সবুজ দ্বীপ

অবহেলা (এপ্রিল ২০১৭)

স্নেক হেড
  • 0
আমাদের বড় পুল ও হাতির পুল নামে দুটি জায়গা আছে। বড় পুলটি বড় নয়। হাতির পুলে হাতি নেই, পুলও নেই।

তথ্যগুলো আমার জানাও নেই, আমি শুনছিলাম , পাবলিক বাসের আসনে , আরোহিতদের ভিড়ে , দু'জনের কথোপকথনে । আমরা যাচ্ছিলাম সবুজ দ্বীপে । আমরা মানে, আমি একা। কিন্তু একা নয়। আমরা প্রায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার , মত ও মতানুসারী , ভাল ও মন্দ, ভদ্র ও পকেটমার , সুশিক্ষিত ও অশিক্ষিত , সুখি ও দুখি, তরুণ ও যুবক, শিশু ও বৃদ্ধ , মা ও মেয়ে, তরুণী ও যুবতী, ছাত্র ছাত্রী , আমরা ছিলাম ঠাসাঠাসি এক বাস যাত্রী ।
আমাদের পথ ছিল দীর্ঘ, আমাদের দ্বীপ আরো দূরে ।
আমরা কেউ জানালায় তাকিয়ে আছি, সবুজের পথে যেতে যেতে আরো সবুজ দেখছি ।

তখন আমাদের দিন ছিলো আলোয়, সূর্য ছিল ঘোলা , রোদ বলতে যাকে চিনি রোজ, তেমন রোদ ছিলনা। দীর্ঘ ভ্রমণ , কেউ প্রচণ্ড ঝাকড়া খাচ্ছে। কেউ সামনের সিটে মাথা ঝুঁকে দমে আছে । কয়েকটি শিশু তার মায়ের কোলে কাঁদছে । একটি তরুণী তার মাথা আরেক তরুণের কাঁদে দিয়ে ঘুমোচ্ছে । মনে হচ্ছে তরুণটাতে প্রেম নেই। তার চোখগুলো উডছে জানালার বাহিরে , যেমন মেয়েটির চুল উড়ছে , এলোমেলো হাওয়ায় , বিনা প্রেমে, ঘুমোক্লান্তি নিয়ে । কেউ মোবাইলে গান শুনছে।
আমার সামনের সিটের একজন ফেসবুক করছে। তার কানে হেডফোন , তার বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ কাঁচের স্ক্রিনে স্লাইড করছে। তিনি মুচকি হাসছে। তার দিকে আমার একটু উঁকি দিতে ইচ্ছে হলো। তার দিকে নয় , তার ফেসবুকের দিকে। দেখলাম মধ্যবয়স্কা লোকটি চ্যাট করছে ।
মিষ্টি মিষ্টি কথা গুলো তার দিকে মার্বেলের মতো ছেড়ে দিচ্ছে । অপর প্রান্ত থেকেও আসছে। আমার আর উঁকি দিতে ইচ্ছা হলো না। আমার পিছনে শোর পড়েছে। দুটি মানুষের মাঝে বিতর্ক হচ্ছিলো। তারা রাগারাগির পর্যায়ে চলে গেল ।
আমি তাদের দিকে লক্ষ্য করলাম, তারা রাজনীতি বিষয়ে বচসা করছে। একজন অন্যজনকে রাজাকার বলেছে। যাকে রাজাকার বলেছে সে হেসে উঠেছে। যিনি রাজাকার বলেছেন , তার হেসে উঠাতে তিনি আরো রেগে গেলেন। রেগে যাওয়া মানুষটি তাকে আরো জোর করে বললেন , 'দূর মিঞা, আপনি ডাবল রাজাকার !
লোকটি আর হাসলোনা, এবার সে সত্যি সত্যি রাগান্বিত হলেন । তিনি বললেন এই দেশটা রাজাকারের দান।

তোমরা যে স্বাধীনতার জন্য রাজাকারের সঙ্গে খেলেছ, রাজাকার দানটি পায়নি। দানটি পেয়েছ তোমরা। যদি রাজাকার পেতো , তোমরাই হতে দেশ বিদ্রোহী ঘাতক । আজকের রাজাকারকুল শিরোমণির যে ফাঁসি হলো , সে ফাঁসি হতো তোমাদের শিরোমণির।
তারাই বলছিল, বড়পুল ও হাতিরপুলের কথা ।
বড়পুল যেমন বড় নয়,
হাতির পুলে যেমন হাতিও নেই, পুলও নেই,
তারা বলছে, স্বাধীনতাও তেমন।
স্বাধীনতা একটি নাম।
শুনে আমি শিউরে উঠেছি।
আমার পশমগুলো , কাঁটার মতো হয়ে উঠছিল। আমার ইচ্ছা হচ্ছিল তাদের সঙ্গে মেতে উঠার। বড় একটা ঝাঁকি খেলাম বাসে । তাদের বিতর্ক থেকে নিজের শ্রবণ যন্ত্রকে ফেরালাম।।

চোখ বন্ধ করে বাসের সিটে একটু এলিয়ে যেতে চাইলাম। আমার মনে হয় ঘুম আসছে।

আমাদের সবুজ দ্বীপ আরো বহু দূর। বাস এগুচ্ছে। আমার ঘুম ঘুম লাগছে । সূর্যটা কুয়াশিয়া চাঁদের মতো , তবু চোখে আলো পড়ছে। বাসটি চলছে
আমরা যাচ্ছি।
সবুজ দ্বীপে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক ভালো লাগলো..নিয়মিত থাকুন....
SWADESH KUMAR GAYEN ভালোই লিখেছেন। আরও লিখুন। আমার ব্লগ পড়ার আমন্ত্রন রইলো।www.golpoporuya.in
কাজী জাহাঙ্গীর লিখতে যখন শুরু করছেন, থামবেন না প্লিজ, লিখতে থাকুন। তবে সাবধান এধরনের পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে রাখবেন, লেখক হিসেবে আপনার কাজ হবে আশপাশ থেকে লেখার বিষয় নেয়া ঠিক এটার মত। গল্প কবিতায় আপনাকে স্বাগতম। অনেক শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
ধন্যবাদ আপনাকে। আমি নতুন। এই আ্যপ্সের আগামাথা কিছুই বুঝছিনা।। যাব আপনার ওয়ালে। কিন্তু স্লো ব্যপারটা ভারি বিরক্তিকর। এই কারণে অন্যন্যদের ওয়াল সফর করার সুযোগ পাচ্ছি না।
আপনি এপস বাদ দিয়ে সরাসরি গুগল থেকে ঢুকলে ইজি হবে, আমিও তাই করি। অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে। সেভাবেই ঢুকে দেখবো।
স্নেক হেড আপনাকে ধন্যবাদ আমি নতুন। এখানে কিছু, বুঝছিনা। এবং আমি এটাও জানিনা, আমার কোন লেখায় আপনি এই মন্তব্যটি করেছেন। এই পেজটি স্লো।। বিনিময় করা অনেক অসুবিধা। তাই কম আসি

০৫ ফেব্রুয়ারী - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪