আমার সপ্নিল বাবা

বাবা (জুন ২০২৩)

মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
  • 0
  • ২২৭
এক.
এই পথ ধরেই মায়ের সাথে এক অভিমানের ভঙ্গিতে ঝাপসা চোখে বের হয়ে গিয়েছিলে। কখনো ফের ফিরে দেখোনি সন্তানের হাহাকার করা মুখের দিকে। ফিরে দেখোনি স্ত্রীর শাসরুদ্ধ সংসার। এক একটা রাত, এক একটা দিন আর এক একটা মুহূর্ত। তিন আর এক বছরের দু'টো সন্তানের কথা মনেই পড়লো না তোমার। কোনদিন মনেই রাখলে না বেদনার্ত প্রতিটা সময়ের কন্ঠকাকির্ণ পথ। তবুও মা সেদিন তোমার সাথে প্রতিযোগিতা নিয়েছিল। রাতের আঁধারে ঘুমিয়ে যেত সব অথচ তোমার আসার অপেক্ষায় নির্ঘুম দরজার কিনারায় বসে থাকত। জীবনের এ লড়াইটা যেন হেরে না যাওয়ার। অনেকটা কঠিন পথের স্বাক্ষী হয়ে সন্তানের জন্য নিজেকে বাঁচাবার। সে মা স্পষ্ট জানে যে মা সন্তানকে ভালোবেসে সন্তানের মুখে খাবার দিতে গিয়ে নিজের পেয়ালায় এক গ্লাস পানি ছাড়া আর কিছু জমে উঠেনি। তবুও সন্তানকে ছেড়ে যায়নি। তবুও সন্তানকে ভালোবাসতে দ্বিধাবোধ করেনি। দূরে সরিয়ে দেওয়ার গল্প সাজায়নি। সে মা জানে যে মা সন্তানকে ক্লাসে ঢুকিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ছুটির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকেছিল। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙেনি। সন্তানের অসুখের সময় রাতকে রাত বলেনি। এমনই প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। সন্তানের মুখে হাসি ফুটাতে তিনি মহাসুখের চিন্তা করেননি কিংবা মহাসুখের গল্পে নাম লিখেননি৷ হাটতে-যাইতে-বসতে অভিমানের রাজপ্রাসাদ বেয়ে তবুও তোমাকে খুঁজেছিল। সন্ধ্যের পাখি নীরবে বাসায় চলে যেত, পথিক তার গন্তব্য স্থানে হারিয়ে যেত। সময় ক্ষেপনের দ্বার বেয়ে বেয়ে হাজার মানুষ ভুলে যেত তার জীবনের হাজারটা স্মৃতিচারণ, অথচ মা ভুলেননি কোনদিন। ভুলতেই দেখিনি যে, তুমি নামের কেউ চলে গেলে। কান্নার শাব্দিক চিহ্নগুলো মায়ের থেকেই জানা। অনুশোচনারা যেন প্রতিদিন এক আকাশ মেঘ নিয়ে মায়ের দরজায় বাসায় বাঁধতো আর মা সে অনুশোচনায় রোজ রোজ কষ্টের পাহাড় বানাত।
আমি রাহুল, ডায়েরিটা খুলে তোমাকেই আজ ভীষণ স্মরণ করেছি।

দুই.
সবে মাত্র বুদ্ধির উদয় হয়েছে। প্রতিবেশিকে চেনার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বুকে এসে বিঁধল। মায়ের মাণিক। বারবার মা'কে কুণ্ঠিত কণ্ঠে প্রশ্ন- আম্মু আম্মু___বাবার কাছে যাবো। আম্মু বাবার কাছে নাও না। অথচ তখন মায়ের আর্তচিৎকার আর বুকফাটা আহাজারি হয় তো মহান রবের আরশও কেঁপে উঠেছিল। মা তখন আমাকে কোলে টেনে নিয়ে কপালে দুটো চুমো খেয়ে কাদে আমার মাথাটা দিয়ে চোখের জলে স্নান করেছিলেন আর আমি বারবার মাকেই প্রশ্ন করেই গিয়েছিলাম। বাবার কাছে যাওয়ার জন্য নিরলস চিৎকার করে যাচ্ছি। অতঃপর মা বিভিন্ন কথা বলে আমাকে বুঝিয়ে চুপটি করে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। ধীরেধীরে আরো বড় হতে থাকি। একসময় দেখি সবাই তাঁদের বাবার হাত ধরে দোকানে যাচ্ছে, স্কুল যাচ্ছে, হাট-বাজার কোথাও বাকী রইল না। অথচ আমি শুধু তাকিয়ে থাকি আর মা'কে বাবার হাত ধরে যাওয়ার ইচ্ছায় ভীষণ জ্বালাতন করতে থাকি। আর মা আমার খুব মিথ্যেবাদী! সহজ সাবলীল ভাষায় বলে দিতেন, সহজ সাবলীল ভাষায় দেখিয়ে দিতেন আর বলতেন- উপরে তাকাও- অই যে বিমান যায় এটা দিয়েই তোমার বাবা আকাশে গেছে। একদিন আসবে। একদিন তোমাকে দেখতে আসবে। তোমার জন্য বিভিন্ন খেলনা, গাড়ি নিয়ে আসবে। তোমাকে নিয়ে গরুর গাড়ি খেলবে। তোমার জন্য ব্যাট-বল আরো কতকিছু নিয়ে আসবে। ঠিক এ আমি আমার মিথ্যেবাদী মায়ের কথা বিশ্বাস করে নিতাম। সহজ সাবলীল ভাষায় আমাকে প্রাঞ্জল করে দিতো। তবুও কি আর মানা হয় ' ঘরে খেলনার অভাব নাই। বাবার খেলনার জন্য মায়ের সাথে রাগ করে বসে থাকতাম। খেতে চাইতাম না। বাবা বাজার থেকে মিষ্টি আনবে বলে কারো কোন খাবার খাইতে চাইতাম না। মা কতরকমে বোঝাতো। কত রকমে গল্প শোনাতো, কবিতা শোনাতো। মিষ্টিমিষ্টি ছন্দে বাবার কথা ভুলে রাখার চেষ্টা করতো, কিন্তু তাতে কি আর হয়। তবুও তোমাকে ভুলতে পারছি না বাবা। আসলেই কি বাবাকে ভুলে থাকা যায় নাকি ভুলে থাকার অভিনয় করতে হয় রোজ!

তিন.
মোটামুটি একটা শব্দের পরে আরেকটি কিংবা আরো কয়েকটা শব্দ মিলে একটা বাক্য মিলাতে শিখলাম। আর আপন-প্রতিবেশির কথাগুলো বুঝে নিতে চেষ্টা অব্যাহত থাকল। মায়ের মানিক, মায়ের ভালোবাসায় মায়ের কাছেই রাখতে চায়। অথচ আমার কি আর মায়ের চতুর্পাশে থাকতে ইচ্ছে হয়! মাকে রেখে রেখে বাবার খোঁজে অনেকদূরে দূরে যেতে শুরু করেছি আর মা আমাকে না পেয়ে কান্নায় বিভোর ছিলেন। আমাকে না পেয়ে আহাজারি শুরু করে দিতেন। কিন্তু আমি কি আর বাবার খোঁজ পাই! সম্ভব নয়, পাচ্ছি না। বাবাকে দেখার প্রতি আরো আবেগিত হয়ে গেলেই মা নানুর কাছে আমাকে রাখতে শুরু করেছেন। নানা-নানু আর মায়ের ভালোবাসা যেন আমাকে আরো দীর্ঘায়িত করত। একদিকে মা আমার টেনশন অন্যদিকে সংসার হালচালও দূরাবস্থা হওয়ায় মা আরো অসুখী হয়ে পড়েছেন। আরো ক্লান্ত হয়ে রবের কাছে কান্নায় সমস্ত বেদনা সমর্পণ করেছেন। কখনো কখনো কান্নার জলে মাকে নামাজের বিছানা ভিজে যেতে দেখেছি। দুই-তিনটা পোড়া মরিচের সাথে মায়ের একমুঠো পান্তা ভাতই ছিল রোজ সকালের একমাত্র খাবার। কখনো কখনো না খেয়ে দিন পার করার মতো। আবার কখনো কখনো না খেয়ে দুপুরে স্কুল থেকে এসে আমরা খাবো এমন ভেবে রেখে দিতেন। তেইশ-চব্বিশ বছরের একজন নারী। যে বয়সে স্বামী কিংবা পরিবারকে নিয়ে ঘুরে বেরানোর সময়, অথচ সে বয়সে দুই সন্তানকে পাশে নিয়ে এক বুক যন্ত্রণার সাথে তাকে রাত্রি যাপন করতে হয়। সন্তানের জন্য এই গ্রামীণ সংসারে তাকে যুদ্ধ করতে হয় প্রতিনিয়ত।ধীরে ধীরে আমি তখন পঞ্চম শ্রেণির একজন ছাত্র। পড়ালেখায় মেধাবী ছিলাম বলে স্কুলের পরীক্ষা ফি, মাসিক বেতনটাও শিক্ষকেরা নিতেন না। এভাবে বাবাকে ছাড়া মা আমার জীবনের আরো একটি অধ্যায় সমাপ্ত করলেন।

চার.
সাংসারিক চেতনাটা একটু অন্যরকম। বিষাদমাখা এ সাংসারিক জীবন মাঝেমাঝে আটকা পড়ে যায়। আটকা পড়ে যায় এই চলন্তিকা পথ। হয় তো এটাও রবের পরীক্ষা। রব যাকে ভালবাসেন তাকে বারবার পরীক্ষায় ফেলেন। যখন তার পাশ করার ক্ষমতা না থাকে তখন তিনিই তাকে পাশ করার শক্তি, সাহস ও ক্ষমতা দিয়ে তাকে পাশ করে তুলেন। মাত্র অষ্টম শ্রেণির একজন ছাত্র। ইচ্ছা-আকাঙ্খার এ পথ এড়াতে না এড়াতেই বোন বড় হয়ে গেলে আর বোনকে গ্রামের সমাজে যাতে হেয় প্রতিপন্ন করতে না পারে সে জন্য মহান রবের সহযোগিতায় বোনকে বিবাহ দিতে সক্ষম হন। চেষ্টার সফলে মাকে সেদিন রবের শুকরিয়ায় জায়নামাজে কাঁদতে দেখেছি। পাড়াপ্রতিবেশির মতো আনন্দ করতে পারেননি, ডাক-ঢোল পিটিয়ে খাওয়াতে পারেননি বলে কেউ কেউ কতোগুলো উচট খাওয়া শব্দ উপহার দিলেন। কেউ কেউ ভিন্ন ব্যবহারে ক্ষুব্ধ করেছেন। হাতে নয় মুখের কথায় যেন বিষাদ জমে যেত। এই বিষাদে যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। সেই যন্ত্রণার রাত্রিযাপনে অন্তর ফাটিয়েছেন আর অভিমানের শহরে কষ্টগুলো আত্মগোপন করে রেখেছেন। তবুও মা হেরে যেতে শিখেননি। বুকে লালন করতে শিখেছেন সন্তানকে বহুদূর এগিয়ে নেওয়ার। সন্তানের স্বপ্নোজ্জল একদিন বাস্তবে রূপ দেবার। সন্তানকে মানুষ করে গড়ে তুললেই সমস্ত ইচ্ছা-আকাঙ্খা অচিরেই বুক ভরে যাবে । স্বামীর স্মৃতির কথা মনে করেই আর তাকে কাঁদাবে না। তাকে আর দু'চোখ ভিজাবে না। সমস্ত অভিমান না হয় সেদিন সুখ হয়ে বাস্তবে রূপ দেবে। এমন প্রত্যাশার দেয়াল তুলে মা চলতেই আছেন।

পাঁচ.
বাবা ছাড়া রাহুল আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। মায়ের সাথে সাথে অনেককিছু শিখেছে। শিখেছে সময়ের সাখে বাবাহীন রাহুল পরাজয়ের গ্লাণি বুকে দাফন করে জয়ের স্বপ্ন লালন করার। বাবাহীন রাহুল কতোটা এগিয়ে যেতে পারে তার হিসেবে অঙ্গীকারবদ্ধ। রাহুল আজ মা'কে সান্ত্বনা দিতে শিখেছে। মা রেহেনা আজ রাহুলের মুখের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে যেতে আগের মতো দ্বিধা জমায় না। পূর্বের মতো আকাশ পরিমাণ কষ্টও তাকে আর যন্ত্রণা দেয় না। কষ্টগুলো যেন আজ আর কষ্টই মনে হয় না। জীবনযুদ্ধে সফল হওয়ার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নে মা আজ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবুও মাঝেমাঝে স্বামী চলে যাওয়ার সে দৃশ্য মনে করে চোখের জলে ভেসে যায় জায়নামাজ। ভেসে যায় বিছানা। তবুও কঠিন সূত্রে আঁকা সে কষ্টগুলো ধীর সুখেই বাহানায় জাগায় আর
অভিমান, অভিপ্রায়ের শহরে এসে আরো উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করতে চায়। মা নীরবে সয়ে যেতে শিখেছে আজ। থাক না কষ্ট, থাক না আরো কিছু সুখ আমার রাহুলই একদিন আমার মুখে হাসি ফুটাবে। আমাকে ভালোবাসবে সম্মান করবে। আমার রাহুলই একদিন এ সমাজটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলবে। সমাজ গড়ার কারিগর হবে। কষ্টে থাকা মানুষের প্রিয় বন্ধু হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াবে। মানুষকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। সবাইকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলার অনুপ্রেরণা যোগাবে। তখন এ অভাগা মায়ের মুখে হাসি ফুটবে। এ মা তখন সব ভুলে যাবে। সব অভিমান, অভিযোগ কেটে যাবে।

ছয়.
বাবা তোমার রাহুল আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। এখন আর ক-খ শিখে না, এখন আর নামতার ঘরে ভুলে ভিন্ন কিছু লিখে না। মুখে বলা তোমার সব শিখা শেষে পেরিয়ে এসেছি স্কুল, কলেজ আর ভার্সিটির পথ। শিখেছি কত ছন্দ কত না বলা কথা। মায়ের থেকে শিখে এসেছি জীবনযুদ্ধ, পরাজয়ের গ্লাণি বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া আর একটা যান্ত্রিক শহরকে জাগিয়ে তোলা। অনুনয়, অভিযোগ আর অনুশোচনার এ পথ শেষেই নিজেকে নিয়ে এসেছি স্বপ্নিল দৃশ্যের বাস্তবতার প্রান্তে। বাবা আমি আজ আর তোমার সেই ছোট শিশু নেই, আমাকে রেখে তুমি যখন চলে গিয়েছিলে। মা’কে বলা তোমার সমস্ত স্বপ্ন মা আজ পূরণ করেছে। এই যে রবের দয়ায় আমি সমাজ পরিচালনা করতে শিখেছি। মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নাড়িয়ে দাঁড়াতে শিখেছি। আজ সমস্ত কষ্ট-দুঃখ আর বেদনার পাহাড় ভেঙে এসেছি। ভেঙে এসেছি সমস্ত অভিপ্রায়। তোমার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমার কত সময পেরিয়ে গিয়েছে। অপেক্ষার প্রহর জ্বলেছিল কেবলি অথচ তোমার দেখা মিলেনি। কতবার নিজে কেঁদেছি, কতবার মাকে কাঁদিয়েছি। তুমি দ্যাখোনি কতটা যন্ত্রণা ছিল তুমি ছাড়া! তুমি দেখোনি কতোটা বিষাদ নিয়ে ঘুমাতে হতো আমাকে। কতোটা অভিযোগ বুকের করিডোরে এসে বাসা বাঁধতো আর তোমার কথা বলতো। একবার মনেই রাখলে না আমাকে, একবার মনেই রাখলে না তোমার মেয়েটিকে। যে মা তোমার কাছেই বেহেশতের স্বপ্ন দেখেছে সে মা’কেও অবহেলায় দূরে ঠেলে দিলে!
না পেয়েছি তোমাকে আর না পেয়েছি আপনজনের ভালোবাসা। আত্মীয়স্বজন কেবলি 'ভালো আছো' শব্দতে নিশ্চুপ হয়ে যেত অথচ পাশে এসে দাঁড়াতো না। ভালোবাসার বন্ধু হতে চাইত না। বাবা সেই সব কষ্ট, দুঃখ আর পাহাড় পরিমাণ অভিমান পেরিয়ে, তোমার চলে যাওয়ার সত্যতা মায়ের কাছ থেকে ডকুমেন্টারি নিয়ে তোমার কাছে হাজির হলাম আর তুমি নাকি ঘুমিয়ে আছো..!!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিশ্বরঞ্জন দত্তগুপ্ত একটি নতুন ভাবনার উপস্থাপনার গুনে গল্পটি খুব সুন্দর হয়েছে। গল্পটি ভালো করে পড়লাম মুগ্ধতা নিয়ে। এই সংখ্যায় আপনার কবিতাটি ও খুব ভালো লাগলো। অনেক ভালবাসা আর শুভকামনা রইলো।
ফয়জুল মহী অসামান্য লিখেছেন প্রিয় ।
শাওন আহমাদ বাবা ছাড় জীবন প্রতিকূলতায় ভরা।
doel paki আহ! কি কষ্ট।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

গল্পটা একটু অন্যরকম ভাবনার প্রতীক। বাবাকে অবধি শেষ পর্যন্ত মূল কোঠায় রেখে গল্প সমাপ্ত হয়। কিন্তু গল্পের রেষ থেকে যাওয়ার মতো হয়। যা পাঠককে বারবার পড়ার আগ্রহ জাগাবে এবং মূল ঘটনা বাস্তবতায় রূপ দিতে উদ্ধুদ্ধ করবে। উক্ত গল্পের রাহুল ছিল গল্পের নায়ক আর রোহানা ছিল গল্পের নায়কের ‘মা’ এবং বোন ছিল গল্পের কেন্দ্রিক চরিত্র। উক্ত গল্পে রাহুলের বাবা রাহুলের মায়ের সাথে রাগ করে রাহুলের মা, ১ বছরের রাহুল আর ৩ বছরের মেয়েকে রেখে চলে যায়। অথচ বাবাকে ছাড়া ছোট রাহুলের কিছুই ভালো লাগতো না। ঠিকানা পাইনি বলে মা নিয়েও যেতে পারেনি। অবশেষে রাহুলের মা রাহুলের বাবা ছাড়া সন্তানকে মানুষ করার প্রতিযোগিতা নিয়েছিল। কিন্তু বাবা ছাড়া কি আর এতোকিছু সম্ভব? তবুও সমস্ত ঝড়-তুফান মাথায় নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয় আর ছেলেকে শিক্ষাদীক্ষায় মানুষ করে। সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ করে দেয়। একসময় রাহুল জানতে পারে সমস্ত ঘটনা। জানার এক পর্যায়ে গিয়ে দেখে বাবা কবরে ঘুমিয়ে আছেন।মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নিয়েছেন। যার জন্য এতকিছু করলো সে আজ কবরকে আপন করে নিয়েছেন।লেখক বুঝাতে চেয়েছেন ‘বাবা ছাড়া পৃথিবী যেন সংকটাময় অবস্থা। আবার যে বাবার জন্য এতোকিছু করলো, বাবাকে দেখার জন্য যুদ্ধ করলো, মায়ের প্রতিযোগিতা সফল করে ছেড়ে দিলেই আর বাবাকে দেখতে পারেনি রাহুল। গল্পের ভাবনা, দিক ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করলে ‘আমার সপ্নিল বাবা’ গল্পটি ‘বাবা’ বিষয়ের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যতা পাবে বলে আমার বিশাস।

২২ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৬৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪