নিশী -তুমি দিনের আলো

অবহেলা (এপ্রিল ২০১৭)

Badrul Alam
‘একটু নিজেকে দেখ’’ – নিজের দিকে খেয়াল দেয়ার এ ন্যুনতম উপদেশ টুকুও আজ বিমল বাবুর জীবনে যেন অনেক কাম্য। কিন্তু নিজেই যে নিজের উপদেশ দাতা। সুতরাং মেনে চলা এবং না চলার মাঝে কোন তফাৎ নেই। নেই কোন জবাবদিহীতা। জীবনের কোন এক সময় সকল শক্তি কেন্দ্রিভুত করে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলা যায়, কিন্তু আজ জীবনের অস্তবেলায় এসে - একটু সাহায্যের, একটু করুনার, একটু উপদেশ এবং একটু কাছে পাবার অদম্য আকাংখা আজ যেন বিমল বাবুকে হতাশার প্রান্তে এনে দাড় করিয়েছে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসে। ঝাপসা চোখেও রুপালী পর্দার মত ভেসে ওঠে - ফেলে আসা মধুময় দিনগুলো।

ছোট্ট একটি নাম- নিশী। প্রথম দেখা- চারটি চোখের মিলন-সময়ের ছোট্ট সমিকরনের যোগফল। দ্বিতীয়বার কিন্তু শুধু দৃষ্টি বিনিময় নহে , কথা হয় - তবে তা শুধু নাম পরিচয়ের ইন্টারভিউ। বিমল তখন দুই দশক অতিক্রান্ত এক টগবগে যুবক। নিশী তখন মাতৃহীন প্রবাসী বাবার আত্মীয় গৃহে প্রস্ফুটিত এক সুদর্শনা। দুজনেই স্বপ্নে বিভোর -অবুজের মত স্বপ্ন। চোখ খোলা রেখে দিবা স্বপ্ন দেখে। দুজনেই মুক্ত বিহঙ্গের মত ডানা মেলে নীলিমায় হারিয়ে যেতে চায়- অজানা দিগন্তে।

নিশী-
হুঁম- কিছু বললে?
তাকিয়ে দেখ- কী সুন্দর চাঁদ ! রুপালী আলোয় তোমাকে অপ্সরী মনে হচ্ছে।
আমিযে নিশী, নিশীতেই হয়তবা থেকে যাব। হয়তবা কখনো তোমার জীবনে দিবাকর হয়ে আসতে পারব না।
তুমি নিশী হলে আমি নিশাচর হয়ে এক জীবন কাটিয়ে দিতে পারব।

সময়ের নিষ্টুরতা এগিয়ে চলে। দুজনে দুজনার আরো কাছে আসে - এত কাছে যেন নিঃশ্বাসের স্পর্শ পাওয়া যায়। একদিন কোন এক পূর্ণিমা রাতে নিশী বলল -
বিমল তোমাকে আজ বিষ খাওয়াব-
ঠিক আছে নিশী- তোমার বুকে মাথা রেখে আমি নিশ্চিন্তে বিশ পান করতে পারি-
নিশী পাশের রুমে গেল- একটি চকলেটের কৌটা নিয়ে এলোা - আমেরিকান চকলেট ।
বিমলকে দিল - বিমল খেল-
কই মরলাম নাতো? তুমি যে বললে বিশ !
বিমল আমার জীবনে ইহা বিশতুল্য-
আচ্ছা বাদ দাওত -

অনেক কষ্টার্জিত কিছু অর্থে কেনা রঙ্গিন কৌটায় মোড়া একটি আংটি বিমল পকেট থেকে বের করল ---
নিশী একটি আঙ্গুল এগিয়ে দিল -
বিমল পড়িয়ে দিল - অত্যন্ত যতেœ - চিরচেনা আঙ্গুলে
উভয়ের মুখে তৃপ্তির হাসি --- সে হাসিতে হয়ত বিধাতার আসন ও আনন্দে নেচে গেল।

আচ্ছা তুমি কি আমাকে বধু বেশে দেখতে চাও?
সেই দিনটির জন্যে যে আমি একটি একটি করে প্রহর কাটাচ্ছি নিশী।
তাহলে তোমার সে স্বপ্ন - আমাকে বধু বেশে দেখার সে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বিমল।
আগামী শুক্রবার সেই শুভদিন।

সেই শুক্রবারের তখনো ছিল পুরো পাঁচ দিন বাকি। বিমলের কাছে মনে হচ্ছিল যেন পাঁচটি বছর। ঘড়ি যেন বন্ধ হয়ে আছে। সেদিন যে মহা মিলনের শুভক্ষন। এক জীবনের পরিপূর্ণতা। বিমল যে সেদিন হবে সব প্রাপ্তির এক সফল নায়ক। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষটি।

প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হল । এসে গেল কাঙ্খিত শুক্রবারটি। বিমল একটি হলুদ পাঞ্জাবী পরেছে। আজ নিজেকে নিজের কাছে অন্যরকম মনে হচ্ছে। নিশীদের বাসার কাছে এসে একটু অন্যরকম লাগছে। অনেক লোকের সমাগম। সাধারনত নিশীদের বাড়ী একটু নীরব থাকে। তবে আজ এত লোকের আনাগোনা কেন? তবে কি বিমলকে বরন করে নেয়ার আয়োজন? ভাবনাগুলো কেমন যেন পুর্ব - পশ্চিম হয়ে যাচ্ছে। বিমল বসল সেই পরিচিত কক্ষটিতে। আজ কেন সব অন্যরকম লাগছে।
কোথায় নিশী -
এখনো কেন হাস্যোজ্জ্বল মুখে এগিয়ে এসে চিবুক টিপে দিয়ে বলছে না ‘‘ বড্ড লাগছে !’’

বিমল অনুভব করছে এক ভাল - মন্দের অশুভ সংকেত।

নিশী এল - হ্যা বধু বেশেই এলো -
এক রুপালী চাঁদ যেন নীল আবরনে ঢাকা।
এই যে বিমল - পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি -
আমার হাজবেন্ড - সৈকত।
আমেরিকা প্রবাসী - আজই আমাদের এংগেজমেন্ট হল ।
নিশীর পাশে এক সুদর্শন পুরুষ - সৈকত !
নিশী সৈকতকে বলল ‘‘আমার বেষ্ট ফ্রে- বিমল বাবু - এন্ড অনলী ।’’
ওয়েলকাম বিমল বাবু -
হেপি টু মিট ইউ -

ধরনী যেন দ্বিখন্ডিত হয়ে যাচ্ছে । সেই ফাটলে তলিযে যাচ্ছে বিমল । চিরতরে তলিয়ে যাচ্ছে ।
হাটু যুগল দেহকে ধারন করতে অক্ষমতা প্রকাশ করছে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামাল দিল বিমল বাবু। শরীর ভিজে যাচ্ছে, চোখের জলে নয় - দেহের জলে।

সৈকত তাকিয়ে আছে বিমল বাবুর দিকে।
উভয়ের দক্ষিন হস্ত একিভুত।
বিমল দেখল, তার দেয়া আংটিটি শোভা পাচ্ছে সৈকত এর আঙ্গুলে।

বিমল বাবু, আমার আজকের এই শুভদিনে আপনাকে এমন কিছু উপহপর দিতে চাই - যা আমার কাছে অত্যন্ত আদরের।
হ্যা এই আংটিটি । বলতে বলতে সৈকত তার আঙ্গুল থেকে আংটিটি খোলে বিমলের আঙ্গুলে পড়িয়ে দিল - যা একদিন
সে নিজেই নিশীকে দিয়েছিল।
এক জড় বস্তুর মত বিমল শুধু দেখল -
এক ফোটা অশ্রুও গড়িয়ে পড়ল না -
এক পা এক পা করে শুধু রুম থেকে বের হয়ে এলো - ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর লেখকের নামটা বাংলায় হলে ভাল হত। আর বিষয়ের ব্যাপারে বলতে হয় এটাতো অবহেলা না এটা নিশির ছলনা , ভাল না বেসে ভালবাার অভিনয় তাই না ভাই। যাক গল্প কবিতায় স্বাগতম, আরো লিখতে থাকুন , এগিয়ে যান দৃপ্ত পায়। অনেক শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
SWADESH KUMAR GAYEN ভালোই লিখেছেন। আরও লিখুন। আমার ব্লগ পড়ার আমন্ত্রন রইলো।www.golpoporuya.in
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী লেখার যে এক প্রকার প্রকট বলে তাহা ভালই আছে, তবে তা আরও সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে হবে। ভালো হয়েছে। ভোট দিলাম। শুভকামনা ও আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো।
সাইফুল সজীব শব্দ গুলো অনেক ভাল লেগেছে। লেখার মধ্যে একপ্রকার গভীরতা আছে। ভাল লাগল। লিখেযান সবসময়। ভোট দিয়েছি। ভাল থাকবেন ।

০৫ মার্চ - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪