স্বপ্ন

নগ্নতা (মে ২০১৭)

স্বপন কুমার ঘোষ
  • ১৮
"এই উঠো না, কি হলো তারাতাড়ি উঠো। বিছানাটা কিন্তু পানিতে ভর্তি করে দিবো। আমি সেই কখন উঠছি। কত কাজ করলাম। এই তুমি অফিসে যাবা না?" এভাবে স্বপ্নের কোন সাড়া পেয়েও শিখা একটার পর একটা কথা বলেই যাচ্ছে বলেই যাচ্ছে। স্বপ্ন আর শিখা আজ প্রায় ৪ বছর হলো বিয়ে করেছে। অনার্স জীবনে একই বর্ষে পড়েছিল দুজন। দুজনের ডিপার্টমেন্ট অবশ্য আলাদা ছিল। ফাস্ট ইয়ারেই তাদের প্রেমের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের এক বন্ধুর মাধ্যমে। শিখা স্বপ্নের প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করতে বেশি দিন সময় নেই নি। তারপর ক্রমেই তাদের প্রেমের গভীরতা বাড়া শুরু করেছিল। কিছু দিন যেতেই তারা দুজনে বাড়িতে না বলে কোর্ট মেরিজ করে রাখে। দুজনে একই সাথেই অনার্স শেষ করে। ফাইনাল ইয়ারের রেজাল্ট বের হতে না হতেই শিখার বাড়িতে তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্যে উঠেপড়ে লেগে যায়। ঠিক সে সময় শিখা তাদের বাড়িতে গোপনে বিয়ে করার কথা জানিয়ে দেয়। এসব শুনে শিখার বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় চিরদিনের জন্য। নিরুপায় হয়ে শিখার তার একমাত্র আশ্রয় স্বপ্নের কাছে চিরদিনের জন্য চলে আসে। বাধ্য হয়ে স্বপ্ন সরকারি চাকুরীর আশা ছেড়ে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেয়। তারা দুজনে একটা ৪ তলা বিল্ডিংয়ের ছোট্ট একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে আছে। সংসারের সমস্ত কাজ শিখা করে। আর স্বপ্ন অফিস থেকে এসে যতটুকু পারে তাকে বাড়ির কাজে সাহায্য করে। আজ শনিবার। সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। বসন্তকালে এমন বৃষ্টিতে লেপের নিচে শুয়ে থাকতে কার না ভাল লাগে। তাই স্বপ্ন আজ শিখার ডাক শুনতে পাওয়া সত্ত্বেও কোন সাড়া দিচ্ছে না। কিন্তু কে শুনে কার কথা? শিখা একটা গ্লাসে করে পানি নিয়ে ঠিক ব্রাহ্মণের মতো করে স্বপ্নের মুখে পানি ছিটাচ্ছে। বাধ্য হয়ে স্বপ্নকে উঠতে হলো। স্বপ্ন উঠে ব্রাশে পেস্ট লাগানোর সময় শিখা বলল, " চলো ছাদে যাই। বৃষ্টিতে ভিজবো। কত দিন হলো দুজনে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজি না। তোমার মনে আছে? আমাদের প্রেমের শুরুতে আমরা...।" এবার স্বপ্ন শিখাকে থামিয়ে দিয়ে বলল "আমরা প্রথম রিক্সায় যেদিন উঠি সেদিন কেমন বৃষ্টি হয়েছিল? রিক্সাওয়ালা মামা তার পলিথিন দিলো কিন্তু আমি কিছুতেই পলিথিন নিতে চাই নি। আমার দারুণ ভিজতে ইচ্ছে করছিল। মামার কাছ থেকে পলিথিন নেওয়াতো দূরের কথা বরং হুড টা নামিয়ে দিতে বলেছিলাম। একথা শুনে তুমি কেমন লজ্জা বোধ করেছিল। বলেছিলে স্বপ্ন আমি বাসা যাবো কিন্তু। ভেজা শরীরে কেমন করে যাবো বলো। কিন্তু আমি তোমার ঐ না এর মধ্যে হ্যাঁ খুজেছিলাম। অবশেষে আমারটাই হলো। দুজনে কত মজা করে ভিজেছিলাম। তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তুমি যেন আমার কাছ থেকে তোমার শরীরে কিসের স্পর্শ খুজেছিলে। এবার লজ্জায় লাল হয়ে শিখা বলল , যাহ্ দুষ্টু আমি কিছু চাই নি। এবার চলো ছাদে যাই। তারপর দুজনে ছাদে গিয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভিজছে। এবার তারা একে অপরকে ছুতে পারছে যেটা তিন বছর আগে সেদিন রিক্সায় পারে নি। দুজনে খুব হাসাহাসি করছে। এমন সময় মায়ের গলার শব্দ শোনা গেল , উঠ না ব্যাটা কখন উঠবি। ঘুমের মধ্যে হাসতেছিস কেন? রান্না বান্না শেষ করলাম। এই বয়সে আর প্রতিদিন সকালে উঠতে মন চায় বল? বিয়ে সাদী করতে বলি কিন্তু তোর এক কথা শিখাকে পাইস নি তাই বিয়ে করবি না। শিখাতো দিব্যি তোকে ছাড়া সংসার করছে তাহলে তুই কেন পারবি না বল। আমার শরীরটার দিকে একটু খেয়াল কর। পৃথিবীতে কি শিখা ছাড়া আর কোন মেয়ে নাই? এসব শুনতে শুনতে স্বপ্ন বিছানা ছেড়ে উঠে গোসল করার জন্য বাতরুমে ঢুকে পড়লো। সেদিন বিয়েটা করতে পারলে হয়তো স্বপ্নের জীবনটা তার স্বপ্নের মতোই হতো। কিন্তু সেদিন তারা বিয়ে করতে গেছিল ঠিকই কিন্তু স্বপ্নের বয়স ২১ পূর্ণ না হওয়ার জন্য তা পারে নি। পরে আর বিয়ে করা হয় নি। তারপর অনেক দিনই প্রেম করেছিল দুজনে। এভাবে চলতে চলতে কোন এক তৃতীয় ব্যক্তির আগমনে তাদের দুজনের ভুল বোঝাবুঝি হয়। অতঃপর ব্রেকআপ। পরে অবশ্য শিখার বিয়ে হয়েছিল ঠিকই কিন্তু অন্য জনের সাথে। স্বপ্ন আজো শিখার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
স্বপন কুমার ঘোষ আশা করি এভাবে সুচিন্তিত মতামত দিয়ে অসহযোগিিতা করবেন।
রুহুল আমীন রাজু গল্পটি ভাল লাগলো অনেক...। ( আমার পাতায় ' মেকআপ করা বৃষ্টি ' গল্পটি পড়ার আমন্ত্রণ রইল )
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্প ভালো লেগেছে কিন্তু আরও একটু যত্নবান হওয়া জরুরী ছিল। যা হোক, অনেক অনেক শুভকামনা, ভোট ও আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইলো।
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) Lekhay para thakata khub joruri. Beshi kore porun aro likhte thakun. Shuvessa.
ইফতেখার আহমেদ ভালো :) তবে বাংলাদেশে ২১ না হয়েও অহরহ বিয়ে হচ্ছে।
প্রতীক চমৎকার ! খুব ভালো লাগলো।

০৬ ডিসেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪