পৃথিবির সবচে বড় সমুদ্র সৈকত। গতকাল সারাটা দিন জার্নি করে সন্ধ্যায় এসে পৌঁছেছি এখানে। নতুন জায়গা হেতু ভাল ঘুম হয়নি রাতে। তবুও আলো আধারির এই মিশেল ভোরে বেরোতে হবে প্রভাত-সমুদ্র আর কাঙখিত সূর্যোদয়ের উদ্দেশ্যে।
তানজিবা আমার বাম হাত ধরে আছে। উহু, আসলে আমি ওর ডান হাত ধরে আছি! আমরা সমানতালে হাঁটছি, আমি সামান্য এগিয়ে। দুজনের মাঝে দেড় হাত সমান ফাঁকা। হাতের সেতুবন্ধন মিলিয়ে আমাদের আকৃতি এখন 'এম'-এ গিয়ে দাড়িঁয়েছে।
বিয়ের পর পঞ্চম দিনের সূর্যোদয় দেখলাম একটু আগেই; এত্ত সুন্দর! সত্যি অপার্থিব, অবর্ণনীয়। থ্যাংকস গড; এমন সুন্দর একটি সিচ্যুয়েশন তৈরী করে দেয়ার জন্য। তানজিবা কেমন নিশ্চুপ। মেয়েটা হয়তো এখনো সম্পূর্ণ সংকোচ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিস্তৃত কোন খোলা যায়গায় নতুন কারো সাথী হয়ে ঘনিষ্ঠ কিছু মুহূর্ত কাটাতে হবে- এভাবে বোধহয় ও কখনো ভাবেনি! সমুদ্রজলে চোখ রেখে বিষয়টা ভাবছিলাম। মন চাইল ওর ভেতরটা একবার পড়ে নেই, দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখি তথৈবচ অবস্থা- লজ্জায় মুখটা 'সূর্যমূখী' হয়ে আছে! পুলকিত হলাম; লজ্জা থাকা ভাল , পৃথিবীতে যতটুকু শৃংখলা এখনো বাকি আছে তা ঔ লজ্জার কল্যাণেই। হাঁটতে হাঁটতে আমরা পানির প্রায় নিকটে চলে এলাম। হালকা বাতাসে ছোট্ট একটি তরঙ্গ এগিয়ে আসছে এদিকে। নিশ্চিয়তার সাথে বলতে পারি ও আমাদের পা ছুঁয়ে যাবে। .....আমার ধারণা সত্যি হল! কেমন লাগছে? নিরবতা ভেঙ্গে জানতে চাইলাম। ওমিষ্টি একটি হাসি-বার্তা দিল। যার অর্থ সম্ভাষণ হতে পারে, সান্তনাও হতে পারে, আবার এদুয়ের মাঝামাঝিও হতে পারে! এখানে না এলে লাইফে বড় একটা মিস হয়ে যেত- ও বলতে শুরু করল- আমি সুন্দরবনের বৃক্ষমেলা দেখেছি, সিলেটের চা বাগান চষে বেড়িয়েছি, কুয়াকাটায় উপভোগ করেছি ক্লান্ত বিকেলের লাল সূর্যাস্ত। কিন্তু এতটা আনন্দ কোথাও পাইনি, যতটা এথানে পাচ্ছি! আসলে এতদিন আমি অপূর্ণ ছিলাম, কিন্তু এখন পূর্ণ , পরিপূর্ণ...এটুকু বলেই স্তব্ধ হয়ে গেল! বাকি অংশটুকু আমি উদ্ধার করলাম ওর লাজুক চেহারার মুগ্ধকরা হাসি আর বাকা চোখের অর্থবোধক চাহনি থেকে! পুলকিত হলাম- ওর জন্য আরো একটু খুশির আয়োজন করা দরকার! পৃথিবীর সুন্দরতম জিনিস দেখতে চাও? এমন ভাব নিয়ে বললাম; জিনিসটা যেন আমার পকেটেই আছে, হ্যাঁ বলার সাথে সাথেই বের করে দেখিয়ে দিব! তানজিবা ধন্দে পড়ে গেল। কী উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। পাঁচ সেকেন্ড পর নীল সাগর থেকে দৃষ্টি ফিরালাম ওর লাল চেহারায়। পুরো অবয়বে আগ্রহের ভাব, ললাটে রয়েছে বিস্ময়ের ছাপ। কিছু বলার সুযোগ দিলাম না; হাতটা ধরেই ছুটলাম পানির দিকে, একরকম টেনেই নিয়ে যেতে হচ্ছে নববধূকে। পুরো হাটু পানিতে ডুবিয়ে তবে ক্ষান্ত হলাম দুজনে। স্থবির কাটিয়ে দিলাম জীবনের আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত। ওর ভিরমি এখনো কাটেনি; বিস্ময় বোধহয় বেড়েই চলছে! দুটি মানব-মূর্তি প্রতিবিম্বিত হচ্ছে সমুদ্রের নীল পানিতে। আমি মহিলা মূর্তিটির দিকে আঙুল তাক করে বললাম:- ঔশ্বরিক দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য। ও কাঁচ ভাঙা হাসি দিয়ে আমার সমস্ত আয়োজন মাটি করে দিতে চাইল, আমি গম্ভীর হওয়ার চেষ্টা করলাম। সাধ্যের সবটুকু গাম্ভীর্য গলায় ঢেলে বললাম: হেসো না! সত্যি বলছি একজন সতী নারীই এই পৃথিবীর সুন্দরতম সম্পদ। ঐশী বানীর শেষ ও শ্রেষ্ঠ বাহক সাঃ ও এমনি বলেছেন!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর
আপনি যদি কল্পনা করেন পুরো দুনিয়াটা সৌরমন্ডলে ভেসে আছে সেটা ঐশ্বরিক সুতরাং ওখানে যা ঘটবে সবই ঐশ্বরিক হবে, আসলে তা না। যেটা সবাই চায় বা সবার আছে সেট গতানুগতিক। নায়িকার কোন ঐশ্বরিক গুন থাকতে পারতো যেটা সচরাচর অন্য কারো থাকে না। কিন্তু বর্ণনায় সেরকম কিছু আসেনি। তবে বর্ণনার ধাঁচটা ভালো লেগেছে, সবচেয়ে বড় সৈকত বলেছেন এটাও ভাললেগেছে। অনেক শুভ কামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।