হালখাতা

বিশ্বকাপ ক্রিকেট / নববর্ষ (এপ্রিল ২০১১)

বাঁধন
  • ৩১
  • 0
  • ১১৫

রুপার ঘুম আজ একটু তারাতারি ভাঙ্গে । রাতে বেশ গরম পড়েছিল। রুপা বিছানা থেকে নেমে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়, পাশের বাড়ীর ঝুলবারান্দায় গ্রিলে উঠে গেছে মাধবীলতার ঝাড়। সকালের সোনা সোনা রোদ গোলাপী মাধবীলতার উপর পরছে। নরম বাতাস ছুঁয়ে রুপাকেও, এক ধরনের ভাল লাগায় ভরে উঠে ওর মন। ছো্ট্ট ফ্লাটের এই জানালার ধারটুকু রুপার কাছে খুব প্রিয় জায়গা। প্রায় বছর তিনেক হল পথিকের সাথে রুপার বিবাহিত জীবন। এখানেই ওদের প্রথম সংসার পেতেছে। সাজানো দুটো ঘর। পথিক অনেক বার ওকে বলেছে-
রুপা, আমার তেমন পয়সা নেই, কিন্তু আমি সব সময় শুধুই তোমার। রুপাও এটুকুতেই সুখের সাগরে ভেসেছে। পথিকও আত্ম-সচেতন, রুচিশীল মানুষ। রুপাকে সুখী রাখতে ওর কোন ঘাটতি নেই।
“এসো হে বৈশাখ এসো এসো” – পাশের বাড়ী থেকে ভেসে আসে নববর্ষের গানের সূর। হয়তো চ্যানেল আই এ লাইভ রমনার বটমূলের অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে। রুপা আর দেরী করেনা। গোসলের জন্য স্নানঘরে ঢোকে। পথিক আজ অনেক দিন থেকে বলে আসছে – এবার আমরা নতুন বছর বরণ করবো অন্য ভাবে।এজন্য আড়ং থেকে সবুজ পটভুমিতে পোড়া মাটির কাজকরা মিহি তাঁতের শাড়ি পছন্দ করে এনেছে রুপার জন্য আর নিজের জন্য পাঞ্জাবী। গতরাতে বেলীফুলের মালা আনতেও ভোলেনি। রুপা তারাতারি গোসল সেরে বেরিয়ে আসে। পথিককে ঘুম ভাঙ্গায়। পথিক চোখ খুলতেই এক ঝলক মুগ্ধতার সুতায় ওকে বেঁধে ফেলে। রুপা দেখতে এমনিতে সুন্দর তার উপর সদ্যস্নাত মুখ আরও কমনীয় লাগছে, আসলে গোছলের পর সব মেয়েকেই খুব মোহনীয় মনে হয়। পথিক ওকে বুকে টেনে নেয়। রুপার ভেজা ঘনচুল পথিকের মুখের উপর এসে পড়ে।এক গুচ্ছ সুগন্ধী ফুল ছড়িয়ে পড়ছে যেন পথিকের দেহমনে। পথিকে পুরু অধর আলতো করে ওর কপাল ছুঁয়ে দেয়। ‘ কি হচ্ছে ? ছাড়ো আমাকে, তাড়াতাড়ি রেডি হতে বলে এখন নিজে দেরী করছো’। তাড়া লাগায় রুপা। ‘ও তাইতো’ – পথিক আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বিছানায় বসে।
সবুজ শাড়ীতে রুপাকে খুব সুন্দর লাগছে। বন-বনান্তের সবুজ ছাপিয়ে জেগে উঠেছে রুপার সবুজ। আলতো খোঁপায় জড়ানো বেলীফুলের মালা। পথিকও এর মধ্যে তৈরি হয়ে নেয়। রুপা জিজ্ঞাসা করে আজ আমরা কোথায় যাচ্ছি ? ধীরে একটু ধীরে, একটু পরেই দেখতে পাবে। ধৈর্য্য হারিয়োনা, পথিক বলে। পথিকের বন্ধু মামুনে এসে ডাকে। মামুনের ডাকে পথিক-রুপা বেরিয়ে আসে। মামুন একটি দামি গাড়ীতে এসেছে। গাড়ীতে বসতেই মামুন পথিককে বলে বন্ধু আমি হেরে গেছি মনে হয়। রুপা বলে, কিসের বাজি ধরলেন মামুন ভাই। বলবো ভাবী পরে বলব।
একটা সুরম্য দ্বিতল বাড়ীর ফটকে এসে গাড়ী থামে। পথিক প্রথমে নামে এবং রুপাকে নেমে আসার জন্য আহ্বান জানায়। রুপা দ্বিধান্বিত হয়, বলে পথিক আমরা কোথায় এলাম, আমারা ঘরের ভেতর পহেলা বৈশাখ পালন করবো ! হ্যাঁ, শুধু পহেলা বৈশাখ নয় আজ আমাদের গৃহ-লক্ষী বরণও বটে। পথিকের রসিকতার অভ্যেস আছে তা রুপার অজানা নয়। আজকে যেন একটু বেশী হেঁয়ালী মনে হচ্ছে রুপার কাছে। মামুন বরে ভাবী আপনি প্রথমে ঢুকুন তারপর আমরা পেছন পেছনে আসছি। রুপা দ্বিধা জড়ানো পায়ে গেটের ভিতরে প্রবেশ করে । মাঝখানে কংক্রীট পথ, দুপাশে বাগান। চওড়া বারান্দা পেড়িয়ে লিভিং রুমে ঢোকে। মামুন বলে পথিক, ভাবীকে আর হেঁয়ালীর মধ্যে রাখা ঠিক হবেনা। এবার সব খুলে বলা দরকার। কে বলবে তুই না আমি । পথিক বলে তুই বল। মামুন বলে- ভূমিকা না করে বলে ফেলি। আপনি আমার চোখে আলো এনে দিয়েছেন। আমি রিয়া নামের একটি মেয়েকে খুব ভালবাসতাম কিন্তু ও যে সত্যিকারে আমাকে ভালবাসেনি আমি তা বুঝিনি। রিয়া ইউ,কে তে চলে যায়, আর কোন মেয়ের সাথে ঘর বাঁধবোনা। পথিক আমাকে বুঝিয়েছে কিন্তু আমি অটল। অতপর পথিক বাজী ধরল যে, সব মেয়ে এক হয়না। এই বাড়ী-গাড়ী এসব পথিকের ওর আরও ব্যবসা আছে, সব গোপন রেখে আপনাকে বিয়ে করল। টাকা পয়সা ছাড়াও মেয়েরা ভালবাসার প্রতিদান দেয়। আপনি তা প্রমান করেছেন। আপনি এই নতুন বছরের বিবাহিত জীবনের হালখাতা অন্যভাবে খুলুন। এসবই আপনার। ভাবী, আমি আমার পণ ভেঙ্গেছি। আমার জীবনের হালখাতা অন্যভাবে শুরু করবো। রুপা কি করবে বুঝতে পারেনা ! নতুন কিছু পাওয়ার আনন্দে সে কি অভিভূত,নাকি হারানোর ! অথবা অন্যকিছু ভাবছে , কিছু বোঝা গেলো না !!!!!!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মাহাতাব রশীদ (অতুল) ভোট দেও শেষ দিন।সবাইকে উতসাহিত করছি।১ম থেকে ৫ম এর ভিতরে না থাকতে পারলে দুকখ করার মানে নেই।কারণ একদিন সবারি জিত হবে।
এস, এম, ফজলুল হাসান অনেক ভালো লেখেছেন , ধন্যবাদ আপনাকে
মেহেদী আল মাহমুদ গল্পকবিতার অনেক অনেক গল্প কবিতার ভীড়ে এই গল্পটা সত্যিই একেবারে আলাদা। দারুন।
kolin ভালো লিখেছেন.
বিষণ্ন সুমন নারীর প্রতি তোমার যে অকুন্ঠ শ্রদ্ধা এখানে প্রকাশ পেয়েছে, তা আমায় মুগ্ধ করেছে. আসলে সব মেয়েই যে লোভী হয়না এটার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত আমার নিজের জীবনেই সুস্পষ্ট. তাই তোমায় সাধুবাদ না দিয়ে পারলাম না. সেই সঙ্গে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা তো বটেই. আর হা, তোমার লিখার হাত কিন্তু বেশ.
সৌরভ শুভ (কৌশিক ) বাধন তোমার লেখা পরে ,মনটা আমার গেল ভরে /
অজানা লেখক আশার খোঁজে চমৎকার।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাষা আরও সহজ করা প্রয়োজন।
মাহাতাব রশীদ (অতুল) বাঁধন ভাই,ছবির পিছনে আসল মরুভূমি নাকি?

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪