই বোঝাবুঝির পালা শেষ,তাই…।
–তুমি কি খেতে আসবে?
–তোমার দ্বিধাগ্রস্থতা স্বাভাবিক। আমি কিছুই মনে করিনি।
–আমিও কিছু মনে করিনি।দয়া করে এবার খেতে এসো।বিমলা স্বস্তি বোধ করে।
রাত গভীর হয়।
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়,নিরাপদকে বুক হতে নামিয়ে ঘড়ি দেখে। সাড়ে-তিনটে ছাড়িয়ে চলেছে কাটা। নিরাপদকে জাগিয়ে দিয়ে বলে,এ্যাই সাড়ে-তিনটে বাজে।
গোছগাছ শুরু হয়।বিমলা শিবলিঙ্গটা ব্যাগে ভরে।শাড়ি ভরতে গেলে নিরাপদ বাধা দেয়, ওসব নিতে হবে না।আমি তোমায় শাড়ি কিনে দেবো।পুরানো স্মৃতি না থাকাই ভালো।বিমলা মেঝে খুড়ে একটা কৌটো বের করে,তাতে একগাদা টাকা কিচু সোনার গহনা।ব্যাগে ভরতে গিয়ে নজরে পড়ে নিরাপদ তাকিয়ে,উঠে নিরাপদর কাছে গিয়ে বলে,এগুলো তোমার কাছেরাখো। নিরাপদর দিকে এগিয়ে দেয় টাকার গোছা।
–না,তুমিই রাখো।নিরাপদ বলে।
–কেন? আমার টাকা তুমি নেবে না?বিমলার কপালে ভাঁজ।
–টাকা তুমি রাখবে,মাইনে পেয়ে আমি টাকা তোমার কাছেই দেবো।সংসারের দায় তোমার,আমি টাকা দেব তোমার হাতে আর তুমি সামলাবে সব–। বিমলা মনে মনে লজ্জা পায় ধিক্কার দেয় নিজেকে কি করে এল তার মনে সন্দেহের বীজ? খিড়কির দরজা খুলে দুটী ছায়ামূর্তি পথে নামে।পিছনে রইল মঙ্গলা মাসীর কোঠা।শাহজাদা হোটেলের কাছে আসতেই শুনতে পায় ইয়াসিনের গলা, কি গো বিমলি-দি চললে? ঘাবড়ে যায় বিমলা,বুঝতে পারে না কি উত্তর দেবে।ইয়াসিন উনুনে আঁচ দিচ্ছিল।
–যাও দিদি ,যাও।এই জাহান্নম থেকে যত জলদি হয় ভাগো। নিরাপদর কাছ থেকে পঞ্চাশটা টাকা নিয়ে ইয়াসিনকে দিয়ে বলে, ভাইজান মিষ্টি খেও।
ইয়াসিন সেলাম করে বলে,খোদা তুমাকে রহম করুক।
ওরা এগোতে থকে,
ডান হাতে বিমলাকে কাছে টেনে নেয় নিরাপদ,বুঝতে পারে মানুষ চিনতে তার ভুল হয় নি। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে উধাও হল আঁধার। তেমনি বেশ্যাপল্লীর এক অখ্যাত গলিতে বিমলার খোলস ছেড়ে অপর্নাও বেরিয়ে পড়ল নতুন জীবনের সন্ধানে?একটু পরে আকাশ আলো করে সূর্য উঠবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Jamal Uddin Ahmed নিখাদ সত্য উপস্থাপনা। অভিনন্দন, গল্পকার!
আজাদ অনিন্দ্য Ovinondon. Sorry, Amio Fahmida Apar kotha suney votay 1 ba 2 diesi. Ekhon dektesi uni jader oposondo korten tara 2-er nichay bicharoker number peyesay. Uner satay golpo kobitar lokder valoi janasuna asey ekhon bujlam. Sudu Bolbo-I am Sorry. Ekhon bolbo sobai 3-er uporay vote din. Amio dibo. Really I am Sorry. Please forgive me.
শৈলেন দা আন্তরিক অভিনন্দন। আপনার লেখা বিজয়ী হয়েছে দেখে খুব ভালো লাগছে। দাদা আপনি নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন আমিরুল ইসলাম, আজাদ অনিন্দ্য এর মন্তব্য। আপনি বিচক্ষণ ব্যক্তি নি্চয়ই বুঝতে পারছেন যে একই ব্যক্তি ভিন্ন আইডি থেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তার অভিযোগ সত্য হলে আমরা প্রমাণ দেখতে চাই। আপু যে তাকে নাম্বার কম দিতে বলেছে তার স্ক্রিনশট দেখতে চাই
আজাদ অনিন্দ্য ভাইয়া, বেশ কিছু পাতায় আপনিসহ আরো কয়েকজনের মন্তব্য দেখতে পেলাম। গক’র সদস্য হিসেবে একটি কথা বলতে চাই, ভাই, কে কাকে কত ভোট দিল না দিল সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয় এবং সেটি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে পাঠকের নিজের কাছে লেখাটা কতটুকু ভালোলাগল না লাগল সেটির উপর। আপনার নিশ্চয়ই নিজস্ব ব্যক্তিত্ব বলে কিছু আছে। ফাহমিদা আপু যদি সত্যিই এরকম কিছু আপনাকে বলে থাকে তবে আপনি তার কথাতেই এরকম সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? আর কেনই বা তার কথা অনুযায়ী ভোট দিলেন ? আপনার কাছে যার লেখা যেরকম লাগবে আপনি সেই অনুসারে ভোট দেবেন। আর আপনার কোনো অধিকার নেই এটা বলার যে সবাই ৩এর উপরে ভোট দিন। যার যেটা দিতে ইচ্ছে হবে সে সেটাই দেবে। শুধু শুধু ভাইয়া পরিস্থিতিটা নষ্ট করবেন না, প্লিজ। বরং আমাদের সুন্দর সুন্দর লেখা উপহার দিন, আমরা সবাই অপেক্ষায় রইলাম নতুন লেখকের নতুন লেখা পড়ার জন্য।
Amir Islam অভিনন্দন ভাই। উপরের কতগুলো মতামত পড়লাম। আমি কিছু কথা বলব। অামি এখানে গত ফেব্রয়ারীতে যোগ দিয়েছি। ফাহমিদা আপা আমার সাথেও যোগাযোগ করে কথার মায়াজালে ফেলে। আমি নতুন। তাই কিছু বুঝতে না পেরে উনার কথামত উল্টাপাল্টা ভোট দিয়েছি। উনি বিশেষ কিছু পুরান লেখককে ভোট দিতে বা কম ভোট দিতে বলেছেন। আমার এখানে কোন গল্প বা কবিতা নেই। আমার কোন স্বার্থ নেই। উনার সাথে কোন শত্রুতাও নেই। জানি উনার একটা গ্রুপ আছে। আর আমি সামান্য পাঠক। আমার কথা বিশ্বাস করুন। আপনারা উনার কথা না শুনে ভোট দিন বেশী করে। তাহলে দেখবেন ভোটমান বেশী হবে। বেলাল ভাইকে পাশে পেয়ে ভাল লাগল। আমি আপনাদেরকে উনার কথামত কম ভোট দিয়ে লজ্জিত। আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আরও যারা এ ধরনের করেছেন উনার কথামত তারাও ক্ষমা চান
সেলিনা ইসলাম অনেক অনেক অভিনন্দন। শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ সুহৃদ
মাসুদ হোসেন রনি সবাই সালাম নেবেন। অভিনন্দন আপনাকে। ইদানিং ভোট কম পড়ছে। কারন কী? আপনারা জানেন যে ফাহমি আপা ভোট চায় না; উনি শুধু বিচারকের নম্বর চান। গত কয়েক সংখ্যায় উনি এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাচ্ছেন। উনি এবারও একজনের গল্পে ভোট চান না বলে মন্তব্য করলেন। কারন উনার ভোট না হলেও চলে। উনি বিভিন্ন নতুন পাঠক বা লেখকের সাথে প্রথমতঃ বার্তা পাঠিয়ে ভাব জমান। তারপর বলেন যে অমুক অমুক উনার সাথে অশ্লীল আচরন করেন। ইত্যাদি বলে ক্ষেপিয়ে তুলেন। তারপর উনি ঐসব লেখককে ভোট না দিতে বা কম ভোট দিতে বলেন। আমাকে সহ এরকম অনেক নতুনকে উনি ফোন, মেইল বা বার্তা পাঠিয়ে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। আমার কথা আপনারা বিশ্বাস করুন। সবাই ভোট দিন। বেশী ভোট দিন দেখবেন আগামী পর্বে এ সমস্যা থাকবে না। আর এর পর থেকেই উনি আমার পিছু লেগেছেন। শুধু আমার নয়; উনার গকতে উনার অভিযোগের কারনে এবার অনেক লেখকবিকে কম নম্বর দেয়া হয়েছে। উনার এসব প্রচারণায় কান না দিয়ে আপনারা বেশী করে ভোট দিন। দেখবেন কম ভোট পাওয়ার সমস্যাটি কেটে যাবে। সবাইকে ধন্যবাদ।
নাসরিন চৌধুরী অভিনন্দন
অনেক ধন্যবাদ সুহৃদ
কাজল অভিনন্দন আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ সুহৃদ
কাজী জাহাঙ্গীর অনেক অনেক অভিনন্দন। ঐ নতুনের কেতন উড়ে....
অনেক ধন্যবাদ সুহৃদ

১৪ মে - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১২ টি

সমন্বিত স্কোর

৫.০৩

বিচারক স্কোরঃ ৩.৪৫ / ৭.০ পাঠক স্কোরঃ ১.৫৮ / ৩.০

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪