অরিন্দমের দিনরাত্রি

ভালবাসার গল্প (ফেব্রুয়ারী ২০২৪)

ম পানা উল্যাহ্
  • 0
  • ৬৪
দিনরাতের প্রভেদ অরিন্দমকে ভাবায় না। অরিন্দম জানে শুধু ফসলের সুখ দুখ। ওদের ভাবসাব, মান অভিমান, আলো অন্ধকারের মিতালি। আশায় বুকবাঁধে, স্বপ্ন দেখে দিন বদলের। আবার কখনো ভ্যাবচেকা খায় নিজে নিজে। মেঘবাদলের উলম্পনতার মনে ধরেনা। আবহাওয়ার ঘেরা টোপে ডুবে যায় সে।

গামছাটা কাঁধে ফেলে জমিনের আল ধরে হেঁটে যায় অরিন্দম। ফসলের মাথায় হাত বুলিয়ে ওদের পরশ নেয়। এক ঝটকা বাউরি বাতাস এসে তখন ফসলের বুকে দোল খেয়ে যায়। তব ুপড়š Íবিকেলটা তার কাছে বড় বিষন্ন মনে হয়! ভেংচি কাটে তাকে ফসলের মুখ, সকালের মেজাজ বুঝে ওঠবার আগে সাঁঝের বেলাটা তার কাছে অস্পষ্ট মনে হয়। উপরন্ত বালাই দমনের উটকে াঝামেলা, কৃষি কর্মকর্তা রস তর্ক পাঠ তাকে খুব ভাবায়। তবুয়ো নবান্নের হাসি মুখে ধরে রাখে সে।

দেশ পোড়ে, নেতানেত্রীদের দারুন রকম ব্যস্ততা বাড়ে। টিভি বিতর্ক থেকে শুরু করে মাঠে ময়দানে, প্রিন্ট মিডিয়ায় সর্বত্র হর হামেশা বক্তৃতা বিবৃতি। সে সব নিয়ে সরগরম প্রান্তজনেরা। গাঁও গেরামে পথের ধারে চায়ের দোকান। সন্ধ্যার অবসরে বয়েসী মানুষেরা সেখানে তুমুল আড্ডায় মেতে ওঠে, জাগিয়ে তোলে প্রাণ, সুখ দুখের বাতাবরণে জমে ওঠে কথার আসর। চায়ের কাপে নিংড়ানো চুমুক চলে অবিরত।

বটবৃক্ষ জন জমির আলী সবার প্রিয় চাচা। পাশেই টুলে বসে চায়ের কাপে বিস্কুট চুবিয়ে খায় অরিন্দম। নিতান্ত খেয়ালের বসে জমির চাচা অরিন্দমকে জিগায়, কি রে অরিন্দম“ অত শতকী এত ভাবচ্! বলি দেশ দুনিয়ার খবর কি রাকছ্? জমির চাচার কথা শুনে অরিন্দম খায় আর মুখ চেপে হাসে। নেহায়েত ভদ্রতার খাতিরে জবাব দেয়, “চাচা আংগো যে হিট হোড়ে, হ্যাট হোড়ে, মাতা হোড়ে, ঘর হোড়ে হেই খবরান কিরান মিয়া”? অরিন্দমের খেদ চাপানো জবাবে দমে যায় জমির চাচা। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত রাড়ে, দোকানি ফজল ব্যাপারি দুম করে ঝাঁপ ফেলে দেয়।সামনে পা বাড়ায় আড্ডা প্রিয় ঘর মুখো মানুষেরা। ককিয়ে ওঠে পানকৌড়ি। ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে বেজে ওঠে গহীন রাতের ধুন।

শান্ত সিন্ধ সকাল।মাচাঙে ঝুলে কচি লাউ। মনের আনন্দে দোল খায় গঙ্গা ফড়িং। লম্বা হাই তুলে ঘুম ছাড়ে অরিন্দম। হাত মুখ ধুয়ে থালে একটা পেঁয়াজ লংকা ঘুচে দিয়ে এক গাদা পান্তাভাত সাবাড় করে নেয়। অত:পর লাঙল জোয়াল গরু নিয়ে সটান নেমে পড়ে জমিনে।
পরিবারে অষ্ট মুখে স্থিত সুখে তিন বেলার খাবার যোগান দেয়া অরিন্দমের রুটিন ওর্য়াক মাত্র। বৌয়ের বছর বছর বিয়ান্তি তার কাছে কেবল চাষ বাসের মতই মনে হয়। তাই পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ আপার কথা তার কানে যায়না। সব যেন কর্পুরের মতো বাতাসে উড়ে যায়। গৌধূলী লগ্ন। দিগন্ত ছেড়ে নীড়ে ফেরে পাখিরা।সূর্য রাগে রক্ষীণ লাল আভাটা পশ্চিমাকাশে তখন মিলে যায় ধীরে ধীরে।

ভরসন্ধ্যার টেলিভিশন নিউজে অরিন্দম উৎকন্ঠা দেখে সবার চোখেমুখে। নির্বিকারচিত্তে দেখে যায় সব। তাতে খুব একটা রা করেনা সে। রাষ্ট্রের কর্ণধার কখন আসে, কখন যায় - সে সব তার কাছে শুধু হেঁয়ালি গল্পের পুরনো কাসুন্দি মনে হয়।

কাক ডাকা ভোরে ওঠে ফসল কাটা, ফের বীজ বপন, জমিচাষ, মাটি ঝুরঝুর করা, নিড়ানি দেয়া, গরু বাছুর গুলান দেখ ভাল-অরিন্দমের ভাবনায় আঁচ পড়ে। ভাবনার ঘোর কাটতে না কাটতে পোয়াতি বউকে কাছে পেয়ে ঝাপটে ধরে বুকে জড়িয়ে নেয় নিমেশে। রাত নামে; লোকালয় ঝিমিয়ে পড়ে। ঘুণে ধরা চৌকিটা ক্যাতর ক্যাতর শব্দে দুলতে থাকে ক্রমশ..। ঘনকালো মেঘের কোলে তখন রূপালি চাঁদ উঁকি দেয়-অমরাবতীরা হাসে নিরন্তরৃৃৃৃৃৃ.. ..
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ফয়জুল মহী মনোমুগ্ধকর লেখা মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেল হৃদয়
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
অথই মিষ্টি বাহ্ লেখক মহাশয় ... অসাধারন লিখেছেন
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

দিনরাতের প্রভেদ অরিন্দমকে ভাবায় না

১০ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪