অপেক্ষা

বাবা (জুন ২০১২)

আহমেদ সাবের
  • ২৯
  • ২২
- ১-

বিদ্যুৎ আছে, তবে ভোল্টেজ বেশ কম। বাতি জ্বলছে মিটমিট করে, চারিদিকে হলুদ আলো ছড়িয়ে।

সখিনা, মোমবাতি কাছে রাখ। লাইট কখন চইলা যায়, ঠিক নাই। কাজের মেয়েকে ফরমায়েশ দেয় পিয়াল।

রাইখছি আপা। হারিকেনও জ্বালান আছে।

যেমন বাত্তির আলো, থাকনের চাইয়া না থাকন ভালা। আপন মনে গজগজ করে পিয়াল।

বুড়া আসগর আলী খসখস করে কাশে। বুকটা উঠানামা করে হাপরের মতো। চোখ দুটো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসবে।

বাবা, বুকে একটু তেল মালিশ কইরা দিমু? বাপের বুকের কাছে ঝুঁকে প্রশ্ন করে পিয়াল।

আসগর আলী শোনে কি শোনে না, বুঝা যায়না। কাশির দমক ওঠে আরও জোরে।

বাবা, একটু পানি খান, বলে জগ থেকে আধা গ্লাস পানি ঢালে পিয়াল।

আসগর আলীর বড় ছেলে হাসমত মাথা আর কাঁধের নীচে হাত দিয়ে বাপের শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গ হেলান দেয়ায় ওর দেহের সাথে। পিয়াল পানির গ্লাস ধরে বুড়োর মুখের কাছে। আসগর আলী মুখে এক ঢোক পানি মুখে নিয়ে রাখতে পারেনা। কাশির দমকে পানি পিচকিরির মত বেরিয়ে এসে ভিজিয়ে দেয় পিয়ালকে।

সখিনা, তেল গরম কইরা আন। কাজের মেয়েকে বলে পিয়াল।

সখিনা তেল গরম করে ফিরে আসে মুহূর্তে। পিয়াল পাঞ্জাবীর ভেতরে হাত ঢুকিয়ে গরম তেল মালিশ করতে থাকে বাবার বুকে। একটু পানি গলায় যাওয়াতে, কিংবা গরম তেলের প্রভাবে বুড়ার কাশি কমে আসে ধীরে ধীরে। ভোল্টেজ কম বলে পাখা চলছে না। ভাদ্রের গরমে পিয়ালের মুখে ঘাম বৃষ্টির ফোটার মত চকচক করে।

বুড়া ঘোলা আলোয়, ঘোলাটে চোখে দেখে সবাইকে এক এক করে। পিয়ালের মুখে চোখ পড়ে তার। অবিকল মায়ের চেহারা পেয়েছে মেয়েটা। বুকে কাশি জমলে, ঠিক এমনি করেই বুকে তেল মালিশ করে দিত রোকেয়া। মানা করলেও শুনত না। এমনি করেই ঘাম জমত ওর মুখে। আর ওর মৃত্যুর সময় আসগর আলী কাছে পর্যন্ত থাকতে পারল না। খবর পাবার পর ঢাকা থেকে আসতে আসতেই সব শেষ। মরার সময় চারিদিকে শুধু আসগর আলীকে খুঁজেছিল রোকেয়া। কথাটা ছোট ভাবীর কাছে শোনা। ঘোলা আলোয় বুড়োর চোখ দুটো আরও ঘোলা হয়ে আসে নোনা জলে ভিজে।

থাকরে মা। বুড়ার কথা ঠিক মত বোঝা যায়না। শুধু একটু খানি ঘড়ঘড় শব্দ উঠে। তবু পিয়াল বুঝল। বাঁ হাতে, গায়ের উপর দেয়া চাদরের কোনায় গোপনে চোখ মুছে আসগর আলী। ডান হাতটা হাত শূন্যে উঠে শান্তি মুদ্রার মত; আর সাথে সাথে ধপ করে বিছানায় পড়ে। তারপর পিয়ালের হাতটা সরিয়ে দেয় আলতো করে। পিয়াল হাত গুটিয়ে বসে থাকে বাপের গা ঘেঁসে।

আস, চাইরডা মুখে দিয়া যাও। সারাদিন ত কিছু খাইলা না। বড় ভাবী মরিয়ম পিয়ালকে ডাকে, পরম আদরে জড়িয়ে ধরে। তারপর এক রকম জোর করেই উঠিয়ে নিয়ে যায়।

খাবার টেবিলে বসে পিয়াল। বড় ভাবী প্লেটে খাবার বেড়ে দেন। পিয়াল খাবার সামনে নিয়ে বসে থাকে। খায় দু এক লোকমা।

চিন্তা কইরোনা। বাবার শইলডা আইজকা অনেক ভালা। ইনশাআল্লাহ সপ্তা খানেকের মধ্যে তাইনে আবার উইঠা বসতে পারবো।

ডাক্তার সাব কিছু কইলো? পিয়ালের প্রশ্ন।

কি আর কইবো। সেই পুরাণ কাসুন্দি। বয়স হইছে।

পিয়াল ভাত নাড়ায় প্লেটে। এক সময় প্লেটটা সামনে সরিয়ে উঠে পড়ে।

তুমি ত কিছুই খাইলা না।

পিয়াল কিছু বলেনা। বেসিনে হাত ধুয়ে বাবার কাছে চলে যায় নিঃশব্দে। পিয়ালকে দেখে বুড়োর চোখে এক টুকরো হাসি ঝিলিক দিয়ে উঠে ছুরির ফলার মত। অবশ্য সেটা কারো চোখে পড়েনা।

-২-

আবার বুড়োকে ঘিরে চারটে প্রাণী।

সখিনা, রান্না ঘরটা গুছাইয়া রাখ। মরিয়ম বলে সখিনাকে। সখিনা রান্না ঘরে চলে যায়।

বুড়া তার চার পাশে ঘিরে ধরা লোকগুলোর উপর চোখ রাখে এক এক করে। তারপর কড়ি কাঠের দিকে তাকিয়ে প্রায় পরিষ্কার গলায় বলে উঠে, হীরা কই?

প্রশ্নটা কাকে, কেউ বুঝতে পারেনা। তবে জবাব দেয় হাসমত।

খবর দিছি বাবা। আপনে পরশু বলার পরেই খবর দিছি। সে রওয়ানা হইছে। কাইল সকালের মধ্যে আইসা পড়বো।

হাসমত ঘড়ি দেখে। বাবার রাতের এন্টিবায়োটিক খাবার সময় হয়ে গেছে। জগ থেকে পানি ঢেলে গ্লাস আর ওষুধ নিয়ে বাবার কাছে এগিয়ে যায়। বুড়ো অনেক কষ্ট করে ক্যাপসুল গিলে। আবার খক খক করে কাশি উঠে। ধীরে ধীরে ধাতস্থ হয় বুড়ো। ..................... বুড়ো হাপায়।

হাসু, মোবাইলডা লইয়া আয়। আমি হীরার লগে কথা কমু। আসগর আলীর কথা কেউ বুঝতে পারে না। বুড়ো উঠতে চায়, পারেনা। সবার চোখ ভিজে উঠে।

বাবা, ডাক্তার আপনারে কথা বলতে মানা করছে। মরিয়ম মনে করিয়ে দেয়।

বুড়ো আবার হাপাতে থাকে। আর কথা বলতে পারেনা। ক্লান্তিতে চোখ বুজে। পিয়াল বাবার কাছে বসে থাকে। হাসমত আর মরিয়ম এক সময় বারান্দায় উঠে আসে।

বাতাস বইছে। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া উঠে। দেবদারু গাছের পাতায় শির শির কাঁপন উঠে। একটা পেঁচা ডেকে উঠে রাতের নিঃস্তদ্ধতা খান খান করে। দুরে, অনেক দুরে একটা কুকুর কেঁদে উঠে সুর করে। অন্য সময় হলে এসব শব্দাবলী প্রাত্যহিকতার ধারায় হয়তো বিলীন হয়ে যেত। কিন্তু আজ সব শব্দই অর্থবহ হয়ে নিজেদের জানান দেয়।

চাঁদ হেলে পড়ে পশ্চিম আকাশে। ভৌতিক জ্যোৎস্নায় হাসমত আর মরিয়ম বসে থাকে বারান্দায়। শেফালী গাছ থেকে ফুলের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে ।

রাইতটা ভালা না। দেখ কেমন কইরা কুত্তা কানতাছে। আমার ডর করতাছে। হঠাত্‍ বলে উঠে মরিয়ম। মাওলানা সাব কাইলকা আইবো বাবারে তওবা করাইতে। তাইনে কাইল পর্যন্ত টিকা থাকলে হয়।

বাবার শরীলডা খুব কাহিল হইয়া গেছে। সায় দেয় হাসমত। ওষুধ মনে হয় কাম করতাছে না। হীরুটা এখনো আইসা পৌছলোনা। ওরে না দেইখা মরলে বাবা কবরেও শান্তি পাইবো না।

আর হীরুরও সারা জীবনের লাইগা একটা আফসোস থাইকা যাইবো।

যাও, তুমি একটু জিরাইয়া লও। হাসমত বলে।

না, তুমি যাও। তোমার ত আবার ভোরে উঠতে হইবো বাস ধরনের লাইগা। কাইল থাইকা ত তোমার কামে যাওনের কথা আবার। আর বাবারও তেমন সাড়া শব্দ নাই। মনে হয় ঘুমাইতাছে। বোধ করি শইলডা ভালর দিকে মোড় নিছে।

দোয়া কর যেন তাই হয়। হাসমত উঠে পড়ে। তুমিও চল। একা বইসা থাইকা কি করবা?

ওরা দুজন উঠে পড়ে এক সাথে।

বাবার ঘরে দেখে, বাবা ঘুমাচ্ছে। নাক ডাকার ক্ষীন শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। পিয়াল খাটের পাশে পাতা বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছে ক্লান্তিতে। গত চার দিন ও এক ফোঁটাও ঘুমাতে পারেনি।

বাবার ঘরের বৈদ্যুতিক বাতির সুইসটা অফ করে হারিকেনটা এক কোনে রেখে দেয় হাসমত।

-৩-

হঠাত্‍ জেগে উঠে আসগর আলী। অন্ধকার ভেদ করে এত আলো এলো কোথা থেকে? বুড়া অবাক হয়ে যায়। মৃদু হাওয়া বইছে খোলা জানালা দিয়ে। বাতাসে শেফালী ফুলের সুবাস। শেফালী গাছটা হাসুর মার নিজের হাতে লাগানো। তখন তো এ যায়গাটা আর শহর ছিলনা। ছিল সপ্তাহে দুদিন বসা গ্রামের হাট। আজগর আলীদের বাড়ী ছিল হাট থেকে একটু দুরে। ধীরে ধীরে গ্রামের হাটটা ছোট খাট শহর হয়ে গেল, বাড়তে বাড়তে আসগর আলীর বাড়ীটা গ্রাস করে ফেললো, নদীর ঢলের মত।

এরা কারা? হঠাত্‍ আলোর বৃত্ত ফুঁড়ে উদয় হল কতগুলো লোক। দ্যুতিময় চেহারার লোকগুলো দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গেল বুড়ো। ওরা হাত তুলো অভয় দিল। তবু বুড়োর ভয় আর কাটতে চায় না।

হাসু, হাসু। ডাকে বুড়ো।

উজ্জ্বল চেহারার লোকগুলো ভেল্কিবাজির মত অদৃশ্য হয়ে যায় মুহূর্তে। সেখানে স্বর্গীয় দ্যুতিতে উদ্ভাসিত হয়ে দাড়িয়ে থাকে রোকেয়া।

হাসুর মা, তোমারে না শোয়াইয়া আইলাম সবাই মিলা। তুমি উইঠা আইলা কেন?

একা একা আমার বড় ডর করে। তাই আপনেরে নিতে আইলাম।

আমারও একা একা আর ভালা লাগেনা রুকু। আর একটু দেরী কর হাসুর মা। হীরাটা এখনো আইলোনা। আমি পোলাডারে না দেইখা কেমনে আহি? কতদিন অরে দেখিনাই। হের লাইগা পরানডা বড় কান্দে হাসুর মা।

হঠাত্‍ সব আলো নিভে যায়। নিকষ কালো অন্ধকারে বুড়োর বুকের উপর কেউ ভীষণ ভারী কিছু চেপে ধরে। বড় কষ্ট হয় বুড়োর।

হাসু, হাসু। চিৎকার করে বুড়ো। গলাটা শুকিয়ে আসে। ভীষণ তৃষ্ণা পায়। ছটফট করে উঠে বুড়ো।

আর একটু সময় দাও, আর একটু সময়। হীরাটা আসুক। বুড়োর স্বরে রাজ্যের আকুতি। ভয়ে বুড়ো থর থর করে কাঁপতে থাকে। পিয়াল পিয়াল, হাসু হাসু। বুড়ো ডাকে। হাসু ...... হাসু ...... হাসু ......।
-৪-

হীরু কুয়েত এয়ারপোর্টে বসে আছে।

প্লেন ছাড়তে এখনো ঘণ্টা খানেক দেরী। সারা দিনের ঝক্কি ঝামেলার ক্লান্তিতে ওর শরীর ভেঙ্গে আসছে। গতকাল রাত্রিতে ভাইয়ার ফোনটা পেয়ে সে আচমকা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। ...ক...ত ...দি...ন পরে শুনল ভাইয়ার গলা।

বাবার শরীরটা ভালা না। তোরে দেখতে চায়। ভাইয়ার গলার করুন স্বরটা কেমন যেন অপরিচিত লাগছিল ওর।

ভাইয়া, বাবা কি বাঁইচা আছে? কেঁদে ফেলে হীরু। বাবারে ফোনটা দাও।

না না, বাঁইচা আছে। তোরে খুব দেখতে চায়। শরীরডা খুব খারাপ। কথা বলতে কষ্ট হয়।

কথাটা বিশ্বাস হতে চায়না ওর হীরুর। এটাই নিয়ম। বিদেশে কেউ মৃত্যুর খবর দিতে চায়না। তাই মৃত্যুর খবর বন্দী হয়ে যায় অসুস্থতার ছলনার মোড়কে।

তবু আশায় বুক বাধে সে। কতদিন বাবাকে দেখেনি। মা চলে গেলেন, কেউ ওকে খবরটা পর্যন্ত দেয়নি। অবশ্য দেবে কি করে, দেয়ার কি জো রেখেছিল সে? আত্মধিক্কারের বোঝার নীচে ডুবে যায় হীরু। কি করে এমন কাজটা সে করতে পারলো?

এম,এ পাশ করার পর বছরের উপর বেকার। বিদেশে যাবার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিল সে। দরকার হলে রাস্তা ঝাড়ু দেবে। বেকার থাকার চেয়ে তাও ভাল। বন্ধু ইমরান খবর নিয়ে এলো, আরব এন্টারপ্রাইজের কাছে, কুয়েতের একটা ভিসা পাওয়া যাবে এক লাখ নব্বই হাজার টাকা হলে। আরব এন্টারপ্রাইজের মালিক ওর মামা। তাই সে গ্যারান্টি দিতে পারে যে. টাকাটা মার যাবে না।

আমার কাছে নব্বই পয়সা নাই, আর তুই আইলি এক লাখ নব্বই হাজার টাকার খবর লইয়া।

তোর ভাইর কাছে চা।

ভাইয়ার নিজের সংসার চলেনা, আমারে টাকা দিব কেমনে?

তোগো জমি জমা নাই? বেইচা দে। রাইখা কি হইবো? এক বছরের মধ্যে বেচা জমি আবার কিনা ফেলতে পারবি।

নারে দোস্ত। জমি ত আমিই খাইছি। আমার পড়াশুনার পিছে সব গেছে।

কারু থেইকা ধার ল। ছ মাস লাগবো শোধ দিতে। দেখলিনা, ফজলু গেল দুই লাখ টাকা ধার কইরা। ছয় মাসে টাকা শোধ দিয়া দিল।

চারদিন ধরে অনেক চেষ্টা করলো সে। কিন্তু কেউই আশা দিতে পারল না। চার দিন পর ইমরান বলল,

কুয়েতের ভিসার বহুত ডিমান্ড। মামারে বইলা কইয়া শুক্কুরবার পর্যন্ত সময় নিলাম। দেখ, এর মধ্যে কিছু করন যায় কিনা। এর পর মামা ভিসাটা অন্য কারুর কাছে বেশী দামে বিক্রি কইরা ফালাইবো।

রাতে বিছানায় শুয়ে ঘুম আসে না হীরুর। মাথার মধ্যে টাকার চিন্তা। হঠাত্‍ মনে পড়লো, বাবা পিয়ালের বিয়ের জন্য কিছু টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে উঠিয়ে একটা আলাদা একাউন্টে রেখেছেন। হীরুর তাতে সই করার অনুমতি আছে, যাতে বিয়ের বাজারের সময় দরকার হলে সেও টাকা উঠাতে পারে। পিয়ালের এনগেজমেন্ট হয়ে আছে। বিয়ে হবে ডিসেম্বরে, ছেলে সৌদি থেকে ছুটিতে এলে। তা এখনো সাত মাস বাকী। বাবাকে বললে বাবা কখনো টাকাটা দেবেন না। তাই বাবাকে না জানিয়ে পরদিন সে দুই লাখ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়ে এক লাখ নব্বই হাজার টাকা দিয়ে এল আরব এন্টারপ্রাইজে। ছয় মাসের মধ্যে টাকাটা জমা দিয়ে ফেললে কোন ঝামেলা হবার কথা নয়। নিজের মনকে বুঝাল সে।

হীরুর যাবার সব ঠিক। আজগর আলী জিজ্ঞেস করলেন, হীরা, টাকা কই পাইলি?

বন্ধুর থেইকা ধার করছি। হীরুর সংক্ষিপ্ত উত্তর।

হীরু যাবার কয়েক দিন পরই ব্যাপারটা ধরা পড়লো। আজগর আলী প্রতিজ্ঞা করলেন, বেঁচে থাকতে ছেলের মুখ দেখবেন না। তিনি অনেক কষ্টে ধার দেনা করে পিয়ালের বিয়ের যোগাড়যন্ত্র করলেন।

সে ছয় মাস এখন দু বছর হয়ে গেল, টাকাটা আর জোগাড় হল না । নতুন যুগের দাসবৃত্তিতে নাম লিখিয়েছে সে। মরুভূমির মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে কেমন করে কেটে গেল দু দুটি বছর। বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে কতবার চিঠি লিখেছে সে। বাবা উত্তর দেন নি। কতবার ফোন করে কথা বলত চেয়েছে। তিনি কথা বলেন নি। গত দু বছরে ছেলের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেন নি তিনি।

ঘুমে ওর চোখ দুটো জড়িয়ে আসছে। নিজের অজান্তে হাত ব্যাগটার উপর মাথা রেখে চোখ বুজে হীরু।

হীরা হীরা। একটা ডাকে চমকে উঠে হীরু। অবাক হয় সে। ধুর, ও নামে শুধু বাবাই ডাকে। এই বিদেশে ও নামে কে ডাকবে ওকে?

হীরা, আমি আর অপেক্ষা করতে পারতাছিনা রে। তোর মার একলা খুব কষ্ট হইতাছে। আমারে নিতে আইছে। তোরে না দেইখা কি কইরা যাইরে বাপ? তোরে দেখবার লাইগা পরানডা বড় কানতো। অভিমান কইরা নিজেরে বড় কষ্ট দিছি রে। বাপ হইলে বুঝবি, ছেলের লাইগা বাপের কি কষ্ট। আয়রে বাপ আয়, যাওনের আগে তোরে শেষ বারের লাইগা একটু দেখি।

একটু অপেক্ষা কর বাবা। আমি আসতাছি। আমি ......... আ...স...তা...ছি। ঘুমের মধ্যে ডুকরে কেঁদে উঠে হীরু।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গাজী হানিফ অসাধারণ গল্প মুগ্ধ হে porlam
তানি হক হৃদয় ছোয়া একটি গল্প ..অনেক অনেক ভালো লাগলো ...সুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ ..
পারভেজ রূপক মনের মধ্যে কেমন কেমন করে ওঠা গল্প। চমৎকার
ধন্যবাদ পারভেজ রূপক
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি বেশ ভলো লাগলো|
ধন্যবাদ আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি ভাই
মামুন ম. আজিজ নিঁখুত েলখা সাবের ভাই। বেশ গোছানো চিন্তার গভীরতা আেছ।
সেলিনা ইসলাম বরাবরের মত অসাধারণ প্লট নির্বাচন , উপাস্থাপনা... বাস্তবতাকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ...মনে হল চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি পুরো গল্পটার চিত্রায়ন ! খুব ভাল লাগল শুভকামনা জানাই লেখককে ।
ধন্যবাদ সেলিনা ইসলাম
রওশন জাহান আজ কয়দিন ধরেই ভাবছি আপনার লেখা পড়া হচ্ছেনা কিছুদিন ধরে। পড়তে পড়তে কতটা একাত্ম হয়ে গিয়েছিলাম অভিমানী বাবা আর ছেলের জীবনে বুঝাতে পারবনা। এটা তী আরোপিত কোন কাহিনী নয় আমাদের জীবনেরই গল্প। অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে।
স্বাধীন চমতকার সুন্দর একটা গল্প।
Mohammad Alvi উপমা আর পারিপার্শ্বিক বরননা......অসাধারন

০৭ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪