ক্রিটন চমকে উঠল। কর্কশ শব্দে সিকিউরিটি অ্যালার্ম বেজে উঠেছে। তার হাতে ছোট্ট একটি ক্রিস্টাল ডিভাইস, ছোট হলেও বেশ পাউয়ারফুল এটি, উন্নত প্রসেসর। কমিউনিকেশন এবং কম্পিউটিং সব কাজ করা সম্ভব এর মাধ্যমে। অ্যালার্মের শব্দ সেখান থেকেই আসছিল। অ্যালার্মের ফ্রিকোয়েন্সি অনেক হাই, বিপদের মাত্রা সাত না হলে এরকম অ্যালার্ম বাজার কথা না।
ক্রিস্টালে দেখাচ্ছে ঘটনাস্থল তাদের বাসার সুইমিং পুল। ক্রিটন অটোম্যাটিক লেজার গান তুলে সেদিকে দৌড়ে গেল। বিকেলের এই সময়টায় তার ছোট ভাই জিওনের পুলে থাকার কথা।
লম্বা করিডোরের দূরত্ব সে প্রায় উড়ে পার হল। পুলে পৌঁছে বোকা বনে গেল সে। দুজন সিভিলিয়ান জিওনের মাথায় কিছু তার ঢুকিয়ে দিয়েছে, তারের অপরপ্রান্ত একটি মেমরি রেকর্ডারে ঢোকানো। মেমোরি রেকর্ডার এই শতাব্দীর সবচে’ বড় আবিষ্কার। এর মাধ্যমে মানুষের মেমোরি কপি করে কম্প্যাক্ট ডিস্কে নিয়ে নেয়া যায়। পরে হিউম্যানয়েড সুপ্রিম কম্পিউটারে এই সিগন্যালের স্পেকট্রাম বিশ্লেষণ করে পুরো মেমোরি রিড এবং রাইট করা যায়।
ক্রিটন অবাক হয়েছে কারণ এই রেকর্ডার অতি সম্প্রতি আবিষ্কৃত এবং এটি ক্লাসিফায়েড। বিজ্ঞান কাউন্সিল আর সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ছাড়া এই গোপন আবিষ্কার আর কারো হাতে যাওয়া সম্ভব না। সে এ সম্পর্কে জানে কারণ রেকর্ডার তৈরির বিজ্ঞানীদের টীমে সেও ছিল। সামনের লোকগুলো সিভিলিয়ান এবং বিকট সব অস্ত্র তাদের হাতে। এদের কাছে কিছুতেই মেমোরি রেকর্ডার থাকার কথা না, কোথাও কোন বড় ভুল হয়েছে।
ক্রিটন কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ মানুষগুলো জিওনকে পুলে ছেড়ে দেয়, তারপর সামনে এগিয়ে যেতে থাকে। ক্রিটন তার কমুনিকেশন মডিউল থেকে একটা বিশেষ সিগন্যাল ছুড়ে দেয় মানুষগুলির দিকে। এর ফলে তার ক্রিস্টালে লোকগুলির গতিপথ লোড হতে থাকবে।
সে দৌড়ে পুলের কাছে গিয়ে দেখল মানুষগুলি তাদের কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন ডিভাইস নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে পাশের গোলাঘরের দিকে। এই কেটি ডিভাইস বদ্ধ আলোহীন ঘর ছাড়া কাজ করে না। ক্রিটন বেশ ভালো ভাবেই জানে তাদের এই গোলাঘর আবদ্ধ না, তাই কেটি ডিভাইস এখানে কাজ করার কথা না।
কেটি ডিভাইসে ন্যানো সেকেন্ডে যে কোন কিছু ট্রান্সপোর্ট করা সম্ভব। তাদেরকে প্রথমে সুইচ চেপে বিশেষ স্ক্যানারের সামনে দাঁড়াতে হবে। স্ক্যান করে মানুষটির প্রয়োজনীয় তথ্য আর সিগন্যাল সংগ্রহ করবে ডিভাইস। তারপর প্রাপ্ত ডেটাগুলো প্রসেস করে নির্দিষ্ট রিসিভিং স্টেশনে পাঠিয়ে দেয়া হবে। রিসিভিং স্টেশনে থাকবে বায়ো সিগন্যাল ডিকোডার। ডিকোডার প্রাপ্ত ডেটা বিন্যস্ত করে মূল মানুষটির প্রতিলিপি তৈরি করবে।
পুরো ব্যাপারটি ঠেকাতে হবে, ক্রিটন দৌড়ে গোলাঘরের দিকে গেল। সেখানে পৌঁছে সে অবাক হল। তারা কোন বিশেষ ব্যবস্থায় পুরো ঘরটিকে অন্ধকার করে ফেলেছে। সে হাতড়ে হাতড়ে এগুতে থাকে সামনে। কালিগোলা আঁধার জেঁকে বসেছে পুরো ঘরে, নিজের শরীর সে নিজে দেখতে পারছে না। হঠাৎ কোন কিছুতে প্রচণ্ড আঘাত পেল সে, চোখে লাল নীল তারা দেখতে পেল ক্রিটন। নিজেকে ধমকে চলল সে; জ্ঞান হারানো চলবে না, কিছুতেই না।
###
না, সে জ্ঞান হারায়নি। কেটি ডিভাইসের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলেই মাথা ঘুরে উঠেছিল। এখন সে স্ক্যানারের আওতার মধ্যে। তার অর্থ দুষ্কৃতকারী মানুষগুলির সাথে সে অজানা কোনো জায়গায় চলে যাচ্ছে।
চারদিকের আলো সয়ে আসতে ক্রিটন একটি বড় হল ঘরের মাঝখানে নিজেকে আবিষ্কার করল। ঘরটিতে কোন আসবাব পত্র নেই। ধবধবে সাদা দেয়াল। উপরের দিকে গম্বুজের মত। সারা ঘরে কোনো দরজা বা জানালা দেখা যাচ্ছে না। ক্রিটন অস্বস্তি বোধ করতে থাকে। কোন দিকে এগোবে বুঝতে পারে না সে। নিজেকে খাঁচায় বন্দি মনে হয়।
মাথার উপরে কেউ একজন কথা বলে ওঠে, “বিজ্ঞান একাডেমীর মহামান্য ক্রিটন তোমাকে স্বাগতম। ”
ক্রিটন আঁতকে উঠল, তাহলে কি সে ফাঁদে পড়েছে? সে ভয় লুকিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলল, “তুমি কে? কেন আমাকে এখানে এনেছ?”
কণ্ঠটি হেসে উঠল, “আমি তো তোমাকে আনিনি। আমার অনুচরদের পেছনে পেছনে তুমিই তো অনধিকার প্রবেশ করেছ এখানে। তুমিই বরং বলো এখানে কেন এসেছ?”
ক্রিটন বিজাতীয় ঘৃণা অনুভব করে। গোলাঘরের পুরো ব্যাপারটি তাহলে সাজানো ছিল। তাকে এখানে নিয়ে আসার একটা প্ল্যান ছিল ওটা, সে এমনি এমনি স্ক্যানারের তরঙ্গে ঢুকে পড়েনি- তাকে ঢোকানো হয়েছে। ক্রিটন জিজ্ঞেস করল, “জিওনের মেমোরি কি কাজে লাগবে তোমাদের? কেন সেটা স্ক্যান করলে?”
মানুষটি এবার গম্ভীর স্বরে কথা বলে উঠে, “সেটা ক্লাসিফায়েড। তোমার না জানলেও চলবে। ”
ক্রিটন সাহসী হয়ে উঠে, “কিন্তু আমি ওটা ফেরত চাই। ”
কণ্ঠটি জবাব দিল, “আগে নিজে তো এখান থেকে বের হও, তার পর ভাইয়ের কথা ভেবো।”
ক্রিতন দাঁতে দাঁত পিষে বলল, “আমি এখুনি ডিস্কটা ফেরত চাই, বের হবার কথা পরে ভাবব।”
কণ্ঠটি তাচ্ছিল্য করে বলল, “ফেরত পাবে, বেরোতেও পারবে। তবে যদি আমার কথা মত কাজ কর।”
ক্রিটন ভেবে দেখল নিগোশিয়েট করে লাভ হচ্ছে না। এখান থেকে বের হবার রাস্তাও সে জানে না। তাছাড়া মোকাবিলা করতে হলে শত্রু সম্পর্কে ধারণা দরকার, সেটাও তার নেই। তাই সে কণ্ঠটির কথা মেনে নেবার সিদ্ধান্ত নিল।
চৌদ্দ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে তাকে কম্প্যাক্ট ডিস্ক নিয়ে ফিরতে হবে। এসময়ের মধ্যে যদি ডিস্ক জিওনের মাথায় রি-ইন্সটল করা না যায়, তাহলে সে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে জিওনের দেহে ঢুকিয়ে দেয়া হবে এক আম্পুল বিষাক্ত রাসায়নিক।এই প্রক্রিয়াতেই মানসিক ভারসাম্যহীনদেরকে মেরে ফেলা হয়। এটাই নিয়ম।
ক্রিটন বলল, “বল কি করতে হবে আমাকে। ”
লোকটি জানত ক্রিটন এখন ফাঁদে পরা ইঁদুর। সে তাদের কথামত চলতে বাধ্য। লোকটি এক ধরনের তৃপ্তির শব্দ করল, ক্রিটনের গায়ে শব্দটি জ্বালা ধরিয়ে দিল।
###
বড় একটি সুপ্রিম বায়ো কম্পিউটার ঘিরে বসে আছে ক্রিটন এবং তিনজন মানুষ- ত্রিহান তাদের দলপতি। এই মানুষগুলোকেই পুলে দেখেছিল সে। এরা বিজ্ঞান একাডেমীর বিশ্বাসঘাতক দল। যারা ইতিমধ্যে সেখান থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এখন তারা বিজ্ঞান একাডেমীর সেরা আবিষ্কার দশম মাত্রার বায়োবট প্রযুক্তি হাতিয়ে নিতে চাইছে।
এই বায়োবট যোদ্ধা প্রকৃতির মানব রোবট, তারা পৃথিবীর প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হয়। পুরো পৃথিবী এখন একীভূত একটি রাষ্ট্র, একটি দেশ। স্পেসের অনেক অপশক্তির বিরুদ্ধে এই পৃথিবীকে নিরাপত্তা দিতেই বিজ্ঞ্যান একাডেমী মানুষকে ফরম্যাট করেছে বায়োবটে। এরা শারীরিকভাবে রোবটের মত কিন্তু, অনুভূতি-চিন্তায় মানুষের মতই। এদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর মানবের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
ত্রিহানের দলের পরিকল্পনা হল এই বায়োবটে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেয়া। এবং বায়োবটের সোর্সকোড জানা। এতে সব রোবট তাদের হাতে চলে আসবে।
ক্রিটন বুঝতে পারে ত্রিহানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে পৃথিবী বাঁচানো যাবে না। কারণ পৃথিবী শান্তিপ্রিয় হলেও মহাজাগতিক অপশক্তি’র সাথে তাদের যুদ্ধ করেই টিকে থাকতে হয়। সেই যুদ্ধে সারাক্ষণ প্রোগ্রামিং করে নিজেদের গ্রহের বলয়ে ফায়ারওয়াল শিল্ড তৈরি করতে হয়। আক্লান্ত পরিশ্রম করে সেই শিল্ড তৈরি করে বায়োবটেরা। ত্রিহানের মত লোকেদের জিঘাংসার কাছে পৃথিবীর নিরাপত্তা ছেড়ে দিতে চাইলো না ক্রিটন।
তাকে বলা হয়েছে মূলতথ্য কেন্দ্রে ঢুকে বায়োবটের সোর্স কোড উদ্ধার করতে। ক্রিটনের মাথায় ঝড়ের গতিতে ভাবনা চলছে, কিভাবে সে আসন্ন সমস্যা থেকে নিজেকে, জিয়নকে এবং পৃথিবীকে বাঁচাতে পারে।
###
মূল তথ্য কেন্দ্রের সিকিউরিটি অ্যালার্ম বেজে উঠল। বিজ্ঞান একাডেমীর লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে দিল। সিগন্যাল ধরার চেষ্টা করল তারা। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো তাদেরকে যেন সিগন্যাল পাঠাচ্ছে হ্যাকার নিজেই। হ্যাকারের গোপন কোড ভেসে উঠল স্ক্রিনে। এসএ-৬৭৮৯৬।
“অবিশ্বাস্য!”, আপনমনেই বলে ঊঠলো বিজ্ঞান একাডেমী প্রধান, “স্ক্রীনের গোপন নাম্বারটি ক্রিটনের। কিন্তু সে অনেকদিনের বিশ্বস্ত বিজ্ঞানী। ভাবা যায় সে কিনা মূল তথ্য কেন্দ্র হ্যাক করতে চেষ্টা করছে!”
সহকারী প্রধান পাশ থেকে বলে উঠল, “প্রধান, আপনি কিন্তু একাডেমীর পঞ্চম মূলনীতি ভায়োলেট করছেন। পঞ্চম মূলনীতি বলে কাউকেই ‘বিশ্বস্ত’ ভাবা যাবে না।”
প্রধান চিন্তিত মুখে বললেন, “মানুষের এই এক সমস্যা। কারো নিয়ম মেনে তো মানব মস্তিষ্ক চলে না। সে নিজের নিয়মে চলে। বিশ্বাস ব্যাপারটাকে সে সহজেই স্থান দিয়ে দেয়। ”
সহকারী বললেন, “একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে- গোপন নম্বর ব্যবহার করে সে হ্যাক করার চেষ্টা করলো কেন? কেন পরিচয় হাইড করলো না?”
প্রধান গাল চুলালেন, তিনি নিজেও এই ব্যাপারটা ধরতে পারছেন না। ব্যস্ত হাতে সবাই হ্যাকারের অবস্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। কিছুক্ষণের মদ্ধেই এক তরুণ বিজ্ঞানী সেটা বের করে ফেলল। স্ক্রীনে ফুটে উঠল হ্যাকারের অবস্থান, থ্রিডি কোওরডিনেট।
সেটা ছিল বিতাড়িত বিজ্ঞানী ত্রিহানের বাড়ির বেজমেন্তের কো-ওরডিনেট।
এই সময় প্রধানের হঠাৎ তার মনে হল সে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারছে। সে চেঁচিয়ে নির্দেশ দিল, মুহূর্তে তার বায়োবট বাহিনী হ্যাকারের অবস্থানের দিকে যাত্রা করল।
###
বায়োবটেরা ত্রিহান,তার দুই সহকারী এবং ক্রিটনকে ইলেকট্রিক বীম দিয়ে ঘিরে নিয়ে এল বিজ্ঞান একাডেমী প্রধানের কাছে। সবাই ঘৃণার চোখে তাকিয়ে আছে ক্রিটনের দিকে। পৃথিবী এখন শান্তি আর স্বপ্নের দেশ, এখানে কেউ প্রতারণা পছন্দ করে না। সেই জঘন্য কাজটি করেছে সে, শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে।
ক্রিটন বেশ বুঝতে পারছে, তাকে অপরাধী ভাবা হচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীর প্রতিরক্ষার স্বার্থে তার এই কাজটি ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। সে ইচ্ছে করেই ত্রিহানের চোখে ধুলো দিয়ে এক ফাঁকে নিজের গোপন নাম্বারটি পাঞ্চ করে দেয়। এতে অল্প সময়ে মূল তথ্য কেন্দ্র তাদের ডিটেক্ট করতে পারে। এই কাজটি করার ফলে ত্রিহানের নিরাপত্তা অ্যালার্ম বাজে নি, তাই সে সতর্ক হয়ে পালাতেও পারেনি।
ক্রিটনের চোখে স্বচ্ছ জল জমা হচ্ছে বিন্দু বিন্দু করে। নিজের জন্য না, জিওনের জন্য। তার হাতে মাত্র দুই ঘণ্টা উনিশ মিনিট চৌত্রিশ সেকেন্ড সময় আছে। কিন্তু সে কম্প্যাক্ট ডিস্কটি এখনো হাতে পায়নি। পেলেও লাভ হত না। সে এখন হ্যাকিং চেষ্টা করার অপরাধে বন্দি। পুরো ব্যাপারটি খুলে বললেও হয়ত বিশ্বাসযোগ্য হবে না, তাই সে চুপ করে রইল।
বিজ্ঞান একাডেমীর ঘরটিতে মৃদু গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সবাই প্রতারক ক্রিটনের ব্যাপারে কথা বলছিল। প্রধান সেখানে প্রবেশ করতেই সবাই থেমে গেল, পিন পতন নীরবতা নেমে এল সেখানে।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে বোমা ফাটালেন প্রধান, “ক্রিটনকে অভিনন্দন! যদিও চতুর্দশ ধারা অনুযায়ী বিজ্ঞান একাডেমী প্রধানের মুগ্ধ হওয়ার কথা না, কিন্তু ক্রিটনের অভূতপূর্ব দেশপ্রেমে আমি মুগ্ধ। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে পৃথিবীকে বাঁচিয়ে নজির সৃষ্টি করেছে। ”
হলরুমে গুঞ্জন উঠল আবারো। প্রধান সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “ত্রিহান তার বেসমেন্তে গোপন ল্যাব তৈরি করেছিল, পৃথিবী দখলের বাজে একটা ইচ্ছে তার ছিল। তাই সে ক্রিটনকে ব্যবহার করে। যখন ক্রিতন তার গোপন নাম্বার প্রবেশ করাল, আমরা সহজে তাদের পেয়ে গেলাম। কারণ, এই নাম্বার থেকে অল্প সময়ে তাদের অবস্থান বের করা গেল। হ্যাক করার ইচ্ছে থাকলে এই নাম্বার সে প্রবেশ করাত না। আর তা হলে ত্রিহানের পরিকল্পনা মত এখন ভাইরাস প্রবেশ করত বায়োবটদের হার্ডডিস্কে। ক্রিটনের বুদ্ধিমত্তার কারনেই আজ পৃথিবী বড় বিপর্যয় থেকে বেঁচে গেল।”
ক্রিটন হাঁপ ছাড়ল, এবার হয়ত সে ব্যাপারটা বলার সুযোগ পাবে।
###
জিওন আর ক্রিটন পুলে সাঁতার কাটছিল।
জিয়ন সাঁতরে এগিয়ে এল ভাইয়ের দিকে, হাত চেপে ধরে বলল, “তুমি কিন্তু বেশ দেখালে।”
ক্রিটন হাসল, “এমন আর কি!”
জিয়ন পাল্টা হাসি দিল, “এমন কি মানে! শুধু আমাকে না- এই পৃথিবীকে বাঁচালে তুমি। তুমি বিজ্ঞানী না- দেশপ্রেমিক; ফাইটার।”
ক্রিটন কৃত্তিম রাগ দেখাল , “আমি ফাইটার? আমার হাতে তো লাইট লেযার গান ছাড়া কিছুই ছিল না!”
জিয়ন গম্ভীর মুখে জবাব দিল, “অস্ত্র বা তথ্য প্রযুক্তি না- তুমি ফাইট করেছ মেধা দিয়ে। সৃষ্টির আদি থেকেই যেটা মানুষকে টিকিয়ে রেখেছে।”
ভারী আলোচনা আর এগিয়ে নিতে চাইলো না জিয়ন, ভাইয়ের দিকে পানি ছিটিয়ে দিল সে। ক্রিটনও একই কাজ করল। পঁচিশ নং ধারা অনুযায়ী কোন বিজ্ঞানী অর্থহীন কাজ করতে পারে না, কিন্ত ক্রিটনের অর্থহীন কাজ করতে বেশ ভালো লাগে। মানুষের ধর্মই সম্ভবত নিয়ম ভাঙ্গা।