মিয়ানমারের মিয়াভাই.....

পার্থিব (জুন ২০১৭)

ধুতরাফুল .
  • ২৫
১৯৯৩ সালের শীতের সকাল। আমার ঔষধের দোকান সবে মাত্র খুলেছি। কিছুক্ষণ পরে একটি রিক্সাভ্যান এসে থামলো দোকানের সামনে। তাতে একজন বেটে খাটো মানুষ শুয়ে আছে মাথার চুল উস্কোখুস্কো। গায়ের জামাটাও ছেড়া, শরীরের কয়েক জায়গা থেকে রক্ত ঝরে ঝরে পড়ছে। ভ্যান চালক আমার কাছে এসে বল্লো শান্তি ভাই এই লোক রাস্তার পাশে পড়ে ছিল বেহুশ হয়ে কোন কথার উত্তর দিচ্ছে না আপনার কাছে নিয়ে আসলাম কিছু একটা ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে বাজারে বেশ কিছু মানুষ জড় হয়ে গেছে তাদের মধ্যে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক জালাল চাচাও উপস্থিত উনি পরীক্ষা করে বল্লেন শান্তি স্যালাইন দিতে হবে......চাচা ওনার যা যা লাগে আপনি আমার দোকান থেকে নেন টাকা পয়সার হিসাব পরে হবে। ঘন্টা খানেক পরে অচেনা মানুষটার জ্ঞান ফিরলো। ঠিক মত কথা বলতে পারছে না ভাঙ্গা ইংরেজীতে যা বল্লো সে মায়ানমার থেকে এসেছে। মানুষটাকে বাসায় নিয়ে আসলাম গোসল করিয়ে আমার লুঙ্গি আর জামা দিলাম। ইশারায় বুঝতে পারলাম তার ক্ষিদে পেয়েছে সকালে বানানো রুটি আর ডিম ভেজে মা তাকে খেতে দিলেন। তার পর এক ঘুমে দুপুর। মানুষটির নাম “হাসটিং হাসনাথ নিশো” জাতিতে মুসলমান বাড়ী মিয়ানমারের রেঙ্গুন শহরে। জুয়েলারী ও কাপড়ের ব্যবসা। তাদের দোকানে কাজ করতো আমাদের দেশের এক ছেলে চুয়াডাঙ্গাতে বাড়ী। সমবয়সী হওয়াতে মালিক কর্মচারী সম্পর্কের বাইরে গড়ে উঠেছিল অকৃত্রিম বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুর আমন্ত্রনে বাংলাদেশে আসা। পাঠক পরের ঘটনা তার মুখ থেকে শোনা যাক ...বাংলাদেশে যাবো বন্ধুর বাড়ী বলে কথা দু হাত ভরে বাজার করলাম সবার জন্য বয়স অনুসারে কাপড়চোপড় বেশ বড় অংকে টাকা( ইউ এস ডলার) বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় তিন লক্ষ টাকার মত হবে।বাংলাদেশ বিমান বন্দরে যখন নামলাম তখন স্থানীয় সময় রাত ১১ টা বাজে। কথা ছিল বন্ধুর আত্মীয় স্বজন মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষা করবে। একটা ধুসর রঙের গাড়ীর ভিতরে তিন জন তাদের বয়সী যুবক। মনে ভিতর কেমন যেন একটা অজানা শংকা সামান্য উঁকি দিয়ে আবার চলে গেল। হয়তো নতুন জায়গা নতুন মানুষের কারনে এরকম ভাবছি। গাঢ় নিদ্রার ভিতর অনুভব করলাম মাথার উপর ধাতব কিছু একটার প্রচন্ড আঘাত........সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারালাম। দুরে কোথাও ফজরের আজান শুনতে পেলাম আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফুটতে থাকলো .....হাত পা নাড়ানোর চেষ্টা করলাম পারলাম না চোখটা খুলতে পারলাম কোন রকম সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন বড় বড় দুইটা সুটকেস ব্যাগ পাসপোর্ট ডলার কিচ্ছু নাই। তার শরীর ঠিক হতে প্রায় ১ সপ্তাহ লেগে গেল। পুরা সপ্তাহ জুড়ে আমার বন্ধুরা তার সাথে ভুল ইংরেজীর ফোয়ারা ছোটালো। চেষ্টা করেও তার বেঈমান বন্ধুদের ঠিকানা জোগাড় করতে পারলাম না। গভীর যড়ন্ত্রের নীল নকশাঁ কি সহজভেদ্য?
এবার বাড়ী ফেরার পালা। চট্রগ্রাম থেকে চোরাই পথে ট্রলার যোগে মায়ানমার যাওয়া সম্ভব তবে প্রায় বারো হাজার টাকার মত লাগবে। এতো টাকা এখন কোথায় পায়? অনেকে তীর্যক মন্তব্য করতে লাগলো যত সব চিটার বাটপার ধান্দা বাজী করে টাকা আদায়ের ফন্দি মাত্র। কি আর করা আমরা কয়েক জন বন্ধু-বান্ধব মিলে টাকা তুলে ঢাকার গাড়ীতে তুলে দিলাম..............।
তিন মাস পরে রাজপুত্রের বেশে এসেছিল সে। নিয়ে এসেছিল আমার স্ত্রীর জন্য তার দোকানের সেরা জামদানী শাড়ী ,আমার জন্য মিনি টেপ রেকর্ডার , ম্যকগাইভার নাইফ আর অশেষ কৃতজ্ঞতা। অন্য বন্ধুদের জন্য নিয়ে এসে ছিল অজস্র উপহার। হাটবোয়ালিয়ার হাট থেকে ব্যাগ ভরে ভরে সবার বাসায় বাজার নিয়ে উপস্থিত হয়ে বলতো আজ আমাদের দাওয়াত.......সময়ের সাথে সাথে তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি বন্ধু। অজান্তে তোমাকে খুজি ফেসবুক টুইটারে ........হটাৎ যদি শুনতে পায় তোমার কন্ঠ “ সানটি কেমন আছো..... ”

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মোখলেছুর রহমান অবয়ব ও ভাষাশৈলী বাড়ানো প্রয়োজন। ভাললেগেছ। ভোট রইল।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পতে একটাই পুরোপুরি চলে আসে→ বিদেশীরা যখন অচেনা দেশের অচিন মানুষের সাথে সাক্ষাত করতে যায় তখন তারা খুব দুর্বাগ্যে পড়ে; যেমন- চুর, ডাকাত ইত্যাদির হাতে। আর যখন কেউ তাকে সাহায্য করে তখন সে সাহায্যের বিনিময়ে ভুলতে না পেরে নিয়ে আসে অজস্র উপহার। এটাই কৃতজ্ঞতা। চমৎকার হয়েছে। বরাবরের মতই অনেক অনেক শুভকামনা ও ভোট রইলো.....
রুহুল আমীন রাজু আরেকটু পরিষ্কার করলে ভাল হতো ...।। শুভ কামনা নিরন্তর । ( আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইল )
আহা রুবন গল্পে কী বোঝাতে চাইলেন? মিয়ানমারের মানুষ বাঙ্গালিদের চেয়ে খুব ভাল!
আমাদের পার্থিব জীবনের লোভ ,হিংসা আর ভালোবাসার কথা....ধুতরাফুল।

১৫ ফেব্রুয়ারী - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪