রক্তের ঋন

ঋণ (জুলাই ২০১৭)

তারিফুল ইসলাম
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে হাটতে হাটতে, আমি আর রাহাত দু বন্ধু একসাথে হলে ফিরছিলাম।ফজলুল হক হল।রাত প্রায় ১০.৩০ মিনিট।রাহাত বললো,চল শহীদ মিনারের পাশে বসে একটু গল্প করি।গল্প করতে করতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে টেরই পাই নি।
যখন দুজন আমরা উঠতে যাচ্ছিলাম, দেখি কয়েকজন লোক আমাদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছে। অন্ধকারের জন্যে আমরা মুখ দেখতে পাচ্ছিলাম না লোকগুলোর।আমরা খুব ভয় পেয়ে গেলাম।আমরা বললাম কি চাই?লোকগুলো বললো রক্তের হিসাব।আমরা আরো ভয় পেয়ে গেলাম।কিন্তু তারা আমাদের অভয় দিল।তোমাদের কোন ক্ষতি আমরা করব না।শুধু আমরা যা বলছি শোন।এই বলে আমাদের কে তাদের সাথে চলতে বললো।রাত অনেক গভির হলো।আমরা শুধু চলতেই থাকলাম।যেন মহাকালের পথ ধরে অনন্ত কাল হাঁটছি।গন্তব্য কোথায় কেউই জানি না।

শহর ছেড়ে একটা নির্জন গ্রামে এসে পৌঁছুলাম।তখন প্রায় ভোর হতে চলেছে।মসজিদ থেকে আজানের সুর ভেসে আসছে।মন্দির থেকে ঘন্টার শব্দ আসছে।মুসিল্লিরা মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হচ্ছে।পুরোহিত মন্দিরে পুজোর আয়োজন শুরু করেছে।পুজো,নামাজ শেষে সবাই একসাথে কাজে বের হচ্ছে।এক সাথে গল্প করছে।দিনের আলো কেবল ফুটতে শুরু করেছে।কিন্তু দিনের আলো ফুটতেই দেখি লোকগুলো আর নেই।আমরা নিজেদেরকে আবিষ্কার করলাম,মস্ত বড় একটি একান্নবর্তী বাড়ির ভিতরে।অনেক লোক এখানে একসাথে বাস করে।সবাই যেন একে অপরের ভাই ভাই।সবাই আমাদের দুজনকে খুবই আথিতিয়তা করলো।আমরা সারাদিন গ্রাম টা ঘুরলাম।ছবির মত একটি গ্রাম।বিভিন্ন জাতের,মতের,ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাচার চেষ্টা করছে এখানে।একটু সামনে এগিয়ে দেখি একটু স্কুল।সেখানে একটা পতাকা উড়ছে।চারিপাশ কত সবুজ এখানে।একটা ছোট নদী।কত মাছ সে নদীতে।মাঠে কত রকমের ফসল।সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।আমরা দু বন্ধু ঘরে ফিরলাম।

রাতে খুব ভাল খাওয়া ধাওয়া হলো।আমরা ঘুমাতে যাব, এমন সময় ঐ লোক গুলো আবারো আসলো।ঘরে অন্ধকার তাই এবারো আমরা মুখ দেখতে পেলাম না।লোকগুলো আমাদের স্কুলের শহীদ মিনারে নিয়ে গেল।রাত অনেক গভির।স্কুলের পতাকা দেখিয়ে বললো,জানো এইটা কি?আমরা বললাম আমাদের জাতীয় পতাকা।লোকগুলো আবার বললো,জানো কত রক্তের দামে এই পতাকা ছিনিয়ে এনেছি আমরা।একটু ভাল করে কান পেতে থাকো। আমরা কান পাতলাম।কিছু শুনতে পাচ্ছো।আমরা বললাম না।এবার লোকগুলো হুংকার দিয়ে বললো ভাল করে শোন।এবার আমরা শুনতে পেলাম।অনেক গুলো সমস্বরে আর্ত চিৎকার।আমরা শুনতে পেলাম কারো ভাই হারানো কান্না,কারো বাবা হারানো আর্তনাদ।পাশের নদীটিতে এখন শুধু রক্ত আর রক্ত।কত লাশ।কোন লাশের বুকের মাংস নেই,কারো হাত নেই,পা নেই।শুধু কান্না আর কান্না।লোকগুলো বললো তবু আমরা একচুলো ভয় পাই নি।মুক্তির চেতনায় হাতে হাত রেখে যুদ্ধ করেছি।কিন্তু হে অনুজ তোমরা তার ঋন কতটা শোধ করেছো।আজ চারাদিকে শুধু হানাহানি কেন।কোথায় সে মুক্তির চেতনা।এতটা বিভেদ হবে এমন তো কথা ছিল না।কথা ছিল শ্রম,সাধনা,চেষ্টা দিয়ে তোমরা সোনার বাংলা গড়বে।কিন্তু চারিদিকে শুধু খুন,ধর্ষন,আর রাহাজানি।তোমরা আমাদের উত্তরসুরি ভাবতেই আমাদের মাথা কাটা যায়, ধিক্কার তোমাদের।আমরা কোন উত্তর দেওয়ার আগেই দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে।ভোরের আলোতে দেখি আমরা দুজন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বসে আছি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান অতি প্রাকৃত ধাচের,ভাল লাগল,চর্চা অব্যাহত থাকুক এই কামনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ,কষ্ট করে পড়ার জন্যে
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী বেশ চমৎকার গল্প। অনেক শুভকামনা ও ভোট রইলো....
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
নাদিম ইবনে নাছির খান সুন্দর লেখনী ভাললাগলো,, শুভকামনা
তারিফুল ইসলাম অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।কষ্ট করে গল্প পড়ার জন্যে।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি অলৌকিক গল্প .... লেখাটিি বেশ মান সম্মত...মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, দেশের পপ্রতি দায়বদ্ধতা, সহ একান্নবর্তী বাড়িরর কথা, সকল বিভিন্ন জাতের,মতের,ধর্মের মানুষ এর কথা এসেছে,....বাংলা ও বাঙ্গালীয়ানার চিত্র ফুটে উঠেছে....যা কিনা গল্পের গভীরত ও গ্রহনযোগ্য্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে.....শুভ কামনা সহ তারিকুল ভাইয়ের সাফল্য কামনা করি।

০২ মে - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪